নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসতিয়াক অয়নের ব্লগ

হাসন রাজায় কয়, আমি কিছু নয় রে আমি কিছু নয় !

ইসতিয়াক অয়ন

আমি কে ? কেউ না ...

ইসতিয়াক অয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিমুর পাশে তিনটি ছায়াঃ পর্ব (৪)

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৪৬

২.

ঘুম থেকে উঠে চমকে গেলাম । ভূমিকম্প হচ্ছে নাকি ? আমার খাটসুদ্ধ কাঁপছে । কাঁপাকাঁপির মাত্রা এতোটাই বেশি যে আমার হাত-পা’ও পারকিনসন রোগীদের মত কাঁপছে । পিঠ কাঁপছে সবচেয়ে বেশি । চোখ খুলে ভীড়মি খেয়ে গেলাম । সহজে আমি ভীড়মি খাই না । ভীড়মি খাওয়ার মতন ব্যাপার ঘটেছে । যেই খাটে আমি শুয়ে আছি তা হরর ছবির দৃশ্যের মত আপনা-আপনি কাঁপছে । স্বপ্নদৃশ্য কিনা কে জানে ।



আমি ধীরে-সুস্থ্যে চারপাশে তাকালাম । যে ঘর আমি দেখছি সেটা আমার কাছে পুরোপুরি অচেনা এবং ভৌতিক । পুরো ঘরটা প্রচন্ড ঠান্ডা । ঘর না বলে গুহা বলাটাই বোধহয় ভালো । গুহার মত পাথুরে দেয়াল । স্বপ্নদৃশ্য বোধহয় না । স্বপ্নে এতো নিঁখুতভাবে পর্যবেক্ষন করা যায় না । একটা অদ্ভুত তীব্র গন্ধও নাকে এসে লাগছে । গন্ধটা যতটা না তীব্র, তারচে অনেক বেশি মিষ্টি । সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমার খাটের পাশের ডুকো-পেইন্টেড ডিভানে পিলোর উপরে অপ্সরী-মত দেখতে একটি মেয়ে শুয়ে আছে । তার চোখমুখ মোমের মত শাদা । গায়ের ওপর শাদা রঙের একটা শাল কাঁথার মত করে জড়ানো । শাদা শাল, ডিভানের হালকা সোনালী রঙের ঔজ্জল্য- সবকিছুই তার গায়ের রঙের কাছে ফিকে লাগছে । এতো সুন্দরী মেয়ে আমি জীবনে কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ে না । আচ্ছা, এমন কি হতে পারে না আমি আসলে মরে গেছি ? ধর্মগ্রন্থে আছে মৃত্যুর পরে কিছু পরী আশেপাশে ঘুরে বেড়াবে । এদের নাম হল হুর । হুরদের বর্ণনায় বলা আছে, And (there will be) companions with beautiful, big and lustrous eyes. । লাস্ট্রাস চোখ মানে কি কে জানে ? ডিকশনারি খুলে দেখে নেয়া উচিত ছিল । এই মেয়ের চোখ অবশ্যি দেখা যাচ্ছে না । সে চোখ বন্ধ করে আছে । ঘুমুচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে না । নিথর দেহ । ঘুমালে আমরা যে গাঢ় শ্বাস নেই – এর মধ্যে তাও নেই । মনে হচ্ছে মরে পড়ে আছে । হুরদের দেহ কি ঘুমিয়ে গেলে নিথর হয়ে থাকে ?



যদিও মৃত্যুর পর আমি স্বর্গে আছি, এই ভাবনাটাই কেমন যেন হাস্যকর । আমি স্বর্গের টিকেট পেলে সবার গনহারে টিকেট পাওয়ার কথা । তাছাড়া স্বর্গে অনেক রকম ফলমূলও সাজানো থাকার কথা । এখানে সেসব কিছু নেই । অবশ্যি চাইলেই হয়তো চলে আসবে । আমি পরীক্ষা করার জন্য গলার স্বর বাড়িয়ে বাজখাঁই গলায় চিৎকার করে বললাম, ‘আপেল !’



আপেল এলো না । তবে আমার ‘আপেল’ ডাক শুনে একই সাথে দুটা ঘটনা ঘটলো । খাটের কাঁপন থেমে গেলো এবং হুরপরী ভয় পেয়ে আচমকা জেগে উঠলো । খাটের কাঁপন সে এখন তার শরীরে নিয়ে এসেছে । থরথর করে কাঁপছে । তার ভয়ার্ত চেহারায় আরও বেশি ঝলসানো রূপ ফুটে উঠেছে । মনে হচ্ছে রূপকথার কাঠির জাদুতে বন্দিনী কোন রাজকন্যা মন্ত্রবলে ঘুম ভেঙে জেগে উঠেছে । আমি তার দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বললাম, ‘কাইফা হালুকা ?’



বাংলা বলতে ভরসা পাচ্ছিলাম না । হুরপরীদের বাংলা বোঝার কথা না । হুরপরী এখন এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে । মনে হচ্ছে সে আরবীও বিশেষ জানে না । এই সুযোগে রূপবতী হুরের সাথে বাংলা ভাষায় কিছু রঙ্গ-রসিকতা করা যায় । আমি আড়মোড়া দিয়ে মোলায়েম স্বরে বললাম, ‘প্রচন্ড হাগু পেয়েছে । বাথরুম কোন দিকে ময়না পাখি ?’



হুরপরী আমাকে চমকে দিয়ে পরিষ্কার বাংলা ভাষায় বলল, ‘আপনার জন্য ড্রপ-আর্ম পোর্টেবল কমোড হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করা আছে । আপনার বাথরুমে যাবার প্রয়োজন নেই । তবে যদি যেতে চান এই হুইলচেয়ারে করে যেতে পারেন ।’



আমি চমকানো ভাব গোপন করে বললাম, ‘সরি । আমি ভেবেছিলাম তুমি বাংলা জানো না ।’

সে চুলের গোছা পিছন দিকে সরিয়ে নিতে নিতে বলল, ‘এমন কেন মনে হল ?’



আমি জবাব না দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টে বললাম, ‘আমার যতদূর মনে আছে আমি গুলশানের কোন একটা হসপিটালের কেবিনে শুয়ে ছিলাম । এই গুহায় এলাম কিভাবে ?’

‘আপনাকে রুন ম্যাডাম এখানে নিয়ে এসেছেন । রাতেই কেবিন ছাড়ার নিয়ম । তাই কাল রাতে আপনাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে গাড়িতে করেই এখানে আনা হয়েছে । গাড়িতে উঠেই আপনি আবার ঘুমিয়ে পড়েন । এটা আপনাদের বারিধারার বাসা ।’

‘আমার তো কিছুই মনে পড়ছে না । রুন ম্যাডাম তো দূরে থাক, তোমাকেও কখনও দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না । যাই হোক, আমি কোনকালে এই গুহায় ছিলাম এটা ভাবতেই মজা লাগছে । গুহাটা কি আমিই বানিয়েছি ?’



হুরপরীর বোধহয় আমার রসবোধ ভালো লাগলো না । তার চোখ রাগী আভায় জ্বলে উঠলো । রাগী চোখে তাকে অন্যরকম সুন্দর লাগছে । সে কন্ঠস্বর হঠাৎ তীব্র করে বলল, ‘শুনুন, আমাকে দয়া করে তুমি করে বলবেন না । আমার ভালো লাগে না ।’



একটু থেমে সে বলল, ‘রুন ম্যাডাম বলেছেন এটা আপনাদের বাসা । এর বেশি কিছু আমি আসলে জানি না ।’

আমি ফুর্তিবাজ গলায় বললাম, ‘রুন ম্যাডাম’টা কে ?’



হুরপরী স্থির চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । সে কি আমাকে স্মৃতিভ্রষ্ট ভাবছে নাকি ? ভাবতে পারে । আমি তার স্থির দৃষ্টি সম্পূর্ন উপেক্ষা করে হাত ওপরে তুলে কায়দা করে সশব্দে ঘাড় ফুটালাম । ঘাড় ফুটানোর কৌশল আমি শিখেছি শরিফউদ্দিন নামের এক লোকের কাছ থেকে । সে সোবাহানবাগ এলাকায় ভিক্ষা করে । আমি প্রথমবার তার ঘাড় ফোটানো দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম । অপূর্ব কৌশলে সে এমনভাবে দুহাতে নিজের ঘাড় ধরে মোচড় দেয় যে, যে-কেউ হঠাৎ করে দেখলে ভয় পেয়ে যাবে । ঘাড় মোচড়ের গতি, মাথা বানানোর সময় নাপিতদের হাতের গতির কিউব । দ্রুত লয়ের কড়কড় শব্দ শুনে মনে হবে বুঝি তার ঘাড়ই মটকে গেছে । ঘাড় মটকানোটাকে সে রীতিমতো একটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে । আমার ঘাড় ফুটানো অতটা চমৎকার না হলেও হুরপরীকে চমকে দিতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে ।



‘হ্যালো হিমু সাহেব ! গুড মর্নিং ।’



যিনি আমাকে সকালের শুভেচ্ছা জানাতে জানাতে ঘরে ঢুকলেন তাকে আমি চিনি । ইনি সাদাত সাহেবের কন্যা রুনি । ইংরেজী সাহিত্যে পি এইচ ডি । হুরপরী সম্ভবত নামে গুবলেট করে ফেলেছে । রুনিকে ‘রুন’ বানিয়ে ফেলেছে । আমি মিষ্টি করে হেসে বললাম, ‘গুড মর্নিং !’

‘ঘুম ভালো হয়েছে ?’

‘হুঁ ।’

‘আপনাকে হাসপাতালেই রাখতে চেয়েছিলাম । কিন্তু বাবা ফোন করে বারবার করে বলে দিয়েছেন আপনাকে যেন বাসায় এনে রাখা হয় । গেষ্ট রুমটা মালপত্র দিয়ে অগোছালো । গোছাতে অনেক সময় লাগতো । তাই বাধ্য হয়ে বাবার অ্যান্টিক রুমে আপনাকে এনে ওঠানো হয়েছে । আপনি তো বেশ ঘুমাতে পারেন !’

‘এসির ঠান্ডা বাতাস পেয়ে ঘুমিয়ে গেছি ।’

‘বাবার ঘরটা কেমন লাগছে ?’

‘কিছু মনে করবেন না । আমার কাছে মনে হচ্ছে এটা আলীবাবা চল্লিশ চোরের লুকানো গুহা । চোরের দল মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়ে ঘর ছেয়ে ফেলেছে । আমি আলীবাবা হয়ে ভুল করে ঢুকে পড়েছি । যেকোন সময় চিচিং ফাঁক হয়ে যাবে । চোরের হাতে নিশ্চিত অপঘাতে মৃত্যু ।’



রুনি হো-হো করে হেসে উঠলো । এই মেয়ের রসবোধ ভালো । বেশিরভাগ রূপবতী মেয়েদেরই সেন্স অফ হিউমার একটু কম থাকে । রসিকতা করলে ধরতে পারে না । সিরিয়াস চোখ করে তাকিয়ে থাকে । যেমন হুরপরী । সে পাশে দাঁড়িয়ে শক্ত মুখ করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে । তার মধ্যে খানিকটা জম্বী জম্বী ভাব । যেন রসিকতাটা তাকে নিয়েই করা হয়েছে । আশ্চর্যের ব্যাপার, জম্বী চোখেও এই মেয়েকে মানিয়ে যাচ্ছে । বেশ ভালোই মানাচ্ছে । তবে রাগী চোখটা বেশী সুন্দর লাগছিল । রুনি হাসি থামিয়ে বলল, ‘বাবার কিছু অদ্ভুত শখ আছে । তার মধ্যে একটা হচ্ছে অ্যান্টিক বা অদ্ভুত কিছু পেলে সংগ্রহ করে ফেলা । সে তার এই রুম আর্কিটেক্ট ডেকে বেশ পয়সা খরচ করে এই আকৃতিতে বানিয়েছে । অ্যান্টিক সব জিনিস-পত্র দিয়ে পুরো ঘর ভর্তি করে ফেলেছে । দাঁড়ান আপনাকে একটা মজা দেখাই ।’



রুনি মজা দেখানোর কথা বলে কিশোরীদের ভঙ্গীতে ঘর থেকে ছুটে বেড়িয়ে গেল । আবার দ্রুতই ছুটতে ছুটতে ফেরত এসে আমার হাতে একটা পাঁচ টাকার ব্রীজ-মার্কা বাংলাদেশি কয়েন ধরিয়ে দিল । আমি বললাম, ‘এই জিনিস কি বাংলাদেশের বানানো প্রথম পাঁচ টাকার কয়েন ?’

‘কেন বলুন তো ?’

‘আসলে মজার কিছুই তো খুঁজে পেলাম না । তাই ভাবলাম হয়তো অ্যান্টিক কিছু হবে ।’

রুনি বলল, ‘খাটের পাশে লাগোয়া যে ছোট্ট কয়েন বক্স দেখছেন ওতে পয়সাটা ফেলুন ।’



আমি কয়েন বক্সে পয়সা ফেললাম । ঠং করে শব্দ হয়ে আচমকাই খাট ভাইব্রেশন মুডে চলে গেল । খাট সহ আমার পুরো শরীর এখন অনবড়ত কাঁপছে । আমি কাঁপতে কাঁপতে প্রশ্ন করলাম, ‘এই বস্তু কোথায় পেলেন ?’

‘বাবা নিউ জার্সি থেকে এনেছিল । এর নাম ম্যাজিক ফিঙ্গার্‌স । আমেরিকান মোটেলগুলোতে এক যুগে ব্যবহৃত হতো । বাবা নিজের আইডিয়ায় এর সাথে একটা মিউজিক সিস্টেমও যোগ করেছিল । ভাইব্রেশন মুডে গেলে সঙ্গে ভৌতিক মিউজিক বাজতো । এমনই ভৌতিক যে অন্ধকারে শুনলে আত্মা ঠান্ডা হয়ে যায় । আমি সেটা বদলে দুটা সফ্‌ট সং লাগিয়ে দিয়েছি । জিনিসটা মজার না ?’

‘হুঁ । এভাবে কতক্ষন কাঁপবে ?’

‘দশ-পনেরো মিনিট তো অবশ্যই । তারপর পয়সা ঢোকালে আবার চলবে । পয়সা পেলেই এ কাঁপতে থাকে ।’

‘এমনকি হওয়া সম্ভব যে এটা আপনাতেই কাঁপতে শুরু করবে ?’

‘মাথার কাছের কালো হাতলে প্রেস করলেও কাঁপবে ।’

‘গান তো শুনতে পাচ্ছি না ।’

‘সাউন্ড সিস্টেম অফ করা আছে বলে শুনতে পাচ্ছেন না । শুনতে চান ?’

‘চা খেতে খেতে শুনতে ইচ্ছা করছে । চা কি দেয়া যায় ?’

‘চা দিতে পারবো না । বাসায় কেউ চা খায় না । কফি খেতে পারেন । খাবেন ?’

‘হুঁ ।’

‘আচ্ছা । দাঁড়ান কফির কথা বলে আসছি । আপনি কি বেড-টি খান নাকি ? মনে হচ্ছে এখনও ফ্রেশ হন নি ।’

‘জ্বি না । বেড টি খেতেই হবে এমন কোন কথা নেই । যা পাই তাই খাই । আপনি কি আরেকটা হেল্প করতে পারবেন ?’

‘বলুন ।’

‘একটু কষ্ট করে কাউকে দিয়ে বাইরে থেকে সিগারেট আনিয়ে দিলে ...’



আমার কথা শেষ হবার আগেই হুরপরী কঠিন গলায় বলল, ‘আপনার পায়ের এই অবস্থায় সিগারেট খাওয়াটা ভালো হবে না ।’



আমি হেসে ফেলে বললাম, ‘কঠিন-প্রান প্রেমিকার মত কথা বলাটা কি ঠিক ? আমি তো তোমার প্রেমিক না !’



‘তুমি’ শব্দটা আমি বেশ জোড় দিয়ে বললাম । হুরপরীর রাগী চোখ দেখতে ইচ্ছা করছিল । তাকে আরেকটু রাগিয়ে দিলে ক্ষতি কি ? আমি বললাম, ‘তোমার চোখ অতিরিক্ত রকমের সুন্দর । ‘তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ’ টাইপ । মনে হচ্ছে, খাঁটি লাস্ট্রাস চোখ ! লাস্ট্রাস মানে কি জানো ?’



হুরপরী উত্তর না দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল ।



(চলবে)



=========================================

উৎসর্গঃ



রাজশেখর বসুর বাংলা অভিধানে ‘কুম্ভীলক’ শব্দের অর্থ দেয়া আছে- ‘যে অপরের রচিত সাহিত্য হইতে ভাব ভাষা প্রভৃতি চুরি করিয়া নিজের বলিয়া চালায়’ । সেই হিসেবে কালিদাস-কাশীরাম দাস থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত সবাই কুম্ভীলক । উদাহরন, কালিদাসের ‘শকুন্তলা’ কিংবা রবীন্দ্রনাথের ‘কচ ও দেবযানী’ । একই চরিত্র ঘুরে ফিরে অনেকের লেখায় এসেছে । সবটাই সেই আদিশ্লোক-ছন্দের অনুকরনে, নতুন ছন্দে নয় । তবে, রাজশেখর বসু এঁদেরকে plagiarist মানতে রাজী হন নি । তিনি বলেছেন, এঁরা plagiarist এর ঠিক উল্টোটা । যাঁরা অপরের তৈরী চরিত্র নিয়ে লিখেই খুশি । কবিযশঃপ্রাপ্তি এঁদের কারোরই লক্ষ্য ছিল না ।



এতোসব কথার সারমর্ম একটাই । ‘হিমু’কে নিয়ে লিখবার দায়মুক্তি । ফ্রান্সিসকো মেলজি ‘মোনালিসা’র কপি এঁকেছিলেন । ক্যানভাসের সাইজটা বদলে পুরোটাই কপি করা । সেই ছবি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম, কিন্তু ক্রিটিকরা এর দাম দেন নি । না দেওয়ারই কথা । সৃজনশীলতা এক, নকল করা অন্য । হিমুর স্রষ্টা আজ নেই । তিনি আজ অন্য কোন ভুবনে । আমি তাঁর পদধূলিকণা । তাঁর মত করে কখনই কেউ লিখতে পারবে না । আমিও পারিনি । পারার ইচ্ছাও নেই । অনেকের এই লেখা দেখে সঙ্গত কারনে খারাপ লাগতেই পারে । তাদের কিছু বলবার নেই । অন্যভুবনের জোছনা-পাগল মানুষটির কাছে দায়বদ্ধতা আছে । অন্যের লেখা ‘হিমুর পাশে তিনটি ছায়া’র উৎসর্গপত্রে তাঁর নামটাই থাকুক ।



কে লইবে মোর কার্য, কহে সন্ধ্যারবি—

শুনিয়া জগৎ রহে নিরুত্তর ছবি।

মাটির প্রদীপ ছিল; সে কহিল, স্বামী,

আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি॥



পরম শ্রদ্ধাষ্পদেষু, হুমায়ূন আহমেদ ।




===========================================



আগের পর্বের লিংকঃ

হিমুর পাশে তিনটি ছায়াঃ পর্ব (১)

হিমুর পাশে তিনটি ছায়াঃ পর্ব (২)

হিমুর পাশে তিনটি ছায়াঃ পর্ব (৩)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.