নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন যদি মানুষের উপকারে না আসে, সেই জীবনের মূল্য নেই। সবার মাঝে বিলিন হতে পারাই জীবনের স্বার্থকতা। কান্না নিজের জন্য আর হাসি সবার জন্য।

ইসমাঈল আযহার

মেইল[email protected], স্বপ্ন দেখি শুদ্ধ মানুষ হওয়ার, সোনার বাংলা গড়ার। শখ, লেখালেখি, ঘুরে বেড়ানো। সঙ্গি বই। ভালবাসি মাকে, নিজেকে, আমার বাবাকে।

ইসমাঈল আযহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রেন সফর

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০৫



ট্রেনে চড়তে খুব ভাল লাগে আমার। মনে হয় লম্বা একটা সাপের পেটের ভেতর বসে আছি। ট্রেনের আবিস্কার হয়ত সাপ থেকেই হয়েছে। সারাধণ পরিবারের মেয়ে, অতো পড়াশুনো নেই, আসলটা বলতে পারবো না। আমাদের মতো অনপড়রা শুধু ধারণা করে, ধারণা থেকেই অনেককিছু বলে ফেলে। কখনও তাদের ধারণা সত্যি হয়, কখনও হয় না। আমি জানিনা আমার ধারণা সত্যি নাকি মিথ্যে।
ট্রেনের একটা কেবিনে চার জন থাকার কথা, এই মুহূর্তে শুধু আমি আছি। ঘুম পাচ্ছে খুব। কিন্তু ভয় লাগে যদি ব্যাগ লুট হয়ে যায়। সেবার কক্সবাজার যাওয়ার সময় আমার সমস্তকিছু চুরি গেল। খুব বিপাকে পড়েছিলাম। পুরো আনন্দ মাটি হল। এবার আমি ঝগড়া করে বেরিয়েছি, কোথায় যাব, কী করবো কিছুই জানিনা। টিকিট না কেটেই উঠে পড়েছি। একটা কপট বুদ্ধি বার বার মাথায় চাপছে। টিটি যদি অবিবাহিত হয় তার ঘারে ঝুলে পড়বো, বিবাহিত হলেও প্রেমের অভিনয় করা যাবে। তাতে ভাড়ার ঝামেলা দিব্যি চুকে যাবে। আমার বুদ্ধি কতটুকু কাজে দিবে বলতে পারি না। যদি কাজে লাগে ভাল হবে। বাংলাদেশটা ঘুরে দেখার ভাল একটা সুযোগ এই মুহূর্তে আমার হাতের নাগালে। গলা সুকিয়ে আসছে। কাছে পানি নেই। খোলা জানালা দিয়ে ধূসর মাঠ, গাছপালা, সবুজ ছড়ানো ধান ক্ষেত চোখে পড়ছে। কোথাও রাস্তার পাশে পড়ন্ত বিকেলে মেয়েছেলেরা কানামাছি, গল্লাছুট, আরো নানান ধরণের গ্রাম্য খেলায় মেতেছে। এসব দেখতে দেখতে অনেকটা পথ কেটে গেল। এক সময় সন্ধ্যা নেমে এল। গরু, ছাগল, ভ্যাড়া ইত্যাদি জন্তু বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। গালা বাড়িয়ে উড়ে যাচ্ছে সাদা বক। ক্ষুদ্র পাখিরা দল বেঁধে ফিরছে নীড়ে। পানির পিপাসা তৃষ্ণা একসঙ্গে দুটোই পেলে আমার। এক বার ভাবলাম নেমে পড়ব সামনের স্টিশনে। আর কত দূর স্টিশনটা? কেউ একজনের কাছে শোনা দরকার। কার কাছে শুনি, কেউ তো নেই পাশে।
পরনে সাদা পোশাক, বেশ লম্বা, সুঠাম দেহ, হাতে পানির একটা বোতল, একে আমি চিনি, নাম জানিনা তবে তার একটা নাম আমার জানা- টিটি। টিটি নামে আমার খুব হাসি পায়। নিজের অজান্তেই হেসে ফেলি, এখন হাসবার সময় নয়, তবু হাসি পাচ্ছে খুব। হাসিটা অনেক কষ্টে ঠোঁটের তলে চাপা দিই। আপনার টিকেট দিন। ভদ্রতার ছাপ পুরো বাক্যটি জুড়ে। আমি বোতলটির দিকে হাত বাড়াই। টিটি বোতল সরিয়ে নেয়। আজব তো পানির তৃষ্ণা পেয়েছে খুব, একটু পানি দিন না। এতে পানি নেই, টিটির স্পষ্ট উত্তর। তো কী আছে ওতে? দিন, আমি পান করব। না বরং আপনি একটু অপেক্ষা করুন, আমি পানি নিয়ে আসছি। আমি ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করি নি, টিটি আমার জন্য পানির জোগাড় করতে ছুটে যাবে। এটা হয়ত আমার রুপের গুণে। যাইহোক বোতলটা রেখে গেল টিটি। তৃষ্ণায় কাতর আমি বাংলা মদ পান করে ফেললাম ডকঢক করে। টিটি এল মিনিট দশেক পর। তখন আমার প্রচন্ড মাথা ঘুরছে। পানির পিপাসা নিবারণ হয়েছে অনেকটা। খুব শক্ত করে ধরেছি জানালার শিক। মনে হচ্ছে পড়ে যাব। আমার চুলগুলো এলোমেলো, বাড়ি থেকে আসবার সময় একটুও পরিপাটি হতে পারিনি। এলো চুলে আমাকে হয়ত পাগল পাগল লাগছে। টিটি অমন করে কী দেখছে আমার দিকে চেয়ে? সে কী ভাবছে কে জানে। মেয়েদের দেখে তো ছেলেরা কতকিছুই না ভাবে, সব কি আর আমল দিতে হয়?? না, হয় না। ছেলেরা কী এমন পাগল হওয়ার জন্য নিশা করে? হয়তবা করতেও পারে। ছেলেদের যদি আমাদের মতো বড় চুল থাকতো, নিশ্চয় খুব বাজে তেখাতে, যেমন আমাকে লাগছে। আমার পাশে একটা দেহের অনুভব হল। টিটি চলে গেছে। যাক বাবা বাঁচা গেল। হতচ্ছাড়া বেটা দূর হয়েছে এটাই অনেক। আপনার নাম কী?? কে এই লোকটা? যে আমার নাম জিজ্ঞেস করছে। এখন নাম জিজ্ঞস করছে, একটু পর হয়ত শুনবে বিবাহিত না অবিবাহিত। পুরুষদের কাছে হয়ত নারীদের এটা একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমার কণ্ঠ বদলে গেছে। অনেচা লাগছে নিজের কাছেই। এই অচেনা কণ্ঠ দিয়েই বললাম, দিতা। দিতা আমার নাম। এই অদ্ভুত নামটা রেখেছিল আমার নানু। উনি মারা গেছেন আজ ন'দিন। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতে পারিনি। ট্রেন চলছে না থেমে আছে বুঝতে পারছি না। লোকটা আমার পাশে এখনো বসে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আচ্ছা!

বেশ বাউন্ডেলে কাহিনী মনে হচ্ছে!!!

চলুক তবে

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৫

ইসমাঈল আযহার বলেছেন: বাউন্ডেলে, সে আবার কী?
ধন্যবাদ

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: ট্রেন যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে ভারত যাবেন। টানা দুই তিন দিন। কলকাতা থেকে তামিলনাড়ু বা অন্য কোথাও যেতে অনেক সময় লাগে। আমাদের দেশে সব্বোর্চ ৫/৬ ঘন্টা লাগে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১০:৫২

ইসমাঈল আযহার বলেছেন: দাদারা ভিসা দেয় না, তো যাব কী করে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.