নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন কিন্তু একটাই

জীবন কিন্তু একটাই

হাতপা

কিছু বলার নাই

হাতপা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃউপলব্ধি

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৮


লেখাওপ্রচ্ছদ(আমার)
--------------
'কি দেখ?'
শুভ চুপ।যেভাবে তাকিয়ে ছিল,সেভাবেই তাকিয়ে থাকল।

‘কি দেখ,বলো না’-এবার শুভর গা ধরে নাড়া দেয় অন্তরা।
‘ঐ যে ,ঐদিকে’-বলে শুভ অন্তরার মাথার পিছনে নির্দেশ করে।

মাথা ঘুরিয়ে তাকালো অন্তরা। শুভর আংগুল বরাবার দূরে ভাল করে দেখল।চোখে যা পড়ল,দেখে ভেতরে ভেতরে জ্বলে উঠল ও।বেশ সুন্দর আকর্ষণীয় একটি মেয়ে,দাঁড়িয়ে আছে।এই দেখছে তাহলে শুভ!

‘শুভ!তুমি ফাজলামি পেয়েছ?’বলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।

শুভ নির্বিকার। ওর কাছ থেকে কোন উত্তর না শুনতে পেয়ে গটগট করে হেঁটে চলে গেল।কিছুদূর গিয়ে আবার ফেরত আসল,ব্যাগের চেইন খুলে একটা গোলাপ বের করে ছুড়ে মারলো শুভর দিকে। তারপর,সত্যি সত্যি চলে গেল।

চোখের আড়াল হয়ে গেল,শুভ উঠে দাঁড়াল নিজে।গোলাপ টা নীচে পড়েছিল।আজকে অন্তরাকে দিয়েছিল। তুলে ধূলো ঝাড়তে লাগল।

তারপর অন্তরা যেদিক দিকে হেঁটে চলে গেল সেদিকে এগিয়ে গেল।আসলেই চলে গেলো মেয়েটা?আফসোস করল মনে মনে।একটু বেশিই হয়ে গেল না? নাহ,মনে মনে নিজেকে বলল।

মাঝেমাঝেই অন্তরাকে এরকম রাগিয়ে দেয় শুভ।অন্তরার রাগ একদিন থাকে,দুইদিন থাকে। তারপর,শুভ বলে ফেলে কাজটা ও ইচ্ছে করেই করেছে,বা ও ইচ্ছে করেই রাগিয়েছে।অন্তরা তখন হেসে ফেলে,কখনো কখনো কেঁদে ফেলে ,হাসিকান্না যাই হোক অন্তরাকে দেখে ভীষণ ভালো লাগে,এইটুকু ভালোলাগার জন্য শুভ এমন করে প্রায়।

আজকে একটু বেশি হয়ে গেছে।মেয়েটা কি করছে এখন?
মোবাইল পকেট থেকে বের করে ফোন দিল।ফোনটা অফ করে রেখেছে মনে হয় অন্তরা।

গোলাপ টা হাতে নিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে শুভ।খেয়াল হল।মানুষজন দেখছে।

মোবাইল পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটা দিল শুভ।
‘এই রিকশা যাবে?’
রিকশা নিয়ে উঠে গেল শুভ।এখান থেকে হোস্টেল বেশি দূর নয়।কিন্তু হাঁটতে ইচ্ছে করছে না।

‘কিরে শুভ?পড়তে বসবি না?তাজুল স্যারের সিটি আছে।আয়’।

আসিফের ঠেলায় ঘুম ভাঙে শুভর।খুব ঘুম পাচ্ছিল।উফ,পড়া তৈরি করতে হবে। মুখ হাত ধুয়ে আসিফ এর টেবিলে গিয়ে বসল।এইখানে ওরা মানে আসিফ,শুভ ,ফয়সাল গ্রুপস্টাডি করে।

‘সিলেবাস কি বেশি বড় নাকি রে?’-ফয়সল জানতে চায়। আসিফ গুডবয়।ওর কাছেই সবাই পড়া দেখতে আসে।

সবাই কে সিলেবাস বলে দিয়ে বইয়ের কোথা থেকে কী পড়তে হবে বলে দেয় আসিফ।সবাই নিজ নিজ বইয়ে মনোনিবেশ করল।
শুভ নিজের বইটা নিয়ে শুয়ে পড়ল বিছানায়।মোবাইলে ফোন দিল।অন্তরাকে,বন্ধ,এখনো।ধুর।নিজের উপরেই রাগ হল।রাগ করে থাকলেও এতক্ষণ মোবাইল বন্ধ রাখার কথা নয়। হয়ত বন্ধ করেই ঘুমাচ্ছে।
পড়ায় মন দেবার চেষ্টা করল শুভ।
'আসিফ,দোস্ত এই ম্যাথের আগামাথা কিছুই বুঝছি না রে'- ফয়সাল অভিযোগ করে।

'এখানেই তো আসল কাহিনী।'–বিজ্ঞের মত মাথা নাড়ায় আসিফ,তারপর ওদের কে সামনে বসতে বলে,খাতায় ড্র করে বুঝাবে।

শুভ উঠে বসে।

আসিফ হড়বড় করে বুঝাচ্ছে।শুভর মাথায় কিছুই ঢুকে না।
‘দোস্ত ,কি বলছিস এগুলো?’-শুভ বিরক্ত কন্ঠে বলে।
‘আরে।এতক্ষণ যেই টপিক্স দুটো ওগুলো দিয়েই তো এক্সপ্লেইন করছি,পড়িস নি?’
‘কোন কোন টা?’-শুভ অস্থির কন্ঠে বলে।

শুভ র হাত থেকে বই নিয়ে আবার বলে দেয় আসিফ। শুভ একই জিনিস দ্বিতীয়বার পড়ার ট্রাই করে।আসিফের দোষ নেই।ওর কিছুতেই মন বসছে না।বারবার মোবাইলের দিকে চোখ চলে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে,এই বুঝি মেসেজ আসল।

মেসেজ আর আসেনা।আবার কল দিলো শুভ।বন্ধ।নাহ,এবার তো টেনশান হচ্ছে।পড়া রেখে দিয়ে উঠে গেল শুভ।

কী করা যায়? ভাবতে ভাবতে সিগারেট টানছে।অন্তরার নাম্বার টা মুখস্ত।নাম্বার টিপে ডায়াল করল,সেই কন্ঠ-সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।সিগারেট টা জোরে জোরে টান দিয়ে শেষ করে ফেলে দিল ছুড়ে।

রাতে ডাইনিং থেকে খেয়ে আসল সবাই।শুভ আজকে একলাই খেতে গেল। অন্যদিন ফয়সল,আসিফ এর সাথে যায়। খেয়েদেয়ে রুমে না গিয়ে বাইরে হাঁটাহাঁটি করল কিছুক্ষণ।মোবাইল টা রুমেই রেখে এসেছে।সাথে থাকলে বারবার কল দিতে ইচ্ছে করে।পরে গিয়েই ফোন দেবে।ততক্ষণে নিশ্চয়ই খোলা পাবে।হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর চলে আসল।মোশারফের চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে গিয়ে বসল- মামা,একটা লেবু চা।

কি করছে অন্তরা এখন?নিশ্চয়ই শুভর উপর রাগ কমাতে পারেনি।মন খারাপ করে বসে আছে।হয়ত,না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।

‘চা!’

মোশাররফের ডাকে সংবিৎ ফিরল।চা টায় চুমুক দিয়ে ঠোঁট পুড়ে গেল।

যা ভেবেছিল তাই!ফোনটা এখন অন।সস্তির নিঃশ্বাস ফেলল শুভ।

ওপাশ থেকে কেউ ফোন ধরছে না।আবারো ফোন দিল।এভাবে টানা তিন চারবার ফোন দিল।ধরেনি অন্তরা।হিসাব মিলছে না।অফ থেকে অন করল,কিন্তু ফোন ধরল না?এত রাগ!

পড়ার বইটা চোখের সামনে নিয়ে বসে আছে শুভ।

মেসেজ আসল একটা।সাথে সাথে মোবাইল টা দেখল শুভ।

‘ভাইয়া,আপুর অবস্থা খুব খারাপ। ওকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে।দোয়া করেন- অয়ন’

মানে কি? কল দিল শুভ।ওপাশ থেকে ফোন ধরছে না আর।অয়ন অন্তরার ছোটভাই।ওদের প্রেমের কথা কিছু কিছু জানে।ওই মেসেজ দিয়েছে।
অস্থির হয়ে গেল শুভ।পটাপট মেসেজ লিখল,যাতে অন্তরার অবস্থা ওকে ডিটেইলস জানানো হয়।

পড়ার বই বন্ধ করে চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইল।আমার জন্যই এমন হল।শুধু আমার জন্য।

রাত এগারোটা বাজে। মোবাইল টা চোখের সামনে।কোন রিপ্লাই আসেনি।
টেনশানে ঘুম আসে না ,কিন্তু অতিরিক্ত টেনশানে ঘুমিয়ে পড়ল শুভ।

পরদিন ক্লাস করল শুভ।পরীক্ষা হল মোটামুটি।সারাদিন মোবাইলের দিকেই চোখ ছিল। যদি কল বা মেসেজ আসে। ক্লাস শেষে হোস্টেলে গেল না।মন খারাপ করে হাঁটতে লাগল।হাঁটতে হাঁটতে চলে আসল ফুলার রোডের সেই জায়গাটাতে,যেখানে ও আর অন্তরা প্রায় বসে।
ঠিক কালকের জায়গাটা।

ওখানেই বসে পড়ল শুভ।মোবাইল টা হাতে।কল দিল না।অনেক বার দিয়েছে।কেউ ধরেনি।

অন্তরার কথা ভাবতে ভাবতে চোখের কোণে জল চলে আসলো।প্লিজ অন্তরা।আর কখনো এমন হবেনা।এবার আমায় ক্ষমা করো।কাকে বলছে এসব?নিজের অজান্তেই বিড়বিড় করে চলছে শুভ।

তখনি ফোন আসল।

উঠে দাঁড়িয়ে গেল উত্তেজনায়।ফোন টা রিসিভ করার আগে চোখের কোণের জল হাত দিয়ে মুছে নিল।

-‘হ্যালো’-অন্তরার কন্ঠ।
-‘তুমি কোথায়?’ –কাঁপা কাঁপা কন্ঠে শুভ বলল।
‘এদিকে তাকাও।তোমার পেছনে দেখ’-অন্তরা বলে।

অন্তরা!
কাছে গিয়ে দাঁড়ালো শুভ। অন্তরাকে সুস্থই মনে হচ্ছে।

‘কি হয়েছিল?’
শুভর হাতটা খপ করে ধরল-‘চল,হাঁটি’
‘কি হয়েছিল বলো না?’
‘একটু ছ্যাঁকা দিলাম,বেশি লেগেছে?’
‘মানে?’-বিস্মিত শুভ।
তুমি যে গতকাল মেয়েটিকে দেখছিলে না,আমি টের পেয়েছিলাম।আমাকে কষ্টে রাখতে ভালো লাগে?এখন টের পেলে?
অন্তরার কথা শুনে রেগে গিয়েও আবার শান্ত হয়ে পড়ল। গতরাতের কথা মনে করে,ও অন্তরার মুখটা চেপে ধরল বুকে।

(End)

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুখপাঠ্য

২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২১

সুমন কর বলেছেন: তেমন ভাল লাগেনি।

৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২৪

আমি সৈকত বলছি বলেছেন: খারাপ না

৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০০

নাহিদ রুদ্রনীল বলেছেন: লেখার ধরনটা সুন্দর। বিষয়ে আরও বৈচিত্র্য আশা করছি। শুভকামনা।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:১৫

হাতপা বলেছেন: একটু হাল্কা মেজাজে লিখলাম।আরো গল্প আছে,ব্লগে ঘুরে আসতে পারেন ,ধন্যবাদ

৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৫৪

নাইট রাইটার বলেছেন: মজা পাইলাম =p~ =p~ =p~

৬| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪

মীর সজিব বলেছেন: লেখার ধরন ঠিক ছিলো। তবে আরো মাধুর্য রাখলে ভালো হতো।
তারপরেও অনেক ভালো লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.