নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জন্ম। কাঁচ-পাকা চুল, দাঁড়িসমেত ইঁচড়ে পাকা যুবক।পেশাদার ট্র্যাভেল ব্লগার।ঘুরে বেড়াই ও লিখি।শখের বশে সাহিত্য চর্চা করি।সদালাপী,অলস ও স্বপ্নবাজ। জীবনের উদ্যেশ্য খুজে পাই নি।মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত।যতক্ষণ শ্বাস চলে ততক্ষণ সুবাহানাল্লাহ

ফয়সাল হাওড়ী

স্বরূপ বিনির্মাণে মগ্ন ।

ফয়সাল হাওড়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষটার জন্য অপেক্ষা।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:৩১


ভাবী জানেনে ! স্কুলের ছেলেমেয়রা আজকে কমিশনার সাহেবের গাড়ির লাইসেন্স চেয়ে বসছে।দেখেন ভাবী এই টুকু বাচ্চাদের কতো সাহস।ব্যাচারা মুরুব্বী মানুষ রাস্তায় দাঁড়ায়ে কি লজ্জাটাই না হলো।আমি তো এইসব দেখি আর অবাক হই।বলেন তো ভাবী এতো এইসব পুলাপানেরা পায় কোথায় ?

এঁরা তো ডিজিটাল যুগের ছেলেমেয়ে ভাবী।

হ্যা হ্যা।তামিমের মাও তাই বলতেছিল ভাবী।জানেন তো তামিম কোন বন্ধু বান্ধবের সাথে চলে না।ও তো একটু উইক। সেও নাকি তাঁর জমানো পকেট মানির পাঁচ হাজার টাকা বন্ধুদের দিয়ে আসছে আন্দোলন করার জন্য।এইটা কতো সাহসের ব্যাপার না ভাবী এই বয়সে পাঁচ হাজার টাকা আন্দোলনের জন্য দিয়ে দেওয়া ?

শিশুর মন। আবেগে দিয়ে দিছে।

কি বলেন ভাবী শিশুদের মন ? আমার যে ছেলে খাবার দিতে এক মিনিট দেরী হইলে বাসা মাথায় ওঠায়। সে আজ সারাদিন না খেয়ে থেকে আন্দোলন করে আসছে।আমি সোজা বলে দিছি এইসব আন্দোলন ফান্দোলন করলে খাবার বন্ধ।সে বাড়ি এসেও এখনো খায় নাই। জিদ ধরে বসে আছে।বলে আন্দোলনে যেতে না দিলে খাবে না। এইটাকে আপনি শিশুর মন বলেন। কতো শক্ত এঁদের মন। সব নিষ্ঠুর। ছেলেমেয়ে না খাইলে মার কেমন লাগে।এতো কঠিন এঁরা হইলো কেমনে ভাবী ?


এতো ভেঙে পইড়েন না।বাপ্পিকে আমাদের বাসায় পাঠায়ে দেন। রাইজারও মন খারাপ। দুজনে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়া দাওয়া করে নিবে।

রাইজার মুখটা খুব সুখিয়ে গেছে ভাবী।কতো সুন্দর আমাদের রাইজা। আমি রাইজাকে দেখে খুব অবাক হই ভাবী।আমারটা তো ছেলে আপনার এই মেয়েটা কীভাবে এতো শক্ত হইলো?কারা এঁদের এইগুলো শিখায় ভাবী।

সময় ওদের শিখিয়ে দিয়েছে।

সময় না ভাবী। পিছনে কেউ আছে। কেউ ব্রেইন ওয়াশ করে আমাদের ছেলেমেয়েদের ইউজ করছে। যাই বলেন ভাবী পেছনে কেউ না কেউ আছে। আমার খুব ভয় হয় জানেন ? কখন কি যে হয়? আপনি এতো নিশ্চিন্তে থাকেন কীভাবে ? আপনিও খুব শক্ত মানুষ।

এতো জটিল ভাবে নিয়েন না ভাবী। আপনার প্রেসারটা বেড়ে যেতে পারে।

প্রেসার এর কথা বলেন ভাবী। এদের টেনশনে আমার ঘুম খাওয়া হারাম। কি হবে জানি না। প্রেসার আমার এমনেই হাই হয়ে আছে।ভাবী আমার বাপ্পীকে একটু বুঝাইয়েন। ওর বাবা ফিরে এসে যদি এই সপ্তাহর পড়ালেখার হিসাব নেয়। একদম সব শেষ হয়ে যাবে। কি যে রাগটাই না করবে, ছেলেটাকে ধরে পিটাইতেও পারে। চোখের সামনে এই বাচ্চা ছেলেটাকে মারে। সইতে পারি না। সংসারের দ্বায় দায়িত্ব কিছু নেয় না, সাপ্তাহ শেষে কয়টা টাকা দিয়েই খালাস।আর শুধু হিসেব নিবে। ছেলের পড়ালেখা থাকে সংসারের বাজার খরচ, সব কিছুর হিসাব চাই উনার।

জানেন ভাবী।আপনার মানুষটার মতো যদি সপ্তাহ, মাস,বছর না হোক, শুধু একবারের জন্য আমার মানুষটা আসতো।এসে মেয়ের পড়ালেখার হিসাব চাইতো,এই সব আন্দোলন ফান্দোলন করার জন্য মেয়েটাকে বকাঝকা করতো,এমনকি মারতো,আমার কাছে পাই পাই করে সংসারের হিসাব চাইতো।তবুও মনে স্বান্তনা পাইতাম। আমার একটা মানুষ আছে।আন্দোলেনের প্রথম দিন মেয়েকে যখন জিজ্ঞাসা করলাম তুমি রাস্তায় বসে আন্দোলন করবা? মেয়ে কি বলে জানেন ? রাস্তা ওর বাবাকে কেড়ে নিয়েছে। তাই ও আজ থেকে প্রতিদিন বসে থাকবে। মেয়ের উত্তর শোনে আমি আর কিছু বলি না।পরদিন থেকে আমিও ওর পাশে বসে থাকি।অপেক্ষা করি।
মানুষটার জন্য অপেক্ষা।




মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টা খুব মর্মান্তিক ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.