নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পোড়া কাঠ আর শুকনো পাতার গন্ধ

ফা হিম

আমি হাত পেতে রই এ বৃষ্টি ছোব বলে/রাশি রাশি বৃষ্টির ফোটা ধুয়ে যায় আহত আমায়/তবু কখনো ধরা দেয় না।/www.facebook.com/imfaahim

ফা হিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিষ্টি বাতাস (সায়েন্স ফিকশন)

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৩২





মেয়েটি বলল, - ক্ষিদে পেয়েছে।

ছেলেটি বলে, - বাতাস খাও। জোরে জোরে শ্বাস নাও। তারপর এক গ্লাস পানি খেও।

- না, আজ খুব অন্যকিছু খেতে ইচ্ছে করছে।

- যেমন?

- যেমন পটল ভাজি, কিংবা গরুর মাংস ভুনা…

- মাথা খারাপ? এগুলোর দাম আকাশচুম্বি। তাও আবার সিন্থেটিক! আসলটা তো ধরা-ছোয়ার বাইরে। তারচেয়ে শুয়ে শুয়ে আকাশের তারা গুনো।

- শুয়েই তো আছি।

- হ্যা তাই কর। আর ক্ষিদে পেলে শুধু জোরে জোরে শ্বাস নিবে!

মেয়েটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

- মাঝে মাঝে ভাবি আগে মানুষের কত মজা ছিল। তারা কত বিচিত্র খাবার খেতো।

- এবং শত শত মানুষ না খেয়ে মারা যেত।

- সেটা তো সুষম বন্টন ছিল না বলে।

- এখন তো হচ্ছে।

- হ্যা তা হচ্ছে বৈ কি! শুধু জোরে জোরে শ্বাস নাও…জহ্বার স্বাদ নেওয়া বলে কিছু নেই?

- শুধু স্বাদটাই দেখলে? সেকালে চিবিয়ে চিবিয়ে খাবার খেতে হত। পারবে সারাক্ষণ খাবার চিবিয়ে যেতে? এখন দেখ, আমাদের জীবন ধারণের জন্য দরকারী যত কার্বোহাইড্রেট, গ্লুকোজ দরকার সব বাতাসে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে বিশেষ পদ্ধতিতে।ভবিষ্যতে প্রোটিনও এভাবে মিশিয়ে দেয়া হবে। তখন আর প্রোটিন ক্যাপস্যুল খেতে হবে না, নিঃশ্বাসের সাথেই…

- তাতে হলটা কি?

- একটা সময় ছিল পৃথিবীর ধনী কলোনিগুলোতে মানুষ পেট পুরে খেত আর বেশিরভাগই ফেলে দিত। অন্যদিকে গরীব কলোনীর মানুষেরা না খেয়ে মরত। এখন বাতাসের মাধ্যমে যদি খাবার ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যাতে সবাই সমানভাবে পায়। বাতাসের মাধ্যমে গ্লুকোজ ডুকে যায় ফুসফুসের রক্তনালীতে। পক্রিয়াটা ধীর, তবে চব্বিশ ঘন্টার জন্য যথেষ্ট।

- আমার কাছে এটা প্রকৃতির নিয়মের খেলাফ মনে হয়।

- কিন্তু দেখ, কত ঝক্কি-ঝামেলা কমে যাচ্ছে। আগে মানুষ খাওয়ার আগে ওগুলো তাপ দিয়ে প্রোসেস করে নিত, সাথে পানি-মসলা মিশিয়ে। সময়ও লাগত প্রায় ঘন্টা খানেক।ভুল হলেই স্বাদ চলে যেত। প্রোসেস করার আগে সেগুলো কাঁটা হত। কাজটা ছিল যথেষ্ট বিপজ্জনক। অনেকেই হাত কেঁটে ফেলত।

- তবু তো করত?

- কিন্তু আগের মত সময়টা নষ্ট হচ্ছে না। আমরা আরো কাজ করার সময় পাচ্ছি।

- এত কাজে হবেটা কি শুনি? এখনই বা কি করছি আমরা?

- আমাদের এখন অবসর। তাই আকাশের তারা দেখছি।

- হ্যা আকাশটা বেশ সুন্দর লাগছে।

- জানো, আগে আকাশ আরো সুন্দর ছিল। এখন বাতাসে কার্বহাইড্রেটের পার্টিক্যালের কারণে আকাশ কিছুটা ঘোলাটে দেখায়। এটা একটা সমস্যা, তবে কিছু ক্ষেত্রে তো ছাড় দিতেই হচ্ছে।

- আচ্ছা, একটা কথা…

- কি?

- বাতাসে এই ফুড পার্টিক্যালগুলো কি একটা বিশাল যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাসে ছড়ানো হয় না?

- হ্যা, প্রতিটি কলোনীতেই এই যন্ত্র আছে। সেখান থেকে জনসংখ্যার অনুপাতে পরিমাণমত দেয়া হয়।

- যদি ওটা নষ্ট হয়ে যায়?

- ওসব দেখা-শোনার জন্য লোক আছে।

- কিন্তু ঠিক করতেও তো সময় লাগবে।ততক্ষণ আমরা খাব কিভাবে?

- বাতাসে তো তখনও কিছু পার্টিক্যাল থাকবেই। আর কিছু পুষ্টিদ্রব্য এমনিতেই শরীরে জমা থাকে।

মেয়েটি কোন জবাব দেয় না দেখে ছেলেটি আবার জিজ্ঞেস করে,

- ওত ভাবছ কি?

- আকাশ দেখছি। আজকের আকশটা না সত্যিই অনেক সুন্দর!

***



মেয়েটি আর ছেলেটি ছাদের উপর শুয়ে আকাশ দেখে। কিন্তু ওরা জানে না বাতাসে খাবার ছড়ানোর যন্ত্রটা আর কাজ করছে না ওদের কলোনীতে। বন্ধ করে রাখা হয়েছে ওটা। আর যে প্রোটিন ক্যাপস্যুল সাপ্লাই দেয়া হচ্ছে, সেটাও নকল। খুব ধীরে ধীরে হলেও এক সময় এই কলোনীর কেউ জীবিত থাকবে না, উন্নত কলোনীগুলোর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের প্রোজেক্টটির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হবে।

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


যে অবস্থা কিছুদিন পর এমন ক্যাপসুল খেয়েই থাকা লাগবে।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২০

ফা হিম বলেছেন: হুম, সেটা ভেবেই আইডিয়াটা মাথায় আসলো।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৫৫

শান্তির দেবদূত বলেছেন: ওয়াও! একেবারেই অভিনব আইডিয়া। চমৎকার সাবলিল লেখা, সেই সাথে দারুন প্লট। অনেক ভালো লেগেছে। অচিরেই হয়তো এমন দিন আসছে, তখন হয়তো গল্পের মত; গনহত্যার হবে নিঃশব্দে।

অনেক ভাল লেগেছে, এমন গল্প সামনে আরও চাই, শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২৩

ফা হিম বলেছেন: হয়তো এমন দিন আসছে, তখন হয়তো গল্পের মত; গনহত্যার হবে নিঃশব্দে।

অথবা এখনো যে হচ্ছে না তা-ই বা কে বলতে পারে?

অসংখ্য ধন্যবাদ। ইচ্ছে আছে আরো লিখার।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:২৯

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

গল্পের আইডিয়াটি অভিনব ও ভাল লাগল ৷

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২৫

ফা হিম বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:১৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। ঝরঝরে গদ্য, অভিনব প্লট। সব মিলিয়ে সায়েন্স ফিকশন হিসাবে ১ম শ্রেনীর লেখা।

ধন্যবাদ, ভাই ফা হিম।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২৮

ফা হিম বলেছেন: লেখার মান নিয়ে সবসময় আশংকায় থাকি। আপনার কথায় কিছুটা অশ্বস্ত হলাম। ধন্যবাদ ভাই।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:০৬

কাজী রায়হান বলেছেন: চালিয়ে যান । ভালো হচ্ছে ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:২৯

ফা হিম বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনারা সাথে থাকলে নিশ্চিন্তেই চালিয়ে যেতে পারি।

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:২৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: অসাধারণ একটা গল্প ! ক্লাসিক ! ++++++ প্রিয়তে এবং অনুসরিত :) শুভকামনা রইলো :)

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩২

ফা হিম বলেছেন: পুরাই শরমিন্দা করে দিলেন। :) :)

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৪

সুমন কর বলেছেন: দারুণ আইডিয়া। খুব সুন্দর ভাবে গল্পের মাধ্যমে বলে গেছেন, ভাল লাগল।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৪

ফা হিম বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সুমনদা।

৮| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪১

চড়ুই বলেছেন: সুন্দর । সায়েন্স ফিকশন ভালো লাগে।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬

ফা হিম বলেছেন: ধন্যবাদ

৯| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৪৩

আলম দীপ্র বলেছেন: খুব ভালো লাগলো ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬

ফা হিম বলেছেন: ধন্যবাদ।

১০| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৩৩

এহসান সাবির বলেছেন: বেশ!

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

ফা হিম বলেছেন: হুম

১১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:২০

মামুন রশিদ বলেছেন: মারাত্মক গল্প!


ভালো লেগেছে :)

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:২৬

ফা হিম বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই।

ঈদের শুভেচ্ছা নিবেন।

১২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বেশ চমকে দেবার মতো গল্প।

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:২৯

ফা হিম বলেছেন: হুম, আইডিয়াটা হঠাৎ করেই মাথায় আসল।

ঈদের শুভেচ্ছা।

১৩| ৩০ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: চমৎকার থিম, চমৎকার সমাপ্তি।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৫৩

ফা হিম বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই

১৪| ৩১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

এহসান সাবির বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৫৩

ফা হিম বলেছেন: আপ্নাকেও

১৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:৪১

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আই মুগ্ধ !!
আই কাইত !!

হেভভি হইছেরে ভাই ।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৯

ফা হিম বলেছেন: মন্তব্যটাও হেভভি হইছ... :)

১৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:০৫

একলা চলো রে বলেছেন: চমৎকার প্লট নিঃসন্দেহে। একদল মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে এই ধরনের সাইফাইগুলোতে দেখা যায় শেষ পর্যায়ে এসে মানুষ বিদ্রোহ করে প্রাচীন পৃথিবীর নিয়মে ফিরে যাচ্ছে। আপনার গল্পে নতুনত্ব আছে। সাইফাই গল্পের মূল আকর্ষণ হলো আইডিয়া। আপনার আইডিয়াটা বেশ আকর্ষণীয় ছিল। সামনে এমন গল্প আরো চাই। আরো বড় করে লিখবেন গল্পগুলো। বড়্গল্পেই টুইস্ট বেশি ভালো লাগে।

শুভকামনা রইল।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৪৪

ফা হিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য।

গল্পটা ইচ্ছে করেই ছোট করেছি, শুধু সংলাপের ভিতর দিয়েই শুরু এবং শেষ। অবশ্য এখানে গল্প বলতে তেমন কিছু নেই, শুধু আইডিয়াটাই! হঠাৎ করে মাথায় এল, সেই অনুযায়ী একটা কিছু লেখার চেষ্টা করেছি আর কি। ভবিষ্যতে বড় গল্প লেকাহ্র ইচ্ছে আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.