নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফানডামেনটাল

;

হানিফঢাকা

So peace is on me the day I was born, the day that I die, and the day that I shall be raised up to life (again) (১৯:৩৩)

হানিফঢাকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুফীবাদ (ইসলামিক মিষ্টিসিজম) পার্ট ৪

৩০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৫২

পার্ট ৩ঃ Click This Link

সূফীবাদের প্রভাবঃ
আমাদের ধর্মের উপর সূফীবাদের প্রভাব ব্যপক। আমরা ধর্মের নামে অনেক কিছুই করি যা মুলত এই সূফীবাদ থেকে এসেছে, যেমন কবর পুজা, মাজার পুজা, কুলখানী, চল্লিশা ইত্যাদি, পীর, মুর্শিদ, মুরীদ, মিলাদ, শবেবরাত , বিভিন্ন অলৌ্কিক কাহিনি ইত্যাদি। উদাহরণ এত বেশি যে দিয়ে শেষ করা যাবে না। শুধুমাত্র নিজের ধর্মের সঠিক জ্ঞান থাকলেই বুঝতে পারবেন কোনটা ধর্মীয় আর কোনটার সাথে ধর্মের সাথে কোন সম্পর্ক নেই।

সূফীবাদের প্রভাবের উপর আলাচনা দীর্ঘ না করে আমরা একজন বিখ্যাত সুফী সম্পর্কে কিছু জানার চেষ্টা করব এবং পাঠককে অনুরুধ করব নিজের কমন সেন্স ব্যবহার করে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে।

আব্দুল কাদের জিলানীঃ
উনার সম্পর্কে লেখার আগে আমার নিজের সম্পর্কে কিছু কথা বলতেই হবে। ছোটবেলা থেকে উনার সম্পর্কে এত কথা শুনেছি যে, উনি আমার কাছে সবসময় একজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব ছিল। আমার মনে আছে আমি যখন ৮ম শ্রেনিতে পড়ি, তখন আমাদের বাসায় একটা মাঝারি সাইজের সবুজের উপর হলুদ কাভার দেওয়া একটা বই ছিল, বইয়ের নাম ছিল “ আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)” লেখকের নাম মনে নেই, বা কখনও খেয়াল করিনি। সেই বইয়ের পুরাটাই ছিল তার সব অলৌকিক কর্মকাণ্ডের বর্ণনা। কি ভয়ংকর সেই গল্প। কিছু এখনো মনে আছে যেমনঃ মানুষকে কবর থেকে জীবিত করা, অনেক বছর আগে নদীতে ডুবে যাওয়া কয়েকশ বরযাত্রী কে পূনঃজীবিত করা, উড়ে বেড়ানো, বাঘ কে বশ করা, আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলা, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আল্লাহর সাথে তর্ক করা, ইসলাম কে পুনর্জীবন দান করা এই সব। তখন বয়সের কারনে এবং পারিবারিক শিক্ষার কারনে এইসব খুব বিশ্বাস করতাম। আমার মনে আছে আমার স্কুলের ইংরেজীর শিক্ষক একদিন আমাদের ক্লাসে বলেছিলেন অযু ছাড়া উনার নাম মুখে নিলে আগে মানুষের মাথা দেহ থেকে আলাদা হয়ে যেত, এখন শরীর থেকে একটা পশম পড়ে যায়। আমাদের মধ্যে এই বিশ্বাসও প্রচলিত ছিল যে উনার দোয়ার কারনে বাগদাদে বাপের আগে ছেলে মারা যায়না। এই ধরনের প্রচলিত বিশ্বাস শুধু ঢাকাতেই না, বরং আমার গ্রামেও ছিল। উনাকে বলা হয় পীরানে পীর দস্তগীর, গাউসুল আযম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)।উনার অনুসারীদের ওয়াজ আমি সরাসরি শুনেছি, ইউটিউবে ওনার সম্পর্কিত ওয়াজের ভিডিও দেখেছি। আমি উনার সম্পর্কে কোন বিশেষ পড়ালেখা করি নাই, তবে উনার এবং উনার শিষ্য/ অনুসারীদের লেখা কিছু বই/বইয়ের অংশ এবং অন্যান্য বিভিন্ন বইয়ে উনার এবং উনার অনুসারীদের বিভিন্ন কোটেশন রেফারেন্স হিসাবে পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সে আলোকে আমি উনার সম্পর্কে কিছু আলাচনা করব। যারা উনাকে অনুসরণ করেন, অতিমাত্রায় শ্রদ্ধা করেন (আমার ছোটবেলার মত) তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, কাউকে আঘাত দেওয়ার জন্য আমি এটা লিখছিনা।আমার লেখায় যথা সম্ভব রেফারেন্স দেয়ার চেষ্টা করব।

জীবনকালঃ
উইকিপিডিয়া অনুসারে উনার জীবনকাল ১০৭৭-১১৬৬ সাল। জন্ম জিলান প্রদেশ, তাবারিস্তান, পার্সিয়া। কাদেরিয়া ত্বরিকার প্রতিষ্টাতা। হাম্বলী মতবাদের অনুসারী।

উপাধিঃ
১। পীরানে পীরঃ মানে হল সব পীরদের পীর বা বড় বা শ্রেষ্ঠ পীর।এটা উনার অনুসারীরা উনার সম্পর্কে বলে থাকেন। ধরে নিলাম সুফীবাদ অনুযায়ী উনি সবচেয়ে বড় পীর। এই নিয়ে আমার কোন আপত্তি নাই।

২। দস্তগীরঃ এর অর্থ “হাত ধরা”। “দস্ত” মানে হচ্ছে “হাত” এবং “গীর” মানে হচ্ছে “ধরা”। এই সম্পর্কে যে কাহিনী প্রচলিত আছে যে উনি এবং আল্লাহ এক সাথে হাটছিলেন। হঠাৎ করে আল্লাহ পড়ে যাচ্ছিলেন এবং আব্দুল কাদের জিলানী আল্লাহর হাত ধরে ফেলেন এবং আল্লাহকে পতন থেকে রক্ষা করেন। এই জন্য উনার টাইটেল বা উপাধি দস্তগীর। প্রসঙ্গক্রমে এইখনে আমাদের দেওয়ানবাগীর উদাহরণ দেওয়া যায়। দেওয়ানবাগী সম্পর্কে একই গল্প চালু আছে। তাহলে যারা দেওউয়ানবাগীকে কাফের বলেন এবং গালাগালি করেন তারা আব্দুল কাদের জিলানীকে কি বলবেন? (দয়া করে ভেবে বসবেন না আমি দেওয়ানবাগীর মুরীদ)

৩। গাউসুল আযমঃ “গাউস” শব্দের অর্থ ত্রাণকর্তা, রক্ষাকর্তা, পরিত্রাণদানকারী, উদ্ধার কারী ইত্যাদি। এবং “আজম” শব্দের অর্থ মহান,বড় বা সর্বশ্রেষ্ঠ। গাউসুল আজম শব্দের অর্থ হল সর্ব শ্রেষ্ঠ ত্রাণকর্তা। আল্লাহ সম্পর্কে যাদের নুন্যতম ধারণা আছে তারা বুঝবেন এই উপাধি কার জন্যঃ আল্লাহ নাকি আব্দুল কাদের জিলানী।

তাহলে “পীরানে পীর দস্তগীর, গাউসুল আযম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)” এর অর্থ দাড়ায় সবচেয়ে বড় পীর, আল্লাহর হাত ধরা (পতন থেকে রক্ষা করার জন্য) সর্বশ্রেষ্ঠ রক্ষাকর্তা আব্দুল কাদের জিলানী। এই উপাধি সহ উনাকে ডাকলে শিরক হয় কি না এইটার সিদ্ধান্ত পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম।

এইখানে একটা কথা না বললেই নয় তা হল, এই উপাধি উনি নিজে নিয়েছেন বা উনার সময় উনার সামনে এই উপাধি উচ্চারণ করা হত এই ধরনের কোন লেখা আমি পাই নাই (থাকতে পারে, কিন্তু আমি পাই নাই)। এই গুলি সম্ভবত উনার পরবর্তী অনুসারীদের দেওয়া, সেইক্ষেত্রে এই অভিযোগ তাদের উপরেই বর্তায় যারা এর উদ্ভাবক, আব্দুল কাদের জিলানীর উপর নয়। তারপরেও.........

নুরুদ্দিন সামস, আব্দুল কাদের জিলানীর শিষ্য, তার নযুম-উয-যাহরানি গ্রন্থের ৬:১৪২ এই বর্ণনা করেন যেঃ বাগদাদের তৎকালীন শাসক উবায়দুল্লাহ ইউনুস ১১৭০ সালে,

১। তার কবর ধংস করে দেন,
২। তার বাড়ি ঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দেন,
৩। তার অবশিষ্ট সবকিছু আগুনে পুড়িয়ে টাইগ্রিস নদীতে নিক্ষেপ করা হয়,
৪। তার পুত্রদেরকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়
৫। সে মুশরিক এবং কাফের বলে ফতুয়া জারি করেন।
গাউসুল আযম, সর্বশ্রেষ্ঠ রক্ষাকর্তা নিজেকেই বাচাতে পারলনা, আর আমরা তাকে আমাদের বাঁচানোর জন্য ডেকে থাকি।

উনার নিজের কিছু উক্তিঃ
১। হানাফীরা দোযখের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ইমাম হুসেনের মৃত্যু বার্ষিকী অবশ্যয়ই ঈদ উৎসবের মত পালন করা উচিৎ। (গনিয়া-তিল-তালিবাইন, পৃষ্ঠা ১৯০)

২। আমার পা সকল সূফীদের গলার উপরে, সুতরাং আমি আমার পা আলী (রাঃ) এর গলার উপরে রেখেছি। (আশরার-উল-কদম, পৃষ্ঠা ১৯১)
৩। আল্লাহ আমাকে শাশ্বত করেছেন এবং আমার সাথে মিলিত হয়েছেন। আল্লাহ আমাকে এই পৃথিবী, সমস্ত সৃস্টি, এবং দোযখ আমার হাতে দিয়েছেন। (মালফুযাত, ফাতেফ রাব্বানী , মজলিস ৫১)

৪। আমার এবং বাকি সৃস্টি জগতের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এইরকম যেমন পার্থক্য পৃথিবী এবং স্বর্গের। আমাকে অন্যদের মত দেখ না, এমনকি নবীর মতও না। (মালফুযাত)

৫। আমি বয়স যখন ১০ বছর তখন থেকেই ফেরেস্তারা আমার পথ ধরে হাঁটত। (মালফুযাত)

আমার নিজের কিছু বিশ্লেষণঃ
আব্দুল কাদের জিলানীর গনিয়া-তিল-তালিবাইন এবং মালফুযাত এই দুইটি বইয়ের কিছু অংশ আমি উর্দু থেকে ইংরেজী অনুবাদ পড়েছি। সিখান থেকে আমি যা পেয়েছি তা হল...

১। উনি “তাবিজ” কিভাবে বানাতে হবে তা বিশদ ভাবে বর্ণনা করেছেন।

২। তিনি “ওসিলা” বা Intercession with God বিশ্বাস করতেন,

৩। মহিমান্বিত রাত বা কদরের রাত কে ১৫ই শাবানের রাত হিসাবে বিশ্বাস করতেন এবং প্রামান করার চেষ্টা করেছেন যেখানে কোরআনে পরিষ্কার ভাবে ৯৭ সুরায় এই রাত সম্পর্কে বলা হয়েছে। তার এই ১৫ই শাবানের রাতকে কোরআনে বর্ণিত মহিমান্বিত রাত হিসাবে বিশ্বাস করা- প্রাচীন লেখা গুলির মধ্যে একটি।

তার সম্পর্কে অন্যান্য সুফীদের করা কিছু উক্তিঃ
১। মৃত ব্যক্তিকে কবরে প্রশ্ন করা হবে “ তোমার রব কে?তোমার নবী কে? তোমার ধর্ম কি? যদি উত্তর দেওয়া হয় আব্দুল কাদের জিলানী, তবে পরীক্ষায় পাশ। (মালফুযাত ই জিলানী, ভাষ্য মইনুদ্দিন আহমেদ চিশতী)

২। আরেকজন রাসুল আসবেন যিনি আব্দুল কাদের জিলানীর অনুসরণ করবেন। (আহমেদ রাজা খান বেয়ারলেভি, হাদায়েক বখসিস কামিল, ১২০)

৩। সকল সুফী জীবিত অথবা মৃত আব্দুল কাদের জিলানীর ভাষণ শোনার জন্য সমবেত হয়, এমনকি নবী মুহাম্মদ(সাঃ)ও নিয়মিত হাজির হন। (আব্দুল হক মুহাদ্দিস, আকবারুল আকবর, ৩৯)

কিছু অমৃত সুফী বচনঃ
আমাদের এই উপমহাদেশে সুফীদেরকে আল্লহর অলি-আউলিয়া বলে মনে করা হয়। এখানে আমি কিছু বিখ্যাত সূফীর কিছু উক্তি তুলে ধরব। কাউকে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য না, বরং আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে যাদেরকে আপনারা এত বেশি শ্রদ্ধা করেন,মানেন, যাদের কথা আপনারা বিনা প্রশ্নে জীবনের পাথেয় হিসাবে মেনে নেন, যাদেরকে আপনারা আল্লাহর অলি আউলিয়া বলে মনে করেন তারা বিভিন্ন সময়ে কি বলেছেন তা আমরা একটু দেখব। তারা কি আসলেই আল্লাহর আলী আউলিয়া নাকি অন্যকিছু সেটার সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার আপনার উপর। আপনি নিজেই আল্লাহর বিধানের সাথে এই উক্তিগুলি কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ তা বুঝতে পারবেন। এই জন্য আপনাকে বিজ্ঞ আলেম হতে হবেনা, বরং নিজের কমনসেন্স ব্যবহার করুন।

১। শেখ মহিউদ্দিন-ইবনে-আরাবীঃ
ক ) আমি নবীদের চেয়ে উত্তম এবং আমার মর্যাদা নবীদের উপরে ( হাদিকা সুলতানিয়া)

খ) জ্ঞানী মাত্রই শিয়াদের শুয়োর হিসাবে দেখে (ফত্তুহাত মাক্কিয়া)

গ) কুকুর এবং শুয়োর আমাদের প্রভু (ফাসউল হুকম)

ঘ) মানুষ বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাস করে। আমি ইহুদী, হিন্দু, খৃস্টান, মাগায়ী (Zoroastrianism) সব ধর্মে বিশ্বাস করি।

মানুষ এখনও শেখ মহিউদ্দিন-ইবনে-আরাবীকে অন্যতম আউলিয়া মনে করে।

২। শাহ ওয়ালিউল্লাহঃ
ক) আমার শরীর আল্লহর রাসুলের শরীরের সাথে একীভূত হয়ে মিশে গেছে, এই জন্য আমি এবং রাসুলুল্লাহ এক। (আনফাসউল আরিফিয়ান)

খ) আল্লাহ আমার কাছে একজন অত্যন্ত সুন্দরী, দুর্নিবার আকর্ষণীয়, মোহণীয়, স্বচ্ছ পুশাকে সজ্জিত নারী হিসাবে প্রকাশ করলেন এবং সে হটাত করে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং আমার দেহের সাথে মিশে গেলেন (আনফাস-উল -আরিফিন)

গ)আল্লাহর ৯৯ টি গুনবাচক নাম আছে, আমার এর চেয়েও বেশি আছে যার সংখ্যা ৪০০০ (আনফাস-উল -আরিফিন এ উনি উনার চাচার উদৃতি দিয়েছেন)

ঘ) কিছু লোক শাহ আব্দুর রহিম (শাহ ওয়ালিউল্লাহর পিতা)কে বলছিল আমরা আল্লাহকে খুজছি। আমার পিতা বললেন আমিই সেই আল্লাহ। তারা তখন তাকে উঠে দাড়িয়ে সম্মান জানাল এবং করমর্দন করল (আনফাস-উল -আরিফিন)

ঙ) আল্লাহ আমার কাছে অত্যন্ত সুন্দরী রমণীর পোশাকে আমার কাছে এসেছিল, আমি আমার মধ্যে কামুকতা অনুভব করলাম এবং বললাম তোমার পোশাক সরাও, উত্তর আসল “এই পোশাক খুবই পাতলা যা আমার সমস্ত সৌন্দর্য প্রকাশিত করে” আমি জুরাজুরি করলে এই পোশাক সরানো হল। করল (আনফাস-উল -আরিফিন)

চ) বায়েযিদ বোস্তামি যখন ইচ্ছা যে কোন মানুষের আত্না হরণ করতে পারত। আমার চাচা আবু রাজা মুহাম্মদ এটা শুনে চিন্তিত হয়ে পড়ল, এবং বলল “বায়েযিদ মানুষের আত্না দেহে ফিরিয়ে দিতে পারতনা, তাই মানুষকে জিবীত করতে পারতনা। আমি যখন ইচ্ছা মানুষের আত্না হরণ করতে পারি এবং ফিরিয়েও দিতে পারি”। এই বলে আমার চাচা রহমতুল্লাহ কাফসদুয এর আত্না হরণ করল এবং আবার তাকে জীবন ফিরিয়ে দিল। (আনফাস-উল -আরিফিন)

ছ) রাসুল (সাঃ) শাহ ওয়ালিউল্লাহর নিকট এসে বললেনঃ হে আমার পুত্র তুমি চিন্তিত কেন? তোমার সন্তান আমার সন্তানের মতই। (আশরাফ আলী থানভী, হিকায়েত-ই- আউলিয়া)

কিছু বলা লাগবে?

৩। বায়েযিদ বোস্তামিঃ
উনি একজন বিশিষ্ট সুফী। উনার মাজার বাংলাদেশ চট্রগ্রামে অবস্থিত। যদিও উনি চট্রগ্রামে এসেছিলেন কিনা এবং চট্রগ্রামে মারা গিয়েছিলেন কি না এই সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী মতবাদ আছে। উনার মালফুজাত (নিজের বানী) থেকে কিছু উদৃতিঃ

ক। আমিই মাহিমান্বিত, পরম, বিশুদ্ধ। আমার গরিমা বর্ণনাতীত।

খ। আমার রাজত্ব আল্লাহর রাজত্বের থেকেও বড়।

গ। আল্লাহ আমার পকেটে থাকে

ঘ। আমার পতাকা মুহম্মদের পতাকার চেয়েও উর্ধে উড়ে

ঙ) আমি যখন জ্ঞান সমুদ্রে সাতার কাটতাম তখন নবী তীরে বসে দেখত।
আলী হাজবেরী (দাতা গাঞ্জ-বখস, কাস্ফিল মাহযুব) বায়েযিদ বোস্তামির “মানুষের রুপধারী আল্লাহ”এই দাবী স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন

বিশিষ্ট কিছু সুফীর আরও কিছু উল্লেখযোগ্য বানীঃ

১। একহাজার বছর গত হয়েছে সেইসাথে মুহাম্মদও। এখন আমার সময়, সময় হয়েছে আহম্মদের। এই দ্বিতীয় সহস্রাব্দ হচ্ছে আমার। -- শেখ আহমেদ সারহিন্দি

২। তাবলীগ নিসাবের “ফাযায়েল আমল” বইটি নবীর সামনে পেশ করা হয় এবং খুশিমনে উহা সত্যায়িত করে দেন। -(বেহজাতিল কুলুব-পৃ ১২)

৩। কেউই উপাস্যের যোগ্য না। আস আমার উপাসনা কর। - (জালালুদ্দিন রুমি, মাসনভী ৪:৫২)

৪। এই সকালে আল্লাহ আমার সাথে কুস্তি লড়েছেন। সে আমাকে মেঝেতে ফেলে দিয়েছেন কারন আমি তার থেকে ২ বছরের ছোট। (আবুল হাসান খারকানি, Fawaid Faridiya)

৫। হায়! মুসলমানেরা বুঝতেই পারলনা যে আল্লাহকে একমাত্র মূর্তি পুঝার মধ্যেই পাওয়া যায়। (সুফী মাহমুদ সাবিস্ত্রি, সারহ-গুলশান-ই-রাজ)

৬। নবীরা কবরে আগের মতই জীবিত এবং তারা খায়, পান করে, প্রার্থনা করে এবং তাদের স্ত্রীদেরকে কবরে পায় এবং তাদের সাথে মিলিত (সেক্স) হয়। (আহমেদ রাজা খান বেয়ারলেভী , মালফুযাত)

৭। খাজা মইনুদ্দিন চিশতী তার শিষ্যদেরকে নতুন কালেমা শিখিয়েছিলেন। “আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই এবং চিশতী তার রাসুল” (খাজা ফরিদউদ্দিন গাঞ্জ সাকার, Fawaed-us-Saalikeen)

৮। শুক্রবারের জুম্মা নামাযের শেষে একটা ছাগলের সামনের পা (রান) নাও, সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে যাও, এরপর সূরা ইয়াসিন এবং তুমি যাকে চাও তার নাম লিখ। তারপর ঐ ছাগলের রান একটা পাত্রের মধ্যে একসাথে রাখ, তাহলে যার নাম লিখা হয়েছে সে অবশ্যয় তোমার প্রেমে পরবে। (আশরাফ আলী থানভী-যাকে মানুষ হাকিমুল (জ্ঞানী) উম্মত বলে , মাসিক খালিদ, দেওবন্দ দারুল উলুম)

৯। দ্রুত সন্তান প্রসবের জন্য প্রসবকারিনীকে “মুয়াত্তা-ই-মালিক” ধরে রাখতে দাও। (আশরাফ আলী থানভী, আমলে কোরানি)

১০। সূফীদের অসম্মান করা আল্লাহ কে অসম্মান করার চেয়েও বেশি বিপদজনক (আশরাফ আলী থানভী, পাক্ষিক আল-আশরাফ, নভেম্বর ১৯৯১, পৃঃ ২৩)

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:০৬

আজমান আন্দালিব বলেছেন: জানা হলো অনেক কিছুই ...

২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১:৪৩

মোহাম্মদ জামিল বলেছেন: চরম হয়েছে হানিফ ভাই.....পুরো ৪ পর্ব পড়ে আমার মন্তব্য হল------কোরান নিজের ভাষায় না পড়া, না বুঝা, কারনে মানুষ আজ বিপথে.... আল্লাহ সবাইকে কোরান বার বার পড়ার তৌওফিক দান করুন [ আমিন বলবো না...আমিন ও কোরানের সাথে সংযোজন যা ইহুদি দের কাছ থেকে এসেছে ]

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫২

হানিফঢাকা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:১২

সুচিন্তিত মতবাদ বলেছেন: খুব ভাল লেখা।

০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪২

হানিফঢাকা বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৫

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: ইসলামে কি অলৌকিক ঘটণা নেই????

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪১

হানিফঢাকা বলেছেন: ইসলামে অলৌকিক ঘটণা আছে কিনা তা গবেষনার দাবী রাখে। আমি আপনাকে এই ব্যপারে কোন সদুত্তর দিতে পারবনা। এটা সত্যিকার অর্থে অনেক বড় আলচনার বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, যে জিনিশ গুলি মানুষ অলৌকিক বলছে, হয়ত তার কিছুদিন পরে এর ব্যখা পাওয়া যাচ্ছে।

আমার এইখানের বিষয় অলৌকিক ঘটনা নয়, বরং দেখাতে চাচ্ছি এই খানে উল্লিখিত সূফীরা যেসব কথা বলেছেন বা করেছেন তা কোরআনের মুল ভিত্তির সাথে সাঙ্ঘ্রসিক। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.