নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।
নাজিমুদ্দিন সামাদ নামের এক তরুণকে পুরনো ঢাকায় কাল রাতে কুপিয়ে মারা হয়েছে। এক ঘরানার বিজ্ঞজনেরা ধারনা করছেন, 'কুপিয়ে মারা' জামাতের কাজ, সুতরাং এই হামলার সাথে জামাত-শিবির জড়িত। আরেক ঘরানার বিজ্ঞজনেরা বলছেন, এই ছেলেটা ধর্মবিরোধী কথাবার্তা লিখতো, অনেকের ক্ষোভ থাকতে পারে ইত্যাদি।
লজ্জার বিষয় হচ্ছে, এখন কোন অপরাধ হলে আমরা ভিক্টিম কিংবা ক্রিমিনালের দলীয় বা ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দেই। অপরাধের বিচার নিয়ে কেউই তেমন মাথা ঘামাই না। হয়তো অবচেতন মনে আমরা মেনেই নিয়েছি, এদেশে কোন বিচার হবে না। যার ইচ্ছে দুচারদিন চেঁচামেচি করবে, যার ইচ্ছে কোপাবে, যার ইচ্ছে স্ট্যাটাস দেবে- এই হচ্ছে আমাদের জীবন।
পাকিস্তানিরা তাদের সবগুলো প্রদেশে উর্দু চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। পাঞ্জাবি-সিন্ধি-বেলুচিরা দীর্ঘদিন নিজেদের ভাষায় কথা না বলতে পেরে, লিখতে না পেরে, একপর্যায়ে উর্দুকেই ভাষা হিসেবে মেনে নিয়েছে। আজ আমি যে বাংলায় স্ট্যাটাস দিচ্ছি, আপনি যে বাংলা পড়তে পারছেন- তার কারন আমাদের পূর্বপুরুষেরা উর্দু মেনে নেয়নি। তারা প্রতিবাদ করেছে। তাদের প্রতিবাদ আমাদের অধিকার আদায়ের পরবর্তী সংগ্রামগুলোতে উদ্দীপনা যুগিয়েছে। একাত্তরে আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কেন দাঁড়িয়েছিলাম- এই প্রশ্ন করলে অনেক প্রগতিশীল হাঁ করে তাকিয়ে থাকে।
ধর্মের ভিত্তিতে একটা লম্পট রাষ্ট্র হিসেবে যে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল, সেই পাকিস্তান আমরা চাইনি। সবার সম অধিকারের একটা নতুন শোষণহীন ভূখণ্ড গড়ার যুদ্ধে আমাদের পূর্ব পুরুষেরা জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৪৭ এর দেশভাগে মরেছিল এক মিলিয়ন মানুষ, ১৯৭১ এ জীবন দিয়েছিল তার তিন গুণ। আজ আমরা সেই শহীদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করি, সুযোগ পেলেই ধর্মের লেবাস চাপিয়ে অন্যায়কে হালাল করি।
অসাধারণ একটা ভণ্ড জাতিতে পরিণত হয়েছি আমরা। ধর্মের শান্তিদায়ক অংশকে বইয়ের পাতায় সাজিয়ে রেখে দেই, ধর্মান্ধতার আগুন বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াই। একাত্তরের চেতনা পোস্টারে সাঁটিয়ে রাখি, হাতে রাখি নিজের স্বার্থে আঘাত হানা সবাইকে জ্বালিয়ে দেয়ার মশাল। এভাবে ইহকাল ও পরকাল- দুইখানেই আমরা প্রচণ্ড সফল।
ক'দিন আগেও আমরা সত্য বলতে ভয় পেতাম, এখন সত্য সহ্যই করতে পারি না। মজার জোকস দেখলে লাইক-শেয়ার দিই, হাসাহাসি করি, অথচ হত্যা-গুম-ধর্ষণের খবরে রাস্তায় নামতে চাই না, বরং পারলে ওসব অশান্তির খবর এড়িয়ে যাই।
আমাদের মতো ভণ্ড জাতির কল্যাণের জন্য নাজিমুদ্দিন সামাদ তার জীবনের শেষ স্ট্যাটাসে লিখেছিল-
'সরকার,এবার একটু নড়েচড়ে বসো বাবা।দেশের যা অবস্থা,আইন-শৃঙ্খলার যা অবনতি তাতে গদিতে বেশিদিন থাকা সম্ভব হবে না।জনরোষ বলে একটা কথা আছে।এটার চূড়ান্ত পরিনতি দেখতে না চাইলে এক্ষুনি কঠোর পদক্ষেপ নেয়া দরকার সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে।নতুবা দিন ফুরিয়ে আসবে খুব দ্রুত।'
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা মানুষটি কি জানতো, অমানুষে ভরে যাওয়া এই ভূখণ্ডে তার নিজের দিনই ফুরিয়ে এসেছিল?
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৪২
ফাহিম আবু বলেছেন: "ক'দিন আগেও আমরা সত্য বলতে ভয় পেতাম, এখন সত্য সহ্যই করতে পারি না। মজার জোকস দেখলে লাইক-শেয়ার দিই, হাসাহাসি করি, অথচ হত্যা-গুম-ধর্ষণের খবরে রাস্তায় নামতে চাই না, বরং পারলে ওসব অশান্তির খবর এড়িয়ে যাই।"
++++ ভাল লাগল এইজন্য যে একটা সত্য তুলে ধরেছেন !
৩| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫২
আরব বেদুঈন বলেছেন: আবার ব্লগার হত্যা!দেশের কি অবস্থা চলুন আবার মানবন্ধনে যায়
৪| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:১৪
মহা সমন্বয় বলেছেন: ৩৩: এতদিন মানুষ ছিল ধর্মের খেলার পুতল এবার তারা বাঁধিয়ে হুলুস্থুল।
বার্তা- বজ্রপাত- বার্তা নং ৩৩
একজন মুক্তমানার মৃত্যু জন্ম দেবে হাজার মুক্তমনার।
ধর্মগুলো, চাপাতি আর বিজ্ঞানের কোলে আশ্রয় নিয়ে বঁচার শেষ চেষ্টা করতেছে।
যুগে যুগে ধর্মগুলো তলোয়ার,যুদ্ধ আর সহজ সরল মানুষে আবেগের উপর ভর করে টিকে রয়েছে।
আর আপনার হিসেব ভুল এই দেশের ৯%০ শিক্ষিত লোকই মনে করে তাদের কতল করা ঠিক হয়েছে, ধর্মের স্থান হচ্ছে সর্বোচ্চো তা নিয়ে লেখালেখির দরকারটা কি??
আর ১০০% অশিক্ষিত লোক মনে করে, নাস্তেকগুলোরে খতম করে না ক্যারে।
এই দেশে বসবাস করতে হলে, হয় মিথ্যার স্তুতি করে বাঁচতে হবে না হলে মরতে হবে। এছাড়া আর কোন রাস্তা নাই। (
নিঃশ্চই সত্যের আঘাতে চুর্ণ বিচুর্ণ হবে মিথ্য, ধুলিস্যাৎ হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে মিথ্যা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৩০
মানবী বলেছেন: গত কয়েক বছরে দেশে মানুষের বাকস্বাধীনতার যে অবস্থা, এধরনের স্ট্যাটাস লেখার সাথে নাজিমুদ্দইন সামাদের হত্যাকান্ড সে অবস্থারই আরো প্রকট আকার প্রমান করছে!!
কি ভয়ংকর!