নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইমরোজ সুমন

আমি একজন নাবিক ।

ইমরোজ সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেরিন প্রজাতি !!!

০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩০

ভাই আপনি কি করেন ??
আমি একটু ঠাট দিয়া বলি "মেরিনার । ইউ নো ; ওশেন গোয়িং শিপ , আমি ওখানে কাজ করি । "
ও আচ্ছা আপনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ।
আমি বলি " না !না ! আমি নেভিগেশন করি । আমি মেরিন অফিসার । "
ও আচ্ছা আপনি মেরিন নেভিগেশন ইঞ্জিনিয়ার ।
আমি শেষমেশ হাল ছেড়ে দিয়ে মাথা এমন ভাবে নাড়াই যার মানে হ্যাঁ কিংবা না ।।
ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ার প্রফেশনের প্রতি আমাদের মুগ্ধতা প্রায় ৫০ বছরের । মনে আছে কলেজে থাকতে বুয়েটে পড়া কোন বড় ভাই দেখলে এত ফিদা হয়ে যেতাম ; পারলে পায়ে পড়া পানি খাই । মা কথায় কথায় উদাহরণ দিতেন অমুকের ছেলে ডি এম সি পড়ে তমুকের ছেলে বুয়েটে । তাই মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পরিচিত হতে খুব খারাপ লাগে না ।

মেরিন প্রফেশনের প্রতি আমাদের বেশীর ভাগের ধারনাটাই ক্যামন সেকেলে এবং ভাসা ভাসা ।
আমার নানু আমাকে প্রায়ই জিজ্ঞেস করতেন " আচ্ছা দিনে না হয় জাহাজে থাকস বুঝলাম ; কিন্তু রাতে কই থাকস ?"
আমার মা এখনও ভাবে " জাহাজে আমার সময় কাটে কিভাবে ?? "
বন্ধুরা চোখ টিপে বলে হুম্ম পোর্টে পোর্টে সানি লিওন । আচ্ছা তোরা কি পানি খাস না ?? সারাদিন কি লাল পানি ????
আমার বউয়ের বান্ধবী দেখা হলেই বউকে বলে "তার আত্মীয় অমুক খালাসী ভাই একটা ৪২০ _মানে... আমার স্ক্রু টাইট দিয়ে রাখতে ??? "

মাঝে মাঝে ভাবি সকলের উলাউঠা ধারনা দূর করতে মেরিনার প্রফেশন নিয়ে একটা ইনসাইক্লোপিডীয়া লিখে ফেলি । সেখানে থাকবে মারকেন্টাইল মেরিন প্রফেশনের তিনটি বিভাগ ডেক / ইঞ্জিন / ক্যাটারিং এর কথা ।
ডেক প্রজাতিরা হয় মেরিন অফিসার আর ইঞ্জিনিয়ার রা হয় মেরিন ইঞ্জিনিয়ার । ইঞ্জিনের প্রধান চীফ ইঞ্জিনিয়ার । ডেকের প্রধান চীফ অফিসার । তার অধীনেই ক্যাটারিং থাকে আর ক্যাটারিং এর ইনচার্জ চিফ স্টুয়ার্ড অথবা চীফ কুক । আর জাহাজের গৃহ কর্তা কে আমরা বলি মাষ্টার; যাকে ক্যাপ্টেন নামে ডাকা হয় ।

ওঁ হ্যাঁ !! জাহাজ দিনে রাতে সবসময়ই চলে । মাঝ সাগরে রাতে আর কই যামু ?? থাকার জন্য ২৫-৩০ জনের হিসেবে একটা ফার্স্ট ক্লাস আকোমোডেশনের ব্যাবস্থা আছে ।
এখানে কাজের বিনিময়ে খাদ্য । তাই সময় কিভাবে কাটে তা ভাবা অর্থহীন । নরমাল ডিউটি দিনে ১০-১২ ঘণ্টা ; পোর্টে আসলে কোন হিসাব নাই । আরেকটা কথা সানি লিওন তো দুরের কথা মাদাম তেরেসার দিকেও তাকানোর সময় বা সুযোগ নাই । বেশীর ভাগ মেরিনাররাই লোফর পোলাদের ভাষায় কুদ্দুস জীবন কাটায় । এবং এরা পরিবারের প্রতি নিবেদিত এক গৃহপালিত দুপেয়ে জীব।
আহা! লাল পানি এখন শুধু জাহাজের জিরো এলকোহল পলিসির বইয়েই পাওয়া যায় ।

আরও অনেক অনেক কিছু ভেঙ্গে বলতে ইচ্ছে করছে । কিন্তু পরক্ষণেই ভাবি কি দরকার? রহস্যই থাকুক না !!! প্রজাতি হিসাবে
আমরা আসলেই একটা রং বাজ আইটেম। অন্তর্মুখী ! ক্ষতি কি !!

হয় যদি বদনাম হোক আরো ,
আমরা তো কখনই ছিলাম না কারো !!!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৫ রাত ১২:৪৪

রক্ষনশীল বিতার্কিক বলেছেন: হা হা। ভালো লাগল।

০২ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

ইমরোজ সুমন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।

২| ০২ রা জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০

অব জার ভার বলেছেন: আচ্ছা ভাই, আপনারা কি "রাইম অফ দি এইনশেন্ট মেরিনার" চর্চা করেন?

০২ রা জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৯

ইমরোজ সুমন বলেছেন: রাইম অফ দি এইনশেন্ট মেরিনার" চর্চা বলতে আপনি ঠিক কি বুঝিয়েছেন , আমি টিউব লাইট তা ধরতে পারছি না । তবে জাহাজে কোন পাখি কেই কখনও শিকার করা হয় না । খাবার দেয়া হয় । অতিথি পাখির ক্ষতি হলে জাহাজের অমঙ্গল হবে- এই কুসংস্কারটা খালসীরা এখনও মানে ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.