নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি- হাসান জাকির। অজ পাড়াগাঁয়ে বড় হয়েছি। কিন্তু জীবিকার তাগিদে শহুরে জীবনে আটকা পড়ে আছি। কাজ করছি- স্বাস্থ্য সেবা খাতে। ভালবাসি নিজেকে- নিজের পরিবারকে, দেশকে- দেশের মানুষকে। সারাদেশে ঘুরে বেড়ানো আমার নেশা।

হাসান জাকির ৭১৭১

জীবনের জন্য কাজ, জীবের জন্য ভালবাসা।

হাসান জাকির ৭১৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈশাখী ভাতা সার্বজনীন হোক

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:০৩

বৈশাখী ভাতা সার্বজনীন হোক
শেখ নাহিদ নিয়াজী
গত বছর বৈশাখে প্রায় ২১ লাখ সরকারি চাকরিজীবী প্রথমবারের মতো বৈশাখী ভাতা পেয়েছিলেন। এ বছর ইতিমধ্যে নিশ্চয়ই সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা বৈশাখী ভাতা পেয়ে গেছেন। অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে 'ফরাসউদ্দিন পে কমিশন' প্রথমবারের মতো বৈশাখী ভাতার সুপারিশ করে এবং ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫-তে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বেতন স্কেল বাস্তবায়নের ঘোষণা আসে। এই পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
বর্তমানে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা তাদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন। ২০১৬ সালে এটি বাস্তবায়িত হওয়ার আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার কোনো একটি বক্তৃতায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন যে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীরাও বৈশাখী ভাতা থেকে যেন বঞ্চিত না হয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, এটি বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। এই সার্বজনীন উৎসব কি শুধু ২১ লাখ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য? লাখ লাখ লোক যারা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত তারা কি এই উৎসব পালন করবেন না? এটি কি রাষ্ট্রীয় বৈষম্য নয়? যদিও গত বছর অল্প কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মূলত ব্যাংক (আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং এনআরবি গেল্গাবাল ব্যাংক) প্রধানমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রথমবারের মতো বৈশাখী ভাতা চালু করে (সূত্র : দৈনিক প্রথম আলো, ১১ এপ্রিল ২০১৬)। তাদের এই উদ্যোগ বেসরকারি খাতের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বৈশাখী ভাতা চালু করার ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহ জোগাবে, এমনটি ভাবা গিয়েছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা এখনও পর্যন্ত বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো (স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা, মিডিয়া, করপোরেট হাউস, হাসপাতাল, শিল্প কল-কারখানা, গার্মেন্ট ইত্যাদি) থেকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখিনি।
এ বছর পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি রয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীরা বৈশাখী কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছেন। অনেকেই বিভিন্ন দামের ইলিশ মাছও কিনছেন। রঙবেরঙের পোশাক-পরিচ্ছদ কিনছেন। তাদের কাছে এটি ঈদ-পূজার মতোই একটি উৎসব। অন্যদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লাখ লাখ চাকরিজীবী গত বছরের মতো এবারও ম্যাড়মেড়ে উদযাপনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলা বছরকে বরণ করবেন। তাদের উৎসব পালনের মধ্যে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং নতুনত্ব নেই। তাহলে কীভাবে এই উৎসবের সার্বজনীনতা সমাজের সব স্তরের, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করাবে? শুধু কয়েক লাখ সরকারি চাকরিজীবীর জন্য প্রদেয় এই বৈশাখী ভাতা কি সামাজিক বৈষম্য তৈরি করছে না? সে ক্ষেত্রে এ বছরও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা স্বভাবতই এক ধরনের হতাশা এবং বঞ্চনা নিয়ে এ উৎসব পালন করবেন।
এ বিষয়ে বেসরকারি খাতগুলোর কর্তাব্যক্তিদের উদ্দেশে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট একটা ঘোষণা আসা প্রয়োজন, যাতে করে বেসরকারি খাত প্রধানমন্ত্রীর ওই আবেদনের প্রতি সাড়া দিয়ে অতিসত্বর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে বৈশাখী ভাতা চালু করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে। অন্যথায় এই বৈষম্য সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রোথিত হবে। শেষ পর্যন্ত বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীরা নিজেদের 'বেসরকারি নাগরিক' হিসেবে গণ্য করবেন, যদিও সরকার প্রতিবছর একটা বিশাল অঙ্কের আয়কর বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের কাছ থেকেই পেয়ে থাকেন। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম সরকারের কাছ থেকে এ রকম একটি ঘোষণার জন্য।
সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং সাধারণ সম্পাদক, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন
[email protected]
- See more at: Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.