নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মিনহাজ সাহেবের ফ্ল্যাট কোনটা?
-এইদিকে যান।লিফটের চার।
লিফটে উঠার সময় দেখি পাওয়ার ডাউন।অগত্যা সিঁড়িই সম্বল।কাঁধের ব্যাগটা শুধুই শো।আজকাল খালি হাত বা সাথে কিছু না নিয়ে চললে নিজেকে কেমন বোকা বোকা লাগে।গরম ভালই পড়েছে।দুইতলা শেষ করতে না করতে ঘামতে শুরু করলাম।
মোবাইল বের করে সময়টা দেখে নিয়ে সিঁড়ি ভাংতে লাগলাম।এটাই ত মনে হয় মিনহাজ সাহেবের ফ্লাট।দরজার সামনে সাদা কাগজে ছাপানো ফ্লাটের মালিকের নাম-পরিচয়,বৃত্তান্ত।নিজেরপরিচয়-বৃত্তান্ত মানুষকে দেখিয়ে বেড়ানোর কি সুখ!"মি.মিনহাজ খান,অমুক কোম্পানি,তমুক পোস্ট"।মনে মনে বললাম-শালা,কত টাকা ঘুষ খাস তাতো লিখলি না।
বেল টিপে দাঁড়িয়ে থাকলাম,একটু পর খেয়াল হল,পাওয়ার ডাউন।দরজাটা বেশ শক্ত কাঠের।বাড়ি দিতে গিয়ে ব্যথা পেয়ে গেলাম।
-তুমিই সাগর?
-জ্বি
-আস আস, ভিতরে আস।
ড্রয়িংরুমে ঢুকে সোফায় বসে পড়লাম।ভদ্রলোক মানে মিনহাজ সাহেব আমাকে বসতে বলে ভিতরে গেলেন।বেশ অভিজাত সাজ-সজ্জা ইন্টেরিয়রে।বিশাল বিশাল ফ্লাওয়ার ভাসগুলা কোনটাই দেশি মনে হচ্ছে না।
বিশাল শেলফে সাজানো বই।দেখে মনে হচ্ছে বইগুলো শুধু সাজানোর জন্যই কেনা হয়েছে।কেউ কখনো পড়েনি।
-বাসা চিনতে প্রব্লেম হয়নি তো?
-না,একটু দেরি হইছে ,এই আর কি
-আচ্ছা,নাও ,খাও...
ঝাল-মিষ্টি নানারকম নাস্তার পরিবেশন থেকে একটা তুলে খেতে লাগলাম।
-তুমি ত সেকেন্ড ইয়ার?
-জ্বি আঙ্কেল।
-আমার মেয়েটা অঙ্কে খুব কাঁচা।তুমি বাবা একটু যত্ন করে ওকে পড়াবা।
আমার হার্ট টা ধড়াক ধড়াক করে উঠল,এ যে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।আশীষ যখন টিউশনিটা দিল,আমি জিজ্ঞেস করিনি স্টুডেন্ট কোন ক্লাস,ছেলে না মেয়ে?আমার কত দোস্ত এখন টিউশনি কাম প্রেমে ফূর্তিতে দিন কাটাচ্ছে,আর আমার পোড়াকপাল।
আমার ভাগ্যে জুটে বজ্জাত পোলার দল।
-হ্যা,আঙ্কেল,কোন অসুবিধা নেই
-আগের মাস্টার খুব ফাঁকি দিত।লাবণি মানে আমার মেয়ে তো পড়বেই না।আর মাস্টার
ছিল ভার্সিটি টিচার।লাবণি আবার বয়স্ক মাস্টারের কাছে পড়বে না...
(আমি মনে মনে)দাঁড়াও লাবণি,তোমার কাছে আমি আসছি,আমাকে তোমার নিশ্চয়ই
খারাপ লাগবে না।আহ,লাবণি,না জানি কত লাবণ্য তোমার...
-ও হ্যাঁ,সপ্তাহে তিনদিন-ই পড়াবে নাকি চারদিন পড়াবে?দেখো তোমার
পড়ালেখার যেন ক্ষতি না হয়।
-না আঙ্কেল,চারদিন বা পাঁচদিন,অসুবিধা নেই।পড়ালেখা আর তেমন কি?টিউশনি করে কোন ক্ষতি হবে না
-আর,টাকার কথাটা...
-না না আঙ্কেল,যা দেন...
-আচ্ছা,আজকে একটু পরিচয় করে যাও তোমার ছাত্রীর সাথে,ম্যাথ কেমন পারে টারে দেখে যাও।
আমি উঠলাম।নিজেকে মনে হচ্ছে শাহরুখ খান।পড়ার ঘরে বসে আছে আমারই অপেক্ষায় রাণী কিংবা ঐশ্বরিয়া।মনে মনে গুনগুন করে যাচ্ছে যৌবনের গান...আহা আহা স্টাডিরুম।নায়িকা মানে আমার ছাত্রীর এখনো আগমন ঘটেনি মনে হচ্ছে।যখন ঘটবে তখন কিভাবে তাকাব?মুখে কি হাসি থাকবে নাকি রহস্যময়চাহনি দিয়ে মাত করে দেব,এসব ভাবছি।কিন্তু মিনহাজ সাহেব আমার ধ্যান ভেঙ্গে দিয়ে বললেন,"লাবণি,এই যে তোমার টিচার,সালাম দাও"
না,আমার ছাত্রী মানে আমার নায়িকা মঞ্চে আগে থেকেই উপস্থিত।অতি আবেগময়তা এবং একটা বিশেষ কারণে সে আমার দৃষ্টিগোচর হয় নি।নায়িকা মানে আমার ছাত্রীটিকে কোলে তুলে একটা রোমাঞ্চকর দৃশ্য আমি কেবল ভাবতেই পারি ,কিন্তু এখন সেটা করলেও মনে হয় না মিনহাজ সাহেব কিছু মনে নেবেন,কারণ ছাত্রী নিতান্তই শিশু।চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,সালাম ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে।আমি আমার পোড়া-কপাল কে দোষ না দিয়ে আবার আশায় বুক বেঁধে বসে পড়লাম,কেজি ক্লাসের গণিত বই টা খুলে বাস্তব পরিবেশ-পরিস্থিতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করলাম।
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২৬
উড়োজাহাজ বলেছেন: আহ্হা, এইডা কি হইলো?
৩| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:০০
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: হা হা হা। অবশেষে আশাভঙ্গ।
৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভাই নেক্সট টাইম হবে ।
গল্প পড়ে ভাল লাগল ।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: পড়তে পড়তে এরকম কিছুই সন্দেহ করছিলাম
++
ভালো থাকবেন