নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পকেটে কিছু খুচরো স্বপ্ন নিয়ে নিজেকে জানার চেষ্টায় আছি। মাঝে মাঝে শব্দ দিয়ে দাগাদাগি করি। অসামাজিক।
.
যখন আমি অসুস্থ বিছানায় শুয়ে থাকি চুপচাপ, নিজেকে অন্ধকার ঘরের অন্যপ্রান্তে বসে থাকা টেবিলের মতো মনে হয়। সস্তা অথচ পুরু একটা কাঠের টেবিল, এখন তার তেমন কোনো ব্যবহার নেই, কাজে আসে না। কয়েকটি অর্ধপুরনো বই, একটি জলহীন জলের গ্লাস, অপরিচ্ছন্ন মশার কয়েল- এগুলো মাথায় নিয়ে বসে থাকাটাই যেন তার এখনকার জীবনের স্বার্থকতা।
অনেকদিন পর বিছানার পাশে মৃত্যুভয় এসে মাথায় হাত বুলিয়ে গেলো। ভয় নয়, একটা ভালোলাগায় আচ্ছন্ন হলাম- বেঁচে আছি। টেবিলটাও কি আমার মতো মৃত্যুভয় নিয়ে বেঁচে আছে? একটা কাঠপোকা তার শরীর খুঁড়ে যাচ্ছে কবে থেকে। অথচ মৃত্যুভয় নেই দেখে টেবিলটা জানে না- সে বেঁচে আছে।
একসময় মৃত্যুকে ভয় পেতাম। এখন আর পাচ্ছি না দেখে ভয় লাগে। এবার বুঝি সবই হারালাম।
মৃত্যুশয্যায় শুয়ে শুয়ে এসব ভাবতে একধরণের হাহাকার হয়। সেই হাহাকারের শব্দ প্রতিধ্বনির মতো, একবার শুনলে বারবার শুনতে ইচ্ছা করে। আর কে না জানে- মৃত্যুর আগের প্রতিটা শয্যাই একেকটি মৃত্যুশয্যা
.
তার এপিটাফে কি লেখা থাকবে, তা নিয়ে সারাসন্ধ্যা সে ভেবেছিলো।
এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। চট করে সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব না। তাই সে বেশ সময় নিয়ে ভাবতে চাইছিলো। খুব সুন্দর কিছু লেখা থাকা উচিৎ তার শেষ স্মৃতিফলকে। এটাই তার শেষ জীবন্ত চাওয়া। অথচ এই অন্তিম সময়ে কিছুই মাথায় আসছে না।
ভাবতে ভাবতে তার চুল ছেঁড়ার মতো অবস্থা। একসময় জ্বরের ঘোরে তার চোখ হলো টকটকে আর মাথার দপদপ করা শিরা বেয়ে কয়েকটা এলোমেলো বাক্য নেমে এলো যেন।
'আসতে হবে বলে এসেছিলাম। কিন্তু বিদায়ের উপর হাত ছিলো না। তবু বিদায় নিতে পেরে আনন্দিত ও নিজের অকৃতজ্ঞতার কথা ভেবে দুঃখিত।'
বাহ। সুন্দরতো। সে মনে মনে একটা তৃপ্তি অনুভব করে।
অথচ আজ তার এপিটাফটা বড্ড সাধারণ- নাম আর জন্ম-মৃত্যু বাদে কিছু লেখা নেই। ঐ রাতে মৃত্যুর আগে এপিটাফের কথাগুলো সে কাউকে বলে যেতে পারেনি বলে তার সর্বশেষ সঙ্গী শূন্যতাটুকুই তার ফলকের গায়ে অনাদর ও গভীর মমতায় লেপ্টে থাকে।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৭
ইমরান নিলয় বলেছেন: অনেকদিন পর আপনাকে দেখলাম। আপনার গল্পও দেখি না, ফেবুতেও দেখি না। ভালো আছেন নিশ্চয়ই।
দেড়মাস গৃহবন্দী থেকে জন্ডিস কাটিয়ে উঠলাম মাত্র। তাই ভালো আছি না বললে অন্যায় হবে।
দিনশেষে আসলে আমরা সবাই নিসঙ্গই। পরিবারবেষ্টিত হয়ে যে বৃদ্ধ লোকটি এইমাত্র মারা গেলো সে কি তার কথাটি বলে যেতে পারলো নিশ্চিত?
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩
ডি মুন বলেছেন:
একসময় মৃত্যুকে ভয় পেতাম। এখন আর পাচ্ছি না দেখে ভয় লাগে। এবার বুঝি সবই হারালাম।
---- চমৎকার।
নিজের এপিটাফের কথাটা পর্যন্ত কাউকে বলে যেত পারল না লোকটা। এতটাই নিসংগ ছিল সে।
ভালো লাগল আপনার লেখা। কেমন আছেন ইমরান?