নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেটেছে একেলা বিরহের বেল, আকাশকুসুম-চয়নে। সব পথ এসে মিলে গেল শেষে, তোমার দুখানি নয়নে।

অন্তহীন পথিক

আগ্রহ মোর অধীর অতি—কোথা সে রমণী বীর্যবতী । কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা — দারুণ সে , সুন্দর সে উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে , নহে সে ভোগীর লোচনলোভা , ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা ।

অন্তহীন পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

পূজনীয় / নিন্দনীয়

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৩

আমার পরিচিত একজনকে নিয়ে কথা বলি।।



আমার আব্বা একজন শিক্ষক হওয়ায় সারা জীবনে আমি অনেক শিক্ষকের সান্নিদ্ধে আসতে পেরেছি। এর মাঝে যেমন রংপুর জিলা স্কুলের কুদ্দুস স্যার ও আছে, সর্বজন পূজ্য আবার তেমনি **** স্যার ও আছেন, সর্বজন নিন্দনীয়। তাঁরা দুইজন পূজনীয় এবং নিন্দনীয় কেন, পরে ব্যাখ্যা করতেছি। প্রথমেই আসি আমার পরিচিত সেই শিক্ষকের কাছে।।



তাঁর একটাই অবলম্বন ছিল। সেটি কিন্তু সততা নয়, সেটি ইংরেজি বিষয়ে পাণ্ডিত্যটা। তিনি সব সময় আমাদের বলতেন, যখন মানুষ ডিগ্রি ফাইনাল পরিক্ষা প্রথমবার দিত, প্রশ্ন ক্যামন হয় জানার জন্য, আমি সেই আমলে একবারেই পাস করেছিলাম। আমাকে দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসতো। তাঁর কথা সুনে আমার আম্মা হাসতো, আর বলতো, “আর এখন, মানুষ তারে পোঁচেও(মূল্যহীন) না।” আমরা তাঁর ছোটবেলার গল্প, কিভাবে সে সারাজীবন স্কলারশিপ পেয়ে পেয়েই পাস করেছে, তাঁর সেই গল্প অনেক মজা করে শুনতাম আর স্কুলে গিয়ে মার খেতাম। কেন? কারন তিনি বলতেন, প্রাইভেট পড়া, সেটা আবার কি?নিজে নিজে পড়। পড়াশুনা নিজের কাছে”। কিন্তু আমি তাকে কিছুতেই বুঝাতে পারি নাই, “ফটিকের কাছে শহর যে বড় আচেনা জায়গা। বড় আচেনা সেখানকার পড়াশুনার ধরন।”



এই লোকটার একটাই খারাপ গুণ ছিল, তিনি কোনোদিন কাউকে প্রাইভেট পড়াতেন না। আমি অনেক কাছ থেকে তাঁর সংসার দেখেছি। তাঁর সংসার চলত প্রতিদিন দোকান থেকে এক কেজি চাল কিনে এনে। ঈদ মানেই তাঁর সংসারে চলতো অশান্তির আগুন। তাঁর কোন উপায় ছিল না কোন ছেলে মেয়েকে একটা কাপড় কিনে দেয়ার। তাঁর ছেলেও আমার সাথেই রংপুর জিলা স্কুলে পড়তো। আমি সব সময় দেখতাম, সে টিফিনের সময় পকেট থেকে দুই টাকা বের করতো। এক টাকা দিয়ে “মান্নান ভাইয়ের” দোকান থেকে একটা তরমুজের ফালি কিনত, আর এক টাকা দিয়ে বাদাম কিনে খেতে খেতে বাড়ির উদ্ধেশে হাঁটা ধরত। ক্লাস এ তাঁর রোল ছিল, অনেকে অনেক পিছনে। আমি আমাকে দিয়েই বুঝতাম, অভাব থাকলে খালি ভালোবাসা না, পড়াশুনা মায়া-মহব্বত সব দরজা জানালা ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। যা অবশিষ্ট থাকে তাঁর নাম, না পাওয়ার যন্ত্রণা। ওনার ওয়াইফ মাঝে মাঝেই ওনাকে অনেক কথা শোনাত প্রাইভেট না পড়ানোর জন্য। কিন্তু তিনি হয়তো সব কিছুর উরধে তাঁর শিক্ষকতার মূল মন্ত্রকেই আঁকড়ে ধরে ছিলেন। তাঁর ছেলে-মেয়ে ও তাকে খুব একটা পছন্দ করতো না। বলতো ভীতু। কারন অপরাধ করার জন্য সাহস লাগে। শিক্ষক হয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানটাও নিশ্চয়ই একটা অপরাধ। অবশ্যই অপরাধ। কেউ যদি বলে অপরাধ না, আমি তাঁর সাথে সরাসরি কথা বলবো। সেই অপরাধ করার জন্যও চাই মিথ্যার সাহস।



যাই হোক, আসল কথায় ফিরে আসি। তিনি সবার কাছেই যে অপ্রিয় ছিলেন, তা কিন্তু না। তিনি তাঁর স্কুলের ছোট ছোট বাচ্চাদের কাছে খুবি পছন্দের একজন শিক্ষক ছিলেন। তাঁর এক কথায় জীবন দিয়ে দিবে, এমন অবস্থা। দিবেই না বা কেন। আমার মনে হয়না তিনি তাঁর দুপুরের খাবার কোন গরীব বাচ্চার সাথে ভাগা ভাগি না করে একাই খেয়েছে। তাঁদের সাধ্য মত টিফিনের টাকা দিতেন। আর ফ্রী প্রাইভেট পড়াতেন। যেন টাকা পয়সার জন্য কারও পড়াশুনা থেকে না যায়।



এই অবস্থায় তাকে নিয়ে কিন্তু দুইটি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে এখানে। ধরিয়ে দেই অবস্থা দুটি। তিনি তাঁর সংসার পরিজনের কাছে চরম ভাবে নিন্দনীয়, আবার একই সাথে তাঁর ছাত্রছাত্রীদের কাছে চরম ভাবে পূজনীয়। আমরা তাহলে তাকে কোন চোখে দেখবো? আমরা কি তাঁর সংসারের দুরবস্থার কারনে তাকে ধিক্কার দিবো, নাকি তাকে তাঁর দায়িত্ব পালনের জন্য পূজা করবো?



আমরা যে কাজটা করবো, সেটি হচ্ছে তাকে ধিক্কার দিবো। চরম ভাবে ছোট নজরে দেখবো। তাকে এতোটাই ছোট নজরে দেখবো যে, তাকে কোন পানের দোকানের সামনে দাড়িয়ে থাকতে দেখলে হাতে সিগারেট নিয়ে তাঁর সামনে গিয়ে বলবো, “চাচা, ম্যাচটা দেন তো।” কেনই বা বলবো না, তাঁর পরনের প্যান্টটা রঙ চটা। শার্টে তিলা পড়ে গেছে। চোখের চশমার ফ্রেমটা অনেক পুরনো। কাঁচাপাকা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি দিয়ে মুখ ভর্তি। তাকে যে কেউ অসম্মান করতেই পারে। এখানে ক্ষতির কিছুই নেই। যাই হোক, তারপরে সিগারেট ধরিয়ে দ্রুত সরে পরবো। নাহ, তাকে সম্মান দেখিয়ে নয়, পাছে যদি টাকা পয়সা চেয়ে বসে, এই ভয়ে। কোন মিথ্যা বলেছি কি?



আসি তারেক উপাখ্যানে। যিনি ১.৫ বিলিয়ন ডলার (আমেরিকান টাকা)এর মালিক। নাহ, থাক উনি বাংলাদেশের শীর্ষ ধনীদের মাঝে একজন। আমরা বরংচ একটু নিচে আসি। কোকো (মৃত) উপাখ্যানে। তা ও কম বড় না। তাহলে আসি জয় উপাখ্যানে যিনি ১ বিলিয়ন ডলারের মালিক। উফ আমার নজর খালি উপরের দিকে। আচ্ছা, বাংলাদেশের ৩০০ আসনে তিন শীর্ষ দলের তিন নেতার ৩০০*৩=৯০০ জন মন্ত্রী বাদ। আমরা বরং ছোট খাট পুঁটি মাছে আসি। ধরা যাক, রংপুরের কোন এক গ্রামের চেয়ারম্যান। হু, এইবার ঠিক আছে। ধরি ওনার নাম অমুক।



তো, আপনাকে যদি আমি বলি আপনি ওই অমুক চেয়ারম্যান আর দুঃস্থ শিক্ষক এর দুইজন মানুষকেই চেনেন না। জানেন না তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, জানেন না তাঁদের টাকা উপার্জনের রাস্তা। আপনাকে যদি বলি আপনি কাকে সম্মান করবেন? উত্তরটা হচ্ছে, আপনি তাঁদের পোশাককে সম্মান করবেন। চেয়ারম্যানদের তো আর আয় রোজগার কম না। মাসাল্লাহ, তাঁরা একজন ভিক্কুক কেও রেশনের কার্ড দেয়ার জন্য ২০০ করে টাকা রাখেন। স্বাভাবিক, তাঁর পোশাক আসাক পকেটের মানিব্যাগ একটু বেশিই ভারি হবে বৈকি। তাঁর পোশাকে সম্মান না করলেও নিশ্চয়ই তাঁর পকেটকে সম্মান করবেন। যদি না বলেন, তাহলে হয় আপনি মিথ্যুক অথবা বাংলাদেশের ৯৯.৯৯% লোকের মাঝের কেউ না। আপনি আসলে এই বঙ্গদেশের ই কেউ তো নন ই, আপনি এই ভারত বর্ষের ই মানুষ নন। আপনি PK ।



আপনাদের খারাপ লাগে না। এই অসৎ উপার্জনের টাকায় যারা মোহো দেখায়, তাঁদের সম্মান দেখাতে? কাউ কেউ তো আবার মানুষের রক্ত নিয়ে ব্যবসা করে এই টাকা কামাচ্ছে। আর আপনি, তাকেই সম্মান দেখাচ্ছে। কেন ভাই। আপনার কি বিবেক বলে কিছুই নাই?



শেখ হাসিনা সরকার সকল টিভি মিডিয়া দখল করে ফেলেছে। এখন আর নরমাল বাসে আগুন দিলে সেটা টিভিতে দেখায় না। তাই খালেদা সরকার মানুষ ভর্তি বাসে পেট্রোল বোমা মারছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আট দশজন মানুষ মারা যাচ্ছে গায়ে আগুন লেগে। আপনি চিন্তা করতে পারেন, দুই দল ই তাঁদের সিদ্ধান্তে অটল, শুধুমাত্র বাংলার মানুষের সেবা করার জন্য। তাঁরা যে ক্ষমতা ক্ষমতা করে চিল্লায় আন্দোলন করে, তাঁর পিছনে সুন্দর একটা কথা বলে, “জনগণ আমাদের সাথে আছে!” কে আসলে এই mother fucker জনগণ? যারা আগুনে পুড়ে মারা গেলো তাঁরা, নাকি যারা কালকে আগুনে পুড়ে মারা যাবে তাঁরা? কে না জানে তাঁদের পাপের কথা? কে না জানে তাঁদের সন্ত্রাস বাদের কথা। কে না জানে কে না চিনে তাঁদের মুখোশের আড়ালে ঢেকে রাখা রক্ত পিপাসায় জিভ বেরিয়ে আসা চেহারার কথা? তারপরও আমরা কিন্তু ওই গরীব শিক্ষকটাকে সম্মান দিবো না, দিবো মিলিয়নারদের। কারন, কারন আমরা টোটাল mother fucker জনগণ।



ধরি ওই গরীব শিক্ষক মারা গেলেন (আমি চাইনা তাঁর মৃত্যু আমি দেখি, আল্লাহ যেন আমার আয়ু তাঁর আয়ুতে যোগ করে দেন। না হলে পুত্র হয়ে কি বা করতে পারলাম গরীব পিতার জন্য)। তাঁর জানাজা হচ্ছে, কত জন মানুষ আসতে পারে বলে ধারনা? দুইশ? হতে পারে। তাঁর মাঝে অনেকেই আসবেন তাঁর স্কুল কমিটির লোক। জানাজায় দাঁড়ানোর আগে তাঁরা নিজেদের মাঝে আলোচনা করবেন, তিনি মারা যাওয়াতে যে পোস্ট টা খালি হয়েছে, তাতে কত টাকা নিয়ে নতুন একজনকে ঢুকানো হবে। এই দুইশ মানুষের মাঝে একশ জন আসবেন, শুধু চক্কু লজ্জার ভয়ে। একশ জন আসবেন মন থেকে। কিন্তু আমি ১০০% নিশ্চিত রাজাকার গোলাম আজমের জানাজায় যে লক্ষ লক্ষ মানুষ গিয়েছিল, তাঁরা সবাই মন থেকে গিয়েছিলো। এবং তাঁরা সবাই বাঙালি। কেউ পাকিস্থান থেকে উড়ে আসে নি তাঁর জানাজায়।



আমাদের সমস্যা টা কোথায়? আমি ঠিক বুঝি না। মসজিদে কেউ একজন এসি দিলে শুক্রবারে তাঁর নাম জোরে জোরে বলে তাঁর জন্য দোয়া চাওয়া হয়। আমি যে পাঁচ টাকা দিলাম! আমার কি হবে? ছিনেমা নাটকে দেখানো হয়, শিক্ষক মানেই গরীব। সৎ মানেই গরীব। সৎ মানেই ঢুকে ঢুকে জীবন পার। শেষে যক্ষ্মা হয়ে কাশতে কাশতে ফটাস। আর বিত্তশালী। গাড়ি বাড়ি, একাকার অবস্থা। আমরা এলাকার ছেলেপেলে চাঁদা যার কাছে বেশি পাই, তাকে বেশি সম্মান করি। টাকা নাই, সম্মান নাই।



আমাদের বাবারা বড় বড় পোস্টে বসে অসৎ উপায়ে টাকা কামাচ্ছে, আমরা সেই টাকার অহংকার দেখাচ্ছি। একবারও বাবাকে বলছি না, “বাবা, আমি হারাম খেতে খেতে পুরো হারামি হয়ে যাচ্ছি। আমার জন্য হলেও ক্ষান্ত দেন।”



আসলে আমাদের অবস্থাটা এখন “আপ্না সাপ্না মানি মানি”। নিজে বাঁচলে বাপের নাম। ফেসবুকে সবাই তুফান তুলে স্ট্যাটাস দেয়, দেশের জন্য এই করবে ওই করবে, কেন তাঁরা মানুষ মারছে। আপনি যদি না চান বাসে আর আগুন দেয়া হোক, তাহলে লাইক দিন, আর যদি চান দেয়া হোক, তাহলে কমেন্ট করুন। আর কত তামসা। আমি আজ বলি, আসো সবাই মিলে কাল প্রধানমন্ত্রীর বাসা আর বিরোধীদলীয় নেত্রীর বাসা ঘেরাউ করি, একটা আণ্ডা বাচ্চাও আসবে না। কারন সে জানে, বাংলাদেশে এইসব হচ্ছে, হবে। টিকে থাকাই যখন জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য তাহলে তেলাপোকা হয়ে হলেও টিকে থাকবো, এই শপথ আমরা অলিখিত ভাবে নিয়ে নিয়েছি। দেশে জন্য জীবন দিয়ে, দেশকে স্বাধীন করে কি লাভ? সংসদ ভবনে ঢোকার সময় তো রাজাকার মন্ত্রীর গাড়িতেই বাংলাদেশের পতাকা সোভা পায়। দুস্থ পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা হয়তো তখন তাঁর গাড়ির দিকে আসা করে তাকিয়ে থাকে, যদি ১০ টাকা ভিক্ষা পাওয়া যায়! তো, এই দেশে এই জনগণের ভালোর জন্য আন্দোলন করে কি লাভ? যা আছি ভালোই আছি।



কেউ যদি বলে, আমি আছি তোমার সাথে, তুমি এগিয়ে চল। তাঁর উদ্দেশ্যে একটা ঘটনা বলি...

......... কিছুদিন আগে আমাদের ইস্ট ওয়েস্ট ভার্সিটিতে গরমে এসি নিয়ে আন্দোলন হয়েছিলো। সেই আন্দোলনের তিনজন হোতাকে ভার্সিটি থেকে বের করে দেয়া হয়েছিলো। তাঁদের অপরাধ গুলো কি কি আমি সব গুলো জানি না। কিন্তু প্রধান যে অপরাধ টা, সেটি হচ্ছে, তাঁরা আমাদের সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আরামে ক্লাস করার জন্য গরমে এসির দাবি তুলেছিল। এসি যে নাই, তা না। আছে কিন্তু বন্ধ থাকে। তাঁরা টাকা কিন্তু ঠিক ই নেয়। এমন না, এই মাসে তো বাবারা আম্মারা আমরা এসি চালাইনাই, এই সেমিস্টারে তোমাদের টাকা কিছু কম। তো যাই হোক, তাঁরা আন্দোলন কেন করলো? ভার্সিটি অথোরিটি তাঁদের ভার্সিটি থেকে বের করে দিলো।



আমরা একবার ও ভাবলাম না, ওই ছেলে তিনটা কাদের জন্য আন্দোলন করেছিলো? আমরা যদি পুরো ভার্সিটির আট হাজার ছাত্র ছাত্রি এক সাথে বসে যেতাম। বলতাম, আপনাদের সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে। তাহলে? তাহলে তাঁরা কেন তাঁদের বাপেদের বাপ ও সিদ্ধান্ত বদলাত। কারন, তাঁদের চুলোতে আগুন জ্বলেই আমাদের টাকা দিয়ে। তাঁদের পেটে অন্য ওঠেই আমাদের টাকা দিয়ে। তাঁদের বাড়ি গাড়ির উসসই আমাদের টাকা। আমাদের সবার একটা কথা তাঁরা শুনবে না? ভুল তো আমরা ছোটরাই করবো নাকি?



মাত্র আট হাজার মানুষ একটা সিদ্ধান্তে এসে পৌছাতে পারেনি। একটা অপরাধ ঠ্যাকাতে পারে নি। আর বাংলা মুল্লুকে তো আঠারো কোটি মানুষ। তাঁরা ক্যামনে একটা সিদ্ধান্তে আসবে? ঘুরে ফিরে এক ই। আমরা সবাই তো বাঙালি ই, নাকি? হারাম আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। ছোট বেলায় আমার স্কুলের ধর্ম শিক্ষক হেড মাউলানা স্যার শিখিয়েছিলেন, যে শাহ্‌ এর জাদা (ছেলে) তাকে বলে “শাহজাদা”, আর যে হারাম খোরের জাদা, তাকে বলে “হারামজাদা”।



আমার কথা প্রায় শেষ। এখন আসি আমার পূজনীয় কুদ্দুস স্যার এর কাছে। আব্বার মুখে শোনা গল্প। একবার তাঁর কাছে এরশাদ সাহেবের আমলে একজন ক্ষমতাধর মানুষ এসে বলেছিলেন, স্যার এই ১০ জন বাচ্চা এবার ভর্তি পরিক্ষায় টিকে নাই। আপনি যদি এদের ভর্তিটা করিয়ে নিতেন, আমার খুব উপকার হত। স্যার বলেছিলেন, আপনার উপকার আপনি নিজেই করুন। এই নিন এই লিস্টে এবার যারা চাঞ্জ পেয়েছেন তাঁদের নাম আছে। আপনি দশটা ছেলের নাম কেটে ঐখানে আপনার দশটা ছেলের নাম ঢুকিয়ে দিন। পাপ যা করার আপনি করেন, আমি খালি হুকুমের অপেক্ষায় আছি। ওই মানুষটি আর একটি কথাও না বলে চলে এসেছিলেন। তাঁর সময় ১০০ এর পরিক্ষায় ৫০-৬০ পেলেই চাঞ্জ পাওয়া যেত। আর এখন, বাচ্চারা নাকি ১০০ এর মাঝে ১০০ ই পায়। ৭০-৮০ পেলেও চাঞ্জ হয়না। যে দেশে বিসিএস এর প্রশ্ন ফাঁস হয়, সে দেশে রংপুর জিলা স্কুলের প্রশ্ন, সে তো দুধ কলা দিয়ে মাখা ভাতের চেয়েও সহজে গিলে ফেলা যায়। শুনেছি **** স্যার নাকি গাড়ি কিনেছেন। হতেও পারে। এবার যেয়ে দেখে আসব ইন্সা আল্লাহ। কুদ্দুস স্যার খালি খালি কষ্ট করতেন। সিগারেট না খেয়ে বিড়ি খেতেন। একটা মাত্র শার্ট পরেই আসতেন। তাও আবার একদিন দেখি হাতের নিচের দিকে ছেড়া। পায়ে জুতা দেখেছি রিটায়ার্ড হবার পরে। তাঁর আসলেই পোশাক পরিচ্ছদের দিকে আর একটু নজর দেয়া উচিৎ ছিল বৈকি। তাহলে যদি মানুষ তাকে **** স্যার এর মত পূজনীয় ভাবতো। ;) **** স্যার সম্পর্কে বেশি কিছু বলা হল না। থাক, কেন জানি গা ঘিন ঘিন করে। কিছু কথা থাক না গোপন। আর জিলা স্কুলকে ভালোবাসে তাঁরা হয়তো সহ্য না ও করতে পারে। কারন, সবার প্রথমে “রংপুর জিলা স্কুল, আমার স্কুল”।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.