নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I have a dream...

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

আব্দুল হালিম মিয়া

আব্দুল হালিম মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের দেশের সরকার প্রধানরা কেন একা একা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলতে পারেন না?

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৩৮

আমাদের দেশের সরকার প্রধানরা কেন একা একা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলতে পারেন না?

প্রায়ই দেখা যায় ফেসবুকে কেউ কেউ পোষ্টিং দিয়েছেন বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী সাবওয়েতে বা বাসে খবরের কাগজ পড়তে পড়তে অফিসে যাচ্ছেন। বিলাস বহুল বুলেট প্রুফ গাড়ীতে তো নয়ই, নয় কোন চার স্তর বিশিষ্ট এস এস এফ, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী কর্তৃক নিরপাত্তা বেষ্টনির ঘেরাওয়ের মধ্য থেকে। এক্সপেকটেশন টা এরকম যে আ হা রে, বাংলাদেশেও যদি এরকমটা হতো!



হতেই পারে, হওয়া উচিত। প্রশ্ন হলো, কিভাবে সম্ভব? বর্তমান বাস্তবতায় কি এটা আদৌ সম্ভব যে প্রধানমন্ত্রী হঠাত করে আগামি কাল থেকে পাবলিক বাসে বা ট্রেনে চলা শুরু করে দিলেন! দিলে কি অবস্হা দাড়াবে?



আমি মনে করি সেটা খুবই সম্ভব যদি মাত্র একটা কাজ করা যায়। তার আগে আসুন দেখি এতে বাধাটা কি? ধরুন আপনি খুব ভোরে কমলাপুর স্টেশনে যেয়ে চট্টগ্রাম গামী ট্রেনে চেপে বসেছেন। একটু ঘুম ঘুম ছিল, হটাত চোখ খুলে দেখেন আপনার সামনের আসনের খুব সাধারন একটা সীটে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বসে আছেন। শুধু আপনি নন, একে একে অনেকেই দেখে ফেললেন। তাতক্ষনিকভাবে ব্যাপারটা যা দাড়াবে তা হলো, আস্তে আস্তে পুরো কামরাটা লোকে লোকারন্য হয়ে উঠবে। নানান জন নানা ধরনের সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে জানানো শুরু করে দিবেন। এর কারন হলো, দেশের সমস্ত ক্ষমতা এক ব্যাক্তির হাতে। আগে ছিল রাষ্ট্রপতির হাতে, এখন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। এই অবস্হা থেকেই আগে মুক্তি পেতে হবে। সংসদ, ক্যাবিনেট অবশ্যই আছে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ১৯৯০ পর্যন্ত ছিল রাষ্ট্রপতির হাতে। ৯১ থেকে সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর হাতে। এটা কোন দেশের উন্নয়নের জন্য সহায়কতো নয়ই, বরং মারাত্নক অন্তরায়। একটা ঘটনা বলি।



২০০১ সালে টরন্টোতে তিন বছরের পড়াশুনা শেষ করে একটা বড় অংকের লোন ঘাড়ে এসে পড়লো। কিছুদিন পর এখানকার প্রাদেশিক শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করে চিঠি দিলাম যাতে তিনি আমার লোনের একটা অংশ কমিয়ে দেন বা মওকুফ করে দেন। কারন, আমি তখনো আমার পড়াশুনার লাইনের কোন চাকুরি পাচ্ছিলাম না। মন্ত্রী সাহেব খুব সহানুভুতি দেখালেন তবে যেহেতু তার নিজের কোন লোন কমানোর বা মওকুফ করার ক্ষমতা নেই, সুতরাং তিনি সেটা পাঠিয়ে দিলেন শিক্ষা ঋন বিভাগে। শিক্ষা ঋন বিভাগের যিনি প্রধান তিনি আমাকে চিঠি দিলেন কিছু দিনের মধ্যে আমাকে সিদ্ধান্ত জানাবেন। কয়েকদিন পর সত্যিই জবাব দিলেন তবে, উত্তরটা ছিল, নো।



বললেন, স্যরি, তোমার কাগজ পত্র পরীক্ষা করে বোঝা গেল যে, তুমি আমাদের ঋন মওকুফ করার যে বিধি আছে সেটার মধ্যে পড় না। কারো ঋন মওকুফ করতে হলে প্রত্যকে পরিবারের বছরে যে ইনকাম থাকতে হয়, তোমারটা তার চেয়ে বেশী। সুতরাং তোমার দরখাস্ত না মন্জুর করা হলো। ফলে আর কি করা। গত পনের বছর আমার শিক্ষা লোনের বোঝা টানতে হলো। আমি লিবারেল পার্টির একজন সক্রিয় সদস্য হবার পরও লিবারেল পার্টির শিক্ষা মন্ত্রী আমার জন্য কিছুই করতে পারলেন না।



অর্থাত দেশে যদি আইনের শাষন থাকে, যে যত বড় ক্ষমতাশালী ব্যাক্তিই হন না কেন, অন্যের কাজে যদি হস্তক্ষেপ না করেন বা না করার আইন যদি মেনে চলেন, প্রত্যেককে যদি তার ক্ষমতা, দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া থাকে এবং সেটার জন্য সম্পুর্ন দায় দায়িত্ব তার একান্তই নিজের থাকে, জবাব দিহিতা থাকে, তাহলে সেই দেশে কোন প্রধানমন্ত্রীও একক ক্ষমতাশালী ব্যাক্তি হয়ে উঠেন না। ফলে সেই ব্যাক্তির নিরাপদ চলাচল যেমন সহজ ও নির্বিঘ্ন হয়ে উঠে, রাস্তা ঘাটে তাকে দেখলেই আর কেউ দৌড়ে তার দিকে ছুটে যান না যে পাইছি উনারে। উনাকে বললেই আমার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে!



মানুষ যখন জানতে পারবে যে, সবকিছুই চলে আইন মোতাবেক, আইনের বাইরে কারোই কিছু করার ক্ষমতা নাই, তখন সকলের জন্যই সবকিছু সহজ ও নিরাপদ হয়ে যেতে বাধ্য।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আপনার কথায় বেশ যুক্তি আছে। কিন্তু আসলে আরও একটা কারণ আছে। আমাদের রাজনীতিবিদেরা যে পরিমাণ নীতিহীন, তাতে সত্যিকার অর্থে জনগণের কল্যাণ খুব কমই দেখেন।সুতরাং পাবলিকের যথেষ্ট ক্ষোভ আছে তাদের প্রতি।আমরা নিজেরাও জাতি হিসেবে খুব সভ্য নই। গার্ড প্রটেকশন ছাড়া কোথাও গেলে সত্যি তাদের জন্য বিপদ। উপমহাদেশের কাছাকাছি সংস্কারের বেশ কজন জনপ্রতিনিধির এভাবে প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটেছে।আমাদের দেশের বোমা হামলার ঘটনাগুলোর কথাই মনে করেন।

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৪৭

আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: আপনার অনেকগুলো পয়েন্টের সাথে আমিও একমত। সাথে কিছু যোগ করতে চাই, সেটা হলো, আপনার আশংকাও অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। হয়তো জিরো করা যাবে না, তবে কমানো যাবে। দেখুন, এমন যদি হতো, যে একজন ব্যাক্তি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তার রুটিন কিছু কাজ ছাড়া আর কিছুই নেই। সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সংসদে, তারপর কেবিনেটের বৈঠকে। প্রতি চার বা পাঁচ বছর পর পর একটা করে ফেয়ার নির্বাচন হয়। কেউ এই পাঁচ বছরের ভেতর কোন কারনে মারা গেলে, সংসদের মতানৈক্যের ভিত্তিতে সিম্পলি আর একজন সেই দায়িত্ব পাবেন, ব্যাক্তি গেলেও নীতির পরিবর্তন হবে না, না হলে, আবারও একটা ফেয়ার নির্বাচনের সংসদেই একমাত্র নুতন কাউকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর উপায়, অন্য কোন উপায় নেই। কোন ব্যাক্তির কাছেই জনগনের অগাধ ক্ষমতা ও সম্পদ কুক্ষিগত করা নাই অথবা তিনি সেগুলো জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে, আগলে রেখে চলাফেরা করছেন না; সেরকমটা হলে কিন্তু এত নিরাপত্তার দরকার হতো না, কেউ তাকে বা তাদেরকে হামলা করার খুব একটা প্রয়োজন বোধ করতো না। কারন, কোন ব্যাক্তিকে মেরে ফেলা যায়, কোন সিস্টেমকে হত্যা করা যায় না। সুতরাং আপনার ঐ কথায় ফিরে আসতে হয়, তাদের নীতিহীনতাই তাদেরকে অনিরাপদ করে তুলেছে। ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬

রাখালছেলে বলেছেন: যুক্তি ভাল । তারা তো বহু সময় নিয়েছে এই অবস্থায় আসতে । আমাদের একটু বেশী লাগবে কারন আমরা এমনিতেই গরীব আর আমাদের সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব নেই । তারপরও আমরা এগিয়ে যাব । কারন উল্টোদিকে যাওয়ার কোন উপায় নেই ।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:২৩

আব্দুল হালিম মিয়া বলেছেন: সহমত। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.