নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে আমার পছন্দের জায়গাগুলোর তালিকা যদি করি তাহলে টারজান পয়েন্ট প্রথম দিকেই থাকবে। কেন থাকবে তা আমার আশেপাশের মানুষ আমার থেকে ভালো বলতে পারবে। তিন চার বছরে এই টারজান পয়েন্ট থেকে মনে হয় আমি শরীরে ১০-১৫ কেজি ওজন পেয়েছি। এখনো বাস থেকে নেমে গাছে ঘেরা অপুর্ব রাস্তা পেরিয়ে ডিপার্ট্মেন্টে না ঢুকলে যেনো সকালের ঘুম ঘুম ভাবটা কাটে না। আমার নাকি ওখানে আর চা খাওয়া হবে না , হবে না কাওকে পুরি বেগুনির ভাগ দেয়া না দেয়া নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে। ক্লাসের ফাকে আসলে জায়গাটা পরিসংখ্যান আর সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। সেই জায়গাটায় নাকি দালান হবে, গাছগুলো থাকবে না,সেখানে জায়গা করে লাল নীল সবুজ লেড বাতি। ক্যাম্পাসের প্রাণ ছাত্র ছাত্রীরাই হয়তো সেখানে হবে বহিরাগত, আর বাইরের মানুষ জায়গা করে নিবে। কনভেনশন সেন্টার হবে, এরপর হয়তো শপিং মল হবে, দালানের পর দালান গড়ে উঠবে। হয়তো ক্যাম্পাসে কোনদিন ঘুরতে এলে বলতে জুনিয়রদেরকে বলতে পারবো , এখানে একসময় সাহিত্যে নোবেলজয়ী নাইপল ক্যাম্পাস দেখে মুগ্ধ হয়ে ফিরে গেছেন। কি ভয়াবহ দৃশ্য!
আমাদের নিজেদের জন্মদিনের একটা খারাপ দিক হচ্ছে আমরা আস্তে আস্তে বুড়িয়ে যাই, মৃত্যুর দিকে ক্রমেই ধাবিত হই। কিন্তু কোন প্রতিষ্ঠান এর জন্মদিন টা অনেক বড় কিছু , যত দিন যাবে যত পুরোনো হবে ততই তা সমৃদ্ধ হবে। অথচ এই জন্মদিন টা একটা খারাপ বার্তা নিয়ে আসলো সবার উদ্দেশ্যে। ক্যাম্পাস ক্রমেই নগরায়নের ছোবলে পরতে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় না এরকম কিছু হবে। আমাদের ক্যাম্পাসের ইতিহাস কিন্তু সংগ্রামের ইতিহাস। অনেক ছোট বড় যুদ্ধ করে আমরা অনেক অন্যায় কে প্রতিষ্ঠিত হতে দেই নি। এরকম কনভেনশন হলও যাতে না হয় সেজন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকব। দানবীরের দানের অনেক জায়গা আছে, এখনো ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যার তুলনায় হলের সিট অপ্রতুল। পারলে দুই তিনটা হল বানিয়ে দিক , তাও সেটা সুবিধাজনক জায়গায়। এইসব কনভেনশন সেন্টার বানানো চলবে না।
©somewhere in net ltd.