নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১
লুবনা ভেবে পাচ্ছে না, প্রতিদিন তার গোলাপ গাছগুলোতে এই চিঠিগুলো ছেলেটা কখন, কীভাবে বেঁধে যায়। এই কাণ্ড যে ঐ পুঁচকে ছেলেটার কাণ্ড তা সে শতভাগ নিশ্চিত। গত মাস দুয়েক হয়েছে নীচের তলায় মেইন গেটের কাছের ফ্ল্যাটে ভাড়া এসেছে যে পরিবার, তাদের ছোট ছেলে... ক্লাস এইটে পড়ে। লুবনা এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে অবসর সময় কাটাচ্ছে, আগের মত যত্ন নিতে পারছে ছাঁদের উপর তার গড়ে তোলা ছোট্ট গোলাপ বাগানটার। কিন্তু এই ছেলে যেদিন থেকে এই বাসায় এসেছে, লুবনাকে ছায়ার মত বোধহয় অনুসরণ করছে। প্রতিদিন সময় করে লুবনার বাবা অফিসে বের হয়ে গেলে বেলা এগারোটার দিকে ফুল ভলিউমে গান ছেড়ে দেয়, ‘পাশের বাড়ীর ঐ মেয়েটি বলল সেদিন এই, তুমি ছাড়া এই জীবনে আর তো কিছু নেই...’
কাঁচা হাতের লেখা চিঠিগুলো পড়তে অবশ্য মজাই লাগে লুবনার। কি উদ্ভট সব কথাবার্তা, পড়লে নিজেরই হাসি পায়। তার থেকে কমপক্ষে বছর দুইতিনের ছোট একটা ছেলে প্রতিদিন তাকে প্রেমপত্র লিখছে, তাও খুবই সিনেমাটিক ভাষায়। মাঝে মাঝে রাগও হয়। কি অসভ্য ছেলে, লুবনা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। কিন্তু এই ছেলের উৎপাত কিন্তু বেড়েই চলেছে। ছেলেটার নাম শিপলু, একটু মোটার দিকে গড়ন, কোঁকড়া কোঁকড়া চুল... সবই ভালো, কিন্তু ছেলেটা কেমন খ্যাত মতন, কি সব হাস্যকর যে হয় তার চিঠিগুলো। অসংখ্য বানানে ভুল, প্রায় চিঠিতেই কোন চটুল বাংলা বা হিন্দি গানের ভুলভাল কলি লেখা থাকবে।
সমস্যা হল লুবনা চিঠিগুলো সব ফেলে দিতেও পারছে না, কেমন মায়া লাগে ফেলে দিতে। কিন্তু এগুলো জমিয়ে রাখাও সম্ভব না। তার সাথে শিপলুর সাহস দিন দিন বেড়েই চলেছে, লুবনা ভেবে পায় না এতোটুকুন পিচ্চি ছেলে এই প্রেম ভালবাসার বুঝেটা কি? অবশ্য লুবনাও যে খুব একটা বেশী কিছু বুঝে এমন নয়, স্কুলে বান্ধবীদের অনেককেই প্রেম করছে এমন শুনেছে। কিন্তু খুব একটা পরিস্কার ধারণা নেই তারও, কিন্তু শিপলু... যে ছেলের এখনো গোঁফের রেখা ঠিকমত উঠেছে কি না সন্দেহ আছে, সে প্রতিদিন প্রেম ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লুবনাকে প্রেমপত্র লিখে যাচ্ছে।
একদিন বিকেল বেলা গোলাপ গাছের চিঠি হাতে পড়ে গেল বাড়ীওয়ালাদের বড় মেয়ে যূথী আপুর হাতে। যূথী আপু অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে, চিঠি হাতে নিয়ে হাজির লুবনাদের ফ্ল্যাটে।
‘কিরে লুবনা? কবে থেকে’
‘কি কবে থেকে?’ লুবনা কিছুটা অবাক হল।
‘ডুবে ডুবে জল...’
‘মানে?’
‘এই বয়সেই প্রেম পিরীতি শুরু করে দিলি...’
‘কি সব আবোল-তাবোল কথা বল আপু...’
‘হুমম... আবোল তাবোল কথা! ছাঁদের উপর গোলাপ বাগান, সেই বাগানে ঝুলছে চিঠি...’ বলে যূথী আপু খিলখিল করে হেসে উঠল। লুবনা বুঝতে পারলো ঘটনা কি ঘটেছে।
লুবনা পুরো ঘটনা যূথী আপুকে খুলে বলল। কিন্তু যূথী আপুর ধারণা এটা ঐ ছেলের কর্ম নয়। ও এতোটা সাহস পাবে না, নতুন ভাড়া এসেছে, দুই মাসও হয় নাই। বরং এটা পাঁচতলার রতনের কাজ হতে পারে। রতনটা স্কুল থেকে আসার পর প্রায় সারাদিনই ছাঁদে ঘোরাফেরা করে। এটা নিশ্চয়ই ঐ বদ ছেলেটার কাজ। লুবনা তো আকাশ থেকে পড়ল! রতন... আরে ওর সাথে তো প্রায় বিকেলেই লুবনার কথা হয়। লুবনা ছাঁদে গাছগুলোতে পানি দিতে গেলে দেখে ছাঁদে ঘুড়ি ওড়াচ্ছে। রতনের সাথে কতদিন গল্প করেছে লুবনা, কখনো তেমন কিছু মনে হয় নাই।
উফ... এখনকার পিচ্চি পিচ্চি ছেলেগুলো সব এতো ইঁচড়ে পাকা হয়ে যাচ্ছে, বলার বাইরে। রতনও তো ক্লাস এইটেই পড়ে! যূথী আপু লুবনার কাছ থেকে চিঠি নিয়ে বিকেল বেলা ছাঁদে এসে রতনকে পাকড়াও করল। রতন তো প্রথমে কিছুই বুঝতে পারছিল না। সে লুবনা আপুর গোলাপ গাছে কোন দুঃখে কাগজ বাঁধতে যাবে। সে ঘুড়ি ওড়ায় ছাঁদের যে প্রান্তে গাছগুলো আছে, তার বিপরীত দিকে। ফলে কোন কাগজ গাছে আটকানোর কথাই নয়।
যূথী আপু যখন রতনকে চিঠি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করল, ‘এটা তোর হাতের লেখা না?’ তখন রতন চিঠি পড়ে ঘটনা বুঝতে পারল। হাতের লেখা তার নয়, কিন্তু কেউ একজন যে লুবনা আপুকে প্রেমপত্র লিখেছে তা বুঝতে পারল। সেদিন সারাটা সন্ধ্যা কোন এক অজানা কারণে রতনের মনের মাঝে শুধু লুবনা আপুর কথা মনে হতে লাগল। চোখ বন্ধ করলেই যেন শেষ বিকেলের আলোতে ছাঁদে দেখা লুবনা আপুর অনেক অনেক মুখচ্ছবি ভেসে উঠছে। রাতে রতন লুবনা আপুকে নিয়ে একটা মিষ্টি প্রেমের স্বপ্নও দেখে ফেলল।
এরপর থেকে লুবনা তার গোলাপ গাছে একটির বদলে দুটি করে প্রেমপত্র পেতে থাকলো, ভিন্ন দুটি হাতের লেখায়।
১৬ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৭
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ককাশে, গল্প ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগলো। ভালো থাকুন সবসময়।
২| ১৫ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগল।
১৬ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকুন সবসময়।
৩| ১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৩:১৭
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ক্লাস এইট!! এটাই তো প্রেমে পড়ার প্রথম বয়স।। আমি বোধহয় এর আগেই পড়েছিলাম।। একটু ইচড়ে পেকে আমার ঐ দূর্গতি হয়েছিলো।। ।।
১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩১
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আচ্ছা... এই তাহলে কাহিনী। তাহলে এই বাল্যপ্রেম অনেক পুরানো রোগ পোলাপাইনগুলার। এতো অল্প বয়সে ডেব্যু করে নিশ্চয়ই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন
৪| ১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: খুব মজা পাইলাম ভাই, ভিকটিম আবার আপনি নাতো?
১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:৪০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভিকটিম তো গল্পে একজনই, আর সে হল লুবনা আপু।
৫| ১৬ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১
হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহা! ফিনিশিংটা জোস!
১৭ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:৫০
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আসলে গল্প মূলত ঐ শেষ লাইনটাই, বাকী পুরোটা ছিল ভূমিকা। যাক হামা ভাইয়ের ভালো লাগা মানে আমার অনেক বড় প্রাপ্তি।
ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই, অনেক অনেক ভালো থাকুন।
৬| ১৬ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:১৫
সুমন কর বলেছেন: শেষটা ভালো লাগল।
১৭ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ বন্ধু, আসলে শেষটাই ছিল লেখকের লেখা গল্প, তার আগের সব ছিল আজ থেকে দুই যুগেরও বেশী সময় আগের সত্য ঘটনা। দুই যুগ পরে আজ লেখকের মনে হল রতনেরও উচিত ছিল প্রতিদিন গোলাপ গাছে একটি করে প্রেমপত্র বেঁধে দিয়ে আসা
৭| ১৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: হাহাহাহা ...
১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২৬
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন:
৮| ১৭ ই মে, ২০১৫ রাত ১২:৩০
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: নো কমেন্ট।।
১৭ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৪:১৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন:
৯| ১৮ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আমিতো বলছি ২য় চিঠির ভিকটিমের কথা
১৮ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৯
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: নো ওয়ে... ভিকটিম হল লুবনা, শিপলু আর রতন'কে আপনি বড়জোর ক্রিমিনাল বলতে পারেন। বাট কুবি বুলেছেন, "বালুভাসা খ্রাইম নয়..."
১০| ২০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৫২
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: আপনাকে ক্রিমিনাল বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়
২০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৪৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৭
কলমের কালি শেষ বলেছেন: হাস্যরসের দারুণ ছোট গল্প !!
অসাধারণ বোমা ভাই । ++