নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন বিশিষ্ট সাইকো

আবু রায়হান ইফাত

একজন বিশিষ্ট সাইকো, নির্জনতা প্রিয় অদ্ভুত প্রকৃতির একজন মানুষ, মাঝে মাঝে আত্মমস্তিষ্কে এমন কিছু কল্পনা করি যা হয়তো কারো নিকট ভিত্তিহীন, কিন্তু আমার নিকট মহামূল্যবান ।

আবু রায়হান ইফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্প - ভালো থেকো

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২২



“ভালো থেকো” খুব ছোট্ট একটি বাক্য, দুটি শব্দের সংযোগ মাত্র।
বাক্যটি খুব একটা বড় না হলেও বাক্যটির অর্থ অনেক গভীরতর থেকে গভীর।
বিদায়ের শেষ ঘন্টাতেই মূলত ব্যবহার হয় বাক্যটির। বাক্যটিতে বলা হয় ভালো থাকতে যার অর্থ দাড়ায় খুব সুন্দর করে জীবন পরিচালনার অাহব্বান করা, স্বপ্নগড়া নতুনত্ব নিয়ে আর খারাপ লাগাকে দূরে ঠেলে দিতে।
কিন্তু শাব্দিক অর্থের চেয়েও এর অন্তর্নিহিত অর্থ ব্যাতিক্রম।
“ভালো থেকো” বলেই দূরে চলে যাওয়া, দূরত্ব বেড়ে যাওয়া।
“ভালো থেকো” শব্দদুটির ব্যাবহার প্রকাশ করে দেয় মনের ভিতরে জমে থাকা কষ্টগুলো।
“ভালো থেকো” শব্দদুটি অভিমানের বহিঃপ্রকাশ। হয়তো অনুভূত হয়না তা আমাদের।
একটা মানুষ কখন বলে “ভালো থেকো” ..?
যখন মানুষটির ভিতরে কষ্টের পাহাড় এসে বাসা বাধে, মানুষটি দূরত্ব চায় না , কিন্তু দূরত্বে চলে যায়, চাপা কষ্ট রেখে “ভালো থেকো” শব্দদুটির ব্যাবহারে।

আমাদের গল্পটিরও তেমনি “ভালো থেকো” শব্দদুটির ব্যাবহারেই ইতি ঘটেছিলো। সমাপ্তি এসেছিলো দুজন তরুন-তরুনীর অবুঝ ভালোবাসার, আবেগে আশ্রিত ভালোবাসার।
অনেকেই বলে প্রথম প্রেম কখনো ভুলা যায় না, বেঁচে থাকে আমৃত্যু । কথাটি তখন অবিশ্বাস্য হলেই আজ অনুভব করতে পারছি কথাটি ছিলো চিরন্তন সত্য।
এইতো আমাদের গল্পটির দূরুত্বের ঘন্টার আজ দুটি বছর অতিবাহিত হয়ে গেলো, অথচ সে এখনো সঞ্জীব আমার হৃদয়ে। আমি জানি সে কখনো আর আমার হবে না। কিন্তু ভালোবাসা, হ্যাঁ প্রথম ভালোবাসা, চিরঞ্জীব সেই ভালোবাসা, কখনো মৃত্যু হয়না তার। অনুভূতিতে মিশে থাকে সেই ভালোবাসা।

ভালোবাসা কি..? কেউ হয়তো এখনো ভালোবাসার সংজ্ঞাটা দিতে পারেনি, হয়তো পারবেও না। আমার নিকট মনে হয় ভালোবাসা একপ্রকার অদৃশ্য অনুভূতি যা হঠাৎ এসে স্থান দখল করে নেয় হৃদমাঝারে। হউক এবার ভালোবাসার বস্তুটি ভিন্ন, কিন্তু ভালোবাসা এক স্থান থেকেই আসে, আর ভালোবাসা টিকে থাকে চিরকাল।

আমাদের গল্পের শুরুটা ছিলো ব্যাতিক্রম। হাসপাতালে সিনেমার মতো করে প্রথম দেখা হয় দুজনের। আমি সিড়ি বেয়ে উপরে উঠছিলাম আর সে নিচে নামছিল। আচমকা সে আমার দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো, এমন একটা এক্সপেশন তখন তার চেহারায় ভেসে উঠলো, যেনো ১০ হাজার কিলোওয়াটের বিদ্যুৎের শর্ট খেলো।
হঠাৎ সে বলে উঠলো :- আপনি কি তাজিন..? যদি আমি ভুল না বলে থাকি।
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেতে লাগলাম, হরিনী-চক্ষুধারিনী লম্বাকেশী এই মায়াবতী আমার নাম জানলো কিভাবে...?
আমি উত্তর দিলাম : হ্যাঁ, আমি তাজিন কিন্তু......
মেয়েটি আমার মুখ থেকে কথা টেনে নিয়ে গেলো
এবং বললো:- অবাক হচ্ছেন, তাইতো...? এই মেয়েটি আমার নাম জানলো কি করে এই ভেবে, আর ভাবছেন মেয়েটি'ই বা কে তাইতো...?
শুনেন আমি সুপ্তা মাইক্রো বায়োলজিতে ১ম বর্ষে, আপনাকে চেনি কিভাবে তা তো জানতে চান...? "মহাপুরুষ" নিয়ে একটি সিরিজ গল্প লিখেছিলেন ফেসবুকে একটি সাহিত্য গ্রুপে, সে থেকেই আমি আপনাকে চেনি।
আমি মজা করে বললাম :- বাহ! ইহা দেখি আমার মস্তবড় একজন ফ্যান।
সুপ্তা হেসে উঠলো, আর বললো:- দয়া করে একটু মেসেঞ্জারে জমে থাকা ম্যাসেজগুলো চেক করবেন ।
এই বলে মেয়েটি সেখান থেকে প্রস্থান করলো, আমি তাকিয়ে রইলাম পরী সাদৃশ্য সুপ্তা নামক মেয়েটির আড়াল হওয়ার দিকে।

হাসপাতালে কাজ শেষ করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো, আমি বাসায় ফিরে ভাবতে লাগলাম মেয়েটির কথা। মেসেঞ্জার অপেন করে জমে থাকা মেসেজগুলো চেক করতে লাগলাম। সুচিস্মিতা সুপ্তা নামক একটি আইডি দেখতে পেলাম, আর যথাসম্ভব এটাই মেয়েটির আইডি , অনেকগুলা মেসেজ জমেছিলো । আর শেষ মেসেজটি ছিলো ভালো থাকবেন। অভিমান করেছিল মেয়েটি ম্যাসেজগুলোর রেসপন্স না করায়।
একটি মৃদু হাসির ইমোজি দিয়ে রিপ্লাই দিলাম আর বললাম দুঃখিত।
সুপ্তা সাথে সাথে রিপ্লাই দিলো। এভাবে প্রায় প্রতিদিন আমাদের মেসেঞ্জারে চ্যাট হতো, একসময় ফোনে কথা বলা শুরু করলাম। বাড়তে লাগলো দুজনের ভালোলাগা, আমরা আমাদের সম্পর্কটাকে রূপান্তর করলাম ভালোবাসায়, প্রায় বছর দুয়েক ছিলো আমাদের সম্পর্ক।

শেষের দিকে আমাদের সম্পর্ক কেমনজানি নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছিল। আসলে দোষটা আমার'ই ছিলো আমি খামখেয়ালিপনা ছিলাম তাই হয়তো সম্পর্কটা বিগড়ে গেলো। রিলেশনে থাকাকালীন আমরা প্রায়'ই মিট করতাম, পছন্দের একটি স্থান ছিলো আমাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল। শেষ দেখাটিও সেখানেই হয়েছিলো।
মেয়েটি কাঁদো কাঁদো গলায় সেদিন বলেছিলো ভালো থেকো। আমি সেদিন সম্মতি জানিয়ে চলে এসেছিলাম।
আমার হৃদপিন্ড যেন তখন ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছিল, হারানোর তীব্র ব্যাথা আমাকে কষ্ট দিচ্ছিলো।
মায়া ত্যাগ করতে চেয়েছিলাম সেদিন।কিন্তু পারি নাই, কেউ'ই পারি নাই মায়া ত্যাগ করতে। এমনকি পৃথিবীর কোনো মানুষ'ই পারবেনা মায়া ত্যাগ করতে।

ব্রেকআপের পর আজ আমাদের দ্বিতীয় মিট হচ্ছে, গতবছর ও এক'ই দিনে আমরা মিট করেছিলাম।
আজ আবার সুপ্তার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি, বকুল ফুলের মালা নিয়ে। বকুল ফুল খুব পছন্দ করতো সুপ্তা ।
বকুল ফুলের মালা নিয়ে আমি সুপ্তার খুব নিকটে গেলাম, নিজ হাতে মালাটি পরিয়ে দিলাম।
কান্না চেপে রাখতে পারলাম না, হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম মাটি আঁকড়ে ধরে।
সুপ্তা ঘুমিয়ে আছে মাটির অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরে। সেদিন আমি এমন না করলে হয়তো আমাদের গল্পটা অন্যরকম হতো। কিন্তু বিধাতার লিখন হয়তো ভিন্ন ছিলো। সময় দেননি তিনি আমাদের। সুপ্তা সে রাতেই পাড়ি জমিয়েছিলো ওপাড়ে। ভালোবাসতো খুব আমাকে তাই হয়তো বিচ্ছেদ সহ্য করতে পারেনি। তাই চলে গেলো।
সুপ্তাতো চলে গেলো, কিন্তু আমাকে মায়ার বন্ধনে বেঁধে গেলো, যে বন্ধন ছিন্নকরা দায়।
সুপ্তা আজও আমাকে সেদিনের মতো করে বিদায় দিলো “ভালো থেকো” বাক্যটির ব্যাবহার করে ।
আমি চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম, আমি আসতেছি সুপ্তা, শীঘ্রই আসতেছি অপেক্ষায় থেকো।

#চাইরচোখ

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৩০

সকাল রয় বলেছেন:
গল্পটি কিন্তু বেশ ভালো... তবে প্রথমের বিষয়টুকু শেষে হলেও চলতো

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:১৮

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:৪৭

মৌমুমু বলেছেন: চমৎকার শিরোনাম "ভালো থেকো"। তবে গল্পের শেষটা কষ্টের।
ভালো থাকুক ভালোবাসার মানুষগুলো তাদের ভালোবাসার মানুষগুলোর সাথে!
শুভকামনা আপনার জন্য। ভালো থাকবেন ভাইয়া।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২২

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ভালো থাকুক ভালোবাসার মানুষগুলো । ধন্যবাদ আপু।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৫২

জাহিদ অনিক বলেছেন:

ভালো থাকুন গুপ্ত ঘাতক

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৮

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ভালো থাকুক ভালোবাসার মানুষগুলোও।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:৫০

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি লাগল।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৮

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ধন্যবাদ ।

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪১

জেন রসি বলেছেন: "ভালো থেকো"- অনুভবটাকেই গল্পে প্রকাশ করতে চেয়েছেন।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪০

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: "ভালো থেকো" শব্দদুটি বড্ড পীড়াদায়ক।

৬| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:৪২

কালীদাস বলেছেন: মনখারাপ করা সুন্দর একটা লেখা :| লেখাটার আশ্চর্যরকম মিল দেখলাম একটা গানের মিউজিক ভিডিওর সাথে এবং লিরিকের সাথে!! লিংক রাখলাম, সম্ভবত শুনেছেন; আমার ইদানিংকার ভয়ংকর রকমের প্রিয় একটা গ্রান্জ।


https://www.youtube.com/watch?v=ltZtMQCXGXI

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৭

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: প্রথম শুনলাম ভালো লাগলো গানটি । ধন্যবাদ।

৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মোটামুটি। তবে এখন আর কেউ ব্রেক আপে আত্মহত্যা করে না...

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১৪

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুক ভালোবাসা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.