নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জন্ম। কাঁচ-পাকা চুল, দাঁড়িসমেত ইঁচড়ে পাকা যুবক।পেশাদার ট্র্যাভেল ব্লগার।ঘুরে বেড়াই ও লিখি।শখের বশে সাহিত্য চর্চা করি।সদালাপী,অলস ও স্বপ্নবাজ। জীবনের উদ্যেশ্য খুজে পাই নি।মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত।যতক্ষণ শ্বাস চলে ততক্ষণ সুবাহানাল্লাহ

ফয়সাল হাওড়ী

স্বরূপ বিনির্মাণে মগ্ন ।

ফয়সাল হাওড়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

এতো কষ্ট করে অনলাইনে লিখি কিন্তু ইজ্জৎ পাইলাম না !

১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:১২



ছোটবেলায় “লেখক” এই কথাটা শোনলেই আমাদের মাথায় একটা ছবি ভেসে ওঠতো। উসখু খুসকু চুল, আতেল মার্কা চেহারা, চোখে মোটা চশমা এবং হতাশাগ্রস্থ মুখায়বব। এটা সমাজের আঁকা ছবি "লেখক"। লেখক শব্দটার এমন পিকিউলিয়ার একটা রূপ কেন সমাজের মানসপটে আঁকা হতো এই নিয়ে অনেক ভেবেছি।


লেখকরা এমনই আত্মভূলা,নিজের চিন্তার জগতে অতিরিক্ত মগ্ন থাকার প্রবণতা এসব বিভিধ কারণ সামনে এসেছে।কিন্তু কোনটাকেই জোতসই মনে হয় নি।বরং লেখকের আয়ের উৎস কম এমনটাই বেশী এসেছে।যদি বিগত কয়েক দশকের লেখকদের অনেকেই লেখে লেখেই বিত্তশালী হয়েছেন কিন্তু আপামর লেখক সমাজের আয়ের উৎসের যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা ছিলো।এখন অপেক্ষাকৃত লেখকদের আয়ের উৎস ও লেখার মাধ্যম দুটোই বেড়েছে।


লেখার মাধ্যম এখন অনেক বেড়ে গেছে।বহুকাল পূর্ব থেকেই আমাদের বই লেখক আছেন, গত শতকে আমরা দেখলাম খবর লেখকদের (সাংবাদিক) উত্তান , গত দশ পনের বছরে আমাদের একটা নতুন প্রজাতি জন্ম দেখলাম অনলাইন লেখক। অনলাইন লেখা চালু হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে দশটা পত্রিকা আর কবি সাহিত্যিকদের বই এর মধ্যেই লেখার জগত আর সীমাবদ্ধ থাকলো না।এখন আমাদের ঘরে ঘরে ব্লগার , একাডেমিক কন্টেন্ট রাইটার, অনলাইন সাংবাদিক , আর্টিকেল রাইটার, টেকনিক্যাল রাইটার, ট্র্যাভেল ব্লগ রাইটার , অনলাইন ক্রিয়েটিভ রাইটার ও সোশ্যাল মিডিয়া রাইটার।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন পত্রিকার দেখলেই সে লেখকেদের সংখ্যাটা অনুমান করা যায়।

অনলাইন লেখকদের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে অনলাইন মৌলিক লেখা ও লেখার মান কিন্তু আনুপাতিক হারে বাড়ে নাই।সেই সাথে আমাদের সমাজে অনলাইন লেখকদের গ্রহণ যোগ্যতা এখনো নাই বললেই চলে। বরং ব্লগার শোনলে অনেকে চমকে উঠে, পরিচয়া না জেনেই নাস্তিক নাস্তিক গন্ধ পায়। যাও একটু সুনাম কুড়িয়ে ছিল অনলাইন সাংবাদিক,তাঁদের মান ইজ্জৎ নিয়ে লুটোপুটি খেলে কপি পেইস্ট মাস্টার ও হলুদ সংবাদিকতা মতবাদে বিশ্বাসী এক শ্রেনীর মুনাফা লোভী অসাধু।কন্টেন্ট রাইটার , টেকনিক্যাল রাইটার এই সব কথা বার্তা সেই আশির দশকের গ্র্যাজুয়েট মা তো বাদ দিলাম সদ্য গ্র্যাজুয়েট মা-বাবাদেরও বুঝতেই কষ্ট হয়। যদিও কেউ কেউ বুঝেন কিন্তু সন্তানের নিশ্চিত ভবিষ্যতের দৌড়ে চাকরীর চেয়ে কন্টেন্ট রাইটিংকে আগে দেখতে পারেন না।

একটা যুবক বা যুবতী অনলাইনে নিজের ভালো লাগা বিষয়ে পড়বে, বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহন করবে, বিভিন্ন কর্মশালাতে যাবে এবং(প্রয়োজন বোধে ডিগ্রী নিয়ে) সেই বিষয়ে বিশদ ভাবে জেনে সেই বিষয়ে লিখবে। এই লেখায় তাঁর আর্থিক ও সামাজিক স্বচ্ছলতা আসবে এমন পরিবেশ এখনো কতোটা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি এই নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

অনলাইন লেখাকদের কেউ কেউ নিজেদের খাইসলতের দোষে এমন একটা মহৎ পেশার সম্মান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।তাঁরা নিজেরাই অনলাইন লেখককে একজন লেখক ভাবতে পারছেন না।আপনি অনলাইনে লিখেন আর কাগজে কলমে লিখেন আপনি সবার আগে একজন লেখক। অনলাইন আপনার লেখা প্রকাশের মাধ্যম। আপনি একজনের কাছে শোনলেন অনলাইনে ব্লগ লিখে অনেক টাকা কামানো যায়, দৌড় দিয়ে চলে আসলেন অনলাইনে লিখতে আর আপনি লেখক হয়ে গেলেন তেমনটা না। সুতরাং অনলাইনে লেখা শুরু করার আগে ভাবুন আপনি আসলেই লেখক হতে চান কি না/ লেখক কি না? তেমনি আপনি অনলাইনে সাংবাদিক হলে মানুষ আপনাকে সাংবাদিক সাংবাদিক বলবে, গলায় একটা অনলাইন পত্রিকার কার্ড ঝোলালেই আপনি সাংবাদিক হয়ে গেলেন তাও না।আগে নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে তৈরি করুন।তারপর আপনি অনলাইন সাংবাদিক হতে পারেন।

একজন ভালো লেখক সবার আগে একজন ভালো পাঠক।আমাদের অনলাইন লেখক সমাজে পড়ার প্রতি ভয় আছে। এই যদি আমি জেনে যাই। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় এনসাইক্লোপিডিয়া , সংবাদপত্র দেখলে ক্রল করে চলে যাই।

আমরা অনলাইনে লেখা শুরু করার আগেই অর্থে গন্ধ পেয়ে যাই।এখন মনে হয় ওলটোটাই বেশি হয়। অর্থের গন্ধ পেয়েই আমরা অনলাইনে লিখতে আসি।অনলাইনে ঘেঁটে ঘুঁটে যখন দেখি এফিলিয়েট মার্কেটিং বেশি অর্থকরী ফসল তাই লেখা শিখার আগেই আমরা এফিলিয়েট সাইট খুলে বসি নয়তুবা নাম যশ কুড়াতে একটা অনলাইন পত্রিকা।

নিজের লেখা দ্বারা যেমন পাচজন মানুষকে জাগাইতে পারি না,তেমনি তাঁদেরকে একটা পন্য কিনতে আগ্রহী করে তুলতেও পারি না।যদিও কিছুদিন মার্কেটিং টেকনিকের জোড়ে কিছু মানুষ টেনে টুনে নিজেদের সাইটে নিয়ে আসি বা কিছু দিন পন্য বিক্রি করতে পারি লম্বা দৌড়ে আমরা হাল ছেড়ে দেই। কারণ আমাদের পাঠক তৈরি হয় না। তখন পত্রিকা হয় চটি আর এফিলিয়েট সাইট করি বিক্রি।দেশীয় পয়সায় অনেক মোটা দামে বিক্রী হলেও বিদেশী পয়সায় অনেক সস্তা বলে এফিলিয়েট সাইট ভালো বিকায় আর চটি হলে সংবাদ পত্রে সুড়সুড়ি নেওয়ার ভিজিটরের অভাব হয় না।

তাঁরপর দিন শেষে আমরাই নিজেদের মাথা হাতাই আর আক্ষেপ করি এতো কষ্ট করে অনলাইনে লিখি কিন্তু ইজ্জৎ পাইলাম না ? কিন্তু আমরা বুঝি না সমাজের দশজনকে আমরা কি দেখাচ্ছি ? আমরা নিজেদের অনেক জ্ঞানী ভেবে হয় ব্লগে অন্যদের অনুভুতিকে আঘাত করে লিখে বিতর্কিত , নয় টাকার লোভে নিন্মমানের কন্টেন্ট লিখে ভিজিটরের কাঙ্গাল।আমাদের এই রূপ দেখে সমাজ সম্মান না দিলে সমাজেরই বা দোষ কোথায় ?

আমি আবারো বলছি আপনি যদি স্বভাবজাত লেখক হন বা লেখক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন , তবেই অনলাইন লেখক হওয়ার চিন্তা করুন তবেই অনলাইন আপনাকে ভাত কাপড় দুটোই একসাথে দেবে নয়তো খুব কষ্টে ভাত পাবেন গায়ে কাপড় থাকবে না। কেননা অনলাইন লেখা ও অফলাইন লেখার অনেক গুলো মৌলিক পার্থক্যের মধ্যে একটি হলো গতি।অনলাইনে আপনার লেখা যেমন নিমেষেই পাঠকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তেমনি নিমেষেই পাঠক সমাজের মূল্যায়ন আপনার কাছে ফিরে আসছে।সুতরাং সামালকে , নয়তো আস্তাকুড়ে ঢাই হবে আপনার।





মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার লেখা পড়ে বুঝলাম, শুধু অনলাইন নয়, অফ-লাইনেও আপনার সমস্যা আছে

১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:২৮

ফয়সাল হাওড়ী বলেছেন: খুলে বলেন। ভালো কইলেন না মন্দ কইলেন বুঝতেছি না। হা হা হা

২| ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৪৪

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: লেখক ও লেখনীর আন্তরিকতাটাই আসল ।অন লাইনে সেটা খুব সহজেই বুঝা যায় কে কতটুকু লেখা বা পাঠে আন্তরিক ।

শুভেচ্ছা রইল ।

১৪ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৬

ফয়সাল হাওড়ী বলেছেন: আপনারা আমাকে পড়েন এবং মন্তব্য করেন এতে আমি অনুপ্রাণিত হই।

৩| ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:২২

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো পড়ে। সুন্দর যুক্তি পরামর্শ তুলে ধরেছেন পোষ্টে।

তবে আমার মতো নতুনরা একটু হতাশ হবে, কারণ লেখা শিখার মতো সময় আমার নেই, আবার ভালো পাঠক হওয়ারও জ্ঞান নেই আমার, কিন্তু লিখতে ভালো লাগে। কিন্তু, লেখালেখি করে আয় করা আমার ইচ্ছা নেই, যেহেতু ভালো লিখতে পারিনা, মানসম্মত করতে পারিনা নিজের লেখাকে যুক্তি দিয়ে সাজাতে পারিনা! এখন লেখক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে গেলে আমার পেশাগতভাবে বিপর্যয় নিশ্চিত! তাহলে আমার কি করা উচিৎ!!! চিন্তায় পড়ে গেলাম আমি!!!

১৪ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:০৯

ফয়সাল হাওড়ী বলেছেন: আপনার লেখা শিখার জন্য সময় নাই, লেখার প্রতি প্যাশন নাই, লিখে রুটি রুজিও করতে চান না।আপনি তাহলে লিখছেন কেন ? শখের বসে। লিখলে আপনার শখ মিটছে। আপনার চিন্তার এতো কি আছে ?চালিয়ে যান। নিরুৎসাহিত হওয়ার কিছু নাই।

৪| ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:৪৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


ব্লগের লেখকেরা ভালো করছেন; সময়ের সাথে আরো ভালো করবেন; ব্লগের গতিবিধি বুঝেন, আপনিও সন্মান পাবেন।

১৪ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:০৪

ফয়সাল হাওড়ী বলেছেন: অনলাইন লেখার মানসম্মত ও বিশ্বস্থ জায়গা এখনো ব্লগ। ব্লগাররা আরো ভালো করুক এইটাই সবার কাম্য।

আমাকে পড়েন এবং মন্তব্য করেন। এতে আমি অনেক খুশি হই। মাঝে মাঝে একটু বোকাও হই এই ভেবে যে শুধুই কি শীরোনামটা পড়েন ?

৫| ১৪ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: আমি যা মন্তব্য করতে চেয়েছি- সাহসী এবং পরিশ্রমী ব্লগার চাঁদগাজী বলে দিয়েছেন-


আপনার লেখা পড়ে বুঝলাম, শুধু অনলাইন নয়, অফ-লাইনেও আপনার সমস্যা আছে।

১৪ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:১৪

ফয়সাল হাওড়ী বলেছেন: একটু খুলে বলবেন ভাই। চাঁদগাজী ভাই কেন এই মন্তব্য করছিলেন তা বুঝি নাই। আপনারটাও বুঝতেছি না।

৬| ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:২১

আহমেদ জী এস বলেছেন: ফয়সাল হাওড়ী ,





অনলাইন কিম্বা অফলাইন যেখানেই লিখুন, আগে লেখক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে ।
সহ ব্লগার ডঃ এম এ আলী র মন্তব্যের সাথেও একমত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.