নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন বিশিষ্ট সাইকো

আবু রায়হান ইফাত

একজন বিশিষ্ট সাইকো, নির্জনতা প্রিয় অদ্ভুত প্রকৃতির একজন মানুষ, মাঝে মাঝে আত্মমস্তিষ্কে এমন কিছু কল্পনা করি যা হয়তো কারো নিকট ভিত্তিহীন, কিন্তু আমার নিকট মহামূল্যবান ।

আবু রায়হান ইফাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প - ব্যাচেলর

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৩৯



৩.

মেয়েটা একপ্রকার অতৃপ্তি নিয়ে চলে যেতে লাগলো, হয়তো ইচ্ছে ছিলো আরও কিছু সময় আমার সঙ্গ পাবার। আমার নিকটও খুব অনাকাঙ্খিত একটি মূহুর্ত ছিলো, অপরিচিত এই শহরে অপরিচিতা একটি মায়াকন্যা আমার মতো একজন ভবঘূরে টাইপ ছেলেকে কাছে পেতে চাইবে, একসাথে বোটে করে পানির মধ্যে বেড়ানো, কাঁধেতে মাথা রাখা। ভীষণ অদ্ভুত লাগে নিজের নিকট, আমি কি কোনো ঘোরের মাঝে আছি কিনা, নাকি মেয়েটি কোনো ভুল করছে..?
তবে মেয়েটির সঙ্গ পেয়ে নিজের নির্জীব প্রাণটা কেমন যেন বেঁচে উঠলো, ইচ্ছে ছিলো আরও কিছু সময় মেয়েটির সাথে কাটাই। কিন্তু তা আর হলো বা কই..? জীবন চলার তাগিদে চলে যেতে হবে টিউশনিতে, মাস শেষে টিউশনির টাকায় বাসা ভাড়া, আহারের বন্দোবস্ত এবং পুরোমাসের খরচ চালাতে হবে। গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, মা অসুস্থ, বাবা ছোট্ট একটি চাকুরী করে, বাবার বেতনের টাকা দিয়েই মায়ের চিকিৎসা এবং সংসার চলে। বাড়ি থেকে টাকা এনে যে নিজের খরচ বহন করবো সে সামর্থ্য ও নেই, নিজের খরচটা নিজেই বহন করতে হয়।
পড়াশুনার খাতিরে শহরে পাড়ি দেওয়া, না হয় হয়তো শহরে আসা'ই হতো না। প্রতিটি মানুষের জীবনেই স্বপ্ন থাকে, জীবনে বড় কিছু হওয়ার । আর স্বপ্নের টানে মানুষ পাড়ি দেয় দূর-দূরান্তে। আমার স্বপ্নটা একটু ভিন্ন টাইপের, ভবঘুরে টাইপের হওয়া, ঘুরে বেড়ানো আর প্রকৃতির স্বাদ গ্রহন করা। জোৎস্না রাতগুলো আমার বেশ পছন্দের, জোৎস্না রাতে সৃষ্টি কর্তার অপার মহিমা দেখা যায়। কত নিখুঁত ভাবে সাজানো সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিগুলো, মানুষ, পশু-পাখি, গাছ-গাছালি এবং অপরূপ এই প্রকৃতি। জোৎস্না রাতগুলো উপভোগ করার মজার স্থান সমুদ্রতীর বা নদীর ডাঙা । নদীর পাশে বসবাস ছিলো বলে প্রকৃতির অপরূপ রূপটি উপভোগ করার ভাগ্য হয়েছে। ডাকাতিয়ার তীরে বাড়ি, ছোট্ট একটি নদী, প্রশস্ততা সরু । গ্রামের পাশ দিয়েই পূর্বদিক হতে অতিক্রমিত হয়ে পশ্চিমে গিয়ে মেঘনাতে মিলিত হয়েছে। নদীর প্রশস্ততা এবং গভীরতা অনেক কম হলেও কিন্তু ছোট্ট এই নদীটির তাৎপর্য অনেক গভীরতা সম্পূর্ণ ।
নদীর পাড়ে ছোট্ট একটি বটগাছ, বটের ছায়ায় ভবঘুরে মানুষগুলোর নৈসঙ্গতার সময় কাটে, বাল্যকাল থেকে বেড়ে উঠা নদীর ধারে, নদীটির সাথে বিজড়িত হাজারো স্মৃতি। ছোট বেলা থেকেই একটু নির্জনতা পছন্দ করতাম, কেনো পছন্দ করতাম তা জানা হয়নি আজও । নির্জনতায় থাকতে থাকতে এটুকু শিখেছি যে, সৃষ্টি রহস্যগুলো জানতে হলে নির্জনতায় সময় দিতে হবে। নীরব চতুর্দিক, কখনো অন্ধকার বা কখনো জোৎস্না মাখা আকাশ, দুটো অবস্থাতেই প্রকৃতির রহস্য গুলো ভেসে উঠে। পাখির কিচির মিচির, গাছের পাতার শব্দ নদীর শীতল জল, আকাশে ভাসমান নক্ষত্র , মেঘমালার খেলা, চাঁদের জোৎস্না এবং ঘুমন্ত পৃথীবির রূপ এসব উপভোগ করতে হলে নিশাচর ভবঘুরে টাইপের হতে হবে। রাতের সময়গুলো কাটতো ডাকাতিয়ার তীরে প্রকৃতির রূপের প্রেমে পড়ে। প্রকৃতি রহস্যগুলো আয়ত্তে নিতে ভবঘুরে টাইপের হওয়ার স্বপ্ন দেখি । কিন্তু বাবা মায়ের স্বপ্নতো ভিন্ন, পড়াশুনা করে মানুষ হতে হবে , কি আর করা বাধ্য সন্তানের ন্যায় মায়ের অসুস্থ চেহারার দিকে তাকিয়ে মত দিয়েছি পড়াশুনায়। আর তাতেই শহরে আসা, শহরের ইট পাথরের আড়ালে হারিয়েছি প্রকৃতির সৌন্দর্য্যতা। বাসার ছাদে যেতে পারলে হয়তো ব্যস্ত শহরের মাঝে একটু শান্তি ফিরে পেতাম, কিন্তু ছাদে যাওয়াতে ও নিষেধাজ্ঞা, ব্যাচেলর জীবনের এমন যন্ত্রনায় ভুগে দম বেরিয়ে আসতে চায়।
সন্ধ্যার পর পার্কগুলোতেও থাকা যায়না, সূর্য অস্তমিত হওয়ার পরেই দেখা পার্কগুলোর মূল দৃশ্য। মাদকতা এবং যৌনতার আসর বসে পার্কগুলোতে, নষ্ট করে ফেলে প্রকৃতির সৌন্দর্য্যতা। প্রশাসনের সম্মুখে ঘটে এসব অরাজকতা অথচ প্রশাসন নিরব। রাতের অন্ধকারে পার্কের মাঝে সাধারণ মানুষদের পড়তে হয় অনেক বিপাকে, ছিনতাইকারী এবং যৌনকর্মীদের কারনে আজকাল সন্ধ্যার পর পার্কে অবস্থান করা যায় না।
এইতো গেলো কিছুদিন আগে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিকোটিনে মুগ্ধ হয়েছিলাম একটি বেঞ্চিতে বসে, বৃষ্টি হয়েছিলো সবকিছুই নির্জীব, বৃষ্টি হওয়াতে সাধারণ মানুষগুলো চলে গেছে হয়তো, বৃষ্টি পছন্দ বিধায় ভিজেছিলাম মনের অানন্দে। বৃষ্টি শেষে বেঞ্চিতে সিগারেটের ধোঁয়ায় নিজের অস্তিত্বকে খুঁজে পেতে চেয়েছিলাম, গাছের পাতাগুলো থেকে পানি ঝরছে , হঠাৎ শাড়ী পরিহিতা একটি মেয়ে পাশে এসে বসলো, চুল বেণী করা, বেণীর মাঝে কাগজের ফুল গাঁথা এবং গা থেকে পারফিউম এর ঝাঝালো গন্ধ, পারফিউম ঝাঝালো গন্ধ আমার নিকট অসহ্যকর, দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়। বইয়ে পড়েছিলাম রাতের পতিতারা খদ্দরের মন বিমোহিত করতে পারফিউম ব্যাবহার করে এবং লোভাতুর সাজে সজ্জিত থাকে, কেননা পুরুষের দূর্বলতা নারীর দেহের বেশ কিছু অংশে, আর পতিতারা সেই দূর্বলতার স্থানগুলো বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখিয়ে খদ্দের কে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করে। জীবন চলার তাগিদে মানুষগুলো বেছে নেয় পতিতাবৃত্তি, আবার কেউ বা পরিস্থিতির শিকার হয়ে। পতিতাদের একজন মাসি থাকে, যিনি খদ্দের জোগিয়ে দেয়, খদ্দরের নিকট থেকে পাওয়া দেহবিক্রির টাকা থেকে একটা অংশ দিয়ে দিতে হয় মাসিকে। আবার কিছু পতিতা আছে যারা নিজের খদ্দের নিজেই জোগাড় করে নেয়। সংগ্রাম মুখর তাদের জীবনে স্পর্শ পেতে হয় অগনিত পুরুষের। অথচ পুরুষগুলো যেনো সাধু, পাঁচ-দশমিনিটের সুখে ভুলে যায় নিজের পরিবারের কথা, প্রতারণা করে যায় অবিরত স্ত্রীর সাথে, স্ত্রীর হয়তো জানাও থাকে না তার স্বামীর পতিতাভোগের গল্পটা।
পাশে বসে থাকা মেয়েটিও হয়তো পতিতা হবে, খদ্দরের খোঁজে বেরিয়েছে , আমাকে একা দেখতে পেয়ে আমার নিকট এসে বসেছে এবং অঙ্গভঙ্গিতে চেষ্টা করছে তার দিকে আমার মনযোগ কাড়বার। আমি উঠে আসতে চাইলাম, মেয়েটি বললো :- এই যে শুনুন.....
আমি প্রছন্ড বিরক্তির সুরে বললাম:- কি ..?
মেয়েটি বললো :- আপনি চাইলে আমাকে ভোগ করতে পারবেন মাত্র দুই'শ টাকায়।
আমি অবাকতর দৃষ্টি বললাম :- মাত্র দুই'শ টাকা..?
মেয়েটি বললো :- হ্যাঁ, তবে পুরো রাত থাকতে চাইলে পাঁচ'শ টাকা।

আমি অবাক! একজন নারীর সম্ভ্রমের মূল্য দুই'শ টাকায়..? এ নারী আমাদের মা, আমাদের বোন, আমাদের স্ত্রী এবং আমাদের মেয়ে। আর সেই নারী জাতির দেহ মূল্য মাত্র দুই'শ টাকা ..?
ছি! ঘৃণা আমাদের এই সমাজের প্রতি, যারা সম্মান দিতে শিখেনি মায়ের জাতিকে।
মেয়েটি কে বললাম :- মাত্র দু'শ টাকা আপনার দেহমূল্য..? নিজেকে কেনো এত সস্তা বানিয়েছেন ..?
মেয়েটি বললো :- জ্ঞান দিতে আইসেন না, যদি মন চায় সাথে চলুন না হয় আমি যাই, আমার খদ্দের জোগাইতে হইবো।
মেয়েটিকে বললাম:- আমি এসবের প্রতি ইন্টারেস্ট নই, আপনি আপনার পথ মাপুন।
মেয়েটি চলে গেলো, এরপর মাত্র আধাঘণ্টা সময়ের মাঝে আরও তিনটি মেয়ে এসেছিলো তার মধ্যে একটি ত্রয়োদশী কিংবা চতুর্দশী হবে, আচ্ছা মেয়েটির কি বয়স হয়েছে..? এখনো তো শারিরিক পরিবর্তন'ই হয়তো ঘটেনি তবু এই লাইনে ..?
দেশের সর্বত্র'ই আজ চলছে দেহব্যবসা নামক ঘৃণ্যতা, কিন্তু এর জন্য মূলত দায়ী কে..? আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা এর জন্য দায়ী। আজ যদি আমাদের সরকার এসব ভাসমান মানুষগুলোর জন্য কর্মসংস্থান করে দিতো তাহলে হয়তো এমন হতো না। আর সস্তা মূল্যে ওদের দেহ বিক্রি করতে হতো না। এবং পার্কগুলোতেও সাধারণ মানুষদের অনাকাঙ্খিত আবাদারের সম্মুখীন হতে হতো না।

সেদিন এর পর থেকে আর সন্ধ্যার পর পার্কের দিকে যাওয়া হয় না, বিশেষ করে এমন অবস্থার সম্মুখীন হওয়ার ভয়ে। রাতের প্রকৃতিটাও ঠিক মতো উপভোগ করা হয় না। রাত দশটার পর রাস্তায় থাকলে পুলিশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এইতো কয়েকদিন আগে বিকেলে হাতিরঝিল গিয়েছিলাম ঘুরতে, সৌন্দর্যপূর্ণ একটি স্থান কিন্তু পানির নোংরা গন্ধ সে জায়গার সৌন্দর্যটা নষ্ট করে দিলো। বিকেল থেকে শুরু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ছিলাম। ব্যাচেলর লাইফ চলেফেরায় তেমন বাধা নেই বিশেষ করে ঘুরার এবং বাসার বাইরে থাকার। ভালো না লাগার সময় কাটাতে সেদিন হাতিরঝিল গিয়েছিলাম, ফেরার পথে কাওরান বাজারে এলাকার এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, ভাই ব্যাবসা করে সেখানে এবং পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকাতেই থাকে । ভাইয়ের সাথে দেখা শেষ করে বেরুতে বেরুতে প্রায় নয়টা নাগাদ বেজে গেলো। সোনারগাঁ হোটেলএর সামনে আসার পর দুজন পুলিশ আমাকে সার্চ করলো। ওনাদের সার্চ করাটাও স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু অন্যায় আবদার..? এটা কি মেনে নেওয়ার মতো.? রক্ষক যদি ভক্ষক হয়ে যায় তাহলে দেশের কি অবস্থা হবে..?
ওনাদের অন্যায় আবদার না মেটাতে পেরে আমাকে পুরে দিলো গাড়ির ভিতরে, হয়তো মিথ্যে মামলা করবে। কিন্তু এটা কি আধো ঠিক..? বিনা অপরাধে কিছু অন্যায় আবদার মেটাতে না পারায় একজন সাধারণ মানুষের জীবন নষ্ট করে দেওয়া..?
কি আর করা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে বলে কথা, দিন আনতে যার পান্তা পুরায় সে কি করে ওনাদের আবদার মেটাবে, কি আর করা কপালে যা লিখা আছে তা'ই হবে।
আচ্ছা ওনাদের কি কোনো সন্তান নেই ..? ওনারা কি পারবে ওনাদের সন্তানের জীবন নষ্ট করে দিতে..? নিশ্চয়ই না, তবে কেনো অন্যের সন্তানদের অপরাধ ব্যাতীত হয়রানির শিকার করে..? অপরাধী হলে ভিন্ন কথা, সবাই তো আর অপরাধী নয়। অপরাধীরা হয়তো ওনাদের অন্যায় আবদার মেটিয়ে পার পেয়ে যায়, এবং অপরাধ করে বেড়ায় নির্বিঘ্নে । আমি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সবাই কে এমন বলছিনা, কিছু সংখ্যকদের বলছি, যারা এসব করে বেড়ায়, এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে দেশমাতার সাথে। পুলিশের গাড়ী এসে রমনা থানায় থামলো এবং সেখান ওই দুইজন দেশমাতার সাথে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী পুলিশ অফিসার আমাকে থানার দারোগাবাবুর নিকট নিয়ে গেলো । দারোগাবাবু আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত কি আছে না আছে সব পর্যবেক্ষণ করে নিলো । এবং দারোগা বাবু আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো :- কি করো তুমি..?
দারোগা বাবুর কথার জবাবে আমি বললাম :- স্টুন্ডেট নামধারী ভবঘুরে
তিনি বললেন:- ভবঘুরে ..?
আমি বললাম :- ব্যাচেলর লাইফ ভবঘুরেই বলা যায়।
তিনি বললেন :- নাম কি তোমার...?
তাৎক্ষণিক আমার মাথায় একটা দুষ্টবুদ্ধি খেললো, দেখি বুদ্ধিটা কাজে লাগাতে পারি কিনা। ওনাকে উদ্দেশ্য করে আমি বললাম :- স্যার, আমার নাম হিমু
উনি আমাকে ধমক দিয়ে বললো:- ফাইজলামি করো..? এটা হুমায়ূন আহমদের লিখা বই না যে হিমু বলবে আর ছাড়া পেয়ে যাবে। নিজের সত্যিকারের নাম বলো, দেখি তোমার আইডি কার্ড দেখাও ..?
আমি উনাকে আইডি কার্ড বের করে দেখালাম এবং বললাম :- দেখুন স্যার হিমেল থেকে হিমু, আর স্যার আপনি কি হুমায়ূন আহমেদ কে চেনেন..? আমি কিন্তু ওনার বড় ফ্যান, ওনার সৃষ্ট হিমু চরিত্রটির মাঝে নিজেকে জড়াতে চেষ্টা করি।
উনি বললেন :- হুমায়ূন অাহমেদ স্যারকে চেনে না এমন কেউ হয়তো বাংলাদেশে নাই।
হ্যাঁ উনি সত্যি'ই বলেছেন, স্যার কে চেনেনা এমন কেউ হয়তো বাংলাদেশে নাই । স্যার আজ আমাদের নিকট নেই, কিন্তু স্যারের সৃষ্টি গুলো চিরজনম থাকবে পৃথিবীতে বেঁচে।
দারোগা বাবুকে বললাম :- স্যার আপনার নিকট হুমায়ূন আহমেদ স্যার এর কোন চরিত্র ভালো লাগে. ?
উনি বললেন:- সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র হিমু, মিসির আলী ও ভালোলাগে।
আমি বললাম :- স্যার, আমিও তো হিমু , আমাকেও ছেড়ে দিন না প্লিইইইইজ।
উনি বললেন :- চুপ থাক..? কথা না বলে কি থাকতে পারিস না..?
আমি বললাম :- স্যার, কথা না বলতে পারলে দম আটকে যাবে।
উনি বিরক্তির সুরে বললেন:- আরে বাবা, চুপ কর তো, যা বেরিয়ে যা এখান থেকে
আমি উনাকে বললাম :- স্যার, যদি কিছু মনে না করেন একটা কথা বলবো..?
উনি নম্র গলায় বললেন :- বলো, কি বলতে চাও..?
আমি বললাম :- স্যার, আপনার সাথে এমন উদ্ভট কথাবার্তা বলার পরও কিছু বলেননি কেনো..?
উনি বললেন :- শুনো তাহলে, তোমার সমবয়সী আমার একটি ছেলে ছিলো, হুমায়ূন আহমেদ স্যারের ভক্ত, স্যারের বই গুলো আমি তার অনুরোধ রক্ষার্থে পড়া শুরু করি। হিমু চরিত্রের মাঝে সে নিজেকে খুঁজতো, হলুদ পাঞ্জাবি পরে ঘুরতো, কিন্তু সে এখন হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সাথেই ওপারে বাস করছে। রোড এক্সিডেন্টে চলে যায় আমাদের ছেড়ে। তুমি যখন তোমার নাম হিমু বলেছিলে তখন'ই আমি ভেবেছিলাম তুমি স্যারের একজন বড়মাপের ফ্যান, যার কারনেই তুমি হিমু নাম বলেছো। তারপর কথাবলে যখন জানলাম তুমি সত্যি'ই হুমায়ূন স্যারের একজন ফ্যান তখন তোমার প্রতি একপ্রকার ভালোবাসা জম্ম নিলো, আমার বিশ্বাস হুমায়ূন আহমেদ এর কোনো ফ্যান দেশ বিরোধী কিছু করবে না। তাই তোমাকে চলে যেতে বলেছি।
আমি ওনাকে বললাম:- স্যার আপনার ন্যায় মন মানুষিকতা সম্পূর্ণ পুলিশ যদি আমাদের দেশের সর্বত্র জুড়িয়ে থাকতো তাহলে দেশে এমন অরাজকতা হতো না ।
উনি আমাকে ওনার কার্ড দিয়ে বললো কখনো প্রয়োজন মনে ফোন দিও, তুমি আমার ছেলের মতো। এবং পকেট এক'শ টাকার নোট বের করে দিয়ে বললো যাও এখন বাসায় ফিরে যাও, রাত বেশি করে বাহিরে থাকবে না।
সেদিন এর পর থেকে আর বেশি রাত বাহিরে থাকা হয়না, কেননা সব পুলিশ অফিসার তো আর একরকম না ।

ভ্যাগিস, আমার চারদেয়ালের মাঝে একটি জানালা ছিলো, না হয় প্রকৃতি দেখতেই পারতাম না, এখন রাত জেগে প্রকৃতি দেখা হলো দুধের স্বাধ ঘোলে মেটানো।
জানা নেই আজও কবে সমাপ্তি ঘটবে এমন অসহ্যকর ব্যাচেলর জীবনের।
(চলবে....)


গতপর্ব :
http://www.somewhereinblog.net/blog/ifatrayhan/30241322
http://www.somewhereinblog.net/blog/ifatrayhan/30241220

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: আগের পর্ব গুলো মনে হয় পড়ি নাই।
লিংক গুলো ঠিক করে দেন।

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:৫৪

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: দাদা লিংক গুলো কপি পেষ্ট করে দিয়েছি, অন্যভাবে দেওয়ার পদ্ধতি জানা নেই

২| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৭

কাইকর বলেছেন: বেশ ভাল লাগলো। চতুর্থ পর্ব চাই। অপেক্ষায়

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:০৫

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: ইনশাআল্লাহ আগামীকালই পড়তে পারবেন

৩| ২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:৫১

রসায়ন বলেছেন: আগের গুলো না পড়া থাকায় বুঝতে অসুবিধা হলো তবে পড়ে নেবো । লেখা ভালো লেগেছে ।

২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:১০

আবু রায়হান ইফাত বলেছেন: আমার ব্লগে আমন্ত্রন রইলো

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.