নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নরকে স্বাগতম।

হাতুড়ে লেখক

ফেসবুকে আমি: www.facebook.com/ariyaanriyad

হাতুড়ে লেখক › বিস্তারিত পোস্টঃ

আয়োজন

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪১





মাহসাদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবুও কেন জানি তার মনে হচ্ছে তার পেটটা আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে।
-যত্ত্বসব উদ্ভট চিন্তাভাবনা তোমার।
অবিতা একটা কপট রাগের ভঙ্গিমায় মাহসাদের শার্টের বুতাম ফিক্স করে দেয়।
-সত্যি বলছি আমি। বিশ্বাস করো আমার কথা।
-আচ্ছা বাবা বিশ্বাস করলাম। আজকে তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরবে।
-কেন?
-তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো।
-কেন?
-বাহ রে! তুমি ছেলে বাবু প্রসব করছো নাকি মেয়ে বাবু প্রসব করছো সেটা জানতে হবে না?
-ধ্যাত! যাচ্ছি আমি। গেইট লাগিয়ে দিও।

মাহসাদ বৌয়ের কথামত তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে। যথেষ্ট চিন্তিত সে তার পেট নিয়ে। অবিতা না বললেও সে নিজেই ডাক্তারের শরানাপন্ন হতো। সে বাসায় এসে দেখে অবিতা রেডি হয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে।
-তুমি জানলে কি করে আমি তাড়াতাড়ি আসবো?
-তোমার অফিসে ফোন করেছিলাম। তোমার অ্যাসিট্যান্ট বললো, কিছুক্ষণ আগেই বেড়িয়েছো।

এই এলাকাতে বাসা ভাড়াটা বেশ কম। এটাই একমাত্র কারণ হতে পারে ডঃ মেহেরুন্নেসার এখানে আসবার। আবার ভিন্ন কারণও হতে পারে। বাড়িওয়ালার একটি মাত্র কন্ডিশন ছিলো, বাসায় কোন রকম সাইনবোর্ড বা বিজ্ঞাপন চিত্র লাগানো নিষেধ। বিনাবাক্যে রাজি হয়েছে সে। পারতপক্ষে এটাই চাইছিলো সে। প্রচন্ড রকম নিরিবিলি একটা বাসা। মাসে দু একটা রোগী হলেও সমস্যা নেই তার। এতদিন দুইহাতে টাকা কামিয়েছে সে। এখন একটু বিশ্রাম প্রয়োজন। কোন রকম বিষন্নতা যেন ঘিরে ধরতে না পারে সেই জন্যই চেম্বারটা খুলেছে সে।

কিছুক্ষণ হলো মাহসাদ আর অবিতা ডঃ মেহেরুন্নেসার চেম্বারে এসেছে। অবিতা হাত নেড়ে নেড়ে মাহসাদের সমস্যাটা মেহেরুন্নেসাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। মাহসাদ চুপচাপ বসে আছে সোফার এক কোণায়। কোন কারণে তার চোখটা ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে।
-ওয়াশরুম টা কোনদিকে?
ঢোক গিলে উচ্চারণ করে মাহসাদ।
-কি হয়েছে মাহসাদ? খারাপ লাগছে?
অবিতা মাহসাদের পাশে চলে আসে।
মেহেরুন্নেসা তার অ্যাসিট্যান্টকে ডেকে ওদের ওয়াশরুমটা দেখিয়ে দিতে বলে।

আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বটার দিকে তাঁকায় মাহসুদ। নিজেকে কেমন যেন অচেনা লাগে। তার পেটের মধ্য থেকে বিকট একটা অট্টহাসি ভেসে আছে। মাহসুদের আবারো গা গুলিয়ে ওঠে।
-ওয়াক!
সর্বশক্তি দিয়ে বেসিনটা আকড়ে ধরে থাকে কিছুক্ষণ। ডঃ মেহেরুন্নেসা কে দেখা আকস্মিক হলেও দৈব নয়। মাহসাদ খেয়াল করলো বেসিনের আয়নায় এক টুকরো ক্ষতস্মৃতি স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।

-তুমি বোধকরি বাবা হতে চলেছো!
মেহেরুন্নেসার কথায় থমকে যায় মাহসদ।
-তুমি নিশ্চই জানো একজন অবিবাহিত ছেলের পক্ষে সংবাদটা মোটেই সুখকর নয়।
একটা ক্রুর হাসি ফোটে মাহসাদের ঠোটে।
-এটা তুমি কি বলছো মাহী?
-হ্যা বাচ্চাটাকে নষ্ট করে দাও মেহের।
-আমি পারবো না।
-তোমাকে পারতেই হবে।
-ওহ! এটাই তোমার শেষ কথা?
-হ্যাঁ।
-আচ্ছা। তবে কান খুলে শুনে রাখো মাহী ওকে আমি বাঁচিয়ে রাখবো যে করেই হোক এবং তাকে এমনভাবে গড়ে তুলবো যে তুমি কখনো চিন্তাই করতে পারবে না।

-আমার সন্তানকি বেঁচে আছে এখনো? কত বড় হয়েছে সে?
মাহসাদ ভাবে। একটা পাপবোধ তাকে কুকড়ে ফেলে দুমড়ানো কাগজে মত। সে আচ্ছন্নের মত পানির কলটা হাতড়িয়ে বেড়ায়।
মাহসাদ চোখে মুখে কয়েক আঁজল পানি ছিটিয়ে নেয়। তারপর টলতে টলতে ওয়াশরুম থেকে বেরোয়। সে নেশাতুর কন্ঠে বলে উঠে,
-আমি বাড়ি যাবো অবিতা।


মাহসাদের মনে হয় সে কোন শশ্মানে শুয়ে আছে। চারদিক কেমন নিস্তব্ধ। চারপাশটা একবার চোখ বুলিয়ে নেয় মাহসাদ। পারপেল কালারের একটা দেয়াল। পূর্বকোণে একটা উলঙ্গ বাচ্চার ছবি। বাচ্চাটা তার পেনিস হাতে নিয়ে খেলা করছে। বাচ্চাটা কিছু বলছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছেনা তার কন্ঠটা। হঠাৎ বাচ্চাটার হাতে একটা ছুরি চলে এলো। বাচ্চাটা মৃদু হেসে ছুরিটা তার নিম্নাঙ্গে পোচাতে থাকলো। মাহসাদ চিৎকার করে উঠলো,
-নাআআ!!!
মাহসাদ বুঝতে পারলো এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল সে। অবিতা ঘুমুচ্ছে বেঘোরে। গোড়ালীর কাপড় সরে গিয়ে সুঢোল উরু উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিন হলে মাহসাদের নেশা ধরে যেত। আজ ধরলো না। থেকে থেকে একটা প্রশ্ন বার বার জেগে উঠলো।
-আচ্ছা মেহের কি জেগে আছে এখনো? বাসাটা বেশ কাছেই। চাইলে হেঁটেই যাওয়া যায়।
মাহসাদ উঠে পড়ে। দরজাটা আস্তে করে ভিজিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে পড়ে।

-আমি জানতাম তুমি আসবে!
-আমার সন্তান কি বেঁচে আছে?
সোজাসুজি প্রশ্ন করে মাহসাদ।
-ধীরে বন্ধু ধীরে! সব বলবো। বলার জন্যই তো এত আয়োজন। চলো চা খেতে খেতে কথা বলি।

-তুমি কি জানো আমার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে ঘৃণিত পুরুষ কে?
মাহসাদ চুপ করে থাকে।
-তুমি হয়তো ভাবছো তোমার কথা বলছি! মোটেই না। চলো দেখাচ্ছি তোমাকে।
মাহসাদ নেশাগ্রস্থের মত মেহেরুন্নেছার পিছু পিছু চলে।
প্রথমবার প্রবেশ করলে মনে হবে এটা একটা লাইব্রেরী। অসংখ্য বইয়ের সমাবেশ। আসলে এটা ডঃ মেহেরুন্নেসার স্টাডি রুম। রুমের আসবাবপত্র বলতে, ছোট্ট একটা টেবিল তার উপর কিছু সরঞ্চামাদি আর একটা সিঙ্গেল খাট।

-এটাতে কি আছে জানো মাহী?
একটা সাদা কৌটা হাতে নিয়ে মাহসাদের দিকে বাড়িয়ে দেয় মেহেরুন্নেসা।
-না।
-এটাতে একটা পেনিস রাখা আছে। তোমার সাইজের। আমার জন্মদাতার পিতার।
-কি! অসুস্থ হয়ে গেছো তুমি!!
-যা খুশি ভাবতে পারো। কিছুক্ষণ পর তোমার পেনিসটাও কৌটা বন্দী করে রাখা হবে।
-আমার এখানে আসাটা ভুল হয়ে গিয়েছে। যাচ্ছি আমি।
-এখানে আসার ইচ্ছেটা তোমার যাওয়ার ইচ্ছেটা আমার। পেছনের দিকে তাঁকালেই দেখতে পাবে একটা ভেজানো দরজা। দরজার পাশে আমার অ্যাসিট্যান্ট দাড়িয়ে আছে। ওকে তো তুমি দেখেছো? ওর চোখের দিকে তাঁকালেই বুঝতে পারবে পেশাদার খুনী ও। আশা করি জোরপূর্বক তোমাকে বিছানায় শোয়াতে হবে না?
-কি করতে চাও তুমি?
-বিশ্বাস করো একটুও ব্যথা পাবে না তুমি। আমি একজন স্বীকৃত ডাক্তার। সম্পূর্ণ ভরসা রাখতে পারো আমার উপর।
-এটা হতে পারে না!
মাহসাদ অস্ফুট স্বরে চিৎকার করে উঠে।
-দেখি পাজামাটা খুলে ফেলো এবার। তোমার পুরুষযন্ত্রটা দেখাও।
-না আ।
ডুকরে কেঁদে উঠে মুখ ডাকে মাহসাদ।
-লজ্জা পাচ্ছো? লজ্জা পাওয়ার কি আছে? আমি তো অসংখ্যবার দেখেছি ওটা! বাম পাশের তিলটা আগের মতই রয়েছে?
মাহসাদ সর্বশক্তি দিয়ে নিজেকে মুক্ত করতে চাইলো বেড থেকে। কিন্তু সে অনুভব করলো তার সারা শরীর কেমন অসাঢ় হয়ে গিয়েছে।
-তোমাকে যে ইনজেকশন দিয়েছি এটাতে তোমার দেহটা অসাঢ় হলেও তোমার শ্রবনন্দ্রীয় অ্যাকটিভ রয়েছে। আশা করি তুমিও আয়োজনটা উপভোগ করতে পারবে।

একটা খচখচে অনূভুতি পেল মাহসাদ।
-অনুভুতিটা কেমন ছিলো মাহী?
মেহেরুন্নেসা মৃদু হেসে জানতে চায়।
-তিনঘন্টা পর জ্ঞান ফিরবে তোমার। তোমার পেনিসটা এখন আমার কৌটায় সোভা পাচ্ছে। এটা নিয়ে কৌটার সংখ্যা দুইয়ে দাড়ালো। আমার সংগ্রহশালাটা আরো বাড়ানোর ইচ্ছা রয়েছে।
মাহসাদ চোখ বুজলো। তার চোখে মুখে ফুটে উঠলো অব্যক্ত যন্ত্রণার অভিব্যক্তি। অথচ এর চেয়েও বড় বিস্ময় তার জন্য অপেক্ষা করছিল।
-আমার এক্সপেরিমেন্ট যদি সফল হয় খুব শিঘ্রই তোমার নিজের ভ্রুণের মা হবে তুমি, যেটা আমি বাঁচিয়ে রেখেছিলাম এতদিন ধরে। তোমার প্রশ্নের উত্তরটা পেয়েছো মাহী??

ছবি: ইন্টারনেট

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: কিভাবে সম্ভব হলো!!

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৭

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: জানা নাই। ;)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গবেষণা করা দরকার! B:-)

২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৭

ধ্রুবক আলো বলেছেন: এরকম ঘটনা মুভিতে ঘটে বোধহয়!!

আর্নোল্ড শোয়েজনাইগার এর একটা মুভিতে নিজেই প্রেগনেন্ট হয় মেডিকেল এক্সপেরিমেন্ট করে!!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গল্পটার মৌলিক পরিবর্তন এনেছি। আবার দেখতে পারেন চাইলে।

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:০৭

সাদা মনের মানুষ বলেছেন:

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:১৪

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গল্পে একটা মৌলিক পরিবর্তন এনেছি। আবার পড়তে পারেন চাইলে।

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৫২

কাশফুল মন (আহমদ) বলেছেন: মজার কাহিনী

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২১

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: গল্পটা আরেকবার পড়ুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.