নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি- হাসান জাকির। অজ পাড়াগাঁয়ে বড় হয়েছি। কিন্তু জীবিকার তাগিদে শহুরে জীবনে আটকা পড়ে আছি। কাজ করছি- স্বাস্থ্য সেবা খাতে। ভালবাসি নিজেকে- নিজের পরিবারকে, দেশকে- দেশের মানুষকে। সারাদেশে ঘুরে বেড়ানো আমার নেশা।

হাসান জাকির ৭১৭১

জীবনের জন্য কাজ, জীবের জন্য ভালবাসা।

হাসান জাকির ৭১৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবধর্ম...

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১৭

সকাল ঠিক ৯ টায় দ্বি-চক্রযানটি দুজন আরোহী নিয়ে সেনপাড়া থেকে একটি বিশেষ কাজে নীলফামারীর পথে যাত্রা শুরু করে।
১ম জন- অতি রক্ষণশীল সনাতনী ধর্ম ইসকন এর অনুসারী। যিনি হয়ত বিশেষ ফুলে পূজোর শেষে সারাদিনের নিরাপত্তা, সুস্থতা ও সাফল্য কামনায় বিশেষ মন্ত্র জপে ঠাকুর সমীপে সকালের প্রার্থনা করে বাইকের ড্রাইভিং সিটে বসেছেন।
আর ২য় জন- আধুনিক উদারপন্থী মুসলিম। তিনিও হয়ত বিশেষ দোয়া পাঠ করে একই কামনায় পিছনের আসনে বসে পড়েছেন।
হাইওয়ে নয়, অনেক পথ ঘুরে অনেক কিছুর পরে সেটি থামল নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
প্রোগ্রামের সকল সেশন শেষে একজন বসে থাকেন আরেকজনের জোহরের নামাজ শেষের অপেক্ষায়। ১ম জন তার সম্প্রদায়ভুক্ত সুনির্দিষ্ট স্থান ব্যতীত অন্যকারো হাতের কোন খাবার বা পানীয় গ্রহণ করেন না। যদিও ২য় জন তেমন কোন বাছ-বিচার ছাড়াই হালাল সর্বভুক। তাই দুজনের দুপুরের খাবার শেষ হয় আলাদা স্থানে অবেলায়।
ফিরতে হবে। নীলফামারী হতে রওয়ানা হতেই আসরের আজান শোনা যাচ্ছিল। তাই, সৈয়দপুর এসে একজন অপেক্ষায় থাকে অন্যজনের নামাজ শেষের ও সাথে থাকে চা পানের সময়।
তারপর দুজনের গন্তব্য তারাগঞ্জে অবস্থিত ইসকন মন্দির। বিভিন্ন ফুলের বাগান সহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিপাটি পুরো মন্দির এলাকা। অভ্যর্থনা দেখেই বুঝা যায় ১ম জন এখানে বেশ পরিচিত, প্রায়ই আসেন, থাকেন। ভিতরে প্রবেশের পূর্বে ১ম জন মন্ত্র পড়ে প্রনাম করে নিজেকে হয়ত পরিশুদ্ধ করে নেয়ার চেষ্টা করে! আর ২য় জন এখনো জোহরের অজু সহ, পুত-পবিত্র! মন্দিরের ভিতরে অতি সুরক্ষিত বিশেষ অংশে বেশ পরিচ্ছন্ন বিশেষ ডিজাইনের দামী পোশাক, অলংকার, ফুল ও পুষ্পমাল্যে সুসজ্জিত কৃষ্ণ, তার বাম পাশে রাধা আর ডান পাশে তাদের মহাপ্রভুর প্রতিমা। প্রতিদিন নাকি এসব পোষাক পরিবর্তন করা হয়। নতুন করে আবার সাজানো হয়। এসব কাজে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ও অনুমতিপ্রাপ্ত পূজারী রয়েছেন। মাটির প্রতিমার গায়ে এত সুসজ্জিত মূল্যবান পোষাক, অলংকার, পুষ্পমাল্য দেখে অনেকের মনে হয়ত অনেক প্রশ্ন উদয় হতে পারে। তবে, ভক্তের সর্বোচ্চ সামর্থ্যের মূল্যবান উপহার তার প্রভুদের গায়ে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
১ম জনের বিশেষ প্রার্থনা শেষে ঘুরেফিরে মন্দির পরিদর্শন করে আবার যাত্রা শুরু হয়।
তবে তারাগঞ্জের একটু সামনে এগিয়েই একজন আবারো অপেক্ষা করে আরেকজনের মাগরিবের নামাজ শেষের।
বাইক রংপুরের পথে। রাতের হাইওয়ে এত ছোট যানবাহনের জন্য একটু ঝুঁকিপূর্ণ। ১ম জন হয়ত মনে মনে ঠাকুরের কাছে মন্ত্র জপে। হয়ত ২য় জনও মনে মনে দোয়া পড়ে, তছবী জপে। এবং যথাসময়ে সম্পূর্ণ নিরাপদে, ছহি-ছালামতে বাইক পৌছে ২য় জনের বাসার সামনে।
দুজনের সারাদিনের দৃশ্যত আচারে, মন্ত্র-দোয়ায় পার্থক্য সুস্পষ্ট হলেও তা পৌছে হয়ত একই স্রষ্টার দরবারেই। দুজনই নিজেকে সপে দেন নিজ নিজ প্রভূর কাছে। তবে দুজনেরই নিরাপত্তা, সুস্বাস্থ্য, সাফল্যের ভার নেন হয়ত একই স্রষ্টাই।
আর দিনের শুরুতে যা ছিল, দিন শেষেও তাই। দুজনের ধর্ম হয়ত একটাই। তা হল- মানবধর্ম।।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৪৭

Abdullah Al Noman বলেছেন:
স্রষ্টা একজনই।তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তিনি কাউকে জন্ম দেননি।তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি।তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন।যে যেখান থেকেই তাকে ডাকুক না কেন,তিনি সারা দেন।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১১

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: যথার্থ বলেছেন ।
ধন্যবাদ ভাই।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:০৮

রক বেনন বলেছেন: আসলেও তাই। চমৎকার লিখেছেন হাসান ভাই।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৪

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।
আপনার সুন্দর মন্তব্যে নিজেও ধন্য হলাম।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১০

রুদ্র নাহিদ বলেছেন: আর কত ধর্মে ধর্মে, মানুষে মানুষে হানাহানি, ঘৃনা, হত্যা। অসাম্রদায়িক বাংলাদেশ চাই, অসাম্রদায়িক বিশ্ব চাই। সবার উপর মানবধর্ম। স্রষ্টা তো একজনই শুধু উনার সান্নিধ্যে যেতে একেক ধর্মে একেক নিয়ম।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:১৬

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: চমৎকার বলেছেন ভাই- সবার উপর মানবধর্ম।
এটাই সবার কাম্য হওয়া উচিৎ।
নিরন্তর শুভকামনা।

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৭

বারিধারা ২ বলেছেন: সুন্দর একটা বার্তা দেয়া হয়েছে কিন্তু সমস্যা হল নামাজ পড়া হিন্দু ধর্মের দৃষ্টিতে কোন অপরাধ না হলেও মূর্তিপূজা তথা শিরক করা ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় অপরাধ - যে অপরাধের কোন ক্ষমা নেই। তাই দুই ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। এখানে ২য় ব্যক্তি মুসলিম না হয়ে অন্য কোন ধর্মাবলম্বী হলে লেখকের মেসেজ আরও চমৎকারভাবে ফুটে উঠত।

০২ রা মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:১৩

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
নামাজ পড়া হিন্দু ধর্মের কোন অনুসারীর জন্য সে ধর্মের দৃষ্টিতে হয়ত গ্রহণযোগ্য নয়, হয়ত অপরাধ ও।
মূল বিষয় হল- যে যেই ধর্মের অনুসারীই হোক পরষ্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা খুব জরুরী।
আর সবার উপরে- মানবধর্ম।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.