নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কিন্তু একটাই

জীবন কিন্তু একটাই

হাতপা

কিছু বলার নাই

হাতপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কষ্ট ফিরে আসে"

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০৩


লাল কামিজের উপর সাদা ওড়না টা চড়িয়ে সুপ্তি নিজেকে আয়নায় এপাশ ওপাশ দেখে নিল ভাল করে।আজকে যার সাথে দেখা করতে যাচ্ছে সে আজকে তাকে কেমনভাবে নিবে এই বিষয়টা সকাল থেকেই মাথায় ঘুরছে।একবার ভেবেছিল সাদা রঙের পোশাক পরবে।কিন্তু সাদায় সুপ্তিকে একটু কালো দেখায়,যদিও সুপ্তির গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামলা,ওর মা বলে শ্যামলা না,ফর্সাই।মায়েরা সন্তানদের একটু বেশি বেশিই ভাবতে ভালোবাসেন।
রিকশা নেবে কিনা ভাবছে। নাকি সিএনজি।একটা সিএনজি সামনে দাঁড়িয়ে।চেহারা দেখে সিএনজিওয়ালার সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না।একা একটি মেয়ে সিএঞ্জি তে চড়তে ভয় লাগে। রিকশাই নিল।দেরি হলে হবে।মোবাইল টা সাথের ব্যাগে। কাছাকাছি পৌঁছে ফোন দিবে। মাহমুদ,মাহমুদ এই নামএর চেয়ে প্রিয় আর কিছুই না এখন সুপ্তির,গত প্রায় চারটি মাস মনের ভিতরে এই নামটি ,এই নামের মানুষটিকে লালন করে আসছে সুপ্তি।
কাছাকাছি এসে ফোন দিল ।রিং হচ্ছে।
-হ্যালো,কোথায় তুমি।আমি কিন্তু চলে এসেছি।
-তাই,আমিও রাস্তায়,আর বেশিক্ষণ লাগবে না,পাঁচ মিনিট। আচ্ছা,আমি এসেই ফোন দিচ্ছি,কেমন?
-ঠিক আছে।

সামনে মাহমুদ দেখতে আরো বেশি হ্যান্ডসাম আর দারুণ।এইরকম একটা ছেলের সাথে প্রেম করবে সুপ্তি।আহ,মাহমুদের চোখের সামনে সানগ্লাস,মাহমুদ কি ওকে দেখছে কিনা বোঝা যাচ্ছেনা,এতদিন অনলাইন আর ফোনালাপে পরিচয় ওর সাথে,আজকে অনেক ভালো লাগছে।ইচ্ছা করছে মাহমুদের হাত টা ধরে।
-তোমার আসতে অসুবিধা হয়নি? মাহমুদ চোখ থেকে চশমা টা নামিয়ে প্রশ্ন করে
-নাহ,এই তো কিছুদূরের রাস্তা,আর আজকে তো হলিডে..কি খাবে বল?
-একটু পরে অর্ডার করি,কেমন?
-আচ্ছা,বিশেষ কোন কারণ আছে নাকি?
-না,ভাবছি আরেকজন গেস্ট আসছে তো তার সাথে একসাথে বসেই না হয় খাওয়া যাবে।অর্ডার টা তখনি দেই।
-মানে?কে আসবে আবার? সুপ্তি ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করে।
-দেখোই না।তুমিও চিনবে ওকে।
- প্লিজ,ডোন্ট কিডিং...
-হা হা,ফান করছিলাম,অর্ডার দিই।

খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে সুপ্তি মাহমুদের দিকে তাকাচ্ছিল।আসলেই মাহমুদ অনেক সুন্দর।ওর ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে সবচেয়ে বেস্ট বয়ফ্রেন্ড মনে হয় ওরই হবে।
-কি ভাবছ?মাহমুদ...
-আসলে সুপ্তি,কথাটা আমি কিভাবে বলি তোমাকে।।
-কেন?কি কথা
-তুমি বলো কোন রিএক্ট করবে না।সুপ্তি
-মানে?আমি কেন রিএক্ট করব?আর কি এমন কথা,বলে ফেল...
-আসলে,আমাদের দুজনের তো এতদিনের পরিচয় ছিল পুরোটাই ভার্চুয়ালি।মানে এই অনলাইন,চ্যাটিং,কিংবা ফোনে কথা...
-হ্যা,তো?
- আমিও তোমাকে দেখিনি,তুমিও না।
-এখন তো দেখলে আমাকে,আমিও তোমাকে দেখলাম।
-আমাকে শেষ করতে দাও,আসলে, আমি তোমাকে সামনাসামনি দেখে মনে হচ্ছে,তুমি ঠিক আমার টাইপ নও।
হাসিতে ফেটে পড়ে সুপ্তি-মাহমুদ,ইউ আর কিডিং এগেইন রাইট? তুমি না বলেছিলে,আমি যেমনই হই না কেন?তুমি আমাকে ইগনোর করবে না কোনমতেই,রাইট?
-রাইট
-দেন,ইউ আর কিডিং?
-নো,আমি সিরিয়াস
ধৈর্য্যের বাধ ভেঙ্গে যায় সুপ্তির।এবার একটু কড়া গলায় প্রশ্ন করে – ক্লিয়ারলি বল...
- ওকে ।ক্লিয়ারলি বলছি।তোমাকে ফেস টু ফেস দেখে পছন্দ হয়নি আমার। আমার সাথে তোমার কোনভাবেই যায়না।স্যরি সুপ্তি,আমি স্ট্রেইটকাট ম্যান।সরাসরি বললাম,তোমার –আমার হবে না।
- তুমি সিরিয়াস?
মাহমুদ হ্যাঁসূচক মাথা নাড়ায়...সুপ্তিকে দেখছে ।সুপ্তি রেগে গেছে।
সুপ্তির ক্ষুব্ধ মুখের দিকে তাকিয়ে মাহমুদ বলে-স্যরি?ওকে।প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড...বিল পে করে দিয়েছি।আই এম লীভিং নাউ। মাহমুদ সুপ্তিকে বাই দিয়ে উঠতে যাবে।
-ওয়েট। ইউ পিপল,হোয়াট ড্যু ইউ থিঙ্ক এবাউট ইওরসেলফ...সিলি পিপল। চার মাস ভালই কথাবার্তা বলে এখন ভালো লাগছে না,না?
-আস্তে সুপ্তি,একটু আস্তে...
- শিট!আই এম ফিলিং সিলি...মাথাটা দু হাতে চেপে ধরে সুপ্তি ক্রোধান্বিত দৃষ্টিতে মাহমুদের দিকে তাকায়।
তারপর গলার সুর পালটে ফেলে। একটু কাঁদো কাঁদো হয়ে মাহমুদ কে বলে,
তুমি বলেছিলে,আমি যেমনই হই আমাকে পছন্দ করবে?কি বলেছিলে না?সে সামথিং!
-তখন মনে হয়েছিল।এখন বুঝতে পারছি ,ভুল ছিল।
-ড্যাম ইউ...সামনের পানির বোতল টা ছিটকে পড়ে সুপ্তির হাতের ঝটকায়...লোকজন তাকায় উৎসাহের দৃষ্টিতে।তারপর ভোজবাজির মত সুপ্তির রিএকশান থেমে যায়।হঠাতই চুপ হয়ে দুই হাতের পিছনে মুখ টা ঢেকে বসে থাকে সুপ্তি।
- কিরে মাহমুদ?তুই এখানে...সাথে কে?
-বস এখানে পরিচয় করিয়ে দিই।
এ হচ্ছে সুপ্তি,আর সুপ্তি!,ও আমার বন্ধু তন্ময়।
সুপ্তি স্থির হয়ে বসে। তারপর,মাহমুদ-এর দিকে তাকিয়ে বলে,আমি যাই...
তন্ময় হাসতে হাসতে বলে- এখনি যাচ্ছ কেন?মাহমুদের কিছু বলার আছে।তুমিও বা মাহমুদকে এত সহজে ছেড়ে দিচ্ছ কেন?বসো একটু বসো।

সুপ্তি বসে। মাথা নীচু,চোখের পানি উধাও। টিস্যু দিয়ে ঠোঁট মুছে।

-এই যে তন্ময়,তন্ময়ের তখন ফাইনাল এক্সাম ।এক্সামের দুইদিন আগে তোমার সাথে দেখা করতে আসল ও। আজকে আমি যা যা বললাম,তার চেয়েও কঠোরভাবে তুমি ওকে অপমান করেছিলে মনে আছে? তুমিও কথা দিয়েছিলে তন্ময়কে তুমি ফিরাবে না। সেই মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয়ার কোন দরকার ছিল না ওকে। তিনমাস ফোনে কথা বলে, তোমরা যখন দেখা করলে,প্রথম দিন তোমার আরো কয়জন বান্ধবীকে সাথে নিয়ে, তন্ময়কে সবার সামনে বলেছিলে তোমার যোগ্য নয় ও। সেদিন ঠিক যেমনটা কষ্ট পেয়েছিল ও,তেমনটা পাওয়া উচিত ছিল তোমার।তন্ময় সেদিন কেঁদেছিল।সেই কষ্ট অনুভব করার মত মন তোমার নেই বলে আমার ধারণা,যাইহোক,তন্ময়ের না এটা আমারই প্ল্যান। তন্ময়ের কষ্ট দেখে আমি ঠিক করেছিলাম,এমন একটা কিছু করা দরকার। মাথা নীচু করে আছ কেন?

-থাক মাহমুদ।অনেক হয়েছে,এবার চল।

তারপর,যেতে যেতে আবার একটু সুপ্তির বিধ্বস্ত চেহারার দিকে এগিয়ে এসে মাহমুদ বলে- তন্ময়ের গার্লফ্রেন্ড তোমার চেয়ে হাজার গুণে সুন্দর।

সুপ্তির রিএকশান নেই কোনো। মাহমুদ উৎফুল্ল মনে তন্ময়ের কাঁধে হাত রেখে বেরিয়ে পড়ে। (End)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:

গল্প ভাল লাগল।

ইটকেল মারলে পাটকেল খেতে হয়। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.