নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কিন্তু একটাই

জীবন কিন্তু একটাই

হাতপা

কিছু বলার নাই

হাতপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ আনন্দ

১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫

সজীব,রেহান আর তৌহিদ এদিকে আয়।
-প্ল্যান হচ্ছে -- আজকে মঙ্গলবার ,শুক্রবার বিকেলে আমরা রওয়ানা হচ্ছি।সবাই কালকের মধ্যে কনফার্ম করবি কারা কারা যাবি?
সজীব বলে,আরেকটু পরে যাই;সেমিস্টার ফাইনাল দিয়ে পুরাই টায়ার্ড।কয়েকটা দিন রেস্ট দে।
-দেখ দোস্ত,যাইতে আসতে দুইদিন।মাঝখানে তিনদিন।এখন রেস্ট-ফেস্ট নাই।কালকেই জানা
-ওকে।ঠিক আছে।
-কিন্তু,একটা কথা,কত করে যাবে সবার?
-সবাই তো আটহাজার করেই দিচ্ছিস।বাট আরো হাজার তিনেক রেডী রাখিস।হিসাব টিসাবের দায়িত্বে থাকবে সজীব।ব্যালান্স করে কমবেশি হলে বাকিটা পরে দেখা যাবে।
-ওকে,ঠিক আছে। কালকে কথা হবে।
-আর,রেহান,দোস্ত,কাল-পরশুর মধ্যেই মেনেজ করতে ট্রাই কর
-আচ্ছা,দেখি।

########

তানহা ক্লাসের গ্যাপে চুপচাপ বসে আছে।সাদিয়া মেয়েটা পাশেই বসে আছে।কানে হেডফোন দিয়ে মোবাইল টিপেই যাচ্ছে।
এই সাদিয়া,চল,আমরা ক্যান্টিন থেকে কিছু খেয়ে আসি।
-যাবি,চল?

"আরে,তোরা!বস..."

ক্যান্টিনে একটু জায়গা খালি নেই।এই ব্রেকে। দুটা ভেজিটেবল রোল নিয়ে তানহা আর সাদিয়া বসে পড়ল।টেবিলে ওদের আরো দুজন ক্লাসমেট মুন্নি,নাইমা এরাও আছে।
-দেখ,দেখ ;আমার প্রোপিক দিছি এক মিনিট-ও হয়নাই,৫০ টা লাইক।
-ভুয়া কথা সব।
-ইস,এই দেখ।
-কই দেখি দেখি,বলে মুন্নি ,নাইমা দুজনেই স্মার্টফোন বের করে লগইন করে,আরে তাইত।
তানহা একটু অসস্তিবোধ করে।
-দাঁড়া,আমি রাতুলের ডিএসেলারে একটা ফোটো তুলে দিবো প্রোপিক,৫০০ লাইক দেখবি
-ইস,অত সোজা না।
সবাই যার যার ফোন টেপাটিপি করছে,নিজেরাই হাসছে,আবার মাঝে মাঝে একে অন্যকে দেখাচ্ছে।তানহার খাওয়া শেষ।
-এই সাদিয়া,ক্লাস শুরু হবে তো
-হ্যা,হ্যা,আরেকটু বস।একসাথেই যাবো

########

-ভাবি,এই পার্টস টা দেখছেন,তিনহাজার টাকা।ও কে কত মানা করলাম,তবু জোর করেই কিনে দিল।
-না,না,ভালই তো,মানিয়েছে আপনাকে।
-এই যে দেখেন যে জন্যে আপনার কাছে আসা,আমার ননদ-এর একটা ব্যবসা আছে বলছিলাম না।যেখানে ওরা হাতে ডিজাইন করা শাড়ি,ত্রিপিস বেচে।সবই দেশি।আপনার জন্য দুটা স্যাম্পল নিয়ে আসলাম
-তাই নাকি!এক কাপ চা নিয়ে আসি ভাবি,একটু বসেন

-এই যে,এই টা পিউর।ডিজাইন টা দেখছেন?আমার কাছে বেস্ট লাগছে।এই দুটাই দেখেন।আপনাকে ভাল মানাবে।
-এত শাড়ি আর কই পরা হয়?
-কি বলেন ভাবি,এগুলো শপিং মল থেকে কিনতে গেলে হাজার দশেক-এর উপরে চলে যাবে।
-ও,এগুলো কেমন দাম?
-আপনার কাছে আর কি বলব।মাত্র কিছু লাভে এদুইটা বারো পড়বে।
-না,ভাবি,এত...
-আরে,ভাবি,আমি সুলতানা আপা তিনটা রাখছে আমার থেকে,ম্যাডাম আপাও দুইটা রাখছে।আপনি এগারোহাজার পাঁচশ দিলেই হবে,প্লিজ,এই পিউর শাড়ি ...

#########

অফিস শেষে অন্য সবদিনের মত হাসান সাহেব ডেস্ক গুছিয়ে সবার পরেই নামলেন।সন্ধ্যার বাকি নেই বেশী।রাস্তায় রাস্তায় বাতি জ্বলে গেছে।মতিঝিলের এই অফিস পাড়ার ছুটি এখন।যে যার মত বাড়ি যাবার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।ফুটপাতে উঠে একটা সিগারেট ধরালেন।দাম দিয়ে হাঁটতে থাকলেন।হঠাত খুব আনন্দ হচ্ছে তার,এই আনন্দ অনেক প্রতীক্ষার।আর সেইসাথে একটা জয়ের।কোন খেলায় না জিতেও বিজয়ীর একটা হাসি,তাচ্ছিল্যের একটা হাসি।
আজ ফিরে যাবার তাড়া নেই;ছেলেটার কাছ থেকে শুনতে হবেনা,বাবা,টাকাটা কালকের মধ্যে দিবে ত?
মেয়েটা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলবেনা- "সবাই স্মার্টফোন ইউজ করে,আমিই শুধু..."
তার স্ত্রী কোন এক মহিলার কাছ থেকে ধারে দুখানা শাড়ি নিয়ে রেখেছে ;

একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে এই দুর্মূল্যের বাজারে ঢাকাশহরে ভাড়ায় থাকা,দুটি ছেলেমেয়ের পড়াশোনা,আর আনুষঙ্গিক খরচ চালিয়ে যেতে রীতিমত হিমসিম খাওয়া হাসান সাহেব তাই আনন্দে হাসছেন।
এইসব থেকে চিরকালের জন্য মুক্তি পেতে যাচ্ছেন হাসান সাহেব।আত্নহত্যা নাকি মহাপাপ,কিন্তু প্রতিনিয়ত স্ত্রী-কন্যা-পুত্রের কাছে একটা সূক্ষ্ণ অপমান সয়ে সয়ে জমে ওঠা কষ্ট থেকে যেই মুক্তি,মহাপাপ দিয়ে সেই মুক্তি কেনার কথা ভেবে আনন্দ হয় হাসান সাহেবের।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৬

সকাল হাসান বলেছেন: পার্টস না মে বি পার্স হবে!

ছোটখাট কিছু কিছু ভুল ছিল! শুধরে নিবেন আশা করি!

গল্প মোটামুটি লাগলো! শুভকামনা রইলো! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.