নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I have a dream...

নিরন্তর সত্যের উপর পথ চলি, দুমড়ে মুচড়ে দেই সব বাধা!

আব্দুল হালিম মিয়া

আব্দুল হালিম মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপরাধীদের কেমন যেন চেনা চেনা লাগে, ধরবো কি ধরবো না!

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:০৪

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় গেরিলা মুক্তিবাহিনী, রাজাকার, আলবদর, খুনী পাক সেনা ছাড়াও আর একটা গ্রুপ সক্রিয় ছিল যারা রাতের বেলায় সাধারন মানুষকে ঘুমাতে দিত না। তারা হলো নামকরা কিছু ডাকাত গ্রুপ। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নৌকায় করে এসে একটু বড় গৃহস্হ যারা তাদের বাড়ীতে হামলে পড়তো। কাটা বন্দুক, দু নলা বন্দুক, রাম দা, বল্লম, শরকি ইত্যাদি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দু একটা ফায়ার করে গৃহস্হের বাড়ী লুট করে কেটে পড়তো। এ ধরনের ঘটনা যখন চরমে উঠলো তখন মানুষ পালা করে রাতে গ্রাম পাহারা দেয়া শুরু করলো। দু এক জায়গায় ডাকাতদের সাথে পাহারা দেয়া গ্রামবাসীর বন্দুক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। কারন তখন সরকারের কোন অস্তিত্ব ছিল না। মানুষ নিজেরাই নিজেদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে নিল।

এই ঘটনা চলতে থাকলো স্বাধীনতার পরো বেশ ক বছর। তখন দেশে সরকার থাকলেও আইন শৃংক্ষলা পরিস্হিতির ততটা নিয়ন্ত্রন ছিল না। এর ধারাবাহিকতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের সময় পর্যন্ত দেখেছি।
কিন্তু অবাক হয়ে যাই যখন এই ২০১৫ সালে এসেও কাউকে কাউকে আফসোস করতে শুনি যে অমুক জায়গায় শত শত লোক দাড়িয়ে ছিল কিন্তু কেউ এগিয়ে এলো না, মেয়েটা নির্যাতিত হলো, ছেলেটা ছুরিকাহত হলো ইত্যাদি। আমার কথা হলো কেন আসবে? তাদের জীবনের ঝুকি নিয়ে কিংবা মনুষ্যত্বের প্রমান দিতে আসলেই কি এরকম দাড়িয়ে থাকা মানুষ এগিয়ে আসে? বিশ্বের বড় বড় দেশেও আসে না। অনেকেই বরং কেটে পরে, ঝামেলা এড়িয়ে চলে। তবে হ্যা, কেউ কেউ আসে, তাদেরকে বলা হয় ব্যাতিক্রম বা এক্সেপশনাল। কানাডা আমেরিকায় তাদেরকে বলা হয় 'হিরো'।

কথা হলো, স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছর পরও কি দেশে সেই বিশেষ পরিস্হিতি বিরাজ করছে যেখানে মানুষকে তার নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে? প্রায়ই শুনি মাত্র কয়েক গজ দুরে পুলিশ দাড়িয়ে ছিল কিছুই করে নি। কেন করবে? তাদেরতো আগে বুঝতে হবে যে এই অপরাধটা কে বা কারা করছে? তাদেরতো চাকুরি বাচাতে হবে। আমার মনে হয় পুলিশ যদি ঘুনাক্ষরেও ঘটনাটা ঘটার আগে কোন ভাবে জানতে পারতো যে অপরাধটা কারা বা কোন দলের লোক করছে,তাহলে তারা অপরাধীর পরিচয় বুঝে কোন কোন ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই ব্যবস্হা নিত!

কিছুক্ষণ আগে টিভি স্ক্রলে দেখলাম যে মির্জা আব্বাসকে জামিন দেয়া হচ্ছে না অথচ ইতিমধ্যেই একটা বিশেষ দলের প্রায় চৌদ্দজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে জামিন দিয়ে তাদের নির্বাচনী প্রচারনার কাজে অংশগ্রহন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

আমার ব্যাক্তিগত মতে মির্জা আব্বাস কোনভাবেই যোগ্য প্রার্থী নয় কারন তিনি অতীতে পুরো ঢাকার মনোনীত মেয়র ছিলেন, জনগনকে কোন প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু কি কি কাজ সেবার তিনি করতে পেরেছিলেন বা করতে পারেন নাই তা কখনোই জনগনকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেন নাই। যদিও তিনি তার নিজ দলের প্রধানমন্ত্রীর খুবই স্নেহ ধন্য ছিলেন, ফলে সরকারের অনেক জায়গায়ই তার ইজি এক্সেজ ছিল। অর্থাত তিনি প্রমান করেছেন জনগনের কাছে তিনি কোন জবাবদিহিতার প্রয়োজনবোধ করেন না, মুখে এখন যতই হেন করেংগা তেন করেংগা বলেন না কেন!

কিন্তু মুল প্রশ্ন হলো, দেশের আইন যদি দল দেখে, ব্যাক্তি দেখে প্রয়োগ করা হয়, কাউকে জামিন দেয়া হয়, কাউকে দেয়া হয় না, তাহলে আমরা কি আশা করতে পারি না যে পহেলা বৈশাখের ঘৃন্য নারী নির্যাতনের মত আরো ভয়ংকর ঘটনা দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভবিষ্যতেও ঘটবে, আর পুলিশ কয়েক গজ নয়, কয়েক মিটার দুরে দাড়িয়েও জাবর কেটে কেটে ভাবতে থাকবে, অপরাধীদের কেমন যেন চেনা চেনা লাগে, ধরবো কি ধরবো না!
সুতরাং এখনো সময় আছে, আইনকে সত্যি তার নিজ গতিতে চলতে দিন, দল মতের বাইরে থেকে ক্রিমিনালকে শাস্তি দিন, তাহলে দেখবেন এই ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা ক্রমান্বয়ে কমে আসবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.