নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন গাধামানব

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন

ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুপার পাওয়ার

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৬

সম্প্রতি মেলিন্ডা এবং বিল গেটস দম্পতি জানিয়েছেন, তাদের দৃষ্টিতে 'সুপারপাওয়ার' বলতে তাঁরা কি বোঝেন। বিল গেটস মনে করেন মানুষের সুপার-পাওয়ার হচ্ছে 'এনার্জি'। যে যত পরিশ্রমী কিংবা উদ্যমী, সে মানুষ হিসেবে তত এগিয়ে থাকবে। তাঁর স্ত্রী অবশ্য সুপার-পাওয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন 'সময়'কে। জীবন যেহেতু অল্প সময়ের, বেশি কাজ বলুন, আর সাফল্য পাওয়া বলুন- দুক্ষেত্রেই সময়ের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

ইন্টারনেটে এটুকু পড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।

বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনকুবের-দম্পতি পার্থিব সুখস্বাচ্ছন্দ্যের শিখরে আরোহণ করে এসব কথা বলছেন। তাদের জ্ঞাতার্থে বলা যেতে পারে, এই পৃথিবীর অনেক মানুষ দারুন পরিশ্রমী, কিন্তু সেই পরিশ্রম বিক্রি করে অন্যেরা লাভবান হয়, বিনিময়ে তারা দুমুঠো খাবারের বেশি কিছু পায় না। ধনীর সংখ্যা পৃথিবীতে কম, গরীব দেহাতী পরিশ্রমী মানুষের সংখ্যাই এই অসাম্যের পৃথিবীতে বেশি।

সময় মূল্যবান- এটা নিয়ে একবিন্দু দ্বিমত নেই। বিনা বিচারে পৃথিবীর নানা দেশে অজস্র মানুষ আটকে আছে, ভুল বিচারে জেল খেটে বের হওয়া মানুষও বোধহয় সংখ্যায় কম না। কত পরাধীন দেশের মানুষ প্রজন্মের পর প্রজন্ম কাটিয়ে দিয়েছে স্বাধীনতার প্রত্যাশায়। তাদের এই সময়ের মূল্য কে দেবে? জন্মসূত্রে রাজ্যশাসনের ক্ষমতা নিয়ে জন্মানো রাজপুত্রের সাম্রাজ্যে কোন এক প্রজাশিশু জীবন কাটিয়ে দেবে সাম্রাজ্যের অর্থনীতির চাকা ঠেলে- কেন এই বৈষম্য? স্রেফ বিত্তশালী হবার কারনে দামী এন্টিবায়োটিক ক'টা দিনের আয়ু বাড়াবে একজনের, অথচ টাকার অভাবে লাইফ-সাপোর্ট খুলে নেয়া গরীবের ভাগ্যে অতিরিক্ত সময় জুটবে না। বরং সময়ের আগেই বিদায় নিতে হবে তাকে। বিজ্ঞানের দয়া সবাইকে সমান সময় দেবে- এমন তো হচ্ছে না!

মেলিন্ডা এবং বিল গেটস দম্পতিকে তবু ধন্যবাদ দিই, বিত্তের পাহাড়ে বসে তবু তো কিছু আশা জাগানিয়া কথা বলেছেন! শুনতে পাই আফ্রিকায় নারী ক্ষমতায়নে কিংবা শিশুর অপুষ্টি দূরীকরণে আপনাদের চেষ্টার কথা, শুনলে ভালো লাগে। হয়তো অন্য বিত্তবানেরাও আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। তাতে এই অসাম্যের পৃথিবীতে অল্প হলেও পরিবর্তন আসবে। তবে আপনাদের সুপার-পাওয়ারের সাথে আমজনতার সুপার-পাওয়ার মিলবে না। তারা এমনিতেই 'পরিশ্রমী', তাদের আয়ুর পুরো 'সময়'টাই তারা স্রেফ বেঁচে থাকার সংগ্রামে দিয়ে দিচ্ছে।

তাদের সুপার-পাওয়ার হচ্ছে 'স্বপ্ন'।
একবেলা না খেয়ে পরের বেলায় খাওয়ার স্বপ্ন।
এক প্রজন্মে স্বাধীন না হলেও রক্ত দিয়ে পরের প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতা কেনার স্বপ্ন।
শত কষ্টেও টিকে থাকার লড়াইয়ের স্বপ্ন।

যার স্বপ্ন আছে, তার জীবনে সময় কিংবা পরিশ্রম- কোনটিরই অভাব হয় না। এজন্য স্বপ্ন বুকে নিয়ে পত্রিকা বিক্রেতা থেকে এপিজে আবদুল কালাম বিজ্ঞানী কিংবা রাষ্ট্রনায়ক হন, জীবনে অজস্র ব্যর্থতায় জর্জরিত হয়েও আব্রাহাম লিংকন আমেরিকার কর্ণধার হন, মারণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েও হুমায়ূন আহমেদ লিখে যান অমর কিছু রচনা, পুত্রের লাশ সামনে নিয়ে দীপনের বাবা স্বপ্ন দেখেন একটি সহনশীল রাষ্ট্রে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিক গড়ে ওঠার।

আমি চশমা পড়ি। খালিচোখে বেশিদূর দেখতে পাই না। এই স্বল্পদৃষ্টিতে আমার মনে হয়, মানুষের বেঁচে থাকার সুপার-পাওয়ার হচ্ছে স্বপ্ন।

আমাদের স্বপ্নই গড়ে দিতে পারে তুচ্ছ থেকে শুরু করে এমন বিশাল কিছু-
যা হয়তো আমরা নিজেরা আজ ভাবতেও পারি না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১১

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: তাদের সুপার-পাওয়ার
হচ্ছে 'স্বপ্ন'।
একবেলা না খেয়ে পরের
বেলায় খাওয়ার স্বপ্ন।
এক প্রজন্মে স্বাধীন
না হলেও রক্ত দিয়ে
পরের প্রজন্মের জন্য
স্বাধীনতা কেনার
স্বপ্ন।
শত কষ্টেও টিকে
থাকার লড়াইয়ের
স্বপ্ন।


দারুন কিছু কথা বলেছেন।

২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৮

বিজন রয় বলেছেন: সুপার।
+++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.