নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কিন্তু একটাই

জীবন কিন্তু একটাই

হাতপা

কিছু বলার নাই

হাতপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২৫

এই গল্প একজন সৌমিত্রের,আর শাশ্বতীর।আলসেমি করে নাম দিলাম না।পড়ার জন্য আগাম ধন্যবাদ।
গল্পঃসৌমিত্রের সাথে আমার পরিচয় হাইস্কুলে।খুব মেধাবী ছাত্র ছিল,আমরা একসময় জানতে পারলাম শাশ্বতী নামের একটি মেয়েকে সৌমিত্র খুব ভালোবাসে। এই বয়সে ভালোবাসাটা একপ্রকার হাস্যরসাত্নক অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল আমাদেরকে,আসলে সৌমিত্রকে যখন-তখন পরাস্ত করবার একটা মোক্ষম অস্ত্র আমরা পেয়ে গিয়েছিলাম। কথায় কথায় আমরা শাশ্বতী,শাশ্বতী বলে খেপাই তাকে।কিন্তু,আমাদের হতাশ করে বরাবর নির্লিপ্ত আর নীরব থেকেছে সৌমিত্র,কখনো হেসেছে,একটু লজ্জায় আরক্ত হয়েছে মুখ।কিন্তু,রাগ তাকে করতে দেখিনি।
স্কুলটা ছিল বয়েজ।সুতরাং,শাশ্বতী দূরে থাক,কোন নারীদেবীর সাক্ষাৎ সম্ভব ছিলনা।শুধু স্কুলের সুন্দরী ম্যাডাম ছাড়া। তাই,আমরা শাশ্বতীকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনায় মেতে উঠলাম।আমাদের হাসি-ঠাট্টার ছলে কোন অলক্ষ্যে শাশ্বতী হয়ে উঠল আমাদের পরম আকাঙ্খিত,কবে আমরা দেখব সৌমিত্রের শাশ্বতীকে?
এসএসসি পরীক্ষা শেষে আমরা কলেজে ভর্তি হলাম।এখানে,কত শাশ্বতীকে দেখে আমাদের মাথা ঘুরে গেল।কিন্তু,সৌমিত্রের শাশ্বতীকে আমরা ভুলিনি মোটেই। বন্ধুমহলে খবর পৌঁছে গেছে শাশ্বতী আমাদের কলেজেই এবং আমাদের সেকশানেই ভর্তি হয়েছে।শাশ্বতী সম্পর্কে সৌমিত্রের অতিদূর এক আত্নীয়।অতএব,তার গুরুত্বপূর্ণ খবর সে পেয়ে থাকে।প্রথম ক্লাস।টিচার সবার ইন্ট্রোডাকশান নিচ্ছেন।নিজ নিজ নাম,প্রাক্তন স্কুলের নাম বলে বসে যাচ্ছে সবাই... আমাদের চোখ কিন্তু মেয়েদের সারিতে।আর মনোযোগ সৌমিত্রের দিকে,ও আমাদের বহুদিনের শাশ্বতীকে চিনিয়ে দেবে...সৌমিত্র আমাদের অপেক্ষা না করিয়ে আঙ্গুল তুলল। মেয়েদের দ্বিতীয় সারিতে।হ্যাঁ,ঐখানেই!কিন্তু,ওখানে তো দুটি সুন্দরী মেয়ে,একজন তন্বী,বেশ নজরকাড়া;অপরজন একটু স্বাস্থ্যবতী,কিন্তু দুধ সাদা-কোনজন?কোনজনের প্রেমে মাতাল আমাদের বন্ধুটি?সৌমিত্র কে আরেকবার জিজ্ঞেস করার আগেই কানে এল “আমি শাশ্বতী দাস...” ;আমাদের সবার চোখ একসাথে দেখে নিল। আমরা সবাই দেখলাম।সৌমিত্র কে কিছু বলার প্রয়োজন কি না বুঝছি না।আমাদের মধ্যে একজন স্পষ্টবাদী বলে উঠল,”সৌমিত্র,তুই...”আমরা হাতে চাপ দিয়ে থামালাম ওকে।
সৌমিত্র কে দেখলাম।কি নিবিড়ভাবে দেখছে ওর শাশ্বতীকে।আমরা সবাই ভাবছি,নিজে নিজে,কিন্তু কাউকে কিছু বলছি না। সেদিন সৌমিত্র চলে গেলে আমরা হাফ ছেড়ে বাঁচলাম যেন।
“কিরে?সৌমিত্র এই মেয়ের জন্য?”
“না,না,সৌমিত্র কি আসলেই?”
“কিছুই বুঝলাম না”
“এমন মেয়ের সাথে মেরে ফেললেও কেউ প্রেম করবে?”- না,কেউই যে মেনে নিতে পারছেনা।
আমরা সৌমিত্রকে আর খেপাই নি। সৌমিত্র যে মেয়েটাকে মন থেকেই ভালোবাসে,সেটার প্রমাণ আমরা মেয়েটাকে দেখেই পেয়েছি।কারণ,চোখের দেখায় বাস্তবিকই মেয়েটাকে কোনভাবে আমরা সুন্দর বা সুশ্রী করে ভাবতে পারছিলাম না।আমরা তাই মনেপ্রাণে সম্মান জানালাম সৌমিত্রকে,সৌমিত্রই পেরেছে প্রেম-এর মত প্রেম করতে।কিন্তু,শাশ্বতী? আমরা অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম,শাশ্বতী বিন্দুমাত্র পাত্তা দেয় না তাকে।
কলেজের গন্ডী পেরিয়ে আমরা ভার্সিটিতে। সৌমিত্র ডাক্তারি পড়ছে।শাশ্বতীও।সৌমিত্র এখনো শাশ্বতীকে স্বপ্ন দেখে। কলেজে অনেক মেয়েই সৌমিত্রের অনুরাগী। তার কন্ঠ যে চমতকার,আগে বলা হয় নি।কলেজের রিইউনিয়ানে দেখেছি দু-তিনটি মেয়ে সৌমিত্রের সাথে গায়ে পড়ে আলাপ করছে।কিন্তু,সৌমিত্র যেন এক মনে
ধ্যান করে যাচ্ছে শাশ্বতীর। গান টাও গাইল শাশ্বতীর দিকে তাকিয়ে।এদিকে শাশ্বতীর ভাব দেখ।পাত্তাই দিচ্ছে না।আমরা মনে মনে ভাবলাম,”পাত্তা যে পাচ্ছ,সেটাই কি বেশি না?”
এরপর কত বসন্ত আসল।শাশ্বতী আসল না।আমরাও ছাত্রজীবন শেষ করে চাকরিজীবনে।বন্ধুবান্ধবের সাথে
দেখা হওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। সেদিন অফিস ছুটি নিয়ে কাজে বেরিয়েছিলাম। বাসে করে যাব,বাসে উঠার মুহুর্তে সৌমিত্রের সাথে দেখা।অনেক কথার পরে,জানতে চাইলাম শাশ্বতীর কথা। সৌমিত্র ঠিক আগের মতই হাসি হাসি মুখ করে বলল,”ওর তো বিয়ে হয়েছে দুই বছর...” আমি মনে মনে খুশি হলাম,যাক,শাশ্বতীর ভূত নামল।তারপর আমাকে অবাক করে দিয়ে সৌমিত্র বলল,”আমি অপেক্ষা করব।আমি জানি অনেক প্রব্লেম হবে আমার।কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি,শাশ্বতীকে ছাড়া আমার ...”আমি মনে মনে বললাম,”হে শাশ্বতী,তোমার নারীজন্ম সার্থক!”
পরবর্তী খবর পাওয়া পর্যন্ত সৌমিত্র লম্বা ছুটি নিয়ে আজমীর শরীফ যাচ্ছে।কি নাকি মানত আছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৫

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সুন্দর ও সাবলীল

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯

স্বস্তি২০১৩ বলেছেন: গল্পের নাম হওয়া উচিৎ "অনিশ্চিত অপেক্ষা", এটা আমার মতে। লেখক হয়ত আরও ভাল কিছু দিবেন। ভাল লেগেছে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.