নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসতিয়াক অয়নের ব্লগ

হাসন রাজায় কয়, আমি কিছু নয় রে আমি কিছু নয় !

ইসতিয়াক অয়ন

আমি কে ? কেউ না ...

ইসতিয়াক অয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নেলসনের প্রিয় কবিতা

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ ভোর ৪:৪৭

অনেকদিন পরে Invictus কবিতাটি পড়ে মনে হলো আমি এই কবিতাটিকে অনুবাদ করি না কেন ? অনুবাদ করার মত এলিমেন্ট এই কবিতায় যথেষ্ট আছে । Invictus নামের ভিক্টোরিয়ান যুগের এই কবিতাটি উইলিয়াম আর্নেস্ট হেনলীর লেখা শ্রেষ্ঠ কবিতা । যদিও ১৮৮৮ সালে প্রথম প্রকাশের সময় কোন রকম শিরোনাম ছাড়াই এটি প্রকাশিত হয় ।

কবিতার বেশ কিছু ব্যাপার মেটাফোর আকারে বাইবেল থেকে এসেছে, ভাবানুবাদে যে কবিতাটি দাঁড়ালো সেটিতে বাইবেলের ছোঁয়াচ এতটুকুও পড়ে নি । এর কারন একটাই । আমাদের নিজস্ব মিথলোজী সমুদ্রের মতই বিশাল । যেখানেই মেটাফোরের গন্ধ পেয়েছি স্মৃতিকোষ মহাভারতে নিয়ে গেছে অথবা পুরাণে ! নতুন করে উর্বশীকে আবিষ্কার করতে গিয়ে নিজেই চমকে উঠেছি । উর্বশী স্বর্গের বারনারী, বেশ্যা । পাপে এ গলাবধি ডুবে আছে । তবু স্বর্গের ওপর এর কী ভীষণ প্রভাব ! এর একটিমাত্র অভিশাপে দেবপুত্র অর্জুনের মত বিশ্বজয়ী বীর, হিজড়ায় পরিণত হন । এর নৃত্যে প্রলুব্ধ হয়ে হাজার হাজার বছর ধরে তপস্যারত মুনিরা তপঃভঙ্গ করতে বাধ্য হন । মহাপাতকী হয়েও এ কিনা বাস করে স্বর্গে, সান্নিধ্যে থাকে দেব-মহাদেবদের ! উর্বশী অর্থটিও তাই নতুন করে আবিষ্কার করতে হয়ঃ যে হৃদয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ! রবীন্দ্রনাথ সত্য লিখেছিলেনঃ

যুগযুগান্তর হতে তুমি শুধু বিশ্বের প্রেয়সী
হে অপূর্বশোভনা উর্বশী!
মুনিগণ ধ্যান ভাঙি দেয় পদে তপস্যার ফল,
তোমারি কটাক্ষঘাতে ত্রিভুবন যৌবনচঞ্চল,
তোমার মদির গন্ধ অন্ধবায়ু বহে চারি ভিতে,
মধুমত্তভৃঙ্গসম মুগ্ধ কবি ফিরে লুব্ধচিতে
উদ্দাম সংগীতে।
নূপুর গুঞ্জরি যাও আকুল-অঞ্চলা
বিদ্যুৎ-চঞ্চলা।


কবিতাটির চারটি স্তবকে চারটি করে চরণ । চরণবিন্যাস কখকখ গঘগঘ ঙচঙচ ছজছজ । আমি অনুবাদের ক্ষেত্রেও কবির বিন্যাস মাথায় রেখেই অনুবাদের চেষ্টা করেছি । আক্ষরিক অনুবাদ করলে কবিতাটির আমেজ হারিয়ে যেত বলেই আমার বিশ্বাস । তাই ভাবানুবাদে আসা ।

কবিতাটি প্রসঙ্গে আরও কিছু কথা বলে রাখা দরকার । এটি নেলসন মেন্ডেলার প্রিয় কবিতা । রোবেন দ্বীপের কারাবাসকালে নেলসন মেন্ডেলা নাকি এই কবিতাটি অন্যান্য কারাদন্ডপ্রাপ্তদের পড়ে শোনাতেন । মেন্ডেলার মৃত্যুর পর দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত তাঁর স্মরণসভাতে বারাক ওবামা যে ভাষন দেন তার শেষ চারটি লাইন ছিল এই কবিতাটির শেষ চার লাইন । অং সান সু কি কবিতাটি সম্পর্কে বলেছেনঃ

"This poem had inspired my father, Aung San, and his contemporaries during the independent struggle, as it also seemed to have inspired freedom fighters in other places at other times."


অনেক বকবক করলাম । এবার আসুন কবিতাটি পড়ি । সাথে অনুবাদটিও !

Invictus

Out of the night that covers me,
Black as the pit from pole to pole,
I thank whatever gods may be
For my unconquerable soul.

In the fell clutch of circumstance
I have not winced nor cried aloud.
Under the bludgeonings of chance
My head is bloody, but unbowed.

Beyond this place of wrath and tears
Looms but the Horror of the shade,
And yet the menace of the years
Finds and shall find me unafraid.

It matters not how strait the gate,
How charged with punishments the scroll,
I am the master of my fate,
I am the captain of my soul.

অনুবাদঃ

অজিত

যোজন যোজন সংযমনীতে ঢেকে গেলে আসমান
তবু সারা পাই মনমথুরাতে অজেয় শঙ্খ বাজে
‘ঈশ্বর’ নামে সেই দামামার করিনিতো অপমান
বিজিত হৃদয়ই ঈশ্বর মোর বৈজয়ন্তীসাজে !

ভাগ্য প্রেতের মতন নেচেছে হইনি উন্মাতাল
বাতাসে ঢালিনি এতটুকু বিষ ক্রন্দন হা-হুতাশে
কারবেরাসের মস্তক সম গর্দান লালে লাল
তবু ঝোঁকাবো না উন্নত শির কোন বজ্রের ত্রাসে !

আমি কি ডরাই ? প্রতাপ ? অশ্রু ? বিষাক্ত হুংকারে ?
কাফনের ঘ্রাণ, অসুখের প্রান- তুচ্ছ আমার লাগি !
নিয়ে দ্যাখ এই ক্ষুদ্র দেহরে বৃহৎ হাবিয়াদ্বারে
এক ফুৎকারে নিভাবো সে তমঃ সপ্তনরক-আগি !

উর্বশীসম স্বর্গে হেরিবো গলাবধি ডুবে পাপে
পাপবিষাক্ত অভিশাপ গ্রাসে অর্জুনও হবে ক্লীব
আমিই আমাতে ঈশ্বর তাই ঈশ্বরও ভয়ে কাঁপে
কারন আমাতে আমিই ব্রহ্মা, আমিই শিব-অশিব !


________________

=======================================

উৎসর্গঃ

বাপী দা'কে-
যার ইংরেজী কবিতার অনুবাদ পড়লে মনে হয় অনুবাদটিই বেশী সুখপাঠ্য হয়েছে !

=======================================

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:০৪

মামুন রশিদ বলেছেন: অসাধারণ, ভূমিকা আর অনুবাদ দুটোই ।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই :)

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:৫৫

শ. ম. দীদার বলেছেন: আপনার অনুবাদ খুব চমৎকার হয়েছে।

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৯

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ । অফ টপিকের একটা প্রশ্ন করি, আপনার প্রোফাইল ছবিতে রাসপুটিনের ছবি কেন ? কোন বিশেষ কারন আছে নাকি এমনিই ?

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:১১

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:

চমৎকার কাজ করেছেন ৷ শব্দচয়নে মাইকেল মধুসূদনের কথা মনে পড়ে যায় ৷

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৭:০৩

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: :) হুম শব্দচয়ন কিছুটা কঠিন হয়ে গেছে । ভাল থাকবেন ভ্রাতা !

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৬

ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ইংরেজীর যে কোন কিছু অনুবাদ করা একটি কঠিনতম কাজ। সাহিত্য বা কারো জীবনী হলেও চলে কিন্তু কবিতা !!! অনুবাদ!!!!??? ভাবার্থ তো টিক রাখতে হবে তাই না। আর এই কঠিন কাজটি করেছেন সু-নিপুণ ভাবে। ধন্যবাদ আপনা কষ্টের জন্য আর শ্রদ্ধা আপনার মেধাকে।



ভাল থাকবেন।

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৫

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা !

৫| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮

আহমাদ ইবনে আরিফ বলেছেন: অসাধারণ!!!

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৬| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:২০

অন্ধবিন্দু বলেছেন:
হেনলীর এই লেখাটা অপছন্দ আমার। অনুবাদটি পড়লাম।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.