নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।
ছেলেটার সামনে একটা দালান।
বারো তলার ছাদে বাঁশের ঝুলন্ত সিঁড়ি ।
বিশাল দালানের বাইরের রঙ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে, নতুন রঙ করা হচ্ছে।
ছেলেটা বছরখানেক আগে ঢাকায় এসেছিল। ছোট বোনটা কথা বলতে পারেনা, বড় বোনের বিয়ে হয়নি। মা বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঝিয়ের কাজ করত। মায়ের মৃত্যুর পর ছেলেটা খুবই আগ্রহী ছিল ঝিয়ের কাজ করতে, জন্মের পর থেকে যেহেতু মাকে ঐকাজ করতেই দেখেছে, কিন্তু ছেলে হবার অপরাধে সে সুযোগটি আর মেলেনি। দুই বোনকে খালার বাড়িতে রেখে অগত্যা ঢাকায় চলে আসতে হয়েছে তাকে। খালা নিয়মিত পান খায়, বোনদের রেখে আসার সময় খালা পানের পিক ফেলতে ফেলতে বলেছে, 'আমাগের অভাবের ঘরে মুখ বাড়লি তো তোর খালু আমারে খেদায়া দেবেনি'। ছেলেটি মাসে মাসে টাকা পাঠাবার প্রতিজ্ঞা করে এবং নগদ ছয়শ' টাকা খালার হাতে দিয়ে এসেছে। অভাবের পৃথিবীতে লোভ ভয়াবহ শক্তিশালী জিনিস।
ঢাকায় এসে কি করেনি সে? এক হোটেলে কয়েকদিন কাজ করেছে, তারপর কমলাপুর রেলষ্টেশনের কুলিগিরি। কয়েকদিন রিকশাও টেনেছে, একদিন চালালে পরের দিন গা ব্যথা হয়ে থাকে বলে এখন কলিমুদ্দি মিস্ত্রীর সাথে রঙের কাজ করে। বাড়িতে দুটো মুখ রেখে ঢাকায় একদিন অবসরের কোন সুযোগ নেই। রংমিস্ত্রির কাজে প্রতিদিন টাকা, একদিন নিজে রংমিস্ত্রি হতে পারলে তো কথাই নেই। মাসে মাসে বোনদের জন্য দেড় হাজার করে পাঠায় সে, নিজের জন্য আটশ'। হাতে এখনো কিছু জমাতে পারেনি বটে, তবে কলিমুদ্দি মিস্ত্রী বলেছে সামনের মাস থেকে তিনশ' টাকা বাড়িয়ে দেবে। মাসে তিনশ' টাকা করে বছরে কত হয়? হিসেবে একটু দুর্বল বলে ছেলেটা ভেবে বের করতে পারে না। ঈদে বাড়ি না গেলে আরও কিছু আয় হবে। কিছু জমিয়ে সামনের বছর বোনের বিয়েটা দিতে পারলেই শান্তি। মায়ের খুব শখ ছিল মেয়ের বিয়েতে একটা লাল শাড়ি কিনে দেবে, বেঁচে থাকলে হয়তো এতদিনে বিয়েটা হয়েও যেত।
কলিমুদ্দি মিস্ত্রী ধারেকাছে ছিল না। দারোয়ান দৌড়ে যায় কলিমুদ্দিকে খবর দিতে। দালানের রঙ বিবর্ণ হলেও আকাশটা কত পরিষ্কার! একদম নীল!
ছেলেটার সামনে দালান। তারপর আকাশ।
ধীরে ধীরে সবকিছু অস্পষ্ট হয়ে আসে, দালান, নীল আকাশ, বোনেরা, লাল টকটকে শাড়ি, মা।
দালানের সামনের রাস্তাটা আস্তে আস্তে লাল হয়ে যায়।
টকটকে লাল। বোনের শাড়ির মতো লাল।
২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৯
মেজদা বলেছেন: পড়ে মুগ্ধ। ধন্যবাদ
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৩
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: খুবই বেদনাদায়ক গল্প । শেষের কাহিণী মনকে ভারী করে দেয় ।
গল্পের রূপায়ন অনেক ভাল লাগলো ।
৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৩
মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩৩
পুলহ বলেছেন: অল্প পরিসরে অপরিসীম বেদনার গল্প!
শুভকামনা রইলো লেখক
৬| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৯
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: পড়ে কষ্ট পেয়েছি।
তাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়।
৭| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: এমন গল্প কিংবা তেমন কিছু পড়লে মন খারাপ হয়ে যায়।
সুন্দর বুনন লেখার।
চমৎকার
৮| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫৭
দিল মোহাম্মদ মামুন বলেছেন: ভাইয়া, গল্পটা আরেকটু লম্বা করলে আরোও ভালো হতো, তবুও ভাল লেগেছে কারণ বাস্তবতার নিরিখে লিখা। শেষের দিকে মন খারাপ হয়ে গেল।
৯| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:১৫
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার বর্ণনা। মুগ্ধ। দারুণ একটি পোস্ট বা গল্প পড়ে আজকের ব্লগিং শুরু হলো।
+।
১০| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:২৪
শামছুল ইসলাম বলেছেন: শুরুটাঃ
//ছেলেটার সামনে একটা দালান।
বারো তলার ছাদে বাঁশের ঝুলন্ত সিঁড়ি ।
বিশাল দালানের বাইরের রঙ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে, নতুন রঙ করা হচ্ছে।//
শেষটাঃ
//ছেলেটার সামনে দালান। তারপর আকাশ।
ধীরে ধীরে সবকিছু অস্পষ্ট হয়ে আসে, দালান, নীল আকাশ, বোনেরা, লাল টকটকে শাড়ি, মা।
দালানের সামনের রাস্তাটা আস্তে আস্তে লাল হয়ে যায়।
টকটকে লাল। বোনের শাড়ির মতো লাল।//
মাঝে গল্পের শক্ত বুনন।
অসাধারণ একটা গল্প, বেদনায় যার সফল সমাপ্তি।
ভাল থাকুন। সবসময়।
১১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৪৩
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: এমন গল্প পড়লে মনটাই খারাপ হয়ে যায়
১২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:১৭
অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ছোট কিন্তু সুন্দর।
১৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০৪
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: দারুণ শুরু, সমাপ্তি। সার্থক ছোট গল্প।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এরকম আচমকা রং বদলে দিলেন। থমকেই গেলাম বেশ খানিকটা!
ঝড়াপাতাদের স্বপ্নের বাস্তবতা এমনই হয় !!! কেন????