নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেটেছে একেলা বিরহের বেল, আকাশকুসুম-চয়নে। সব পথ এসে মিলে গেল শেষে, তোমার দুখানি নয়নে।

অন্তহীন পথিক

আগ্রহ মোর অধীর অতি—কোথা সে রমণী বীর্যবতী । কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা — দারুণ সে , সুন্দর সে উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে , নহে সে ভোগীর লোচনলোভা , ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা ।

অন্তহীন পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ কামনা :)

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৪৩

কালকে আমার ছোট বোনের HSC পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হবে। আমি একদম ই চিন্তিত নই। কারন আমি জানি ও খুব ভালো ফলাফল করতে পারবে না।

আজ থেকে ঠিক দুই বছর আগে, ও যখন SSC পরিক্ষা দিতে যাচ্ছিলো, আমি পরীক্ষার কিছুদিন আগে দেখলাম, ওর প্রিপারেসন খুব একটা ভালো নয়। ও এই নিয়ে খুবি চিন্তিত। আমি ওকে বললাম, কিরে, কি অবস্থা? সবাই পরীক্ষা দেওয়ার আগেই বলে A+ পাবো, তুই কি পাবি? ও দিশেহারা একটা ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। আমি পিচ্চির চেহারা দেখে হেসে ফেললাম। বললাম, ভয় পাস না। আমি আছি না? ও বলল, তুই থেকে আমার কি লাভ? পরীক্ষা তো আমাকে একা দিতে হবে। নাকি?

আমি ওকে বললাম, ঠিক। তোকে একাই দিতে হবে। এই কথাটা জেনো মনে থাকে। সবাই প্রশ্ন খোঁজে, এর ওর দেখে লেখে। নকল করে। তুই কিন্তু এই কাজ গুলা করবি না। ও বলল, না পারলেও দেখবো না? আমি বললাম, না দেখবি না। নিজে যা পারবি, তাই দিবি। তোর পাশে হয়তো ভালো কোন ছাত্র ছাত্রি থাকবে, অনেক বেশি পারবে, কিন্তু তুই যদি ওকে বলিস, আমাকে একটু দেখাও তো! তাহলে তো তুই ওর কাছে ছোট হয়ে গেলি। বল, তুই কি কারও কাছে ছোট হতে চাস? ও আমতা আমতা করতে লাগলো।

SSC পরীক্ষায় ও 4.36 (সঠিক মনে নাই) পেয়েছিল। আমি সবার আগে খুশি হয়ে ওকে ৩০০ টাকা দিয়েছিলাম। সেই বার যাকেই বলি, সেই বলে A+ পেয়েছে। যারা A+ পেয়েছিলো, আমি জানিনা কত জন নকল করে আর প্রশ্ন কিনে পেছিল। কিন্তু আমি জানি, আমার বোন যে রেজাল্ট করেছিল, তার যা মেধা, সে তাই পেয়েছে। তার রেজাল্টে সে ছাড়া আর কারও অবদান নাই।

ও রেজাল্টের পরে আমাকে বলল, ভাইয়ারে, খুবি খারাপ রেজাল্ট করেছি তাই না? আমি বললাম, কে বলল? রেজাল্টের খারাপ বা ভালো হয় না। রেজাল্ট মানে মেধা যাচাই। তোর যে মেধা তুই তাই করেছিস। আরেক জনের মেধা চুরি করে সেটা নিজের বলে চালিয়ে দেয়ার চেয়ে সৎ থেকে নিজেকে যাচাই করা ভালো না? ও বলল, কি বললি, কিছুই তো বুঝলাম না। আমি হাসলাম, আর বললাম, অনেক উচু শিক্ষিত বাবা-মা ই বোঝে না, তুই কিভাবে বুঝবি বল?

মানুষ হিসেবে পরিচয় পাওয়ার জন্য মনে হয় মেরুদণ্ড জিনিষটার খুব বেশি দরকার। মেরুদণ্ড গরুর ও থাকে মানুষের ও থাকে, তাহলে তফাৎ? তফাৎ এখানেই, গরুর মেরুদণ্ড তৈরি হাড্ডি দিয়ে, আর মানুষের মেরুদণ্ড তৈরি আত্মসম্মান দিয়ে।

যে বাবা-মা চাইবে তার সন্তানটা গরু নয়, মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক, তারা আর জাই করুক, আরেকজনের বাচ্চা কি ফলাফল করল, তার উপর নির্ভর করে নিজের বাচ্চাকে মাপবে না। লাগিয়ে দিবেনা race এ। বরং তাকে সাহায্য করবে সঠিক ভাবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্য। বলবে, ও A+ পেয়েছে তুমি পাও নি, তাতে কি? আমরা তো জানি, তুমি অনেক পড়াশুনা করেছো। চেষ্টা কর, ইন্সা আল্লাহ আল্লাহ তোমার সহায় হবে। নিশ্চই একদিন না একদিন তুমি ভালো করবে। :) আর এতো ভেঙ্গে পড়ছ কেন? আমরা আছি না? সব সময় মনে রাখবা, ভালো ছাত্র-ছাত্রির চেয়ে একজন ভালো মানুষ অনেক বেশি গুরত্তপূর্ণ

আমি জানিনা, এমন বাবা-মা কেউ পেয়েছিলো, বা পেয়েছে কি না? আমি গর্বের সাথে বলতে পারি আমি পেয়েছি। এই নিয়ে কোন গর্ববোধ আমার নাই। আছে আফসোস, কারন অনেকেই পায়না। যদি পেত তাহলে facebook এর যে পেজে প্রশ্ন ফাঁস করে দেয়া হয়, সেখানে বাবা-মার বয়সী কারও লাইক থাকতো না।

সকল HSC পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভ কামনা। :) আল্লাহ সব সময় সৎ মানুষের পাশে ছিলেন, এবং থাকবেন। রেজাল্টই সব নয়। জীবনে রেজাল্টের বাইরেও অনেক কিছুই আছে। যদি তুমি সৎ থাকো, তাহলে দেখবা, জীবন তোমাকে নিরাশ করবে না। :)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২৯

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: শুভ কামনা আপনার বোনের জন্য।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৩৯

অন্তহীন পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:১৮

নাফিজ মেহরাব বলেছেন: ভাল লিখেছেন

৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:২৫

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আশা করি আপনার ভাবনা সবসময়ই এমন থাকবে... :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.