নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেটেছে একেলা বিরহের বেল, আকাশকুসুম-চয়নে। সব পথ এসে মিলে গেল শেষে, তোমার দুখানি নয়নে।

অন্তহীন পথিক

আগ্রহ মোর অধীর অতি—কোথা সে রমণী বীর্যবতী । কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা — দারুণ সে , সুন্দর সে উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে , নহে সে ভোগীর লোচনলোভা , ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা ।

অন্তহীন পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

Never Give Up Hope

১০ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৩৭

প্রতিবার বাসা যাওয়ার আগে একটা করে গল্প বলে যাই। এবারের গল্পটাতে আমি যা বলতে যাচ্ছি, সেখানে মনে হতে পারে, আমি অহংকার করছি। কিন্তু না, আমি যা বলছি, যারা বুঝার, তারা অনুপ্রাণিত হবে। :)

১৯৯৭। আমি রংপুর জিলা স্কুলে ভর্তির জন্য পড়াশুনা করছি। পরিক্ষা আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ডিসেম্বর মাস। কঠিন ঠাণ্ডা। রংপুর যে যায় নি, সে কল্পনাও করতে পারবে না, রংপুরের ঠাণ্ডা কি জিনিস।

আমরা তখন গুড়াতিপাড়ার বাসায় থাকতাম। দুইটা মাত্র চাটাই এর ঘর ছিল আমাদের। রংপুরে আমরা আসি, ১৯৯৪ এর দিকে। এর আগে আমরা গ্রামে ছিলাম। আমাদের গ্রামের ঘরগুলো মাটির। অনেক উষ্ণ। রাতের বেলা ঘরে শোয়ার পরে মনে হয় যেন, ঘর না, নদীর মাঝে খোলা চরে এসে সুয়েছি। চাটাইয়ের ঘর যে এত ঠাণ্ডা, যে ঠাণ্ডার দিনে চাটাইয়ের ঘরে ছিল, সেই শুধু জানে ঠাণ্ডা কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি!

তখন ঈদ হত নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসের দিকে। ঈদ এ সবাই জামা শার্ট না নিয়ে নিত সোয়েটার, জ্যাকেট......।। অনেকেই আবার ছিল যারা একটু বেশিই গান্ডু ছিল বৈকি...।। ওরা নিত জামা শার্ট। আর ঈদ এর দিনে বৃষ্টি ভেজা কাক যেমন কাপে আর মাঝে মাঝে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে, তেমনি এরাও মাঝে মাঝে কেঁপে কেঁপে উঠত। কি যে মজা ছিল এই সব গান্ডুর গান্ডু গিরি দেখতে...।। :P

ঈদ মানেই এখন যেমন শুধুই নতুন কাপড় কেনা কাটা। আমাদের সময় ও ঠিক তেমন ই ছিল, নতুন নতুন জামা কাঁপড় নেয়া। সবার মাঝে কি যে এক উৎসব উৎসব ভাব চলে আসতো, তা একটা দেখার মত ছিল। তবে এত কিছু দেখার মত বিষয়ের মাঝে যা ছিল সবচেয়ে দেখার মত বিষয়, তা হচ্ছে “মধ্যবিত্ত” পরিবারের ঈদ। মানে আমার পরিবারের ঈদ।

আমার ছোট বেলার ঈদ গুলো ছিল বিভীষিকাময়। আব্বার হাতে টাকা নাই। আমরা তিন ভাইবোন ছোট ছোট। সবাই তাকিয়ে আছি আব্বার দিকে। কবে আব্বা বলবে- আজ আমরা সবাই বাজারে যাবো। কিন্তু ২৫ রমযান যায়, ২৬ রমজান যায়, ২৭ রমজান যায়, এমন কি ২৮ রমজান ও যায়, আব্বা আর বলেন না, “আজকে আমরা সবাই বাজারে যাবো”।

আপা মন খারাপ করে বসে থাকে। এখন কোন দর্জি আর জামা সেলাই নিবে না। সব ভালো জিনিস গুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা কি নিবো? আমি আর ছোট বোনটা থাকতাম নির্বাক। তার চেয়েও বেশি নির্বাক ছিল আম্মা, আর সবচেয়ে বেশি নির্বাক অবস্থায় থাকতো আমার আব্বা। তার মুখ ভঙ্গিতে জীবন যুদ্ধে পরাজিত সৈনিকের স্পষ্ট প্রতিরুপ ছিল। আম্মা সবসময় শুয়ে থাকতো। আব্বা বাসা আসতো আর বের হয়ে যেত কাজের অজুহাতে। যেন আমাদের কাছ থেকে পালিয়ে থাকতে পারলেই বাঁচেন......।।

নিজের জীবনের ঘটনা, অথচ কোথাগুলো বলতে গিয়ে নিজের ই কান্না চলে আসছে। মনে হচ্ছে, মনকে যে ভাবেই হক, মানাই...... নাহ এই জীবন আমার ছিল না। অনেক কিছু বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বলতেই পারছি না...।। থাক এই পর্যন্ত।

শেষে শুধু একটা কথাই বলি, আমরা কিন্তু সেই দিন দমে যাই নি। আমরা অপেক্ষা করেছি আগামী দিনের। আমরা দেখতে চেয়েছি আল্লাহ আমাদের পরিশ্রমের ফল কিভাবে দেন, কত খানি দেন! আল্লাহ আমাদের নিরাস করেন নি! আপনাকেও করবে না। শুধু দরকার, ধরজ আর পরিশ্রম। এই ঈদ খারাপ যাচ্ছে যাক; কোন সমস্যা নেই। আপনারও একদিন ঈদ আসবে যেদিন বসুন্ধরা শপিংমলের কোন একজন কর্ম কর্তা আপনাকে বলবে, “ভাই একা আর কত গুলো কুপন নিবেন?”

"এই দিন, দিন নয়, আরও দিন আছে, এই দিনেরে নিবে তোমরা সেই দিনেরও কাছে"। সবার ঈদ ভালোভাবে কাটুক, এই বিশ্বাসে; বিদায় ঢাকাবাসী।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:৫০

বোকামানুষ বলেছেন: ভাল লাগলো জেনে আল্লাহ আপনাদের পরিশ্রম সার্থক করেছেন
ভাল থাকবেন

২| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৪৬

হানিফঢাকা বলেছেন: May Allah bless you. This is life. This was the common scenario of many people including me.

৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৪৮

হানিফঢাকা বলেছেন: Please correct the title to "Never Give up Hope" Instead of "Never Give Hope."

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৯:১৭

অন্তহীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :) হাতে কম সময়ের জন্য হয়তো নজর এড়িয়ে গেছে :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.