নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন গাধামানব

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন

ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহস্যের ভূমিকা

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৮

কেহ কেহ আকারে-ইঙ্গিতে বলিয়া থাকেন, কেহ হয়তো মুখ টিপিয়া হাসেন। বুদ্ধিহীন হইলেও ইহা স্পষ্ট বুঝিতে পারি যে, আমি যাহা লিখি তাহা অধিকাংশ সময়ই অপ্রাসঙ্গিক এবং অনর্থক। যেটুকু সময় ও মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইবার স্পর্ধা দেখায়, অনুরূপ কথা হয়তো আমার আগে বহু জ্ঞানীলোকে বলিয়া গিয়াছেন।

তথাপি যতটুকুই লেখা হয়, তাহা নিতান্তই নিজের অস্থিরতা প্রশমনের নিমিত্তে। যাহারা অসি এবং মসী চালনা করে তাহাদের এই বিপদ। আনন্দে, বেদনায়, বিহ্বলতায়, বিক্ষুব্ধতায় ইহারা অস্থির হয়। অস্ত্রের ব্যবহারে ইহাদের শান্তি। নিয়তির এই অদ্ভুত পরিহাসের দরুন কত অযোগ্য লেখক মহাকাব্য গড়িয়াছে, কত দুর্বল যোদ্ধা নিশ্চিত পরাজয় জানিয়াও যুদ্ধে গিয়াছে- তাহার হিসাব পাওয়া দুষ্কর।

জাফর ইকবাল সত্যই বলিয়াছিলেন,
'লেখক আসলে নিজের জন্য লেখালেখি করে। পাঠক আনন্দ পেলে সেটা হয় বাড়তি পাওনা।'

শীত চলিয়া যাইতেছে। সকালের আকাশে তাহার বিদায়ের লক্ষণ দৃশ্যমান। তরুণীর যৌবন গত হইবার প্রাক্কালে এক ধরনের বিমর্ষতা তাহাকে বিপন্ন করিয়া তুলে। আজ সকালের পরিবেশ অনেকটা সেই রকম, কুয়াশা যাই যাই করিয়াও যাইতেছে না, ভোরের বিছানা হইতে কম্বল সরি সরি করিয়াও সরিয়া যাইতেছে না। তবে সরিবে নিশ্চয়, সকলেরই অবসান আছে, সমাপ্তি আছে।

এমনই এক বিদায়ী শীতের সকালে আমার মাথায় আসিয়া ভর করিলেন এক বেকার যুবক। পাঠক হয়তো ইহাকে দেখিয়া থাকিবেন মহাখালী কিংবা গাবতলী বাস টার্মিনালে। শহরতলী থেকে শহরে কাজের অন্বেষণে আসা দেহাতী তরুণ, পরনে একখানি পুরনো প্যান্ট, পায়ের জুতা ক্ষয় হইবার চেষ্টায় আছে, নিতান্ত যুবকটির দারিদ্র্যকে দয়া করিয়াই ছিঁড়িয়া যাইতেছে না। মুখে খোঁচা-খোঁচা দাঁড়ি, পরনের শার্টের পকেটে পুরনো কালির দাগ, প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক কলম হয়তো কোন এককালে নিজেকে সামলাইতে না পারিয়া সেখানেই সর্বস্ব ত্যাগের প্রয়াস পাইয়াছে; সে দাগ এই তরুণের শিক্ষাজীবন বলিয়া কিছু একটা ছিল- তাহার প্রমাণ বহন করিতেছে। হাতে একখানি পুরনো ব্যাগ, চাকুরিপ্রার্থীর পক্ষে মগজের পরেই এই ব্যাগের গুরুত্ব সীমাহীন।

পাঠক হয়তো করুণার বশে তাকাইতে পারেন, তবে স্মরণ করাইয়া দেয়া ভালো, গত মাসে যে একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর পুত্র অপহৃত হইয়াছে, সে কেসের তদন্ত করিতে পুলিশ নাকানি-চুবানি খাইয়াছে। ছেলেটির শিক্ষক প্রদীপবাবু গতকাল সন্ধ্যায় দুঃখ করিয়া বলিতেছিলেন, পুত্রকে ফেরত পাইতে যথাসাধ্য খরচের ইচ্ছা থাকিলেও ব্যবসায়ী ভদ্রলোক সুবিধা করিতে পারিতেছেন না। যে কেসে পুলিশ টাকা খাইয়াও কাজ করিতে পারে না, সে কেসে জটিলতা আছে বটে-

আমাদের এই তরুণ, সেই জটিলতাকে সরলচিত্তে ভালোবাসে বলিয়াই তাহার দুর্ভোগ। এই ভালোবাসা তাহার মলিন চেহারা, আধা-ছেঁড়া জুতা এবং কালিমাখা শার্টের কারন। রহস্যের জটিলতার সমাধান কি প্রকারে হইবে, তাহা পাঠক সবিস্তারে যথাসময়ে জানিতে পারিবেন।

অবশ্য তাহা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু হইবে কিনা- সে আমি বলিতে পারি না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.