নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সরাইখানা

পথে থাকি, পথেই ঘুমাই, পথেই কাটে সারাবেলা পথভোলারা পথ পুছিলে নেই না কোন অবহেলা

নিরীহ জন

নিরীহ জন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ: আইএস এবং আমাদের মানবতাবোধ।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১

সারা বিশ্ব বলছে আইএসের কথা। আইএসের ভয়াবহতার কথা, আইএসের নৃশংসতার কথা। আমরা যেহেতু বিশ্বের অধীন, আমরাও বলছি। সারা বিশ্বর সকল মিডিয়ার সাথে আমরাও কোরাস গাইছি, এটা অন্যায় এটা অনুচিত এটা বর্বরতা।
আহ! আমরা কত অন্যায় সচেতন।

আচ্ছা এই আইএস কারা? ইরাক, সিরিয়ার একটা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে গড়ে উঠা একটা বাহিনী। এই লোকগুলো শান্ত-শিষ্ট একটা দেশে বাস করার পর হঠাতই আইএস হয়ে উঠেছে, হঠাত করেই তারা ভয়াবহ জঙ্গী, ভয়াবহ সন্ত্রাসী হয়ে গেছে, তাই না!

হাজার বছরের ইতিহাস টেনে জটিল হিসাব-নিকাশ কষার দরকার নেই। শুধু আপনার নিজের চোখে দেখা পূর্বের কয়েকটি বছরের হিসাবটা টানুন। দেখবেন এদেরকে অপরাধী বানাতে আপনার কষ্ট হবে।

ইরাকীরা ভালোই ছিল। দীর্ঘদিনের অন্যায় অবরোধ সয়ে সয়েও বেশ শান্তিতে ছিল। এরপর বিশ্ব মোড়লের মনে হলো তারা মরণাস্ত্র রাখছে। বিশ্বমোড়ল তার অত্যাধুনিক নখের আঘাতে আমাদের চোখের সামনে দেশটিকে দেখতে দেখতে ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলল। এরপর বিশ্বমোড়ল আমাদেরকে জানাল তার ঐ মনে করা ভুল ছিল। ইতোমধ্যে বাগদাদবাসী দেখল তাদের দুই লাখ মানুষ নাই হয়ে গেছে। এই নখরাঘাতে হারিয়ে গেছে। এরপর থেকেই গাড়ীবোমা দেশটি নিত্য সঙ্গী। আজ এখানে গাড়ি বোমায় ৭০ জন মরে তো কাল ওখানে ১৩০ জন।

এসব ঘটনা এমনই নিত্য হয়ে গেল যে দৈনিক পাত্রিকাগুলো ওসব ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে ছাপানোর আগ্রহেও ভাটা পড়ল। মানুষ ৭০ হোক আর ১০০ হোক ভিতরের পাতায় নিউজ আসতো বাগদাদের গাড়ি বোমা..। হুহ।

এরপর সিরিয়ায় আমরা কী দেখলাম। বাশারের বিরুদ্ধে সে দেশের জনগণই বিদ্রোহ করল। নিজেরা নিজেদের শাসক নিয়োগের ক্ষমতা চাইল। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা বাশার বুঝল জনগণের দ্বারা শাসক নিয়োগ হলে তার আর ক্ষমতা থাকবে না। সে এ বিদ্রোহকে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে রূপ দিয়ে বিরোধীদের নির্মূল করতে চাইল। বিরোধী পক্ষ সুন্নীরা সংখ্যায় বৃহৎ। তারা গায়ের জোরে এ দমন মানবে কেন? তারা রুখে দাঁড়াল। পৃথিবীতে গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলা পৃথিবীর বৃহত শাক্তির অধিকারী মোড়লেরা গ্যালারিতে বসল খেলা দেখার জন্য। স্পষ্টভাবে কোন এক পক্ষ নিয়ে সর্বোতভাবে তাদের পক্ষে দাঁড়াল না। ফলে কী হল। অল্প দিনের মধ্যে সিরিয়ায় অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিহতের সংখ্যা দু লক্ষের কোটা অতিক্রম করল।

অবশেষে বাশার যখন কোনঠাসা, পতনের দ্বারপ্রান্তে, তখন এক বিশ্ব মোড়ল রাশিয়ার মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী নৈতিকতাবোধ, চাগিয়ে উঠল। সে সরাসরি এ যুদ্ধে জড়িয়ে সন্ত্রাস নির্মূলের বৈশ্বিক দায়িত্ব অনুভব করল। কারা সন্ত্রাস? যারা তথাকথিত মরণাস্ত্র রাখার মিথ্যা অজুহাতে লক্ষ-লক্ষ মানুষকে নিজের চোখে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে দেখে নতুন পৃথিবী গড়ার শপথ নিয়েছে তারা সন্ত্রাস। যারা বাশারের হাতে দু বছর ধরে নিঃশেষ হতে হতে গিয়েও নতুন পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে আজও বেঁচে রয়েছে তারা সন্ত্রাস।

তাদের দোষ হলো তাদের এই নতুন করে বাঁচার নাম দিয়েছে “খিলাফত”। ভয়াবহ জিনিস। খিলাফত ছাড়াই তাদের নিকট ‘ইসলাম’ সন্ত্রাসে ভরপুর। আর খিলাফত আসলে তো কথাই নেই। পুরো পৃথিবীটাই হয়ে যাবে সন্ত্রাসের স্বর্গভূমি। জানি এরপরও আই এসের কিছু কিছু নৃসংশতা কিংবা বাড়াবাড়ি আপনাকে তাড়িত করে, করবেই। কারণ এক কঠিন বাস্তবতা দেখে তারা জন্ম নিয়েছে। যেখানে চোখের সামনে কিছু বুঝে উঠার আগেই বাপ-বোনের তরতাজা দেহ বোমার আঘাতে তড়পাতে তড়পাতে নিঃশেষ হয়ে যায়। কোনদিনই জানা যায় না কী ছিল তাদের অপরাধ। এমন বাস্তবতার পর আপনিও কিছুটা এমন হয়ে যাবেন।

সন্ত্রাসমুক্ত পৃথিবী দেখতে চাইলে বিশ্বমোড়লগুলোর উচিত এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তাদের সরে যাওয়া। তারাই সমস্যা তৈরি লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করে। এরপর সেই সমস্যা দমনের নামে আরো হাজারো লক্ষ মানুষকে হত্যা করার যৌক্তিকতা আমাদের সামনে হাজির করে। বিশ্বমোড়লদের মানবতা মানে মানবতার বিভৎস রূপ। এই বিভৎস রূপী মানবতা যখন মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের সামনে পরিবেশিত হয় আমরা কথিত মানবতাবোধে কাতর হয়ে পড়ি। ভাবি আইএস কত খারাপ!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.