নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন গাধামানব

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন

ডাল দিয়ে ভাত খাই, রাস্তা দিয়ে হাঁটি, মানুষ আমি ভেজাল হলে'ও আমার লেখাগুলো খাঁটি ।

মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়ের চিঠি ১

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০০

প্রতিদিন মনে হয়, চারপাশে যা দেখছি, মাথার ভেতর যা ঘুরছে, যা কিছু ভাবছি অহর্নিশি- এসব লিখে রাখা দরকার। নানা কারনে লেখা হয় না। প্রথমত বিপরীত একটা চিন্তা মাথায় আসে, কী হবে এসব লিখে? জগতে কত ভালো ভালো মানুষ কত ভালো কথা লিখে গেছেন, আজও লিখে চলেছেন, সেখানে আমার মতো মন্দ মানুষের আবর্জনাসম লেখা কার কী কাজে আসবে! দ্বিতীয়ত, প্রবল ব্যস্ততার কারনে লম্বা সময় ধরে লিখবার সময় পাইনে। দু’চার লাইনের স্ট্যাটাস, ডায়েরিতে টুকটাক নোট- এসবেই খুশি থাকতে হয়। তৃতীয়ত, নিজের ভাবনা লেখার মধ্যে এক ধরণের ক্ষুদ্রতা আছে, ক্ষুদ্র জীবনে এমনিতেই হাজারো ক্ষুদ্রতায় আটকে আছি, আত্মকথা লিখবার ক্ষুদ্রতায় যদি হারিয়ে যাই? তারচেয়ে না লিখলেই তো ভালো! জগতেরও ভার বাড়বে না, আমারও বাঁচবে সময়!

কিন্তু শেষ অব্দি আর পারি না, লিখতে বসি। প্রাণাধিক প্রিয় পুলক’দা একবার লিখেছিলেন, ‘যা না লিখে তুমি থাকতে পারবে না তা-ই লিখো’। আমি দৈনন্দিন জমাখরচের হিসেব না লিখেও থাকতে পারি, কিন্তু আজকের আকাশের মেঘ দেখতে গিয়ে অতীতের কোন মেঘের মিল পেলাম, সেই মেঘের বর্ষণে কীভাবে আমার মনের গহীনটা ভিজে গিয়েছিল একদিন, সেই গল্প তোমায় না জানিয়ে বোধহয় থাকতে পারব না। কাজেই যা লিখছি নিজের জন্য, সেই গল্প আসলে তোমার জন্য লেখা। রোজ রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে একটা চিন্তা পেয়ে বসে, যদি এই গল্পগুলো আর না লেখা হয়? যদি তোমার সঙ্গে আর কোনদিন না দেখা হয়? তোমাকে না বলে যদি চলে যেতে হয় না কথা বলার দেশে? আমার সেদিনের বোবাকান্না যেন প্রতিনিয়ত বলে যায়- আজকে যেটুকু সত্য বলে জেনেছি, মিথ্যের দেয়াল ভেঙ্গে যে সত্যের পথে হাঁটতে চেয়েছি, নিজের অযোগ্যতা সত্ত্বেও সে গন্তব্যের পথে পা বাড়িয়েছি, সেসব পথের উপর আমার কিছুমাত্র অধিকার নেই! যদি কারো অধিকার থাকে, তবে সেটা সময়ের, তারচেয়েও বেশি তোমার। সে কারনেই লিখতে বসা। বিগত দিনগুলোর কথা প্রসঙ্গক্রমে আসবে, শুরুটা নাহয় আজকের দিন দিয়েই করা যাক!

সাতসকালে গাড়ি নিয়ে বের হলাম। জয়পুরের এক প্রান্তে যেতে হবে, উদ্দেশ্য রোগ সম্পর্কিত তথ্য মাঠ পর্যায় থেকে তুলে আনা। এশিয়ার শ্রেষ্ঠতম রোগতাত্ত্বিক হিসেবে পরিচিত প্রফেসর এস ডি গুপ্তা একদিন ক্লাস নিতে গিয়ে মশাবাহিত ও ভাইরাসঘটিত চিকুনগুনিয়া রোগের কথা বলছিলেন। ডেঙ্গুর সঙ্গে এর কিছু মিল আছে। আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশে এই রোগ দেখা যায়। অতীতে ভারতে খুব কম সংখ্যক রোগী দেখা গেছে, কিন্তু সম্প্রতি রাজস্থানে প্রচুর সংখ্যক লোকের এই রোগ হয়েছে। স্যার বললেন, ‘You have learned a lot of knowledge, now it’s time to create some knowledge. There is no baseline study on Chikunguniya in this part of the world. Let’s do that and create a publishable data for science and people around the globe.’

দীর্ঘ পরিকল্পনা শেষে কাজ শুরু হল। আমার সহপাঠীদের অনেকেই সুদক্ষ গবেষক, তাদের সহায়তায় আমার মতো ব-কলম মানুষটিও রাস্তায় নেমে পড়ল তথ্য সংগ্রহের কাজে। একেকদিন একেক এলাকায় যাই, বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য যোগাড় করি। ভুলভাল হিন্দিতে প্রশ্ন করি, মানুষজন হাসে, আমিও বোকার হাসি উপহার দেই। হাসতে হাসতে কাজ করি, বেলাশেষে ক্লান্তি এসে ভর করতে চায়, তাকেও হেসে বিদেয় করে দেই। ক্লান্ত হব- সেই অবসর আমার কোথায়! কত লোক অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে, কত লোকের জীবন থেকে ঝরে যাচ্ছে মূল্যবান সময়। বিজ্ঞানের ছাত্র এবং সেবক হিসেবে আমি ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নেব? পুরনো আমি হয়তো নিতাম, কিন্তু তোমার দিকে তাকিয়ে যে নতুন আমি বারবার জেগে উঠি নতুন উদ্যমে, সেই আমার সাধ্য কোথায় থেমে যাওয়ার!

আমি হেঁটে চলি। জানি এই হাঁটা তেমন কোন অর্থ রাখে না, তবুও আমাকে হাঁটতে হয়। তোমার জন্য, তোমাদের জন্য। ক্ষুদ্র জীবনে এটুকু বুঝেছি যে একলা আমি বলে আসলে কিছুই নেই, তোমরা থাকলে আমি থাকি। সবাইকে না পারি, অন্তত তোমাকে এই সত্যটুকু বলে যেতে চাই। হোক এটা অনর্থক কথা, যুক্তিহীন কিংবা আবেগের কথা, কিন্তু আমি যে এমনই! আমার শক্তি ও দুর্বলতা নিয়েই সমগ্র আমি, কেবল শক্তি নিয়ে নয়। বোধহয় দুর্বলতাই বেশি, তাই তোমাকে বলে যেতে চাই সেসব অন্ধকারের গল্প, আলো খুঁজে বেড়াবার গল্প। আমি জানি একদিন তুমি হাঁটবে, পথ আলাদা হলেও গন্তব্য আমাদের এক ও অভিন্ন। আমার গল্প তোমার সেই ভবিষ্যতের জন্য। আজকের জন্য যা নিরর্থক কয়লার মতো কালো, কালের আবর্তে তাই তো আলোকিত হীরের রূপ পায়! আমি আজকের কালিমায় ডুবে যেতে যেতে তোমার হীরে হবার সময় অব্দি ভূতলের গহীনে প্রার্থনা করে যেতে চাই, সামান্য একজন মানুষের এই নিবেদন মহাকালের বেদীতে সমর্পিত, বাকিটা সময়ের হাতে ছেড়ে দিলেম।

বয়স হয়ে যাচ্ছে বোধহয়, মূল আলাপ রেখে কীসব আজেবাজে বকছি! যাই হোক, আজ সকালে গেলাম আমের দুর্গের পার্শ্ববর্তী এলাকায়। জনশ্রুতি আছে, মোগল বাদশাহ আকবর যে রাজপুত রাজকন্যা যোধাবাঈকে বিয়ে করেছিলেন, সেই যোধাবাঈয়ের জন্ম এই এলাকায়। আকবর বাদশাহ যখন আসতেন তখন রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যেত, আমরা তো আর আকবর বাদশাহ নই! আমাদের গাড়ি জ্যাম ঠেলে এগিয়ে যেতে লাগল। আস্তে আস্তে গাড়ি সামনে যাচ্ছে, এমন সময় মস্ত এক হাতি এসে পড়ল সামনে। এবার হাতিকে অনুসরণ করে যেতে লাগলাম। অনেক সময় পার হয়ে কাঙ্ক্ষিত এলাকায় পৌঁছলাম, রাস্তায় নেমে শুরু করে দিলাম কাজ। আকবর বাদশাহের মতো ধনদৌলত আমার নেই, কিন্তু এমন একটা কাজ আমি করছি যা আকবর বাদশাহও করেননি। লোকের ঘরে ঘরে গিয়ে অবনত মস্তকে তাদের কুশল জিজ্ঞেস করছি, কেউ অসুস্থ থাকলে তার সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছি, কেবলমাত্র কাগজ কলম হাতে লড়াই করতে নেমেছি মানবতার শত্রুর বিরুদ্ধে। মহান যোদ্ধা আকবরের কথা ইতিহাসে লেখা থাকবে অনন্তকাল, আমার গল্প জানবে কেবল তুমি। জগতজয়ী সম্রাট নয়, এই গল্প একজন পথিকের, একজন তুচ্ছাতিতুচ্ছ সেবকের। আকবর বাদশাহের সাম্রাজ্য ছিল ভারত জুড়ে, আমার সাম্রাজ্য সারা বিশ্ব জুড়ে। যেখানেই অসুস্থ মানুষ আছে, রোগ আছে, কষ্ট আছে, আমি আমার জীর্ণশীর্ণ দেহখানি সে পথে নিয়ে যাবো আমৃত্যু। দিল্লীশ্বরের জৌলুশ নয়, আমার আরাধ্য নিজামউদ্দিন আওলিয়ার মলিন বসন। একসময় আমার ছাত্রছাত্রীদের নিজামউদ্দিনের গল্প বলতাম, প্রাসাদ থেকে বহুদূরে মানুষের জন্য কিছু করতে চাওয়া এক ফকিরের গল্প। জানো, আমি ভীষণ লোভী। বড় সাধ হয় সেই ফকিরের জীবন কাটাতে, অনন্ত শান্তির সাগরে ডুবে মরতে। সেই বাসনায় এগিয়ে যাই রাজস্থানের রাজপথ ধরে।

একের পর এক বাড়িতে যেতে লাগলাম। অধিকাংশ বাড়িতেই কেউ না কেউ অসুস্থ। শহরের ভেতরটা পরিষ্কার হলেও শহরতলীটা বেশ ঘিঞ্জি ও নোংরা। আকবর বাদশাহের সময়েও কি এমন ছিল? সুরম্য প্রাসাদের বাইরে লোকালয়ের চেহারা কি বরাবরই এরকম? কেবল চিকুনগুনিয়া নয়, অন্যনায় রোগের রোগীও পেলাম পর্যাপ্ত। তাদের অধিকাংশ চোখেমুখে আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘ডাক্তারবাবু ওষুধপত্র কিছু দেবেন নাকি?’ আমি হেসে জানাই অপারগতার কথা, তাদের উদ্যমের প্রদীপ নিভে যায়। কেউ কেউ হতাশ হয়ে বলে, ‘আপনার সঙ্গে এতো আলাপ করে আমার লাভটা কী?’ এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে আছে। আমি ও সে যে ভিন্ন কিছু নই, আমাদের উদ্দেশ্য যে এক- এটুকু বোঝাতে পারলে লোকে সাহায্য করবেই। এরা নিম্নবিত্ত মানুষ, বিশ্বাস করতে জানে, কাউকে ঠকায় না। সত্য বলা এদের কাছে নিরাপদ, শুধু ভাষাটা এক হতে হবে, বুঝিয়ে বলতে হবে। আমি যখন তাদেরই একজন হয়ে আমার প্রশগুলো করি, তখন সেই প্রশ্নের উত্তর আমি পাব না- এটা আমার বিশ্বাস হয় না। উচ্চবিত্তদের কথা বলা মুশকিল। আমার বন্ধুদের একটি দল উচ্চবিত্তদের এলাকায় গিয়েছিল, তাদের অভিজ্ঞতা খুব ভালো। অধিকাংশ বাড়ির দরজা থেকেই তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, খুব কম লোকেই ভালভাবে তথ্য দিয়েছে। উচ্চবিত্তরা জানে, লোক ঠকানো কত সহজ, তাই তারা ঠকতে রাজি নয়। জীবনে কাউকে না ঠকালে উচ্চবিত্ত হওয়া কঠিন। কাজেই তাদের উপলব্ধি বাস্তবিক ও যথার্থ।

আমার আজকের নির্ধারিত এলাকায় প্রচুর নিম্নবিত্ত মানুষ। তাদের আন্তরিকতা দেখার মতো। অধিকাংশ বাড়িতেই চা-নাশতা খেতে বলছে, আমি কেবল পানি খেয়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। অবশ্য মাঠ পর্যায়ে এভাবে পানি খাওয়া নাকি গবেষণার রীতিবিরুদ্ধ, রোগজীবাণুর বালাই থাকে। আমার ব্যক্তিগত রীতিনীতিতে সেসব সমস্যা নেই। মানবতার কল্যাণে রাস্তায় নেমে যদি অসুস্থ হই এরচেয়ে আনন্দের ব্যাপার আর কী হতে পারে!

নানা মজার অভিজ্ঞতা হল। আমার সমবয়েসী এক ভদ্রলোকের সঙ্গে কথা হল, তার তিনটা বাচ্চা। একটা আমার কোলে এসে বসে পড়ল, আর ওঠার খবর নেই। ভাবলাম সঙ্গে করে নিয়ে আসি। কিন্তু বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে এই আবদার করা গেল না। আবার আসব এদের দেখতে- এই ভেবে নিজেকে প্রবোধ দিলাম। বাড়িঘরের চারপাশে নালা-নর্দমা একদম খোলা, সরকার মশা চাষের উৎকৃষ্ট আয়োজন করে রেখেছে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ তো বাড়বেই!

এক বাড়িতে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখলাম। ছাদের কার্নিশে দুয়েকটা বানর দেখা গেল। আমি গ্রিলের ভেতর তাকিয়ে দেখি একটা অলস গাড়ির উপর আরও তিনটে বানরশিশু। ওদের ছবি তুললাম। একটু পর দেখি মা-বানর দূর থেকে ব্যস্তভঙ্গিতে ছুটে আসছে। হায়রে মায়ের ভালোবাসা! জগতের শুদ্ধতম রত্ন! সন্তানগুলো মা’কে জড়িয়ে ধরল, মা বানরটি আমার দিকে সতর্ক দৃষ্টিতে তাকাল, আমি তাদের নিরাপদ রেখে পরের বাড়িতে রওনা হলাম। মানুষ ভয়ানক পশু, মানুষের অনুপস্থিতি অন্য পশুদের জন্য স্বস্তির ব্যাপার।
অনেকগুলো বাড়িতে গেলাম, প্রচুর রোগী বিষয়ক তথ্য পেলাম। এক বাড়িতে নিজের পরিচয় দিতেই বাড়ির কর্তা একটা খবর দিলেন। এই বাড়ির একমাত্র কন্যাশিশুটির জন্ম হয় মাস দুয়েক আগে। জন্মের দুদিনের মাথায় তার খিঁচুনিসহ জ্বর হয়, হাতে পায়ে লাল দানা ওঠে। ডাক্তাররা প্রচুর পরীক্ষা নিরীক্ষা করেও কিছু বের করতে পারেননি। শিশু আইসিইউ’তে দীর্ঘদিন থাকার পর জানা যায় রোগটি চিকুনগুনিয়া। তিনি আরও জানালেন, ডাক্তারদের ভাষ্যমতে এ বছর জয়পুরের প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সনাক্তকৃত চিকুনগুনিয়া রোগী এই শিশুটিই।

সব শুনে মেয়েটিকে দেখতে চাইলাম। হালকা গোলাপি কাপড়ে আবৃত ছোট্ট একটি দেবশিশু। ঘুমাচ্ছে, ঘুমের ভেতর মাঝেমাঝে হাসছে। তার জীবনের প্রথম দুটি মাস কেটেছে ভাইরাসঘটিত চিকুনগুনিয়ার সঙ্গে লড়াই করে, সেই লড়াইয়ে রোগকে হারিয়ে সে বাড়ি ফিরেছে। তিন প্রজন্মের পর একমাত্র কন্যাসন্তান সে, তার অসুস্থতায় বাড়ির সবাই ভেঙ্গে পড়েছিল, কিন্তু সে নিজের প্রাণশক্তিতে হারিয়েছে মৃত্যুকে। এই পুনর্জন্মকে স্মরণীয় করতে তার নাম রাখা হয়েছে পুনারভী(Punarvi), যার অর্থ ‘reborn’

আমি পরম মমতায় দেবশিশুটির মাথায় হাত রাখলাম। একজন পাপী মানুষ হিসেবে পৃথিবীর একজন পবিত্র মানুষকে ছুঁয়ে নিজেকে ঋদ্ধ করলাম। ক্ষমা চাইলাম এই নতুন প্রাণের কাছে, আমাদের আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান তার রোগ নির্ণয়ে দেরি করায় তার যে কষ্ট হয়েছে তা ক্ষমাহীন। আজকের এই যোদ্ধার রোগ-ইতিহাস আমার ফাইলে বন্দী, সেই ইতিহাসের সঙ্গে আরও হাজারো প্রাণের ইতিহাস একীভূত হবে, রোগের কারন ও চিকিৎসা নির্ণয়ে এই গবেষণা ব্যবহার হবে বিশ্বব্যাপী। পৃথিবীর নানা প্রান্তে অনেক সাধক-যোদ্ধা সে কাজ করে চলেছেন। পথিক হিসেবে আমার কাজ এক পুনারভীর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে যোগ্য যোদ্ধার হাতে সঠিক সময়ে জ্ঞানের অস্ত্রটি পৌঁছে দেয়া লক্ষ পুনারভীর চিকিৎসায়। আমি অকৃতী অপারগ, কিন্তু ঘুমের মাঝে হেসে চলা নিষ্কলুষ মেয়েটি আমায় সাহস দিয়ে যেন বললে, ‘আমার জন্য তোমায় পারতে হবে পথিক, পারতেই হবে!’

তুমি ভালো করেই জানো আজ অব্দি আমি তোমার জন্য ছুটে চলেছি। এখন থেকে এই ছোট্ট দেবীটিও আমার পদযাত্রার শক্তি হিসেবে যুক্ত হল। আমি নিশ্চিত করে জানি- তুমি আর পুনারভী আলাদা নও, জগতের সত্য সুন্দর যা কিছু আছে তার কিছুই আলাদা নয়। সব এক। সেই একের পথে আমরা সবাই এগিয়ে চলেছি। কেউ ইচ্ছায়, কেউ অনিচ্ছায়।

কাউকে কিছু বোঝাবার সাধ কিংবা সাধ্য আমার নেই। শুধু তুমি জেনে রেখো, আমি কেবল ইচ্ছাতেই নয় বরং প্রগাঢ় আনন্দের সঙ্গেই ছুটে চলেছি এই পথে। শাশ্বত এই পথ কিংবা এলোমেলো এই লেখাটি তোমার সঙ্গে আমায় যুক্ত করে আনন্দলোকের মুগ্ধতায়, প্রাণের স্নিগ্ধ পরশে। তাই প্রচণ্ড ভিড়ের মাঝেও আমি হারিয়ে যাই না। অদৃশ্য তুমি আমায় আগলে রাখো নিয়ত- এ আমার অনুভব নয়, এ আমার চিরন্তন সত্য।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.