নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কিন্তু একটাই

জীবন কিন্তু একটাই

হাতপা

কিছু বলার নাই

হাতপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

কালকে একটা গল্প পড়তে গিয়ে আর পড়া হয়নি।মাথায় চাপল লিখা...তাই কীবোর্ডে চটপট লিখে ফেললাম।এখন পড়লাম বিপত্তিতে,নাম;নাম কী হবে?অযথা নাম নিয়ে টানাটানি করলাম না,পাঠকরা আশা করি নাম নিয়ে ভাববেন না

====================================

গল্পঃ

'আমাকে কি খেতে হবে স্যার?'

'না,আপনি সিগারেট একেবারে অফ।আর,মাঝেমাঝে একটু যে ড্রিংকস সেটা ও কমিয়ে ফেলেন,আসলে,আপনার ক্রমাগত যে কাশি আর কফ হচ্ছে।আর বুকের ব্যথা..."



হুম,ভদ্রলোক ডাক্তার হয়েছে বলে কি আমাদের অকালকুষ্মান্ড পেয়েছে নাকি?ঐসব উপদেশ ভালই জানা আছে,ভেবে মুহিত তার শার্টের বুক পকেটে রাখা সিগারেটের প্যাকেট আলতো করে চাপ দিয়ে দেখে।ডাক্তার ভদ্রলোক শান্তমুখে চশমার উপর দিয়ে আরো কিসব বকবক করে যাচ্ছেন,সেগুলো আর মাথায় ঢুকছেনা।সিগারেটের ধোঁইয়ার মত উড়ে উড়ে যাচ্ছে যেন।



চেম্বার থেকে বের হয়েই মুহিত সিগারেট ধরাল,একটা লম্বা টান দিয়ে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে দেখল।অফ হয়ে আছে।অন করতেই রিং...



"কি ব্যাপার?তোমার ফোন বন্ধ?কার সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছ?"



টুপ করে ফোনটা কেটে দিয়ে বন্ধ করে দিল।এই জিনিস টা মূর্তিমান যন্ত্রণা।তিথির সাথে গত তিনদিন হল ঝগড়া।ঝগড়ার বিষয় মুহিতের মতে খুবই তুচ্ছ।মুহিত তার ছাত্রীকে নাকি বাড়তি সময় দিচ্ছে।আরে!যে মেয়ে মাত্র ক্লাস সিক্স থেকে সেভেনে উঠেছে তাকে নিয়ে এই সন্দেহ!মুহিত অসংখ্যবার বুঝিয়েছে,হিতে বিপরীত হয়েছে তাতে।ছাত্রীর কথা বললে কেন তার এত জ্বলে ,নিশ্চয়ই মুহিতের মতলব আছে।ছাত্রীর ছবি দেখতে চায়,কেন খোদা জানে।ঘটনা এতদূর গড়াতো না,সেদিন ছাত্রীর জন্মদিন ছিল।স্বাভাবিকভাবেই তাকে অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেছে।সৌজন্য এবং সামাজিকতার খাতিরে গিয়েছে মুহিত,সাথে করে নিয়ে গেছে একটা বই।সেই বইয়ের নাম শুনেই হয়তবা তিথির মনে লুকিয়ে থাকা বীজের মত সন্দেহ রাতারাতি এইরূপ।বই গিফট?তাও হাল্কা প্রেমের কাহিনী নিয়ে।এসব তো সবে শুরু।তাহলে,তোমার সাথে এই আমার শেষ কথা।সেই শেষ কথা গত তিনদিনেও শেষ হচ্ছেনা।মুহিত তাই আপাতত পাত্তা না দিয়ে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।তাতে,খুব একটা লাভ হচ্ছে বলে মনে হয়না।



##



দেখ,মুহিত,আমি রিয়েলি স্যরি!



মনে মনে তিথির একথায় তাজ্জব হয়ে গেলেও মুহিত আপাতত গম্ভীর হয়ে ব্যাপার-স্যাপার আঁচ করতে থাকে।নাহ,এত সহজে স্যরি বলার মেয়ে তো তিথি না।কোন কাহিনী অবশ্যই আছে।



ওড়নার একপ্রান্ত আংগুলে পেঁচাতে পেঁচাতে তিথি বলে"তোমাকে হয়ত আমি অযথাই সন্দেহ করছি।আমি তোমাকে আর কিছুই বলব না...এই শেষ" বলে তিথি ঝপাত করে মুহিতের হাত টেনে নিয়ে তিথির মাথায় রাখল...ব্যপার বুঝতে আর দেরি হল না,কসম জাতীয় কিছু হবে...



মুহিতকে আর অপেক্ষা না করিয়ে তিথি কঠিন স্বরে বলতে লাগল,"আমার কসম খেয়ে বল যে,তোমার ছাত্রীর প্রতি বিন্দুমাত্র কোন..."



হা হা হা,বলে মুহিত হাত নামিয়ে ফেলল,"না,নেই..."



"না,এভাবে না,এসব চলবে না"-যেন মুহিতের চালাকি ধরতে পেরেছে এভাবে গর্বের সাথে আবার হাতটা নিজের মাথায় রেখে,"আমার মাথায় হাত রেখেই বল-ওর সাথে ,না ,না;তোমার ছাত্রীর প্রতি বিন্দুমাত্র দুর্বলতা নেই"



"না,নেই"



"কি নেই?পুরোটা বল"



"আচ্ছা,আমার ছাত্রীর প্রতি আমার বিন্দুমাত্র দুর্বলতা নেই"-দুর্বলতার জায়গাটা বেশ জোরেশোরেই বলল মুহিত।



"ঠিক আছে,যাও,দুই প্লেট ফুচকা আর চা অর্ডার কর"।



"আমরা তাহলে,মানে,আবার আগের মত?"



"ইস,ন্যকা"-বলে মুহিতের নাক ধরে টান দেয় তিথি।দুজনেই হেসে গড়িয়ে পড়ে।



##



পড়ানো শেষে এই সময়টাই মুহিত উপভোগ করে বেশি।বিকেলের নাস্তা,আর, চা।ছাত্রীর মা হাতের রান্না বেশ ভালো।আর,নাস্তাও যে পরিমাণ দেয় তা মুহিত দুদিনের নাস্তার চেয়ে অনেকখানি বেশি।



ড্রইংরুমের সোফায় বসেই চা নাস্তা সারছিল মুহিত।চ্যাটিং চলছে ফেসবুকে তিথির সাথে ,"কি করছ?পড়ানো শেষ হয়নি?"



"এই ত শেষ,এখন নাস্তা চলছে"

"পেটুক কোথাকার"

"হাসির ইমো"...



"নেন,এইদুটো বই পড়া হয়ে গেছে,"



"আচ্ছা,কেমন লাগল?"



"ভালই।শেষের দিকে এসে মনে হল অনেক বড়ই ছিল উপন্যাস টা,সুধা মেয়েটার সাথে আমার মিল আছে।বিমল করের আরো কিছু বই আমাকে দিবেন।আপনাকে কিন্তু আজকে ভাল লাগছে এই নীল শার্টে"



নিজের দিকে একটু তাকিয়ে চা খেতে খেতে মুহিতের বলতে ইচ্ছা হল,"তোমাকে সবসময়ই লাগে..." ।কিন্তু,এই কথাটা বলার মত দূরত্ব এখনো ঘোচেনি মেয়েটির সাথে।যদিও মনে মনে দূরত্ব অনেকখানি কমিয়ে এনেছে মুহিত,নাকি প্রকৃতির খেয়ালেই এমন টা হয় কে জানে?তিথির সাথে এই মেয়ের কোন তুলনা চলে না,করেও না মুহিত।তবে,তিথির সন্দেহ একটুর জন্য রাস্তা ভুলে গেছে।ছাত্রীর যে একটি বড়বোন আছে এটা কথা প্রসঙ্গে বলেছে। সে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে ঢাকার বাইরে।তবে, ছুটিছাটায় এলে কথাবার্তা চলে,মুহিত বই দেয়,একটু করে করে ওদের মাঝে পরিচয়,জানাশোনার গন্ডী বাড়ে।এসব তিথির অজানা।থাকলই বা অজানা,মুহিতও ভাল রইল।তিথিও।সবাই ভালো থাকুক।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ভাল সমাপ্তি।




তিথি ভাল থাকুক মুহিতের সাথে।

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ১ম ভালোলাগা +

আমার একটা নাম মনে আসলো - তিথি ও অ-তিথির গল্প

ভালো থাকবেন :)

৩| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৪

ডি মুন বলেছেন:
মুহিত ছেলেটা তো খুব একটা সুবিধার না দেখছি !!!

গল্প বেশ ভালো লাগল।

শুভেচ্ছা সতত।

৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৭

কলমের কালি শেষ বলেছেন: লুইচ্চা মুহিত !!... :P :P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.