নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাশ্চাত্য দেশে এক নির্লজ্জ প্রথা আছে- পত্নীকে বই উৎসর্গ করা এবং অন্তহীন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।যে সব মনুষ্য রাস্তাঘাটে খালে-বিলে আলিঙ্গনে-চুম্বনে অভ্যস্ত তারা যে ছাপার অক্ষরে বেলেল্লাগিরি করবে এ আর বিচিত্র কি?কিন্তু বলি ব্যাপারটা কি?পত্নীপ্রেম সাধারণ্যে শিঙা ফুঁকে ঘোষণা না করলেই নয়?এ লাইনে যারা বেশী বাড়াবাড়ি করে তাদের বিবি তালাক অবশ্যাম্ভাবী বৌকে ধন্যবাদ যদি দিতে হয় ত ল্যাভেন্ডার রঙ-এর “যাও পাখী বোলো তারে সে যেন ভুলে না মোরে” –মার্কা কাগজে চিঠি লেখ,লিখে বালিশের পাশে রেখে দে,আমাদের জ্বালাবার হেতু কি?
... যেসব বাঙালি বাবু সামন্তর ছানা বলে গর্বে ফেটে পড়েন,তাঁদের পূর্বপুরুষ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নায়েব,পেশকার,বেনিয়ান জাতীয় ছা-পোষা মানুষ ছিলেন। মাছ-দুধ সস্তা থাকায় একটু হয়তো মোটাগাঁট্টা ছিলেন।
...হলঘরের মুখোমুখি ‘উত্তরের কোডা’ অর্থাৎ উত্তরদিকের ঘর ,যেখানে সোফা কৌচ ঝাড়লন্ঠনের ‘ফুডানি’[অর্থাৎ ফুটানি, বরিশালের ভাষায় বিলাস ব্যসনের সুষ্ঠু বর্ণনা]
...সেরেস্তার কোন ফোঁপরদালাল কর্মচারী ঠিক করলেন যে মাতব্বরদের আপ্যায়ন আর একটু শানদার হওয়া দরকার।ফলে তাঁদের মাদুরে বসতে দেয়া হয়। তারপর,বিরাট হাঙ্গামা,ভয়ঙ্কর হইচই। মাতব্বররা আসন ছেড়ে খাওয়া ফেলে দল বেঁধে চলে যাচ্ছেনঃ “মোরগো ডাইককা আনিয়া অপমান করছে”।বাবুরা শশব্যস্তে অকুস্থলে এলেন-“যাইওনা,হইল ডা কি? কথাডা কি কও” ।বরিশাল জেলার লোক সব সহ্য করতে রাজী, কিন্তু অপমান সহ্য করে না। কিসে অপমান হল? “আর হগলে হোগলায় বইছে আর আমাগো বওনের কি দিছে? বইলেই হড়হড়াইয়া যায়” । মাদুর তুলে হোগলার চাটাই পাতা হল ।তখনকার মত প্রজাবিদ্রোহের সমাপ্তি।
... সেই আদর্শ সমাজে সবাই সবার ‘হালা’ এবং মনুর সন্তানেরা অধিকাংশই ‘হারামজাদা’ ।মনের আবেগ বেশি প্রকাশ হলে শেষ কথাটি ‘শাআরামজাদা’ উচ্চারিত হত। বড়হিস্যার ভৃত্যকূল একবার তাদের এক প্রবীণ সহকর্মীর বিরুদ্ধে হুজুরে নালিশ জানায়। ...লেখকের ঠাকুর্দা বৃদ্ধকে ডাকিলেন “বুড়া,তুমি নাকি হগলরে হারামজাদা কও?” বৃদ্ধ সাতহাত জিভ কেটে গভীর পরিতাপের সঙ্গে বললেন-“কয়েন কি ?এমন কথা কারওরে আমি হাত [সাত] জন্মেও কই নাই।কে নালিশ করছে,হ্যারে বোলায়েন” ...
প্রধান ফরিয়াদীকে তলব করা হোল,তাকে দেখামাত্র বৃদ্ধ তেড়ে গেল-“কিরে হারামজাদা! তরে বলে আমি হারামজাদা কই?”
============================
-রোমন্থন অথবা ভীমরতিপ্রাপ্তর পরচরিতচর্চা
(লেখক- অধ্যাপক তপন রায় চৌধুরী )।
তিরিশ আর চল্লিশের দশকে পূর্ববঙ্গের একটি জেলা বরিশাল আর কলকাতার ছাত্রজীবন এই গ্রন্থের পটভূমি।কৌতুকবোধের চমৎকার উপস্থাপন, লেখকের বর্ণনার ঢং আর পরিবেশনায় একটি অনন্য রচনাই বলা যায়।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১৯
হাতপা বলেছেন: রিভিউ লিখিনি। ভালোলাগা কিছু অংশ তুলে ধরলাম
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: হাতপা ,
খুব মজা করে লেখা বই । ভীমরতি লেখা । কিন্তু বান্তব ।
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৫৪
অদ্বিতীয়া আমি বলেছেন: খুব সুন্দর আর মজার একটা বই ।
৪| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৪
জুন বলেছেন: অনেক বছর আগে তপন রায় চৌধুরীর এই লেখাটি প্রথম দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। তখনই পড়ে সংগ্রহে রেখেছি আর কতশত বার যে পড়েছি তার ইয়াত্তা নেই । এই মহান এবং অসাধারন পন্ডিত ব্যাক্তিটির দেশ কীর্তিপাশার জমিদার বাড়ীও দেখে এসেছি আমি।
শ্রদ্ধা জানাই তাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২৬
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: সুন্দর রিভিউ| ওঁর কোন বই পড়িনি| এবার পড়ে নেব