নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I n c o g n i t o

যতোবার আমি শান্তি খুঁজেছি, ঠিক ততোবার আমার মাথায় শুধু একটি চিন্তাই এসেছে। সেটা হচ্ছে একটা ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথার খুলিটা ফুটো করে দেওয়ার চিন্তা।

ইনকগনিটো

যতোবার আমি শান্তি খুঁজেছি, ততোবার শুধুমাত্র একটা চিন্তাই আমার মাথায় এসেছে। সেটা হচ্ছে একটি ড্রিল মেশিন নিয়ে নিজের মাথার খুলিটা ফুটো করে দেওয়ার চিন্তা।

ইনকগনিটো › বিস্তারিত পোস্টঃ

।।--একজন শিল্পী--।।

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪৮




অফিসে যাবে না?
আজ থাক। যেতে ইচ্ছা করছে না।
কিম, তুমি কিন্তু ইদানীং খুব বেশি কাজ ফাকি দিচ্ছো।
কই বেশি ফাঁকি দিলাম?
এই যে, গত পরশু না যেন তার আগের দিন গেলে না। তার সপ্তাহখানেক আগেও কয়দিন যাও নি।
আহ! শরীর ভালো না লাগলে কি করবো? আর আগামীকাল তো আবার যাবো।
শরীর খারাপ নাকি? কি হয়েছে? জ্বর? কই দেখি তো।
না জ্বর না। মাথা ব্যাথা। ও কিছু না। ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে।
আচ্ছা ঠিক আছে, বিশ্রাম নাও।

যাকে ঘিরে আসলে গল্পটা আবর্তিত সেই মানুষটি, যার নাম কি না কিম, এখন বিশ্রামরত। একটু আগেই সে তার প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে খুব সুন্দর করে মিথ্যা একটা অজুহাত দাড় করালো, যাতে তার কাজে না যেতে হয়। এই মুহূর্তে সে বিছানায় শুয়ে আছে, যদিও তার শুয়ে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই, বরং তার মন এখন অন্য কিছু চাচ্ছে; জিনিসটা খুবই হাস্যকর, কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে- হাস্যকর জিনিসও অনেক সময় সত্যি হয়।

তার আগে কিমের ব্যক্তিসত্ত্বার কিছুটা পরিচয় তুলে ধরা যাক। মানুষ হিসেবে কিম অত্যন্ত সাধারণ মানের; হ্যা, কারণ এমন কোন বিশেষ কিংবা আলাদা গুণাবলী তার মাঝে নেই অথবা ধরা পড়ে নি, যার কারণে তাকে আলাদা কোন বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায়। সে একটি অফিসে চাকরি করে, বলা চলে চাকরিটা বেশ ভালো, অন্তত তার বন্ধু বান্ধবদের চাকরির তুলনায় সেটা দাবী করলে কেউ বোধহয় অস্বীকার করতে পারবে না। দীর্ঘদিন ধরে এই অফিসের সাথেই সম্পৃক্ত আছে, কাজের ব্যাপারেও সে বেশ নিষ্ঠাবান, তার কাজের প্রতি তার বস সন্তুষ্ট ছিলো, এবং হয়তো এখনও আছে। সে স্বল্পভাষী, একটু চাপা স্বভাবের, তবে খুব কাছের মানুষজনের সাথে সে ভালোই কথাবার্তা বলে। তার স্ত্রী ডরোথি, যার সাথে বিয়ে হয়েছে বেশিদিন হয় নি, দুই বছর তিন মাস, একজন গুণবতী রমণী। দেখতে সে মোটামুটি সুন্দরী, তার লম্বা চুল সে যখন উড়িয়ে দেয় বাতাসে, তখন কিমের খুব ভালো লাগে। সে বেশ উচ্ছল, প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর, বলা যায় কিমের ব্যক্তিগত চাপা স্বভাবের ঠিক উল্টোটা, ঘরে এবং বাইরে দুই জায়গাতেই সে এই কারণে তুমুল জনপ্রিয়। মাঝে মাঝেই কিমের বাসায় তার পুরনো বন্ধুরা আড্ডা দিতে আসে, সস্ত্রীক; এবং অনেক সময় আড্ডা এতোটাই জমে উঠে, যে তাদের আর ফেরত যেতে ইচ্ছা করে না। ডরোথির অনেকগুলো গুণের মধ্যে একটি হচ্ছে-সে খুব ভালো রাঁধতে পারে। সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় যখন আড্ডা শেষে ওদের বাসায় ডিনার করতে বসে বন্ধু-বান্ধবরা, বসে বারবার প্রশংসাসূচক বাক্য ছুড়ে দেয়, এমন একদিনও নেই; তারা প্রশংসা করতে ছাড়ে নি। এমনকি স্ত্রীর এই গুণে মুগ্ধ কিম নিজেও, এতোটাই, যে সে নিজেই এখন স্ত্রীর কাছে রান্না শিখছে। আজও কিমের অফিসে না যাওয়ার যে কারণ, যেটা আগেই বলা হয়েছে- হাস্যকর; সেটা আর কিছুই না, ডরোথির কাছ থেকে রান্না শেখা। বিশ্রামরত কিমকে হয়তো আরেকটু পরেই আবিস্কার করা যাবে রান্নাঘরে- তার স্ত্রীর পাশে, নতুন কোনো রান্না শেখার আগ্রহে।

তার এই আগ্রহ তৈরি হয়েছে অবশ্য বেশিদিন হয় নি। নেহায়েত কথাচ্ছলে, কিংবা দুষ্টুমির কারণে- যেটাই হোক, সেটা অবশ্যই তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিংবা উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছিলো না। এমনকি সেটা কোনো প্রয়োজনের তাগিদেও নয়, এমন যদি হতো, ডরোথি নিজেও চাকরি বাকরি করে, তা হলে কিমকে হয়ত পেট বাঁচানোর দায়ে রান্না শিখতে হতো নিজের তাগিদে। কিন্তু ডরোথি একজন পুরদস্তুর পতিব্রতা গৃহিণী, যার আসলে সংসার এর বাইরে অন্য কোনো পৃথিবী নেই, সে আসলে তার মায়ের কাছ থেকে এটাই শিখে এসেছে, যে সংসার কিভাবে করতে হয়। কাজেই রান্নার পিছে কিমের এই আগ্রহ তৈরি হওয়াটা নিতান্তই একটা কাকতালীয় ঘটনা অথবা একটি উদ্ভট ইচ্ছার একটি পরিণতি হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। ডিনার টেবিলে বন্ধুবান্ধবদের সাথে হাসি ঠাট্টা এবং আড্ডার এক পর্যায়ে সে বলেই বসেছিলো- রান্না করা আসলে তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়। আর ডরোথিও কথাটা মাটিতে পড়ার আগেই লুফে নিয়ে কিমকে আসলে একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলো। তবে একথা ঠিক, যে, ডরোথি পুরো ব্যাপারটাই বেশ ভালোভাবে উপভোগ করেছে, আসলে বিবাহিত জীবনে এরকম ছোটখাটো জিনিসও অন্যরকম একটা সুখ এনে দিতে পারে।

প্রথমে ছোটখাটো রান্না, যেগুলো এক অর্থে কমবেশি সবাই পারে সেগুলো; যেমন-বিভিন্ন নুডুলস, স্ট্যু অথবা স্যুপ তৈরি করা, শিখতে লাগলো কিম। ডরোথি অবশ্য একজন খুব ভালো ইনসট্রাক্টর, ধৈর্য ধরে আস্তে আস্তে কিমকে শেখার ব্যাপারে সাহায্য করলো সে। দেখা গেলো, রান্নার ব্যাপারে কিম খুবই পারদর্শী, এমনকি তিন দিনের মাথাতেই ডরোথির তৈরি স্যুপ এর চেয়ে ভালো স্যুপ তৈরি করে ফেললো সে।

চমৎকার! এতো অল্প সময়ে! তুমি তো দেখছি একজন রান্নার ব্যাপারে বেশ এক্সপার্ট! টিপ্পনী কাটে ডরোথি। আগে কারো কাছ থেকে শিখেছিলে নাকি?

তবে স্ত্রীর টিপ্পনী কিম পাত্তা দেয় না। বরং তার প্রশংসাসূচক বাক্য কিমের আগ্রহ এবং আনন্দ, দুটোই বাড়িয়ে দেয়। এমনকি তার বন্ধু-বান্ধবরাও তাকে বেশ উৎসাহ দিলো। ক্রমে ক্রমে সে আবিস্কার করে, রন্ধ্রণ আসলে একটা শিল্প এবং অধিকাংশ মানুষই এটা জানে না, তারা ভাবে রান্না করা হয় শুধুমাত্র খাওয়ার জন্য অথবা বড় পরিসরে বললে বলা যায়- জীবনধারণের জন্য। সেটি এক অর্থে অবশ্য সত্যি, কারণ জীবন বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রত্যক্ষ ভুমিকা রাখে, রন্ধ্রণ শিল্প ছাড়া এমন অন্য কোনো শিল্পও নেই। কিন্তু এটা মেনে নেওয়া কঠিন, যে এই গুরুত্বপূর্ণ এবং অসামান্য শিল্পটি আসলে সেই পরিমান মর্যাদা পায় নি কখনো যতটা তার পাওয়া উচিৎ ছিলো। এর কারণ হিসেবে কিমের কাছে যেটা মনে হয়, সেটা হচ্ছে- রন্ধ্রণশিল্পের প্রতি পুরুষ সমাজের অতিরিক্ত অনাগ্রহ এবং উদাসীনতা। যদিও পৃথিবীর যারা নামকরা রাঁধিয়ে, তাদের বেশিরভাগই পুরুষ, কিন্তু তারা সংখ্যায় কি নারীদের তুলনায় নিতান্ত নগন্য নয়? সমাজের যে কোন একজন নারী এবং একজন সাধারণ পুরুষকে যদি বিবেচনা করা হয়, এটা নির্ণয় করার জন্য যে এই শিল্পে কে কতোটা পারদর্শী, সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে নারীটি থাকবে এগিয়ে। যদিও এভাবে ভাবাটা হাস্যকর, কারণ খুব সম্ভবত এটাই স্বাভাবিক, এবং চিরকাল হয়ে এসেছে, এবং কোনো পুরুষ এটা নিয়ে অতো বেশি মাথা ঘামাবে না, কিন্তু তারপরেও এই ব্যাপারটি কিমকে বেশ পীড়া দিলো। সেটি এই কারণে নয়, যে কিম আসলে নারীদের উচ্চ অবস্থানে অধিষ্ঠিত হতে দেখতে চায় না, সেটা নিয়ে তার কোন সমস্যাই নেই, সে আসলে এই ক্ষেত্রে পুরুষদের অবস্থানটা নিয়ে চিন্তিত।

তবে ইদানীং রান্নার ব্যাপারে কিমের যে আগ্রহ, তা কিমের জীবনের বাকি সব কিছুকেই ঠেলে পিছে পাঠিয়ে দিয়েছে। রান্নাটা নেশার মতো পেয়ে বসেছে তাকে। সে আর কোন কিছুতেই আগের মতো আগ্রহ পাচ্ছে না, এবং আর পাবেও না কখনো কারণ সে আবিস্কার করেছে, এই দীর্ঘ ত্রিশ বছরের জীবনে এমন আর কিছুই ছিলো না, যেটা তাকে এতোটা পরিতৃপ্তি দিয়েছে। আসলে এটা কিম জানতো না, কিংবা এখনও হয়তো সে পুরোপুরি জানে না, তবে ধারণা করে নিতে পারে- তার জন্ম হয়েছিলো আসলে এই রন্ধ্রণ শিল্পের জন্যই। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ একজন প্রতিভাবান মানুষ, তাদের দুর্ভাগ্য, তারা আবিস্কার করতে পারে না নিজেদের সেই ক্ষেত্রটা, যে অংশে তারা সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী এবং দক্ষ, তারপরে তারা ভুল পথে পা বাড়ায়, এবং একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে জীবনের যবনিকা টানে। তাইতো নিজেকে আবিস্কার করা হচ্ছে জীবনের একটা কাকতালীয় ঘটনা, অনেকটা অন্ধকারে একটা ছোট ঢিল মেরে বড়সড় একটা সমুদ্র আবিস্কারের মতো।

কিমের মধ্যে বড়সড় একটা পরিবর্তন হলো অচিরেই। যদিও তা ডরোথির দৃষ্টি এড়ালো না। প্রথম প্রথম খুব একটা গা না করলেও ইদানীং সে বেশ বিরক্ত হলো। এটা কেমন কথা! একজন মানুষ অফিস ফেলে বসে রান্না শিখবে? কতোটা অদ্ভুত! কিম কি দিন দিন মেয়ে হয়ে যাচ্ছে?

সেদিন যেমন অসম্ভব ক্ষুদ্ধ হলো সে।

তুমি এই কারণেই অফিসে যাও নি। না?
না, তা কেন হবে?
দেখো কিম, আমার সাথে মিথ্যে কথা বলবে না।
কি আশ্চর্য! কি মিথ্যে বলেছি?
তো এখানে এলে কেন? তোমার না শরীর খারাপ?
এখন ভালো লাগছে।
কিম, তুমি কি দিন দিন মেয়ে হয়ে যাচ্ছো?
কেন?
সারাদিন রান্নাঘরে পড়ে থাকো। সমস্যা কি তোমার?
সারাদিন কই থাকি? খুব কম আসি। মাঝে মাঝে আসি। ভালো লাগে, তাই আসি। আর মেয়ে হবো কেন? রান্না কি খালি মেয়েদের জিনিস?

ভালো লাগারও তো একটা ধরণ আছে। তোমারটা কি একটু বাড়াবাড়ি রকম মনে হচ্ছে না? সব কাজ কর্ম ফেলে, অফিসে না যেয়ে তুমি আসো রান্না শিখতে! তোমার কি হয়েছে, বলো তো?
আমার কিছুই হয় নি। হয়েছে তোমার!
আমার? ডরোথি অবাক হয়ে বললো- আমার কী হবে?
সেদিন রন আর মার্থা যে আমার প্রশংসা করলো, তা তোমার সহ্য হচ্ছে না, তাই না?
কি অদ্ভুত কিম! সহ্য হবে না কেন? আমারও তো খুব ভালো লেগেছিলো ওদের কথাগুলো শুনতে।
উহু! আমি জানি। সহ্য হবেই বা কেন? এতোদিন একা একা সব প্রশংসা পেতে, এখন একটা ভাগীদার জুটে গেলো!
আশ্চর্য! তা কেন হবে? কিম দেখো, আমি তো সে কারণে বলিনি, আমি বলেছি-
মিথ্যে কথা! তুমি ঈর্ষা করো আমাকে।
বেশ। আমি আর কিছুই বলবো না। তোমার যা ভালো লাগে করো।

ডরোথি চলে গেলো।

অবশ্য ডরোথির এভাবে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াতে কিমের একপ্রকার লাভই হলো। আগে মিথ্যে অজুহাত দিয়ে বাসায় থাকতে হতো, এখন আর সেটার প্রয়োজন পড়ে না। অফিসে না গেলে ডরোথির কাছে কৈফিয়ত দিতে হয় না। তার খবরদারীও সহ্য করতে হয় না। কয়দিন ধরে ডরোথিও ভালো মন্দ তাকে কিছু বলে না। কিম আরও গভীরভাবে তার রান্না শেখার কাজে নিবিষ্ট হলো। এবার যেহেতু সাহায্য করার কেউ নেই, তাই বই পড়ে শিখতে লাগলো সবকিছু। তবে, নিজে নিজে যেটা শেখা হয়, সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় শেখা- ভাবলো কিম। একসময় বই-পত্র ঘাটাও বাদ দিয়ে দিলো সে। একজন প্রকৃত শিল্পী যা করে, সেও তাই করলো- নিজের মতো করে তৈরি করতে লাগলো বিচিত্র বিচিত্র সব রান্না, যার তুলনা আসলে অন্য কোন কিছুর সাথে দেওয়াই ঠিক না, কারণ এটা তার একেবারেই নিজস্ব ধারা। এটাই তার শিল্প।

এইভাবেই একজন পুরদস্তুর পাকা রাঁধিয়ে তে পরিনত হয়ে উঠলো সে।

তবে কারো জীবনকে আসলে যতো সহজ করে দেখা হয়, জীবন তা নয়; জীবন হচ্ছে রুপার প্রলেপ দেওয়া একখণ্ড কাঁচের মতো, যার একপাশ থেকে দেখলে শুধু যা দেখতে চাওয়া হয়, সেটাই প্রতিফলিত হয়, অন্যপাশে কী আছে- সেটা দেখা যায় না। যেমন ধরা যাক, কিমের বন্ধু রন কিংবা তার স্ত্রী মার্থার কথা; তারা কখনোই জানতো না- কিম এবং ডরোথি এর মধ্যে একটা মনোমালিন্য চলছে, তারা কখনোই বোঝে নি, তাদের কাছে মনে হয়েছে- হ্যাঁ, সবকিছু স্বাভাবিকই তো আছে। এটার জন্য অবশ্য ডরোথির ভূমিকাটাই বেশি, এবং কিমের কাছ থেকেও নিঃসন্দেহে সে একটা বড়সড় ধন্যবাদ পাবার যোগ্য কারণ, সে ই সবচেয়ে স্বাভাবিক ব্যবহার করেছে এবং বিষয়টা নিয়ে বন্ধু বান্ধবদের সামনে কখনোই কথা বলার চেষ্টা করে নি। এমনকি যখন এককালে তারই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে থাকা ব্যক্তিরা ডিনার টেবিলে তাকেই টিপ্পনী কাটা শুরু করলো, এই বলে যে- কিমের রান্নার হাত ডরোথির থেকে ভালো, তখনও সে একদম চুপ রইলো।

কিন্তু ধরুন আপনার মনের মাঝে কোনো কিছু একটা চেপে বসে আছে, সেটা মাঝে মাঝেই ঠেলে বের হয়ে আসতে চায়, গভীর রাতে কিংবা যখন কোনো শব্দ নেই তখন; আর সেটা যদি হয় কোনো প্রিয় মানুষের ব্যাপারে, তখন অনেক কষ্টে চেপে রাখতে চাইলেও হয়তো দীর্ঘশ্বাসগুলো উঠে আসে।

তুমি আর আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না। তাই না? একদিন রাতে বিছানায় শুয়ে বললো ডরোথি।
বাসি তো। কেন বাসবো না?
কিম, আমি তোমাকে বুঝি। তুমি অনেক বদলে গেছো। তুমি আর আগের মতো আমার সাথে ঘুরতে যেতে চাও না কোথাও, তোমার স্পর্শে আর আগের মতো আগ্রহ নেই। তুমি এখন কাজে যাও ঠিকই, কিন্তু আমি জানি, ওখানে তোমার মন বসে না একদম। তোমার সারাদিন মন থাকে অন্য কোথাও। তুমি ইদানীং আরও বেশি চাপা, আর গম্ভীর হয়ে গেছো। কিম, আমি তো তোমাকে সব সময় সাহায্য করতে চেয়েছি। তবু মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, তোমার কাছে আমিও অনেক দুরের কেউ। তুমি কি তোমার নিজের এই বদলে যাওয়া টের পাচ্ছো না?

কিম কি বলবে? সে নিজেও জানে, শুধুমাত্র ছোট্ট একটা ঘটনা তার জীবনকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। সে এই কারণে সন্তুষ্ট, যে সে শেষ পর্যন্ত নিজেকে হয়তো আবিস্কার করতে পেরেছে, কিন্তু এটাও সত্য- ক্রমাগত নিজেকে যতোই সে আবিস্কার করেছে, সে হয়ে উঠেছে বিষাদগ্রস্ত। এ কারনে নয়, যে তার জীবনযাপন প্রক্রিয়া বদলে গেছে, সেটা তার কাছে আসলে ভাববার মতো কোনো বিষয়ই নয়, কারণ হচ্ছে- সে একজন শিল্পী, আর একজন শিল্পী সবসময়ই বিষাদগ্রস্ত, কারন তারা জানে তারা কি সৃষ্টি করে, তারা হয়তো চায় সবার কাছ থেকে তাদের শিল্পকর্মের যথেষ্ট মূল্যায়ন হোক, কিন্তু কোন কিছুই আসলে তাদের সেই পরিমান তৃপ্তি দিতে পারে না, যাতে করে তারা নিশ্চিতভাবেই বলতে পারে- তারা শিল্পী, তারা জানে ভালোর কোনো শেষ নেই, আর এ কারণে তাদের বিষাদও দিন দিন বেড়েই চলে।

তবুও সে আসলে অপেক্ষা করছিলো একটা সুযোগের জন্য, যাতে করে সে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে, সবার সামনে নিজেকে তুলে ধরতে পারে। সেই হিসেবে তাকে একজন ভাগ্যবানও বলা চলে, কারণ ঠিক সেই মুহূর্তেই একটা রান্না প্রতিযোগিতার কথা তার কানে এলো,এবং সেটা শোনামাত্রই সে ভেতরে ভেতরে হয়ে উঠলো চরম উত্তেজিত এবং অশান্ত! সে দ্রুত প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপনটি যোগাড় করলো, এবং বার বার নিয়মাবলীগুলো পড়লো- খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে; সে দেখলো কোথাও কোনো ফাঁক আছে কি না, এবং খুব শীঘ্রই সে প্রতিযোগিতার জন্য তার নামটা পাঠিয়ে দিলো।

নিয়মাবলীতে বলা আছে- প্রতিযোগিতার জন্য কোনো নির্দিষ্ট উপকরণ নেই, প্রতিযোগী যা খুশি তাই রান্না করে পাঠাতে পারে। প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে এগারো দিনের মধ্যেই। রান্না পাঠানো যাবে এক সপ্তাহ, এবং প্রতিযোগিতার শেষ দিন হবে মূল্যায়ন, এবং ওই দিন রাতে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।

তার কাছে অবশ্য এগারো দিন বিশাল একটা সময়, আবার এক অর্থে খুবই কম, কারন এর মাঝে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে সে আসলে কি রাঁধতে যাচ্ছে! সে দুইদিন ধরে অনেক ভাবলো, কিন্তু কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে পারলো না। সময়ের সাথে সাথে সে তাই হয়ে উঠলো আরও বেশি অস্থির, সে আসলে চাইছিলো নতুন কিছু একটা করতে, সম্পূর্ণ নতুন কিছু। কিন্তু সে জানে না সেটা কি, সে ভেবেও পাচ্ছে না- কোনো কিছুই তার মনঃপুত হচ্ছে না। তার এখন সাহায্য দরকার এবং ঠিক তখনই তার আসলে তার স্ত্রীর কথা মনে হলো; হ্যাঁ, এই মুহূর্তে তার ডরোথিকে খুব প্রয়োজন, কারন একমাত্র ডরোথিই পারবে তাকে সাহায্য করতে।

ডরোথি তাকে সাহায্য করেছিলো, না করে নি, করলেও কতোটুকুই বা করেছে, কিংবা কীভাবে- সেটা এই মুহূর্তে দেখার দরকার নেই। তার চেয়ে বরং চলুন, প্রতিযোগিতার শেষ দিনটি থেকে একবার ঘুরে আসা যাক।

কিম ভেবে রেখেছিলো, রান্না পাঠানোর জন্য শেষ দিনটিই হবে উপযুক্ত, কারণ সে জানে, এটা একটা খাবার, সেটাকে যতো ভালোভাবেই সংরক্ষন করা হোক না কেন, সেটার স্বাদ কিছুটা হলেও বদলে যায়, প্রকৃত স্বাদটা থাকে, যেদিন সেটাকে রান্না করা হয়, অর্থাৎ রান্নার ঠিক পরপর। কিন্তু তারপরেও সে তার মত বদলেছিলো, এবং দুই দিন আগেই পাঠিয়েছে, সে আসলে বাড়তি এই সুবিধাটুকু নিয়ে তার কৃতিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় নি, অথবা বলা যায়, সে আসলে তার নিজের তৈরি করা রান্নাটির ব্যাপারে ছিলো অনেক আত্মবিশ্বাসী।

সে জানতো, প্রতিযোগিতার শেষদিন হবে মূল্যায়ন এবং ফলাফল ঘোষণা, একটা ছোট আমন্ত্রণপত্র দিয়ে সকল প্রতিযোগীকেই অনুরোধ করা হয়েছে রাতে সেখানে উপস্থিত থাকার জন্য, ফলাফল ঘোষণা শেষে তাদের নিয়ে একটা নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। সে আগে থেকেই মনস্থির করে রেখেছিলো- সেখানে সে যাবে; এটার জন্য সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলো, এবং সন্ধ্যা হতে না হতেই সে প্রস্তুত হয়ে পা বাড়ালো অনুষ্ঠানের পথে।

সেখানে যাওয়ার পর সে দেখলো, উপস্থিত হয়েছে আরও প্রতিযোগিরাও। হলরুমে জমকালো সাজ, উজ্জ্বল আলোকসজ্জা। একটি লম্বা টেবিলে বসে আছেন তিনজন বিচারক, তারা হাস্যজ্জল মুখে নিজেরা কথা বলাবলি করছেন, যেন এই প্রতিযোগিতাটি সফলভাবে শেষ করার মুহূর্তে অত্যন্ত আনন্দিত! তবে সবচেয়ে কঠিন কাজটি এখনও পড়ে আছে, বলা যায় মুল কাজটিই; সেটি হচ্ছে সবচেয়ে ভালো রান্নাটি খুঁজে বের করা। সেটি তারা করবেন, কারণ লম্বা টেবিলে ইতিমধ্যেই নামসহ রাখা হয়েছে প্রতিযোগিতায় আসা খাবারগুলো। একটু পরে তারা তিনজন এক এক করে সেগুলো চেখে দেখবেন, এবং তিনজনের আলাদা বিচারের পর সেটা একত্রিত করে নির্ধারণ করা হবে, কে হবে বিজয়ী।

বিচারকরা অবশেষে তাদের কাজ শুরু করলেন।

এরপর কিমের মনে হলো, সে বিচারকদের দিকে তাকিয়ে আছে অনন্তকাল ধরে, আশেপাশের হই চই, শোরগোল, কিছুই তার কানে ঢুকছে না যেন, সে এতো দূর থেকেও তার তৈরি করা খাবারের ডিশটি ঠিকই চিনে নিয়েছে, যেটা টেবিলের ডানপাশে, ঠিক শেষ ডিশটির আগে রাখা হয়েছে, নামও লিখে দেওয়া আছে- ময়ূরের মাংস। বিচারকরা এখনও সেখানে পৌঁছয় নি, তাকে আরও অপেক্ষা করতে হবে, যদিও নিজেকে খুঁজে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে ফেলে আসা ত্রিশটি বছরের কাছে এইটুকু সময়ের অপেক্ষা কিছুই না, তবুও সে হয়ে উঠলো অধৈর্য।

তারপর, তার অপেক্ষা শেষ হয়ে এলো। সে দেখলো বিচারকদের অঙ্গভঙ্গি, মন্ত্রমুগ্ধের মতোই, তাদের চোখে মুখে ফুটে ওঠা অভিব্যক্তি সে পড়তে চাইলো। যদিও সেটার খুব একটা দরকার ছিলো না, কারন আরেকটু পরেই হবে ফলাফল ঘোষণা।

নানা হিসাব নিকাশ, এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে মঞ্চে উপবিষ্ট হলেন তিনজন বিচারক। তাদের মুখ এখনও হাস্যজ্জ্বল, এবং সম্ভবত একটু বেশিই, কারণ তারা নির্ধারণ করে ফেলেছে প্রতিযোগিতার বিজয়ী। তারপরে তারা বলতে শুরু করলো, যেটা এরকম সব অনুষ্ঠানেই হয়- সব একঘেয়ে কথাবার্তা; প্রতিযোগিতার শুরুর কথা, কতো কষ্টের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতাটির শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে তারা কিংবা এরকম একটা প্রতিযোগিতা হওয়া আসলে একটা দেশের জন্য কতো বেশি প্রয়োজনীয়, এসব। তাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছিলো, তা কখনো শেষ হবে না, এবং এইভাবে চলতে চলতেই হঠাৎ করে তারা পৌঁছে গেলো বিজয়ীদের নাম ঘোষণার অংশে।

প্রতিযোগিতায় তৃতীয় বিজয়ী হয়েছেন যিনি, তিনি একজন ছোটখাটো স্বাস্থ্যবান মহিলা, তিনি তৈরি করেছিলেন বিভিন্ন ফলমূল দিয়ে একটা অসাধারণ ডেজার্ট- অসাধারন, কারন বিচারকরা তাই মনে করেন। দ্বিতীয় হয়েছেন যিনি, তিনিও একজন মহিলা, তিনি রেঁধেছেন সামুদ্রিক মাছ আর জলপাই দিয়ে একটা রান্না, সেটাও চমৎকার, দেখেই বোঝা যায়, আর প্রথম হয়েছে যে রান্নাটি- সেটার জন্য আসলে কোনো বিশেষণই পর্যাপ্ত নয়, সেটি নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর, এবং সেটি হচ্ছে- ময়ুরের মাংস!

প্রবল করতালির মাধ্যমে তাদেরকে অভিনন্দন জানানো হলো, যদিও কিম বোধহয় এগুলো কিছুই টের পায় নি, সে হারিয়ে গিয়েছিলো কিছু একটার মাঝে, এতো বড় সম্মান সে আগে কখনো পায় নি, এবং সে সম্বিৎ ফিরে পেলো, যখন সে শুনলো- কিছু বলার জন্য তাকে মঞ্চে ডাকা হচ্ছে। সে উঠে এলো।

"বন্ধুগন!" সে বলতে শুরু করলো-" আজ আমার জীবনের একটি বিশেষ দিন। সম্ভবত এর চেয়ে আনন্দের দিন আর হয় না, এবং আর হবেও না, কারন আমি আজ এখানে সম্ভবত আমার যথাযোগ্য মর্যাদা পেয়েছি। এই প্রতিযোগিতাটি আমাকে এতোই পরিপূর্ণতা দিলো যে, আমার আর কিছুই পাওয়ার দরকার নেই।"

সে একটু থামলো। তখনও উপস্থিত দর্শকরা তার দিকে চেয়ে আছে, এবং সে আবার বলতে শুরু করলো-

আমি আজ অত্যন্ত খুশি। এই কারনে নয়, যে আমার রান্নাটি প্রথম হয়েছে, বরং এই কারনে, রান্নাটি ছিলো আসলে অনেক বড় একটা মিথ্যা, এবং বিচারকরা সেটা ঘুণাক্ষরেও টের পায় নি! তারা ভেবেছে এটি আসলেই ময়ুরের মাংস; তারা বিস্মিত এবং চমৎকৃত হয়েছে এতো সুস্বাদু একটা খাবার দেখে, এবং এইখানেই আমার সাফল্য যে আমি সেটা করতে পেরেছি, এবং এই কারণে আমি আমার স্ত্রীর কাছে অনেক ঋণী। সমবেত বন্ধুগন, রান্নাটি আসলে ময়ূরের মাংস ছিলো না, ওটা ছিলো একজন মানুষের মাংস!

আর এই বাক্যটির মাধ্যমেই একজন পাকা রাঁধিয়ে পরিণত হয়ে গেলো একজন খুনিতে; একটি সাধারণ গল্প-কারো কারো কাছে যা ছিলো হাস্যকর, সেটা পরিণত হলো ভয়ংকর একটি গল্পে; উপস্থিত দর্শকেরা, যারা ছিলো অভিবাদন মুখর, তারা হয়ে উঠলো আতংকিত; ডরোথি নামের সেই তরুণী, যে কি না কিছুক্ষন আগেও গল্পটিতে ছিলো কিমের স্ত্রী- পরিনত হলো একটা খাবারে; আর সেই তিনজন বিচারক, যারা একটু আগেও হাস্যজ্জল ছিলেন, তারা পরিণত হলেন তিনটি গর্দভে।

অবশ্য তাতে কিমের কোনো ভাবান্তর হলো না, কারণ সে জেনে গেছে, সে আসলে একজন অনেক বড় শিল্পী। সে একজন রন্ধ্রণ শিল্পী।

মন্তব্য ৭৪ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৭৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন: চমৎকার !

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩৫

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:১৭

স্বপনবাজ বলেছেন: পরিসমাপ্তিতে মুগ্ধ !

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৩৭

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ।

ভালো থাকা হোক।

৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: এরকম একটা সমাপ্তি আগেই আন্দাজ করসিলাম। বেশিমাত্রায় সাইকো মুভি দেখার ফল! রেকমান্ডেড মুভি, The Cook, the Thief, His Wife & Her Lover. এইখানে এরকম ব্যাপার আছে লাস্টে।

গল্প পড়ে আনন্দ পেয়েছি।

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৬

ইনকগনিটো বলেছেন: দেখা হয়নাই, দেখা লাগবে। B-) B-)


গল্প লিখেও আনন্দ পেয়েছি। B-)) B-))

৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৯

কয়েস সামী বলেছেন: কমেন্ট করে রাখলাম। কাল সময় করে পড়তে হবে।

২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১৬

ইনকগনিটো বলেছেন: আচ্ছা।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:২৮

সরলতা বলেছেন: বীভত্‍স।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:০২

ইনকগনিটো বলেছেন: এতদিন পর আইয়া একটা শব্দ লিখসে, তাও বানানটা ভুল করসে। /:) /:)

৬| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩২

একজন আরমান বলেছেন:
ক্লাইম্যাক্স ভালো লেগেছে।
আমিও কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলাম যে কিম একজন সাইকো।

সে একজন শিল্পী, আর একজন শিল্পী সবসময়ই বিষাদগ্রস্ত।
দারুন একটা কথা।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:১৫

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, একজন আরমান।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

৭| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৪১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ৫ম +++

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭

ইনকগনিটো বলেছেন: ধইন্যা পাতা :) ভাই।

ভালো থাকা হোক,।

৮| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:২১

জাকারিয়া মুবিন বলেছেন:
টুইস্ট ভাল্লাগছে। :)

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই।


ভালো থাকবেন।

৯| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৪২

ভিয়েনাস বলেছেন: গল্পের শেষে গল্প পড়ার মজাটা লুকিয়ে আছে.....

সুন্দর :)

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৩

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, ভিয়েনাস। হ্যা, আসলে গল্পের শেষ অংশটির ভুমিকাই সবচেয়ে বেশি।

ভালো থাকবেন। :)

১০| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১১

স্বপ্নবাজ বাউন্ডুলে বলেছেন: বরাবরের মতোই দারুন গল্প।
টুইস্টটাও মারাত্মক।
+++++++

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রো।

শুভকামনা আপনার জন্য।

১১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৫:০২

মাক্স বলেছেন: বরাবরের মতই মুগ্ধ হয়েছি!!!

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:১৮

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই।

ভালো লাগলো শুনে।

১২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:০৪

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: চমৎকার। দারুণ। আর কোন বিশেষণ আপাতত মাথায় আসছেনা।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৩০

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ এবং ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন, সাথে থাকুন।

১৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:১৬

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: কালকেই পড়েছিলাম। নেটের সমস্যার কারণে কমেন্ট করতে পারছিলাম না। দারুণ লেগেছে!

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৪১

ইনকগনিটো বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইলো।

১৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৯:৩২

কয়েস সামী বলেছেন: বৈঠকী আমেজে বেশ সুন্দরভাবেই বলা হল গল্পটা। মাঝখানে বর্ণনার জন্য ধৈর্যহারা হলেও শেষে এসে টান টান উত্তেজনা অনুভব করেছি। থিমটা অন্যরকম। গল্পকারের বলার ভঙ্গি, কাহিনীর বিষয় এবং সবহিছুই বেশ ভাল লাগল। আরো গল্প চাই।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

ইনকগনিটো বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্যটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুনে ভালো লাগলো।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

১৫| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩৫

নেক্সাস বলেছেন: এক কথায় অনেক অনেক সুখপাঠ্য একটা গল্প। ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৫৭

ইনকগনিটো বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ নেক্সাস ভাই। ভালো থাকা হোক অনেক। :)

১৬| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:০৮

ইলুসন বলেছেন: চমৎকার। :) আমি অন্য কিছু চিন্তা করতেছিলাম কিন্তু এইরকম সমাপ্তি চিন্তা করি নাই। শেষ দিকে এসে অন্য রকম হয়ে গেছে পুরা গল্পটা।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১২

ইনকগনিটো বলেছেন: ধইন্যাপাতা :) :)

১৭| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:১১

ডানামনি বলেছেন: শেষটা মারাত্মক। অসাধারণ।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক।

ভালো থাকবেন।

১৮| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:১২

মেহেদী হাসান ভূঁঞা বলেছেন: অসাধারন।

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৫৪

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, ভ্রাতা।

১৯| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো লেগেছে। তবে কিমের বউ খাওয়া উচিৎ হয় নাই :|

অনেকদিন আগে এই রকম একটা গল্প পড়ছিলাম। সাকি না লাভক্রফট - কার যেন লেখা, ইয়াদ নাই। আপনার লেখাটা এই জেনরে-র অন্তর্ভুক্ত। আর মধ্যে রহস্যপত্রিকায় তো খালি এই টাইপের লেখাই পাইতাম।

আহা কি দিন গেছে! আহা!আহা!

পরবর্তী গল্প কবে?

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:০৭

ইনকগনিটো বলেছেন: রহস্যপত্রিকা তো পড়া হয় না। গল্পও পাঠানো হয় না। আপনার কাছ থেকে শুধু শুনি- এই জেনার ঐ জেনার। নিজে কিছু জানিনা :P কি যে অবস্থা!


আপনার মন্তব্যগুলা খুব আগ্রহ নিয়া পড়ি। এইরকম বিশাল বিশাল মন্তব্য ভাল্লাগে।

ধইন্যাপাতা, ভাই; পরবর্তী গল্প কবে- তার তো ঠিক নাই!

২০| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮

এরিস বলেছেন: তবে কারো জীবনকে আসলে যতো সহজ করে দেখা হয়, জীবন তা নয়; জীবন হচ্ছে রুপার প্রলেপ দেওয়া একখণ্ড কাচের মতো, যার একপাশ থেকে দেখলে শুধু যা দেখতে চাওয়া হয়, সেটাই প্রতিফলিত হয়, অন্যপাশে কি আছে- সেটা দেখা যায় না।[/sb
আসলেই তাই।
বুঝতে পারছিলাম কিম স্বাভাবিক নয়। তবে শেষমেশ ডরোথিকেই ...!!!

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১০

ইনকগনিটো বলেছেন: পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ, এরিস।


ভালো থাকবেন, শুভ কামনা রইলো। :)

২১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:২১

দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: বেশ লেগেছে, ১০ম ভাল লাগা!! :) :)

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:১৬

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। দুইটি কারনে, একটি হচ্ছে- গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট দেওয়ার জন্য, দুই- গল্পটা পড়বার জন্য।


ভালো থাকবেন।

২২| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৪৭

মামুন রশিদ বলেছেন: গল্প পড়ে আনন্দিত হয়েছি, গল্পের গভীরতায় মুগ্ধ হয়েছি ।



কিন্তু শেষ টা.. মাই গড !! :-& :-& :-&

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩১

ইনকগনিটো বলেছেন: আপনার কমেন্ট পড়েও আনন্দিত হয়েছি। B-)) B-)) B-))


ভালো থাকবেন ভাই, আর তাড়াতাড়ি ওইটার পরের পার্ট লিখেন।

২৩| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:১৬

আরজু পনি বলেছেন:

উপস! :-&

মনে হলো বিদেশী কোন গল্পের অনুবাদ!

দারুণ!!

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩৭

ইনকগনিটো বলেছেন: অনুবাদ টাইপ ফ্লেভার রাখা গেছে তাইলে! :)


ধন্যবাদ, আপু! অনেক ধন্যবাদ!

২৪| ২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১৬

বোকামন বলেছেন:










আরজুপনি বলেছেন: মনে হলো বিদেশী কোন গল্পের অনুবাদ!
আমারো তাই মনে হচ্ছিল!
ভালো হয়েছে
ধন্যবাদ

২৩ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৪২

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ , বোকামন।
ভালো থাকুন, আজীবন।

২৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৩৫

ফ্রাস্ট্রেটেড বলেছেন: কাহিনীটা সুন্দর, সেই সাথে লেখনীটাও।

ভাললাগা জানিয়ে যাওয়া ছাড়া পথ খোলা নাই :)

২৪ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:০৫

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই। শুনে ভালো লাগলো।

ভালো থাকুন। শুভকামনা।

২৬| ২৪ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৬:২৫

মুনসী১৬১২ বলেছেন: সমাপ্তি প্রেডিক্টেবল কিন্তু বর্ণনা গুণে উৎরে গেছে...সুখ পাঠ্য.....নিরীক্ষা সফল অনেকটা

২৪ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:৪০

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ।

২৭| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:১৯

সরলতা বলেছেন: =p~ =p~
মোবাইল থেকে কমেন্ট করেছিলাম ভাইয়া। একটানে পড়ছিলাম। রাত্রে তো! শেষে এসে কেমন জানি ভয় পাইসিলাম। =p~ সেইজন্য শুধু লিখেছি বীভৎস। বানান ঠিক আছে। :|
তুমি কেমন আছ? এখন আর ব্লগে আসিনা আগের মত। :) ইন্টার্নির সময় আসব। :D

২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:০২

ইনকগনিটো বলেছেন: আছি একরকম। তুমি ভালো আছো?

তুমি ইন্টার্নির সময় আসবা, আর আমার চলে যাওয়ার সময় হইছে। :)

২৮| ২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:০৭

শায়েরী বলেছেন: Valo laglo

২৭ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৪০

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ।

২৯| ২৯ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:১৭

সাদা মেঘ কালো ছায়া বলেছেন: প্রথম এ খুব সাধারন গল্প মনে হচ্ছিল। তবে বুঝতে পারতেছিলাম শেষের দিক এ এরকম কিছু একটা হবে কারন গল্পের নামটাই সেটা বলে দিচ্ছিল।

২৯ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১৪

ইনকগনিটো বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন।

৩০| ৩০ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৪২

আমিনুর রহমান বলেছেন: পরে আবার এসে পড়ে কমেন্টস করবো।

এই পোষ্টে একটু আসতে হয় যে :)

০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

ইনকগনিটো বলেছেন: একটু ব্যস্ত ছিলাম। দেরি হওয়ার জন্য দুঃখিত। দেখছি।

৩১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭

মৃত্যুঞ্জয় বলেছেন: দারুন

০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৭

আমি ইহতিব বলেছেন: ভয় পাইছি :(

তবে লেখনীতে +++, একটানা পড়ে গিয়েছি।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৩৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:১৭

বৃতি বলেছেন: আমিও প্রোফেসর শঙ্কুর সাথে একমত । কিম রান্নাবান্না করতে চায় করুক, বউকে খাওয়া উচিত হয়নি । /:)
আপনার ঝরঝরে লিখা বরাবরের মতই উপভোগ্য ।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:৩৬

ইনকগনিটো বলেছেন: B-)) B-)) B-)) ভালোবাসা দেখছেন? খেয়েই ফেলসে।


ধন্যবাদ, বৃতি। ভালো থাকা হোক। B-))

৩৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: মারাত্মক টুইস্ট! কিমের মধ্যে কিছু একটা গলদ আছে বুঝতে পারছিলাম কিন্তু সে যে সাইকো সেটা বোঝাই যায়নি। নিজের বৌকে রান্না করা! এইটা কেমন হইল?

গল্পে অনেক ভাললাগা।

আমি আপনার লেখা আগে পড়িনি! কেন যে চোখে পড়েনি কে জানে!অসাধারন লিখেন আপনি। আপনাকে অনুসরনে নিলাম। পরে সময় করে আপনার আগের লেখাগুলো পড়ব। ভাল থাকুন।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:১০

ইনকগনিটো বলেছেন: শুনে ভালো লাগলো। আপনিও অনেক ভালো থাকুন।


শুভকামনা।

৩৫| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৬

শাপতাহিন বলেছেন: অনেক বেশি সুন্দর হইসে।

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:০৯

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৪১

অদৃশ্য বলেছেন:




ইনকগনিটো

লিখাটি পড়ে খুবই মজা পেয়েছি... চমৎকার গল্প...

তবে কিছু কিছু যায়গাতে বর্ননাগুলো কিছুটা বেশি মনে হলো আমার... ছোট গল্পে বাড়তি কিছু না থাকলেই ভালো হয়...

শুভকামনা....

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, অদৃশ্য ভাই।

লেখাটি ঢিমে তালের। অনেকটা তৃতীয় চোখ দিয়ে একটা গল্প দেখার মতো।

অনেক ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য। ভালো থাকবেন।

৩৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০৫

সোহাগ সকাল বলেছেন: আবারও পড়লাম।

আবারও মুগ্ধ হলাম।।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:০৩

ইনকগনিটো বলেছেন: ধন্যবাদ, সোহাগ।

ভালো থাকা হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.