নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইকবাল সুমন

"ঘোড়ার ডিমের খোঁজে নয়, ডিমওয়ালা-ঘোড়ার খোঁজে...

ইকবাল হোসাইন সুমন

আমি ইকবাল সুমন। মাঝে মাঝে টুকটাক লিখা লিখি করি। এছাড়া কোন কিছু করি না।

ইকবাল হোসাইন সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক মিনিটের গল্প

০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:১৪



‪‎সেই হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা

লিখা এবং প্রকাশ: ২৩-০৫-২০১৫
!
!
"কাল রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ রাস্তায় "হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার" সাথে দেখা।
দৌড়াই গিয়ে ধরলাম। বললাম, 'ভাইসাব, যান কই?'

দেখলাম বাঁশিওয়ালা সাব বেশ বিব্রত হচ্ছে।
আমি ছাড়ার পাত্র নই।
বাঁশিওয়ালা সাব আমাকে বলল, আমাকে আপনি চিনলেন কেমনে?!!!
আমি বললাম, আরে আপনারে চিনমু না। সেই ছোট বেলা থেকে আপনারে চিনি। কিন্তু ভাই, প্রথম কামটা আপনি ঠিক করছেন, এই নিয়ে আমার অভিযোগ নাই। কিন্তু ২য় কামটা কি আপনি ঠিক করছেন?!!!

বাঁশিওয়ালা সাব বলল, আমি আবার কি করলাম ভাই!!!?
আপনি কি করছেন মানে!!! এতগুলো ছোট ছোট মাসুম বাচ্চা, সব কটারে আপনি নদীর জলে ফেলছেন।
বাঁশিওয়ালা সাব বলল, “ওটা আমার ঐতিহাসিক ভুল ছিল”।
-ঐতিহাসিক ভুল বললেই আপনি পার পাইয়া যাবেন মিয়া, দুনিয়াটা কি মগের মুল্লুক হইয়া গেল?। এর একটা বিহিত আপনাকে করতেই হবে। এই বলে আমি বাঁশিওয়ালার হাত ধরে টানা শুরু করলাম। বাঁশিওয়ালা সাহেব তো আসবেই না। আর কি করব, তারে জোর কইরা টাইনা নিয়ে এসে পার্কের একটা চেয়ারে বসালাম। বাঁশিওয়ালা সাব দেখলাম এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। চেহারার মধ্য একটা ভয় আছে।
চিন্তা করছিলাম দৌড় দেবে কিনা। এ জন্য আমিও প্রস্তুত ছিলাম। আজ যাবি কই। তোর আজ ছাড় নাই।

হঠাৎ দেখি বাঁশিওয়ালা তার বাঁশি বের করতে যাচ্ছে। আমি তো সাবধান হয়ে গেলাম, হুংকার দিয়ে বললাম, সাবধান, বাঁশি বাহির করবেন না। আপনি ভাবছেন কি, আমাকে বশ করে, বুড়িগঙ্গায় নিয়া ফেলবেন।
বাঁশিওয়ালা সাব বুঝলেন। তার ষড়যন্ত্র পাশ হয়ে গেছে। তিনি আর তার বাঁশি বাহির করলেন না।

বাঁশিওয়ালারে জিজ্ঞাসা করলাম, চা খাবেন?
উনি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লেন। দিলাম ২ কাপ চায়ের অর্ডার।
চা খেতে খেতে বাঁশিওয়ালা সাবরে জিজ্ঞাসা করলাম, তো আপনি হঠাৎ ঢাকা শহরে আইসা পড়লেন কেন?

এ কথা শুনে বাঁশিওয়ালা হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। বলল, আমি কি জানতাম এর নাম ঢাকা শহর। আমারে গড বলল, "তুমি ঢাকা শহর যাও। ওখানে মানুষের অভাব নাই। তুমি যত পার মানুষ বুড়িগঙ্গায় ফেলতে পারবা। শহরের মানুষ মোটেই এতে মাইন্ড করব না। বরং খুশি হইব। তবে তুমি খারাপ মানুষগুলো দেখেই বাঁশিতে সুর তুলবা"
কিন্তু এ শহরে আইসাই মনে হয় আমি ফাইসা গেছি। এখানে খারাপ মানুষ, ভাল মানুষ চিনার কোন সিস্টেম নাই। কারে দেইখা আমি বাঁশিতে ফু দিমু?... সব মানুষ দেখতে দেখি এক চেহারা, যেন সব ভাল মানুষ।

ঐদিন ওনটেষ্ট করার জন্য আগারগাও একটা বস্তিতে গেছিলাম। যেই না বাঁশিতে ফু দিলাম, সুরের টানে তো কেউ আসলোই না। বরং কিছু দুষ্ট ছেলের দল, ইট মাইরা আমার মাথার কয়েক জায়গা দিয়া ফাটায়ে দিছে।

আমি দেখলাম, সত্যি সত্যি মাথার অনেক জায়গা দিয়া ফুলা। মনে মনে বললাম, বাহ!! ছেলে পুলে তো খাল ক্রিকেট খেলা শিখছে। টার্গেট মোটেই মিস করে নাই।

- ঐ দিন ফার্মগেট এলাকায় গেছিলাম। বড় ওভারব্রিজটার উপর উইঠা, বাঁশিতে ফু দিছিলাম। বিশ মিনিট বাঁশি বাজালাম। কিন্তু কেউ ফিরেও তাকাইল না। এর থেকে অপমান হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার জন্য আর কি হতে পারে। এই বলে বাঁশিওয়ালা সাব মন খারাপ করল।

এতে আমারও মন খারাপ হয়ে গেল। বাঁশিওয়ালার প্রতি আমার মায়া জন্মাতে লাগল। আহারে বেচারা, কত আশা নিয়েই না এ ঢাকা শহরে আসছিল। এখন তার সব আশার মধ্যে জল ডুকে যাচ্ছে।

-ঐ দিন দেখলাম। এক পকেটমার এক মানুষের পকেট থেকে সব টাকা নিয়ে যাচ্ছে। আমি দেখে অনেক খুশি হয়ে গেলাম। মনে মনে বললাম, যাক, হাতে নাতে একটা খারাপ মানুষ পাওয়া গেল। এখনিই বাঁশির সুর তুলতে হবে। কিন্তু পরিস্থিতি আরও ভাল জানার জন্য সুট টাই পড়া এক ভদ্রলোকের সাহায্য চাইলাম। ভদ্রলোক আমাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত বলল। আমরা পার্কের ভিতর বসে অনেকক্ষণ আলাপ ও করেছি। কিন্তু এর পরে আমার আর কিছু মনে নাই। দুইদিন পরে দেখলাম আমি হাসপাতালের ফ্লোরে শুয়ে আছি। ডাক্তার জানাল। কে যেন আমাকে কি খাইয়ে দিয়ে আমার কাপড় চোপড়ের বড় ব্যাগটা নিয়া গেছে। আমি নিশ্চিত হলাম, কোট পড়া ভদ্রলোকটাই এ আকামটা করছে।

-একবার রাস্তার পাশে ঘন্টা খানিক দাড়িয়ে আছি। দেখলাম আমার পাশাপাশি শতশত মানুষও রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে। এক লোককে জিজ্ঞাসা করলাম, ভাই, এখানে কি হয়েছে?
ঐ লোক আমার দিকে কটমট করে তাকালো। বলল, দেখেন না মন্ত্রী যায়।
আমি সাথে সাথে খুব আনন্দিত হয়ে গেলাম। মনে মনে বললাম, অবশেষে সরাসরি খারাপ মানুষ পাওয়া গেল, শুনছি এ দেশের মন্ত্রী এমপিরা খুব খারাপ মানুষ হয়। আমি বাঁশিতে দিলাম ফু। কিন্তু এতে আমার বাশির আওয়াজ তো শুনলোই না এমপি মন্ত্রীরা। বরং আশে পাশের লোকজন খুব বিরক্ত হয়ে আমাকে ওখান থেকে বর করে দিল। এক লোক আমাকে বলল, এমনই বাঁচিনা এমপি মন্ত্রীদের জ্বালায়, তার উপরে আপনি কানের ভিতর ভুভুজেলা বাঝাচ্ছেন!!!!!

একবার দেখলাম, এক জোড়া যুবক যুবতি আটসাট হয়ে পার্কে বসে আছে। দেখতে খুব খারাপ লাগছিল। আমি ভাবলাম এইতো পাওয়া গেল ২ জন অপরাধী। এক্ষনি বাঁশির সুর তুলতে হবে, তারপর ২ জনকে সরাসরি বুড়িগঙ্গায় ফেলতে হবে। তুললাম সুর। ৫ মিনিট বাঁশি বাজালাম। দেখলাম যুবক যুবতি আমার বাঁশির তালে আবেগে আরো ঘনিষ্ট হয়ে আসতেছে। তাড়াতাড়ি বাঁশি থামালাম। মাথা নিচু করে চলে আসলাম।...

এবার বাশি বাঁশিওয়ালা আরো বেশী হাউমাউ করে কেঁদে উঠল। আমার হাত চেপে ধরে আমাকে বলল, "আপনাকে আমার খারাপ লোক মনে হয় না। আপনি আমাকে একটা বুদ্ধি দেন, আমি এখন কি করব। আমাকে আপনি বাঁচান"

আমারও বাঁশিওয়ালার জন্য বেশ কষ্ট হতে থাকল। তার গড হয়তো তাকে তার পাপের প্রায়শ্চিত্য করার জন্য ঢাকা শহরে পাঠিয়েছে। কিন্তু তার গড এ যায়গায় মনে হয় একটা ভুল করে ফেলেছে। তাকে উপযুক্ত প্রশিক্ষন না দিয়ে ঢাকা শহরে পাঠিয়ে দিয়েছে। এখন বেচারা এখানে এসে পড়েছে বেহাল মুচিবতে। এখন আমার নিজেরও একটা দায়িত্ব এসে পড়েছে বাঁশিওয়ালাকে এ নরক থেকে পাঠিয়ে দেয়া।

আমি বাঁশিওয়ালাকে বুঝালাম, সে যেন তার গডের কাছে চায়, তাকে তাড়াতাড়ি এখান থেকে উঠিয়ে নিতে। আবার যদি কখনো ঢাকায় পাঠায়, যেন উপযুক্ত প্রশিক্ষিত দিয়ে যেন ঢাকাতে পাঠায়, এখানে এসেই খারাপ মানুষগুলোকে চিনতে পরে।
আমি সেই থেকে বাঁশিওয়ালার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম, বাঁশিওয়ালা আবার কখন ঢাকা শহর আসবে।

হঠাৎ ঘুম ভেংগে গেল। ঘড়িতে তখন রাত ৩টা। কেন যে এ স্বপ্নটা দেখলাম। বুঝলাম না।"

শেষ...

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩

আমি মিন্টু বলেছেন: :) X(

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৪

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: :)

২| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫

আমি মিন্টু বলেছেন: :) X(

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৫

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: :)

৩| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৪৩

ভরকেন্দ্র বলেছেন: ++++++++++

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

প্রান্তিক জন বলেছেন: পরিস্থিতি বাস্তব।

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: হ্যাঁ ভাই ধন্যবাদ

৫| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ২:১০

হাসান মাহবুব বলেছেন: বেশ রসালো লেখা।

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :)

৬| ০২ রা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৪

সুমন কর বলেছেন: মোটামুটি।

৩০ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

ইকবাল হোসাইন সুমন বলেছেন: ইনশাআল্লাহ্‌ আরও ভাল হবে ভাই .। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.