নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জন্ম। কাঁচ-পাকা চুল, দাঁড়িসমেত ইঁচড়ে পাকা যুবক।পেশাদার ট্র্যাভেল ব্লগার।ঘুরে বেড়াই ও লিখি।শখের বশে সাহিত্য চর্চা করি।সদালাপী,অলস ও স্বপ্নবাজ। জীবনের উদ্যেশ্য খুজে পাই নি।মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত।যতক্ষণ শ্বাস চলে ততক্ষণ সুবাহানাল্লাহ

ফয়সাল হাওড়ী

স্বরূপ বিনির্মাণে মগ্ন ।

ফয়সাল হাওড়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্যবসাঃ শ্রেণী শৃঙ্খল ভাঙার যুদ্ধ

১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:০৫

তরুন প্রজন্মের অনেকেই এখন ব্যবসার দিকে ঝুকছে । কেউ কেউ সফল হচ্ছে কেউ কেউ ব্যর্থ হচ্ছে । যারা সফল হচ্ছে তাঁদের সফলাতার রহস্য পত্র-পত্রিকা,ব্লগ,সোসাল মিডিয়ায় হরহামেশাই দেখা যায় । কিন্তু যারা ব্যর্থ হচ্ছে তাঁদের কি হাল ? তাঁদের বেহাল দশা তাঁরা ভিন্ন অন্য কেউ তেমন করে বোঝে না এমন কি প্রকৃত অবস্থাটা বর্ণনা করাও অন্যের পক্ষে দুষ্কর।

আমি আমার এই লেখায় সফলদের সফলতার রহস্য ভেদ করবো না । আমি ব্যর্থদের অবস্থানটা তুলে ধরার চেষ্টা করবো । তাঁর আগে দেখি কেন এই প্রজন্মের তরুনরা ব্যবসায় আসছে ।



১ উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুবকরা ব্যবসায় আসছে ।

২ কাঠামো বদ্ধ জীবন যাপনে অনাগ্রহী যুবকরা ব্যবসায় আসছে । আমার ধারনা বর্তমান সময়ে এই শ্রেণীর উদ্যোগতা বেশি । শুধু নয়টা পাচটা অফিস ও অন্যের অধীনে চাকরী মেনে নিতে পারছে না তাই উদ্যোগতা হচ্ছে ।

৩ চাকরীর বাজারে দুর্নীতি, অনিয়ম ও লবিং এর দৌড়ঝাঁপ করার ইচ্ছা ও শক্তি দুটোর একটাও নাই তাই ব্যবসায় আসছে ।

৪ মানসম্মত জীবন যাপনের ব্যয় বৃদ্ধি ও অন্যন্য পেশায় সেই অনুযায়ী ইনকামের বৈষম্য দেখে হতাশায় ভোগে ব্যবসায় আসছে ।

৫ ঠিক মত পড়ালেখা করতে না পারার হতাশা থেকে ব্যবসায় আসছে ।

৬ সফলদের গল্প শোনে উদ্যোতা হচ্ছে ।

৭ পারিবারিক ঐতিহ্য ব্যবসা- তাই ব্যবসায় আসছে । বর্তমানে এই শ্রেনীর নতুন ব্যবসায়ী কম । তাঁদের অনেকেই পুরাতন ব্যবসার হাল ধরছে তাই নতুন ব্যবসায়ীদের থেকে তাঁদের ব্যবসা করা কিছুটা সহজ হচ্ছে । পূর্বপুরুষ ব্যবসায়ী এমন তরুন্দের অনেকের ব্যবসা করার ইচ্ছা কম থাকে । অনেক ব্যবসায়ী পরিবার তাঁদের নতুন প্রজন্মকে ব্যবসায় যেতে নিরুৎসাহিত করে।



যে যেই দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে ব্যবসায় আসুক তাঁরা আসছে । মোদ্দা কথা নতুন প্রজন্মের ব্যবসায় আসার প্রবণতা বাড়ছে । এই প্রবণতা বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ তথ্যের অবমুক্তি ও যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন। প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ এই ক্ষেত্রে প্রধান সহায়ক । জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও উপর্যুক্ত কারণ সমুহের দরুন আমাদের দেশে নবীন ব্যবসায়ী বা উদ্যোগতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এই ক্রমবর্ধমান উদ্যোগতা গোষ্ঠীর অধিকাংশ ব্যর্থ । আমার এই লেখার মুল প্রতিপাদ্য বিষয় তাঁদের ব্যর্থতার কারণ খুজে বের করা । আসুন দেখি কেন তাঁরা ব্যর্থ হচ্ছে।



১ নতুনদের ব্যবসায় ব্যর্থতার প্রধান কারণ তাঁরা ব্যবসাকে ভালবাসে ব্যবসায় আসছে না । তাঁরা অনেকেই বাধ্য হয়ে আসছে বা বিকল্প পেশা হিসেবে ব্যবসা করছে । যেহেতু চাকরীতে এই সমস্যা বা যেহেতু চাকরী পাচ্ছি না সুতরাং ব্যবসা করবো ।



এই মানসিকতা থেকে ব্যবসায় আসলে ব্যর্থতা স্বাভাবিক । কেননা চাকরীর বিকল্প হিসেবে তাঁরা ব্যবসা করছে । ছোট বেলা থেকে সপ্ন দেখে আসছে, এই চাকরী করবো, সেই চাকরী করবো, তাতে তাঁর কল্পনার জগতে ওঁই চাকরীর সাথে তাঁর প্রেম হচ্ছে । আমি অনেক কে দেখেছি আর্মিতে চাকরী করার সপ্নে বিভোর হয়ে "বুকের ছাতি" ফুলিয়ে রাস্তায় হাটে, সর্বদা "মাথার চুল" ছোট করে ছাটে । বিসিএস ক্যাডার হবে এই সপ্নে বিভোর হয়ে নিজের মধ্যে একটা অযাচিত গাম্ভীর্য ধরে রাখে । বিভিধ কারণে যারা তাঁর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছাতে পারে না তখন ব্যবসায় আসে । তখন বিষয়টা আসলে কি দ্বাড়ায় ? রাত কাটাচ্ছি বউয়ের সাথে আর মনের অলিন্দে নাচে পার্বতী।



বলি ভাই প্রেমহীন এই জগতে কোন সপ্ন পূরণ হয় ? শচিন টেন্ডুকার ক্রিকেটকে ভালো না বাসলে কি শচিন হইতো ? আপনি কি এমন কোন সফল ব্যক্তির কথা জানেন যে সে তাঁর কর্মকে ভালো না বাসে সফল হইছেন ? আমার জানা নাই।



বিখ্যাত ব্যক্তিদের কথা বাদ দিলাম। নিজের দিকে খেয়াল করুণ। টিন এজ (১২/১৩) থেকে আপনি (২০/২১) পর্যন্ত অন্য একটা পেশাকে ভালোবেসে আসছেন । আর ২৫/২৬ এসে ব্যবসা করতে মন স্থির করলেন। আপনি ৩০ এ সফল হতে চান । তাও সে ব্যবসায় আপনার ভালোবাসা নাই । বিষয়টা হাস্যকর দেখায় না?



ব্যবসায় সফল হওয়ার মূলমন্ত্র ব্যবসার প্রতি ভালবাসা । তাই ব্যবসায় সফল হতে হলে ব্যবসাকে ভালবাসুন । সে যত ছোট ব্যবসাই হোক ।



২.আমার প্রিয় শিক্ষক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার একটা কথা বলেছিলেন "বড় হওয়ার কোন শর্টকাট রাস্তা নাই ।" আমাদের নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই জিনিসটার অভাব প্রচণ্ড । ব্যবসায় নেমেই তাঁরা সফল হতে চান । রাতারাতি সফল হওয়ার চেষ্টা তাঁদের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় । মনে রাখবেন অধিক চাপ মাথায় নিয়ে খেললে অনেক ভালো ব্যাটসম্যানও ভুল খেলে । ব্যবসায় সফল হওয়ার ক্ষেত্রে ধৈর্যের বিকল্প নাই । রাতারাতি সফল হওয়ার বাড়তি চাপ না নিয়ে ধৈর্য ধরুন, সঠিক পরিশ্রম করুন, সফল হবেন।



৩ অনেকেই ব্যবসার ধরণ নির্বাচন করতে ভুল করে । আপনার ভালো ধারণা না থাকলে সেই ব্যবসায় না যাওয়াই উত্তম । নিজের ভালো ধারণা না থাকলেও আপনার বিস্বস্থ ও খুব কাছে মানুষ কারো যদি অভিজ্ঞতা থাকে তবে তাঁর সাহায্য ও পরামর্শ নিন।



৪ ব্যবসা মানে রয়ালিটি । রয়ালিটি মানে অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে নিজে শিকার করা । এই রয়ালিটি সুখ সারাজীবন পেতে চাইলে আগে নিজের কাধে বন্দুক রেখে অন্যকে গুলি করতে দেন । আপনি যে সেক্টরে ব্যবসা করতে চান সম্ভব হলে সেই সেক্টরে আগে কিছুদিন অন্যের অধীনে চাকুরী করুণ । এবং সেই চাকুরীর সময়টাকে আপনার প্রশিক্ষণ হিসেবে নিন ।



৫ ব্যবসা মানে ঝুকি । ব্যবসায় নেমে আপনি ফতুর, রাজা দুটোই হতে পারেন । এই দুটো ফলাফলকেই মেনে নিতে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ফতুর হলে সেই সময়ের কস্ট মেনে নেওয়ার মানসিকতা নিজের মধ্যে রাখুন।



৬ ব্যবসায় স্থায়ী ব্যর্থতা বলে কিছু নেই । ব্যর্থতা সাময়িক । আপনার এই সাময়িক ব্যর্থতার সময়টাতে আপনি অনেক কিছু হারাতে পারেন । আপনার হাতে টাকা না থাকলে আপনার বন্ধু কমে যাবে । এমনকি আপনার পরিবারের সদস্যরাও আপনার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে । তবে আপন পর ভেদ ছাড়াই কিছু মানুষ আপনার একান্ত সহচর হবে । তাদের প্রতি যত্নশীল হোন । তাঁরাই আপনার প্রকৃত বন্ধু ।



৭ ব্যবসার ক্ষেত্রে একনিষ্ঠা একান্ত প্রয়োজন । গার্লফ্রেন্ডের মতো ব্যবসা বার বার চেঞ্জ করবেন না । অন্তত সফল না হওয়া পর্যন্ত সে ব্যবসায় লেগে থাকুন।





ব্যবসায় যারা ইতোমধ্যে নেমে গেছেন তাঁরা জেনে রাখুন ব্যবসা শুধু আপনার জীবিকা নয় । ব্যবসা আপনার শ্রেনী শৃঙ্খল ভাঙার যুদ্ধ ।



একটি প্রজন্ম একটি সমাজ শ্রেণীকে অতিক্রম করবে এটা স্বাভাবিক । এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম । মানব জীবনের লক্ষ্য তাই হওয়া উচিত। একজন নিম্নবিত্ত কৃষকের ছেলে পড়ালেখা শেষ করে চাকুরীজীবি হতেই পারে । অর্থাৎ নিম্নবিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত হবে । এমন কি সুবিধাজনক চাকুরী না হলে আবার নিম্নবিত্তও হতে পারে। কেননা জীবন যাপনের লাগামহীন খরচ ও আমাদের দেশের মত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির দেশে আপনার চাকুরীর বেতন বৃদ্ধির হার, ব্যয় বৃদ্ধির তুলনায় যৎসামান্য । দীর্ঘদিন সফলতার সাথে চাকুরী করে আপনি একটি শ্রেনী অতিক্রম করে নিম্ন বিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত হতে পারেন।



কিন্তু ব্যবসায় সফল হলে আপনি একাধিক শ্রেণী অতিক্রম করতে পারবেন অতি সহজে । সমাজে এমন গল্প ভুড়ি ভুড়ি । মাথায় করে তেল বেচতে বেচতে এখন সময়ের সবচেয়ে দামী গাড়িতে চড়ে ঘুরে বেড়ান আর তাঁর সহপাঠী এখনো অফিসে মাথা ঠুকে সংসার চালাতে হিমশিম খায় । আপনাকে এই শ্রেনী শৃঙ্খল ভাঙাতে হলে যুদ্ধ করতে হবে । আমাদের দেশের এটা আরো কঠিন । কাঠামো বদ্ধ জীবনযাপন ও পেশা নির্বাচন এই চিন্তার বাইরে আমাদের অভিবাবকদের মন এখনো যায় নাই । আপনাকে পথ চলতে হবে বৈরী স্রোতে একা । সাহস হারাবেন না। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। সাফল্য আসবেই।





জয় হোক সকল উদ্যোগতার।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৩৭

জেসন বর্ন বলেছেন: হাউরি ব্রাদার,
টপিক টা জমলো না। লেখা ভালো, তবে পশার পাবে না। তবুও পড়লাম। যদিও অনেক লাইন হাই তুলতে তুলতেই এড়িয়ে গেলো। হালকা-পাতলা, ছিমছাম, মায়াভরা, সুন্দরী নয় তবে চেয়ে থাকা যায় টাইপের, একটা কিছু লিখো না। মধ্যবিত্ব সমাজে ঠাঁট বজিয়ে রাখার নিষ্ঠুর লড়াই তোমার কলমেই মানায়। অপেক্ষায় রইলাম।

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৫

ফয়সাল হাওড়ী বলেছেন: জেসন ভাই

আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এটাই আমার প্রথম কোন ব্লগ লেখা। সে হিসেবে আপনার সমালোচনা আমাকে উৎসাহ জোগাচ্ছে। ভাই আমার নামের বানান টায় একটু নজর দিবেন প্লিজ।

ভাই আমি এর আগে কখনো ব্লগিং করি নাই। আমার জন্য কোন উপদেশ থাকলে দেবেন।

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২৮

জেসন বর্ন বলেছেন: ওকে হাউড়ি ব্রাদার, নামের বানান টায় ক্যাপস লক জনিত সমস্যার জন্য ক্ষমা চাইছি। আপনার বেশ কিছু লেখা আগেও পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে। আর ব্লগিং তো লেখালেখি প্রকাশের একটি মাধ্যম। সে হিসেবে এখানে নতুন-পুরোতন বলে কিছু নেই। আছে নিয়মিত আর অনিয়মিত। আশা করছি আপনি নিয়মিতদের দলেই থাকবেন। আপনার আগের লেখাগূলোও এখানে সংকলিত করতে পারেন। আর আপনাকে উপদেশ দেবার দৃষ্টতা আমার নেই। বটতলায় কখনো আসলে চা'য়ের দাওয়াত রইল। শুভ কামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.