নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কিন্তু একটাই

জীবন কিন্তু একটাই

হাতপা

কিছু বলার নাই

হাতপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ তারপর

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪০


আমি মাহমুদ।পুরো নাম মাহমুদুল হাসান।

আমার পরিচয় আমি বর্তমানে একজন বেসরকারি চাকরীজীবি।ফ্যামিলিতে কেউ কখনো ব্যবসা করেনি,কিন্তু আমার ইচ্ছে আছে ব্যবসাশুরু করার,লাইন ঘাট,লোকজনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।আমার পেশা নিয়ে কথা বলতে আসি নি।বরং এসেছি কষ্টের কথা বলতে।

কত রকম কষ্টই তো আছে জীবনে।খেতে না পারার কষ্ট,পরতে না পারার কষ্ট,পড়তে মানে লিখাপড়া করতে না পারার কষ্ট।আমার টা মোটেই সেরকম কষ্ট না।ছোট থেকে বড় হয়েছি বেশ আদরেই।পড়ালেখায় মোটামুটি ভালো ছিলাম। স্কুল-কলেজে ফার্স্ট-সেকেন্ড না হলেও বরাবর ভালো রেজাল্ট করতাম।

নিছক ভদ্র ছেলে,ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম আমি।কোনদিন কোন মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকাইনি। একদিন তাকিয়েছিলাম,তাকিয়েছিলাম বলতে তাকাতে হয়েছিল। মেয়েটা আমাদের ভার্সিটিতেই পড়ত। সে তাকানোই কাল হয়েছিল।এরপর থেকে দিনরাত আমি তার কথা ভাবতাম।

মেয়েটিকে আমার ভালো লাগার কথা বলতে অনেক সময় নিলাম। জানিনা,আমাকে মেয়েটা করুণা করেছিল কিনা,অবিশ্বাস্য ভাবে মেয়েটি আমাকে গ্রহণ করল,মানে আমার ভালোবাসাকে। এখানেই আমার কষ্ট।আপনারা ভাবছেন কষ্ট কোথায়?বলছি।সেই মেয়ের সাথে তিন বছর তিন মাস প্রেমের প্রতিদান হিসেবে পেলাম তার বিয়ে হয়ে যাবার খবর। অবশ্য মেয়েটা আমাকে আগেই বলেছিল- সময় থাকতে সচেতন হতে,আমি হতে পারিনি,সেটা আমার ব্যররথতা,একটা বেকার ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার কথা না মোটেই।

তবু,জীবনের প্রথম প্রেম। এভাবে তার পরিণতি হবে সেটা কাম্য ছিল না কখনো। বিয়ের পরপর বুঝতে পারি কষ্ট জিনিস টা কি,রাত আসলেই বুকের মাঝে তীব্র ব্যাথা জেগে উঠে।মেয়েটিকে দোষ দিই না। কি আর হবে...সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর বিয়ে করব না।একটা ভালো চাকরিতে ঢুকে গেলাম পাস করে। সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। তামান্নার জায়গায় কাউকে বসাতে পারবো না।তামান্না আমার প্রথম প্রেম।সেই শেষ।

কিন্ত,পরিবার-আত্নীয়স্বজন কে মানাতে পারলাম না। এই করব,সেই করব করতে করতে অবশেষে আমি মত বদলালাম।করেই ফেলব বিয়ে।কি আছে কপালে।বিয়ে তো একটা সামাজিক রীতি বৈ কিছু নয়।মানসিক-শারীরিক সম্পর্ক তো নিজের কাছে কেবল। সেখানে জোরজবরদস্তি করার কিছু নেই।

কথাবার্তা চলছে।মেয়ের নাম কি যেন। উচ্চারণের অযোগ্য।কঠিন নাম আমি মনে রাখতে পারি না।আর রাখবই বা কেন?আমার তো তামান্না আছে,আছে মানে ছিল আর কি।আচ্ছা,তামান্না এখন কেমন আছে?মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তামান্নার কাছে যাই,ওকে হাত ধরে টেনে বের করে আনি।ও কি করবে? বাধা দিবে?অসহায় হুয়ে চেয়ে থাকবে?নাকি আমার হাত শক্ত করে ধরে বলবে,চল মাহমুদ,যেখানেই নিয়ে যাবে,আমি যাবো তোমার সাথে।
আপনারা ভাবছেন,এখন আর কি কষ্ট? কষ্ট কোথায়?কষ্ট তো আছেই,কষ্ট হলো এখন আমাকে অভিনয়ের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে,সুখে থাকার অভিনয়।কাল বিয়ে। অভিনয়ের শুরু।
*****
কাল আমার বিয়ে।ঠিক এইসময়ে আমি একজনের হয়ে যাবো চিরকালের জন্য,ভাবতে কেমন লাগছে জানেন?

জঘন্য।কারণ,আমি যাকে মনেপ্রাণে ভালোবাসি তার জন্য আমি অপেক্ষা করব।অনন্তকাল।সে আমাকে যেদিন একরাশ গোলাপ হাতে দিয়ে বলেছিল, ‘অরিত্রিকা,তোমার জন্য’-সেদিন থেকেই মনে জেনেছিলাম,সেই আমার জীবনে সবকিছু।

কিন্তু,যা ভাবা তা আর হল না।নিয়তির লেখন না যায় খন্ডন।আমাকে রাশি রাশি গোলাপ দিলেও সময়মত ও আমার বিয়ের যোগ্য হয়ে উঠতে পারে নি।বাবা-মার সাথে প্রতিবাদ এর পর প্রতিবাদ করে,আর নানারকম কৌশল খাটিয়ে আমি শেষমেশ আত্নসমর্পণ করতে বাধ্য হলাম নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে।কিন্তু এই আত্নসমর্পণ সাময়িক,সময়ের প্রয়োজনে।

অরিত্রিকা অনামিকা কখনো হাল ছেড়ে দেবার মত মেয়ে না।
বিয়ে হচ্ছে,হবে।কিন্তু আমার মনে কি আছে সেটা কাউকে বুঝতে দিবো না।প্রতিশোধ নেব আমি।বুঝবে তখন সবাই। আমার প্রিন্স একদিন আমার কাছে ছুটে আসবে,তখন আমি এই সাজানো সংসার ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছুটে যাবো...

আমি মোটেই সহজ মেয়ে না। যার সাথে বিয়ে হতে যাচ্ছে সে নিতান্তই গোবেচারা নিরীহ।ছবিতে দেখেছি,সামনাসামনি চোখ তুলেও তাকাবার প্রয়োজন মনে করি নি।

এইসব নিরীহ ছেলেগুলিই স্বভাবে আবার উলটো হয় মাঝেমাঝে।বাসর রাতে যদি একটু কাছে আসার চেষ্টা করে আমি ওর ঠ্যাং ভেঙ্গে ফেলব।
মাহমুদ না কি যেন নাম। বড্ড শখ,সুন্দরী মেয়ে দেখেছে আর রাজি হয়ে গেছে অমনি বিয়ে করতে।তোমার কোন আশা পূরণ হবে না বলে দিলাম।ভেবেছে,সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করে বলে বেড়াবে।আমি ওর লাইফ হেল করে দিব। অবাক হচ্ছেন?আমার নিজের রাগ ওর উপর ঝাড়ছি বলে।কি আর করব,কারো না কারো উপর তো ঝাড়তে হবেই। তাছাড়া,সে রাজি না হলে বিয়েটাও তো হত না।রাগ ঝাড়ার যথেষ্ট কারণ আছে বই কি।

আমার চেহারা বেশ নজরকাড়া।একজন বলেছিল আমি নাকি দেখতে অদ্রে হেপবার্ণের মত। জানতাম না এই ভদ্রমহিলা কে।পরে নেটে সার্চ মেরে ভদ্রমহিলাকে দেখলাম।দেখে খুশিই হলাম।মহিলা আসলেই দারুণ সুন্দরী। তো,যে অদ্রে হেপবার্ণের মত দেখতে তার সাথে কি একটা সাধারণ গোবেচারা মাহমুদ-ফাহমুদের সাথে বিয়ে হওয়া সাজে? সাজে না। সে কি পারবে তন্ময়ের মতে কথায় কথায় কবিতা বানাতে?একটানে আমার মুখের ছবি আঁকতে? এসব সবাই পারে না। (চলবে)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৯

জাফরুল মবীন বলেছেন: ভাল লাগল....

গল্পের এগিয়ে চলায় শুভকামনা রইলো....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.