নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন বিশিষ্ট সাইকো

আবু রায়হান ইফাত

একজন বিশিষ্ট সাইকো, নির্জনতা প্রিয় অদ্ভুত প্রকৃতির একজন মানুষ, মাঝে মাঝে আত্মমস্তিষ্কে এমন কিছু কল্পনা করি যা হয়তো কারো নিকট ভিত্তিহীন, কিন্তু আমার নিকট মহামূল্যবান ।

আবু রায়হান ইফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প ( অবুঝ ভালোবাসা )

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২০



ছোট গল্প :- ( অবুঝ ভালোবাসা)

( এক )
- আমি ফাহাদ কে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারবো না,
সবার সম্মুখে মোবাইলের স্কিনে একটি ফটো দেখিয়ে বললো কেয়া,
আমি যদি বিয়ে করি তাহলে ফাহাদ কেই করবো, ফাহাদ ব্যতীত অন্যকারো সাথে যদি বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে আমি আত্মহত্যা করবো কঠোর হুশিয়ারি কেয়ার।

পরিবারের সবাই কেয়ার কথা শুনে কিংকর্তব্যবিমূঢ়, এতটুকো একটা মেয়ের মুখে এত্তো বড় কথা, যে মেয়ে কে এখনো মায়ের হাতে খাইয়ে দিতে, সে কিনা আত্মহত্যা করবে এমন হুশিয়ারী দেয়।

ফাহাদ" কেয়ার মামা রাফিন এর বাল্যকালের বন্ধু, একসাথে পড়াশুনা এবং চলেফেরা করতো, মাঝে মাঝে রাফিন এর সাথে ফাহাদ কেয়াদের বাড়িতে যেতো, তাছাড়া রাফিন এর বন্ধু হিসেবে ফাহাদ এর সাথে কেয়ার পরিচয়।
বন্ধুর ভাগনি হওয়ায় ফাহাদ কেয়াকে ভাগনির চোঁখেই দেখতো, কিন্তু কেয়া এর উল্টো ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াকালীন সময় থেকেই কেয়া ফাহাদ কে পছন্দ করতো, এবং ফাহাদ কে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো, কেয়া ভালোবাসতো ফাহাদ কে, কিন্তু ফাহাদ এর কিছুই জানতো না।
( দুই )
একদিন ফাহাদ তার মোবাইলে অচেনা নাম্বার থেকে একটি বার্তা দেখতে পেল, বার্তাটি পড়ে ফাহাদ আঁচ করতে পারলো এটি ভালোবাসা এজনিত বার্তা, ফাহাদ ভাবলো হয়তো কেউ নাম্বার ভুল করে বার্তাটি পাঠিয়েছে, তাই আর ফাহাদ তেমন রেসপন্স করে নাই।
পাঁচ মিনিট যেতে না যেতেই আরেকটি বার্তা এসে উপস্থিত, অতঃপর ফাহাদ সেই নাম্বারে কল করিল, ও প্রান্ত থেকে কল রিসিভ করার পর ফাহাদ একজন সুকন্ঠী বালিকার কথা শুনতে পেল...........

- হ্যালো, কে বলেছিলেন ( ফাহাদ)
- কেমন আছেন..? ( অপর প্রান্ত থেকে)
- ভালো, আপনার পরিচয় কি পেতে পারি...??
- পরিচয় ছাড়া কি কারো সাথে কথা বলা যায় না...
- বলা যায়, তবে তা স্বল্প সময়ের জন্য
- না হয় আমার সাথে পরিচয় ব্যতীত কিছুক্ষণ কথা বলবেন আর কি.!
- আচ্ছা,আপনি কি আমাকে চিনেন..??
- হয়তো চিনি
- যাক ভালো, আপনার নাম তো বলেন নাই.. নাম টা কি...???
- এখন জানানোর প্রয়োজন বোধ করি না, পরে সময় হলে জানাবো।
- ওকে, এখন ফোন রাখি, বাহিরে খেলতে যাব।

এই বলে ফাহাদ এর ফোন থেকে প্রস্থান।
ফাহাদ ভাবতে থাকে কে হতে পারে এই মেয়েটি !!
এরপর ও আরো কিছু দিন অজ্ঞাত মেয়েটির সাথে ফাহাদ এর কথা হয়,
ফাহাদ অজ্ঞাত বালিকার কন্ঠের প্রতি দুর্বল হতে লাগলো আস্তে তাদের কথা পরিমান গভীর থেকে আরো গভীরহতে লাগলো, দুজেনই দুজন কে তাদের ফেসবুকে এড করে নিলো, দিনভর চলতে থাকে তাদের চ্যাটিং, দুজনের মাঝে তখন কাজ করতো এক অদ্ভুত ভালোলাগা।
( তিন )
অজ্ঞাত সেই মেয়েটির পরিচয় এখনো জানা হয়নি ফাহাদের।
মেয়েটি আজ ছবি পাঠাবে অধীর আগ্রহে মোবাইল হাতে নিয়ে বসে আছে ফাহাদ, অতপর মেয়েটির ফেসবুক আইডি থেকে বার্তা, হ্যাঁ, মেয়েটি ছবি পাঠিয়েছে, কিন্তু ছবি দেখার পর ফাহাদের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, আরে এতো কেয়ার ছবি , মুহর্তের মধ্যে মনের ভিতর সাজানো স্বপ্ন গুলো ভেঙে ফেলে ফাহাদ।
না, এই সম্পর্ক কিছুতেই হতে পারে না, বন্ধুর বোনের মেয়ে মানে আমার ও বোনের মেয়ে।

ফাহাদ কেয়া কে বুঝানোর চেষ্টা করে এই সম্পর্ক রাখা সম্ভব না, এতোদিন যা হয়েছে তা অজানার কারনে হয়েছে,
কিন্তু কেয়া বুঝতে নারাজ, সে কিছুতেই বুঝতে চায় না।
ফাহাদ নিজে থেকেই দুরে সরে গেলো, কেয়ার ফোন নাম্বার এবং ফেসবুক আইডি দুটাই ব্লক করে দিলো।

দীর্ঘ দিন ফাহাদ আর কেয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ফাহাদ চলে যায় বিদেশে আর কেয়া মনের ভিতর ফাহাদের জন্য এক অপরিমিত ভালোবাসা রেখে কাটিয়ে যাচ্ছে দিন।
( চার)
আজ কেয়া কে বর পক্ষ থেকে দেখতে আসবে, কেয়ার বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে কেয়ার বিয়ে ঠিক হয়। ছেলে পক্ষ দেখতে আসার পর অনিচ্ছা সত্বেও কেয়া ছেলে পক্ষের সম্মুখীন হয়, কেয়া নিজেকে টিকিয়ে রাখতে না পেরে সবার সম্মুখে ফাহাদ এর ছবি বের করে বলে আমি ফাহাদ কে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারবো না, যদি অন্য কারো সাথে আমার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে আমি আত্মহত্যা করবো ।

কেয়ার নিষেধাজ্ঞার পরেও কেয়াকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে কেয়ার পরিবার।
অষ্টাদশী এই মেয়েটি লালশাড়ী পরে বসে আছে, কিছুক্ষণ পরেই হয়তো কাজী সাহেব আসবে বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ করতে, প্রচন্ড জেদি মেয়েটা ফাহাদ কে ছাড়া অন্যকিছু ভাবতে পারে না, তার কিনা আজ অন্য ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে , না তা কিছুতেই মানা যায় না, আস্তে করে কেয়া কাঁচের ছোট্ট শিশি খুললো এবং এক নিঃশ্বাসেই সব খেয়ে ফেললো, একটু চটপট করার নিথর হয়ে গেলো কেয়ার লাল শাড়ী পরা দেহটি।
লাল শাড়ী পরে ফুলের বিছানায় আজ বাসর হওয়ার কথা ছিলো কেয়ার কিন্তু সাদা কফিনে মুড়িয়ে কেয়া কে যে অন্ধকারের মাঝে রেখে আসতে তা কার জানা ছিলো।
কেয়া চলে গেলো না ফেরার দেশে।
আর ফাহাদ যখন দেশে ফিরে আসলো কেয়ার কথা শুনার পর হতভম্ব হয়ে গেলো, যে মেয়েটি শুধু মাত্র তার জন্য জীবন বিসর্জন দিয়ে দিলো আর সে কিনা এই মেয়েটি কে কতই না অবহেলা করতো, ফাহাদ কেয়ার কবরের পাশে গেলো দুচোখ দিয়ে অনর্গল পানি গড়িয়ে পড়ছে আর মন বলতে চাচ্ছে ভালোবাসি কেয়া।
কিন্তু সময় তো তখন আর নেই বলেই বা আর কি হবে ।
এরপর থেকে ফাহাদ কে আর কোথাও দেখা যায় নি, হারিয়ে গেছে লোকালয় থেকে কোনো এক অজানায়।

লিখা - Abu RayHan IfAt

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.