নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগ্রহ মোর অধীর অতি—কোথা সে রমণী বীর্যবতী । কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা — দারুণ সে , সুন্দর সে উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে , নহে সে ভোগীর লোচনলোভা , ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা ।
মেয়েটা একটু ক্যামন জানি; সব কথার ভুল ধরে, নাই কথাতে ঝগড়া বাধিয়ে ফেলে, কেউ একটু ভুল করলেই বলে ওঠে, "এক চড় মারবো"।
মনে যা আসে, তাই করা চাই তাঁর। বৃষ্টির মাঝে মাথায় ছাতা দিয়ে হাঁটার সময় হুট করে হাত থেকে ছাতাটা কেড়ে নিয়ে বেলুনের মতো আকাশে উড়িয়ে দিয়ে, হাত দুটো মেলে ধরে ঘুরপাক খেতে থাকে রাস্তায়। ছেলেটার হয় যত সমস্যা। রাস্তা তো ফাঁকা না! যদি কোন গাড়ি এসে ধাক্কা মারে, অথবা রিক্সা! তাহলে কি হবে! কিন্তু নিষেধ করে লাভ নাই। মেয়েটা ছেলেটার কথা শুনলে তো! তাই বাধ্য হয়ে ছেলেটাকেও রাস্তায় নামতে হয়। মেয়েটার মতো রাস্তায় নেচে নেচে বৃষ্টির পানি গায়ে মাখার জন্য নয়, গাড়ি ঘোড়া ঠেকানোর জন্য।
মেয়েটা একটু পাগল পাগল টাইপ। ক্যামন ক্যামন কাপড় পরে যেন। চিপা জিন্স আর গেঙ্গির টপস। ওড়না সবার মতো করে নেয়না, নেয় মাফলারের মতো। ছেলেটা আর মেয়েটা যখন পাশা পাশি হাটে, ছেলেটা অস্থির হয়ে থাকে সব সময়। কে কিভাবে মেয়েটাকে দেখছে, সেই ভেবে। ছেলেটা একবার বলেছিল, একটু ভালো কাপড় পরতে পারো না? মানুষ কি বলবে? মেয়েটা ভাবলেস চোখে বলেছিল, "কাপড় পরি আমার ইচ্ছে মতো, মানুষের না"। ছেলেটা বলেছিল, পরকাল আছে না? মেয়েটা বলেছিল, "পরকালের বিচারক কি এহকালে আমাকে কাপড় পরিয়ে পাঠিয়েছিল?" ছেলেটা আর কিছুই বলে নি!
লোকজনের মাঝে হাঁটার সময় ছেলেটা একটু সরে সরে হাঁটত। ক্যামন জানি লজ্জা লাগতো ছেলেটার। মেয়েটা খপ করে ছেলেটার হাত ধরে ফেলত। আঙ্গুলের ফাঁকে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে বলতো, "ইয়ে হুয়ি না বাত!" ছেলেটার ক্যামন যেন ভালো লাগতো। কিন্তু মানুষ কি ভাববে এই ভেবে সে হাত সরিয়ে নিতো। মেয়েটার মন খারাপ হয়ে যেত। ছেলেটা সেটা এই পলক মেয়েটার চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝে ফেলত।
মন খারাপ ভাব নিয়ে দুই জনেই দোয়েল চত্তর থেকে হাঁটতে হাঁটতে চাঙ্খার পুলের দিকে এগিয়ে যেত। ঢাকা মেডিক্যালের সামনে এসে দুই জনেই তাকাত। এক জন আর একজনকে এক সাথে বলে উঠবে, "চল চা খাই"। কিন্তু কেউ আর সাহস করে বলে ওঠে না। লোকচক্ষুর ভয় যেন তাদের মনের সকল ভয়ের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু দীর্ঘ সাত বছরের এক সাথে পথ চলা তাদের পথের সাথী হয়ে, তাদের চলনে ছন্দ মিলিয়ে দেয় যেন। তাঁরা দুই জনেই চায়ের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায়। মালাই চায়ের ঘ্রাণ তাদের মনের মনমালিন্নতাকে এক নিমিষে দূরে ঠেলে দেয়। তাঁরা আরাম করে চা খায়। খাওয়া শেষে তাঁরা হাঁটা শুরু করে আবার TSC এর দিকে। ছেলেটা আশা করে থাকে, এই বুঝি মেয়েটা তাঁর হাত টেনে নিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে বলবে, "ইয়ে হুয়ি না বাত"। কিন্তু এমন কিছুই হয়না। তাঁরা পার হয়ে যায় দোয়েল চত্তর।
মেয়েটা নিজের মনে কথা বলতে থাকে, আর ছেলেটা শুনতে থাকে তাঁর কথা। কিন্তু মনে বসাতে পারে না কথা গুলো। তাঁর মনে চলে নানা প্রশ্নের ঝড়। লোক চক্ষুর ভয় কাটিয়ে স্বাধীনতা আদায় করার ঝড়। সে মনে মনে ভাবে, "আগামিকাল এই রাস্তা থাকবে, দোয়েল চত্তর থাকবে, কিন্তু থাকবো না শুধু এই সময় আর আমি সহ আমার পাশে হেঁটে চলা সাহসী এই মেয়েটা। মানুষ যা ভাবার ভাববে, তাঁতে আমার কি আসে যায়? নিশ্চয়ই আমি কোন অপরাধ করছি না।" ভাবতে ভাবতে পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্র চলে আসে। ছেলেটা তখন জগতের সকল শক্তি সঞ্চয় করে মেয়েটাকে বলে ওঠে, "তোর কাঁধের ব্যাগটা একটু ঐ কাঁধে নে তো"! মেয়েটা অবাক হয়ে বলে, "কেন?"
ছেলেটা তখন বলে-
আমি চাহিব তোমার চোখ পানে সখী
রাখিব তোমার কাঁধে হাত,
যাক না চলে কুল মান আমার
যাক না চলে জাত!
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:৫৮
অন্তহীন পথিক বলেছেন:
২| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৩১
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
ভাল লাগছে।+
২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৫
অন্তহীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৭
শ্রমজীবি বলেছেন: খুব সুন্দর হয়েছে।