নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফানডামেনটাল

;

হানিফঢাকা

So peace is on me the day I was born, the day that I die, and the day that I shall be raised up to life (again) (১৯:৩৩)

হানিফঢাকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

২৫ শে ডিসেম্বর কি সত্যি ঈসা (আঃ) এর জন্মদিন?

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫৩

সমগ্র খৃস্টান পৃথিবী ২৫ শে ডিসেম্বর জিসাস ক্রাইস্ট বা ঈসা (আঃ) এর জন্মদিন পালন করে থাকে। এই প্রথা অনেক আগে থেকে চালু হয়ে আসছে। এর উৎপত্তি সম্ভবত রোমান সম্রাজ্য থেকে। যদিও বর্তমান যুগে অনেক খৃষ্টান স্কলার বিশ্বাস করেন যে ২৫ শে ডিসেম্বর জিসাস ক্রাইস্টের জন্মদিন নয়, তবু সবাই এটা পালন করে। স্ক্রিপ্টার (বাইবেল এবং কোরআন) অনুযায়ী ২৫ শে ডিসেম্বর জিসাস ক্রাইস্টের জন্ম দিন নয়, এমনকি জন্ম মাস ও নয়। আমি ডিটেইলস আলোচনায় যাব না। খুব সংক্ষেপে এই এই বিষয়ে বলছি।

বাইবেল অনুসারেঃ
বাইবেল অনুসারে ২৫ শে ডিসেম্বর যে জিসাস ক্রাইস্টের জন্মদিন নয় এটা অনেকভাবে প্রমান করা যায় যেমন এলিজাবেথ ( জন দ্য ব্যাপ্টিস্ট বা হযরত ইয়াহিয়া (আঃ) মাতা, অর্থাৎ যাকারিয়া (আঃ) স্ত্রী) এর গর্ভধারণের সময়কাল এবং মেরি বা মরিয়মের গর্ভধারণের সময়কালের ব্যবধান যা কিনা বাইবেল অনুসারে ৬ মাস, মরিয়মের বেথেলহামে আসার সময়, ঈসা (আঃ) এর জন্মের সময় আকাশে নক্ষত্রের আভির্ভাব (খূব সম্ভবত হ্যালির ধুমকেতু) ইত্যাদি। আমি এত ডিটেইলস এ যাবনা, বরং বাইবেল থেকে খুব সিম্পল কিন্তু খুবই শক্ত একটা উদাহরণ দেব।

বাইবেলে ঈসা (আঃ) এর জন্মের সময় রাতে মেষপালকদের মেষ চড়াবার কথা আছে, যা খুবই অস্বাভাবিক। বাইবেলের লুক ২:৮ এ আছেঃ

And there were shepherds living out in the fields nearby, keeping watch over their flocks at night (Luke 2:8)
জেরুজালেম বা প্যলেস্টাইন উত্তর গোলার্ধে (Northern Hemisphere) অবস্থিত। এই উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত অঞ্চল গুলিতে ডিসেম্বর মাসে প্রচন্ড ঠাণ্ডা থাকে, এবং চরন ভুমি উর্ভর থাকেনা। মেষ পালক কোন অবস্থাতেই এই শীতের রাতে বাইরে মেষ চড়াবে না, কারন এই রকম ঠাণ্ডায় মেষ পালক এবং তার মেষের পাল ঠাণ্ডায় জমে যাবে। এটা এখনও খুবই অস্বাভাবিক একটা ব্যাপার। সুতরাং মেষ পালকদের রাতে মেষ চরানর ঘটনা ডিসেম্বর মাসের ঘটনা না, এটা গ্রীস্ম কালীন সময়ের ঘটনা যখন রাতে ঠাণ্ডা কম থাকে এবং চরন ভুমি উর্ভর থাকে। সুতরাং বাইবেলের এই কাহিণী অনুসারে, ঈসা (আঃ) এর জন্মদিন বা মাস ২৫শে ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরে নয়।

কোরআন অনুসারেঃ

কোরআন অনুসারে ঈসা (আঃ) এর জন্মের সময় হচ্ছে গ্রীষ্মকাল বা মধ্য গ্রীষ্মকাল। সূরা মরিয়মেরে ২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে

And shake toward you the trunk of the palm tree; it will drop upon you ripe, fresh dates

আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কান্ডে নাড়া দাও, তা থেকে তোমার উপর সুপক্ক খেজুর পতিত হবে।

খেজুর কখন পাকে? সাধারণত গ্রীষ্মকাল বা মধ্য গ্রীষ্মকাল। সুতরাং কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী ঈসা (আঃ) এর জন্মদিন কোনভাবে ডিসেম্বর বা শীতকালে নয়।

২৫ শে ডিসেম্বের ঈসা (আঃ) এর জন্মদিন- এই ধারনার উৎপত্তিঃ

আগেই বলেছি, এটা রোমানদের থেকে এসেছে। খৃষ্টান পৃথিবী অনেক বছর রোম দ্বারা ডমিনেটেড ছিল। রোমানরা তাদের সূর্য দেবতার ( সান গড) পুজা করত। প্যাগানরা শীত কালের শুরুতে সূর্যকে পৃথিবী থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যেতে দেখত, অর্থাৎ পৃথিবীর কক্ষপথের কারনে শীতকালে পৃথিবী এবং সূর্যের দূরত্ব বাড়তে থাকে যা প্যাগান রা মনে করত সূর্য ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে। তারা এই সূর্যের দূরে সরে যাওয়া কে মনে করত কোন অশুভ শক্তি তাদের সূর্য দেবতা কে গ্রাস করে ফেলছে। ডিসেম্বের ২১ তারিখ হচ্ছে বছরের সবচেয়ে ছোট দিন। এর পরে আবার পৃথিবী এবং সূর্যের দূরত্ব কমতে থাকে এবং দিন বড় হতে থাকে। তখন কার দিনের প্যাগান রা ২৫ শে ডিসেম্বর অনুভব করতে পারত যে দিন বড় হচ্ছে এবগ্ন সূর্য ক্রমশ কাছে আসছে। এই জন্য তারা বিশ্বাস করত এই ২৫শে ডিসেম্বর সূর্য দেবতা অশুভ শক্তির হাত থেকে জয়ী হয়ে আবার জন্ম নিচ্ছেন। আর এই জন্যই রোমান প্যগানদের মধ্যে ২৫ শে ডিসেম্বর কে তারা তাদের সূর্য দেবতার জন্ম দিন হিশাবে পালন করত। (গ্রীক দেবতা হারকিউলিসের জন্ম দিন ও এই দিনে।)
রোমানরা যখন খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করে তখন তাদের অনেক কালচার তারা এই খৃষ্টান ধর্মের সাথে যোগ করে। এই ভাবে সান গডের জন্মদিন কে রিপ্লেস করে তারা সান অফ গডের জন্মদিন হিশাবে পালন করে। আর এইভাবেই ২৫ শে ডিসেম্বর ঈসা (আঃ) জন্ম দিন পালন করা হয়ে আসছে। এখনও যারা ২৫শে ডিসেম্বর জিসাস ক্রাইস্টের জন্মদিন পালন করেন তারা মুলত “সান অফ গড” এর নয় বরং “সান গড” এর জন্মদিন পালন করছেন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:

বাংগালীরা ৯০% নিজের জন্মদিন জানে না, যীশুরটা জানা কি খুবই দরকার?

খৃস্টানরা উনার উন্মত, খৃস্টানরা যেটা পালন করবে, সেটাই উনার জন্মদিন, হিসেব সোজা

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৫

হানিফঢাকা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আমি বিষয়টা থিওলজিক্যল পারস্পক্টিভে লিখেছি। ৯০% বাংগালীরা অনেক কিছুই জানে না, তাই বলে কি নতুন কিছু জানবেনা? প্রশ্ন হচ্ছে কোনটা দরকার আর কোনটা নয়। দরকারের বাইরেও মানুষ অনেক কিছু জানে বা শিখে। সেক্ষেত্রে একেক মানুষের ইন্টারেস্ট একেক রকম। কেউ রজনীতি সম্পর্কে আগ্রহী, কেউ সমাজ ব্যবস্থা, কেউ বিজ্ঞান, কেউ ধর্ম।

খৃস্টানরা উনার উম্মত ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু আমি ইসলাম ধর্মের অনুসারী, আমার গ্রন্থ (কোরআন) অনুযায়ী সব নবীই ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন, সবাই মুসলমান ছিলেন ( মুসলমান বলতে কোন বিশেষ কোন দলকে নয়, বরং এর অর্থ এবং ব্যবহারিক প্রয়োগের ভিত্তিতে), এবং ইসলামে সব নবীই গুরত্বপূর্ণ এবং সমান মর্যাদার অধিকারী।

সুতরাং খৃস্টানরা উনার সম্পর্কে যা বলবে, তার সবই সত্য তা মেনে নেবার কোন কারন নেই, এর যৌক্তিকতা ও দেখতে হবে।

২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৮

আরব বেদুঈন বলেছেন: পোস্টের জন্য ধন্যবাদ অসাধারিণ তথ্যবহুল পোস্ট দিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.