নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু না

আমি মুরগি

ছি!! তোমার নাম মুরগি কেন?? এখনো যে মানুষ হতে পারিনি। এখনো যে মিথ্যা বলি। এখনো আমি লোভি। মানুষ তো এরকম হতে পারে না!!

আমি মুরগি › বিস্তারিত পোস্টঃ

অর্পিতার হেরে যাওয়া

২৪ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:০০

উৎসর্গঃ জান্নাত ম্যাম
(১)
আমি আর রুবির সাথে মিশব না, অর্পিতা কিছুটা নিচু গলায় বলছে নীলার কাছে।
নীলা কিছুটা অবাক হয়ে চেয়ে আছে অর্পিতার দিকে। ওরা যে তিন প্রানের বন্ধু। ভার্সিটির প্রথম থেকেই ওরা তিনজন একসাথে। কিন্তু কি এমন হল যে অর্পিতা আর রুবির সাথে মিশবে না!! ভেবে পাচ্ছে না ও। নীলাঃ কেন কি এমন হয়েছে??
অর্পিতাঃ ও এখন সিগারেট খায়। মেয়ে হয়ে সিগারেট ছি!! ছি!!
নীলাঃ ও এই ব্যাপার!! আচ্ছা এটা তো সামান্য ব্যাপার আর এর জন্য তুই মিশবি না? আর এটা তো ওর পারসোনাল ব্যাপার তাই না??
অর্পিতাঃ তুই ওকে সাপোর্ট করছিস? ভাল খুব ভাল। পারসোনাল সব ব্যাপার আর পারসোনাল থাকে না। আমি আর মিশবো না ব্যাস। তুই এই ব্যাপারে আর কোন কথা বলতে পারবি না।
একই সাথে ক্লাস, একই ক্যান্টিনে খাওয়া দাওয়া অথচ কেউ কারও দিকে তাকায়ও না। অথচ দুজন দুজনকে অনেক মিস করে।


(২)
আজ অর্পিতার মেয়ের বয়স ১৮ তে পা দিল। পার্টি করার জন্য মার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। সব বন্ধুদের নাকি খাওয়াবে। গত তিন চার দিন ধরে তার মেয়ে ইরা বেশ রাত করে বাড়ি ফিরছে। অর্পিতার জ্বর তাই ব্যাপারটা নিয়ে বেশি হইচই করে নি। আজ যে ২০ হাজার টাকা দিল সেটা দিতে প্রায় বাধ্য হয়েছে অর্পিতা। কারন ওর স্বামী লন্ডন থেকে ফোনে বলে দিয়েছে ইরার জন্মদিনে যেন ২০ হাজার টাকা ক্যাস দেওয়া হয়।
ইরা ওর একমাত্র মেয়ে, তাই অর্পিতার অনেক ভয় কাজ করে। এত টাকা দিয়ে কিসের পার্টি হয়? অনেক মানুষের তো এই টাকায় একমাস সংসার চলে।

অর্পিতা মেয়ের জন্য একটা গিফট কিনে রেখেছিল। জ্বরের ভিতরেও কষ্ট করে তার মেয়ের জন্য কিনেছে গিফট টা। হাতে গিফট নিয়ে ইরার রুমে যাচ্ছে ও।
ইরা দরজায় নক শুনে দরজা খুলে দিল। একটু গম্বির গলায় বললঃ ও তুমি? কিছু বলবে?? আমি না এখন বের হব। আর আজকে ফিরতে অনেক দেরি হবে। ১ টা বেজে যেতে পারে। বাই।
ইরা চলে যাওয়ার পর, অর্পিতার চোখ ভিজে যায় কান্নায়। সে তার মেয়েকে উইস করতে পারে নি। পারেনি উপহারটা দিতে। কষ্টে ওর বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। রুমে ফিরে এসে লাইট নিভিয়ে কাঁদতে লাগল। নিঃশব্দের এই কান্না হয়তো পৃথিবীর আকাশ বাতাস দেখছিল।

রাত ১ টা বেজে ২৭ মিনিট। কলিংবেল বাজতেই অর্পিতা নিজেই দরজা খুলল। তার একমাত্র মেয়ে ঢুলতে ঢুলতে ঘরে ফিরছে। অর্পিতা কিছু বলতে পারছে না। তার সারা শরিরের লোমকুপ গুলো দাড়িয়ে গেছে। ইরা নেশায় বুদ হয়ে আছে। গায়ে বিস্রি গন্ধ। হাটতে খুব কষ্ট হচ্ছে। আর্পিতা ধরতে যেয়েও ধরতে পারছে না। ওর চোখ দিয়ে গলগলিয়ে পানি বের হচ্ছে। এর জন্য তবে অর্পিতা দায়ি?


(৩)
ভোরে ফজর নামাজ পড়ে একটা চিরকুট লিখলো অর্পিতা। চিঠিটা কাজের মেয়েকে দিয়ে বলল, ইরা ঘুম থেকে উঠলে যেন দেওয়া হয়। আর্পিতা বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে। আর ফিরে আসবে না। মোবাইলে ভার্সিটির বন্ধু রুবির নম্বরে ফোন দিল। ফোন ঢুকল না বন্ধ। আরও কয়েক বার চেষ্টা করে ওকে একটা টেক্সট করলো। "তুই সিগারেট খেতি বলে আমি তোর সাথে আর কথা বলতাম না। আর আজ আমার আপন মেয়ে মদ খায়ে বাড়ি ফিরেছে, আমি হেরে গেলাম রে। ক্ষমা করে দিস। আমি বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি। কোথায় যাচ্ছি যানি না। ভাল থাকিস। অর্পিতা।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.