নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন বিশিষ্ট সাইকো

আবু রায়হান ইফাত

একজন বিশিষ্ট সাইকো, নির্জনতা প্রিয় অদ্ভুত প্রকৃতির একজন মানুষ, মাঝে মাঝে আত্মমস্তিষ্কে এমন কিছু কল্পনা করি যা হয়তো কারো নিকট ভিত্তিহীন, কিন্তু আমার নিকট মহামূল্যবান ।

আবু রায়হান ইফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনু গল্প ( ভালোবাসার অস্তিত্ব )

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫২




-" কিরে তোর আজ কি হলো...?? এমন করে শুয়ে আচিস কেনো..??
( রিশাদ কে উদেশ্য করে সানভীর প্রশ্ন )
- " এই তুই কথা বলছিস না কেনো...??
রিশাদ..... রিশাদ.... এই রিশাদ তোর কি হলো....? কথা বল দোস্ত প্লিজ।

রিশাদ আর সানভী দুজনেই বাল্যকালের বন্ধু, সেই প্রাইমারি থেকে শুরু করে ভার্সিটি পর্যন্ত দুজনেই একসাথেই একই স্কুল, কলেজ এবং ভার্সিটি তে পড়ছে, দুজনের বন্ধুত্ব দেখে সহপাঠীরা ইর্ষান্বিত হতো.... ইশ যদি তাদের মতো বন্ধু পাইতাম !
স্কুল, কলেজ এমন কি ভার্সিটির শিক্ষক গনও তাদের জোড়মানিক বলে ডাকতো।
দুজনেই মেধাবী ছাত্র ছিলো তাই শিক্ষক এবং পরিবার পরিজন সবার কাছে তারা ছিল অন্যতম।

সানভী ও রিশাদ ঢাকা ভার্সিটি তে দর্শন বিভাগে ২য় বর্ষে পড়াশোনা করে এবং একই হলে থাকে, সানভী যে কোনো একটা কাজে একদিন এর জন্য ঢাকার বাহিরে গেছিলো রিশাদ কে হলে একা রেখে, রিশাদ কে ও যাওয়ার জন্য বলেছিল কিন্তু জ্বর থাকার কারনে সে যেতে পারে নি, তাই সানভী কে একাই যেতে হয়েছে।
আজ সানভী ফিরে এসেছে, হলে এসে দেখে রুমের দরজা বন্ধ, ভাবছিলো রিশাদ হয়তো বাহিরে গেছে তাই ব্যাগ থেকে চাবি বাহির করে দরজা খুলে দেখে রিশাদ তার বিছানায় শুয়ে আছে, সানভী রিশাদ কে বারবার ডাকার পরেও রিশাদ উঠছে না দেখে সানভীর মনে অজানা হাজারো ভয় বাসা বাধল, হঠাৎ রিশাদের হাতের পাশে একটা কাঁচের শিশি দেখে রিশাদ আঁতকে উঠলো, একি ! এতো একটা বিষের শিশি, রিশাদের পাশে কেনো...??
হাজারো প্রশ্ন মুহর্তের মাঝে সানভীর মনে এসে জমা হলো।

সানভী চিৎকার দিয়া বলে উঠলো.. এই রিশাদ উঠ, এই রিশাদ ক্যান তুই এমন করলি.......।

সানভী টেবিলের উপর পড়ে থাকা রিশাদের ডায়েরী টা হাতে নিলো, কাঁপা কাঁপা হাতে তা খুললো এবং শেষ পাতায় গিয়ে যা দেখলো..........

প্রচন্ড জ্বর ছিলো আজ, সানভী সকালে জরুরি একটা কাজে ঢাকার বাহিরে গেছে , ভালো লাগছিলো না, তানহার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো তানহা কে ফোন দিলাম সে ধরলো না, কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর ও সে ফোন তুললো না, গত একমাস ধরেই তানহা আমার সাথে এমন করে, মনের মাঝেই এই কষ্ট গুলো চাপিয়ে রাখি রিশাদ কে বলি নি, সে যদি তানহা কে বকাঝকা করে।

( সম্পর্কে তানহা আর সানভী কাজিন, সানভীর বড় আপুর হলুদে রিশাদ আর তানহার পরিচয়। প্রথম দেখাতেই রিশাদ তানহার প্রতি কাবু অতঃপর সানভীর শরণাপন্ন , সানভীর সহযোগীতা তেই রিশাদ আর তানহার মাঝে ভালোবাসার সম্পর্ক হয়, সে থেকে গত একমাস পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক ভালো চলছিলো, গত এক মাস থেকে , রিশাদ তানহার মাঝে একটা পরিবর্তন উপলব্দি করলো, যেন তানহা আগের মতো নাই অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে, রিশাদের প্রতি তানহার ভালোবাসা কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো। )

তানহা কে রিশাদ বকাঝকা করুক তা আমি চাই না বলে রিশাদকে বলি নি, আজ অনেক বার চেষ্টা করার পরেও যখন তানহা কে ফেলাম না, বাসায় ও সিগারেট নাই তাই ফোন বাসায় রেখে টি এস সি তে গিয়ে সিগারেট আনার পর দেখি মোবাইলের হোম স্কিন এ একটি বার্তা , হ্যাঁ , ওটা তানহার আইডি থেকেই এসেছিল , বার্তা টি এমন ছিল........
" দুঃখিত রিশাদ, আমি আর পারবো না তোমার সাথে সম্পর্ক রাখতে, আমি তোমাকে কখনো ভালোবাসিনি এবং বাসতে ও পারবো না, শুধু মাত্র সানভীর কথা রাখার জন্যই তোমার সাথে মিথ্যে সম্পর্কে জড়িয়েছি, কিন্তু এভাবে আর কতদিন....??
আর হ্যাঁ, আগামী মাসেই আমার আর রাহাত এর বিয়ে, রাহাত আমার মামাতো ভাই ৩ বছর যাবৎ আমাদের মাঝে সম্পর্ক, সানভী জানতো না এমনকি তাকে জানতে ও দেয় নি এজন্যই তোমার সাথে মিথ্যে রিলেশনে জড়িয়েছি, আমাকে ক্ষমা করে দিও, আর নতুন কাউকে নিজের করে নিও, বাই.... ইতি, তানহা।"

বার্তা টি দেখার পর তানহা কে ফিরতি বার্তা পাঠানোর সুযোগ আর পাই নি, এর আগেই তানহার ব্লক লিষ্টে আমার আইডি স্থান দখল করে নিয়েছে, ফোন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ পেয়েছি।
ভালবাসি তো অনেক তানহা কে, কিভাবে তাকে ছাড়া আমি বেঁচে থাকবো...?? আমার সকল স্বপ্ন গুলো তো ভঙ্গ হয়ে গেলো, স্বপ্ন ভঙ্গ হলে মানুষ কেনোই বা বেঁচে থাকে....??
না, আমার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই, আমার স্বপ্ন হারিয়ে গেছে, আমাকে ওপাড়ের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিতেই হবে, আমি বেঁচে থাকলে হয়তো তানহা সুখে থাকতে পারবে না, তানহা যদি সুখেই বা না থাকে তাহলে তার প্রতি আমার ভালোবাসা আর কোথায় থাকলো...??
তানহা সুখের জন্য হলেও আমাকে মরতে হবে, তানহার প্রতি আমার ভালোবাসার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য হলেও আমাকে মরতে হবে।
আমি চলে গেলাম উপরওয়ালার নিকট , যদিও জানি আমার এই মৃত্যু উনার নিকট গ্রহন যোগ্য নয়, এবং আমাকে অনন্তকাল নরকের আগুনে জ্বলতে হবে, তবুও চলে গেলাম পৃথিবীর সকল মিথ্যে মায়া ত্যাগ করে,
তানহা তুমি সুখী হও, তুমি সুখী হলে আমি সুখী।
আব্বু, আম্মু আর সানভী তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও তোমাদের না জানিয়ে আমি চলে গেলাম না ফেরার দেশে।
গুড বাই চলনাময়ী পৃথিবী।

সানভী পাথর হয়ে গেলো, দু চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে ডায়েরী পাতা ভিজে একাকার হয়ে গেলো, তার জীবন থেকে হারিয়ে গেলো তার শ্রেষ্ঠ বন্ধু, তার খেলার সাথী, সুখ - দুঃখের সাথী।
রিশাদের পিতা মাতা হারিয়ে ফেললো তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান।

আর হ্যাঁ,
তানহারা'ই পারে রিশাদদের মতো ছেলেদের মিথ্যে স্বপ্ন দেখাতে, এবং স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে।
আর রিশাদরা, তারা ভালোবাসতেই জানে, জীবনভর ভালোবাসতেই পারে এবং জীবন দিয়ে হলে টিকিয়ে রাখতে পারে তাদের ভালোবাসার অস্তিত্ব।

লিখা :- আবু রায়হান ইফাত

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০০

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ছবিটা উপরে দিলে ভাল হত। গল্প হয়েছে মোটামুটি। বানান কিছু ভুল আছে। লিখতে থাকুন ভাল হবে আশা করি। শুভ কামনা রইল

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ধন্যবাদ ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.