নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শ্রাবনের বৃষ্টিস্নাত স্বপ্নমত্ত এলোমেলো তরুনের হাতে নীল রঙের আল্পনা যেখানে দু ফোটা অস্রুর মাখামাখি আর তার সানগ্লাসের আড়ালে কিছুটা অনুভূতি যা কিনা সানসেটে বসে থাকা এক টুকরো রোদ অতঃপর তার হাতে থাকা উপন্যাসের শেষ পৃষ্ঠায় এসে দেখা দিল একটি শুকনো গোলাপ পাপড়ি

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র

ল্যাম্পপোস্টের হলুদ সোডিয়াম আলোয় ভিজতে থাকা তরুন যার আছে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন।সে গোধূলী ভালোবাসে।আর ভালোবাসে সন্ধ্যাকালে বাসের জানালার পাশের সিট টা কে।আচ্ছা আপনি কি তার মত ঝুম বৃষ্টিতে এক কাপ কড়া লিকারের চিনি ছাড়া লাল চা ভালোবাসেন??

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র › বিস্তারিত পোস্টঃ

জেগে থাকুক কড়া লিকারে ডুবন্ত নীল ভালোবাসা

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

বৃষ্টির শব্দের মাঝেও দরজার ওপাশ থেকে রবীন্দ্র সংগীত এর সুর শোনা যাচ্ছিল।দরজায় টোকা দিতেই ওপাশ থেকে বিরক্তি ভরা কন্ঠ নিয়ে একটি নারী স্বর বলে উঠলো "কে??"
"জ্বী..মিস মীরা আছেন?"
দরজা খুলে গেল।৩৬-৩৭ বছর বয়সের একজন নারী।চোখে চশমা।গায়ের রং শ্যামলা।বিম্বোষ্ঠা।মাথায় বিরাট খোপা দেখেই বোঝা যায় তার খোলা চুল কোমর ছাড়িয়ে গেছে।হাতে একটি বই।রোড-ব্যাক।
"আমিই মীরা.. "
"আমি অভ্র...নীতুর ফ্রেন্ড"
"আচ্ছা।আমাকে ফোন করেছিল ও।.... ফটোগ্রাফার??"
"জ্বী আসলে শখের বলতে পারেন.."
লাজুক হাসি হাসলো অভ্র।
"তুমি ...সরি তুমি করে বলে ফেললাম" মীরা অপ্রস্তুত হয়ে উঠলো।
"ইটস ওকে..তাছাড়া আমি আপনার চেয়ে বয়সে অনেকটাই ছোট।মাত্র গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করলাম।আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারেন"
"ঠিক আছে।এসো ভেতরে এসো"
বসার রুম টা অনেক গোছানো।ওয়ালে রবীন্দ্রনাথের বিশাল ছবি।
মীরা তাকে তার রুম দেখিয়ে দিল।
"তুমি ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করো।পরে কথা হবে।"মীরা বললো।
অভ্র তার রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো।সবকিছু আগে থেকেই পরিষ্কার করা।শাওয়ার নিয়ে একটা লম্বা ঘুম দিলো অভ্র।ঘুম ভাঙলো সকালে দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজে।
একটি অল্প বয়স্কা মেয়ে।নাম রিতা।মীরার সকল কাজ করে দেয়।
"নাস্তা খাইতে আসেন।রাতেও আইসিলাম।দরজা তো খুলেনি নাই"মেয়েটি জলদি কথা গুলো বলে ফেলে।
"আচ্ছা আমি আসছি"।
মীরা খাবার টেবিলে বসে আছে।
"গুড মর্নিং।সরি কাল ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।আসলে অনেক টায়ার্ড ছিলাম।"মীরার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো অভ্র।
মীরা একটু হাসলো শুধু।
অভ্র চা খেতে খেতে তার নেক্সট প্রজেক্ট নিয়ে ভাবছে।রবি ভাই কথা দিয়েছে এবার তার বইটা বের করবেই।অভ্র ভাবছে এমন এক ছায়ার কথা যা কিনা একাকীত্ব কে তুলে ধরবে।এটাই তার কনসেপ্ট।সে মীরার দিকে তাকালো।
মীরা বই পড়ছিল।
" আপনাকে বিরক্ত করে ফেললাম।আসলে এই জায়গায় তেমন কেউ পরিচিত নেই।ধন্যবাদ"অভ্র কথা শুরু করলো।
"মানুষই তো মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসে।আর এটা বিরক্তির কি হলো।এরকম ভাবার কোন কারন নেই"বই থেকে মুখ না তুলেই মীরা কথাগুলো বললো।
এরপরে অভ্র বাইরে বেরোলো।পাহাড়ী এলাকা।কিছু ছবি তুললো।সন্ধ্যার আগে আগেই ফিরে আসলো।
রুমে ঢুকতেই মীরা বলে উঠলো..
"ছবি কেমন তোলা হলো?"
"ছবি তো তুলছি।কিন্তু মনে হচ্ছে কি যেন খুজে পাচ্ছিনা ছবিতে।"
"পেয়ে যাবে"...

রাতে খাবার টেবিলে তেমন কথা হলো না।রাতে বিছানায় শুয়ে অভ্র মীরার কথা ভাবছে।নীতুর কাছে তার সম্পর্কে জেনেছে।নীতু মীরার কাজিন।মীরার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট নীতু।

মীরার বাবা গত বছর মারা গিয়েছেন।শহুরে কোলাহল থেকে দূরে থাকতে বাবার সাথে এখানে থাকা শুরু করে।আর মা তার ছোটবেলাতেই আরেকজনের সাথে পালিয়ে বিয়ে করেছিল।মীরা বিয়েতে বিশ্বাস করেন না।মীরা মনে করে বাঙালী পুরুষ রা বিয়ের যোগ্য না কেননা তারা নারীকে শুধু তাদের স্ত্রী ই বানাতে পারে। লাইফ পার্টনার বানাতে পারেনা।
আজব মহিলা।এইরকম জাগায় একা থাকেন।অবশ্য পাশেই বাজার আছে।আর্মি ক্যাম্প।নিরাপদ এলাকা।বাট তারপরেও একা একা থাকা যায় নাকি।
অভ্র ভাবছে মীরার চোখ গুলো মনে হয় কথা বলতে পারে।তার চোখ দেখে বোঝা যায় তিনি কি বলছেন।তিনি এখনো যথেষ্ট সুন্দর দেখতে।নীল রঙের প্রতি বোধহয় তার দুর্বলতা।সবসময় নীল শাড়ি পড়ে থাকেন।দারুন মানায় তাকে।এসব ভাবতে ভাবতেই অভ্র ঘুমিয়ে পড়লো।

আরেকটি ব্যস্ত দিন কাটিয়ে অভ্র বিকেলে ছাদে উঠলো।মীরা দাঁড়িয়ে আছে দিগন্তের দিকে চেয়ে।বাতাসে তার নীল শাড়ি পতাকার মতো উড়ছে।
"আপনি কি আকাশ ভালোবাসেন?"
কথাটি শুনে একবার পিছু ফিরেই আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে মীরা বললো
"আকাশ ভালোবাসিনা।তবে আকাশের নীল ভালোবাসি।আর কিছু সাদা মেঘ।"
"বাহ খুব সুন্দর করে কথা বলেন তো আপনি"
"তাই নাকি?আমি তো মাত্র সুন্দর কিছু সৃষ্টির নাম বললাম। যাই হোক তুমি কি ধরনের ছবি তোল?"মীরা জিজ্ঞেস করলো।
"স্ট্রিট এন্ড লাইফস্টাইল।কিন্তু এবার ভিন্ন কিছু যোগ করার ট্রাই করছি।"
অভ্র তাকিয়ে আছে মীরার দিকে।অদ্ভুত সুন্দর লাগছে।ব্যাপারটা অভ্রর কাছে ঠিক মনে হচ্ছেনা।কিন্তু আবার ইচ্ছে করছে তার নীল আচলে কিছু ঢেউ দেখতে।অভ্র কি মীরার প্রেমে পড়ে গেল??
কেন প্রেমে পড়বে কেন??কি আছে মীরার??
নাহ কারন লাগবে কেন??প্রেমে পড়ার কোন কারন লাগে এমন কথা তো কোন রোমান্টিক নভেলার বলেন নি।
তবে এটা নিশ্চিত অভ্র মীরার নীলে একাকার হয়ে গেছে নীরবে।এটাই চিরন্তন সত্য।

এরপর একটি সপ্তাহ কেটে গেল।মীরা কে অভ্র কখনো কথাটি বলেনি।মীরা ব্যাপারটি কিভাবে নেবে।সে কি রাগ করবে?
মীরার সাথে তার বয়সের তফাত আছে। কিন্তু সেটা কি কোন বাধা?? বয়স তো একটা সংখ্যা মাত্র।আর ভালোবাসা?? ভালোবাসা তো একটি অনুভূতি।অনুভূতি কখনো বুড়িয়ে যায় না।
আচ্ছা মীরা কি কিছু বুঝতে পেরেছে??
নাহ..মনে হয়না।
এভাবেই নীল রঙের প্রতি ভালোবাসার কথা টা আর বলা হয়ে ওঠেনা।

একসময় অভ্র চলে যায়।অভ্র যদি বিদায়ের দিন পিছু ফিরে তাকাতো তাহলে দেখতে পেত মীরার চোখ ছলমল করছিল।সে চোখ দেখলেই বুঝতে পারতো মীরা কি বলছে।

অনেকদিন পর মীরার জন্মদিনে একটি পার্সেল আসে।প্রেরকের ঠিকানায় অভ্রর নাম লিখা।
একটি বই।অভ্রর ছবির কালেকশন।
নাম "shadow of blue"।প্রচ্ছদের দিকে চোখ পড়তেই মীরার ঠোট কেপে ওঠে।প্রচ্ছদে জানালার পাশে বসে থাকা মীরা।খোলা চুল।নীল শাড়ি।জানালার বাইরে নীল আকাশ।কাপা হাতে মলাট উল্টিয়ে মীরা প্রথম পাতায় লিখা গুলো পড়লো..
"" উৎসর্গ সেই তাকে যে নীল ভালবাসে এবং যাকে আমি ভালোবাসি""
চোখের পানির জন্য লিখা টা ঝাপসা লাগছে।মীরা চোখ মুছলো।
সে আজ নীল শাড়ী পড়বে।অনেকদিন পড়া হয় না।অভ্র চলে যাওয়ার পর থেকে সে আর নীল শাড়ী পড়েনি।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭

মাকড়সাঁ বলেছেন: মিষ্টি একটা গল্প

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৬

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৬

রুবাইয়াত নেওয়াজ বলেছেন: ভালো লাগল, সুন্দর করে লিখেছেন, লিখায়+।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৭

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৯

এ এস রিপন বলেছেন: খুবই রোমান্টিক একটা লেখা। পড়ে ভালো লাগল।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৮

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৬

আমি শঙ্খচিল বলেছেন: সুন্দর একটি গল্পের জন্য ধন্যবাদ ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৮

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: বেশ ভালো।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৯

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫২

নীলসাধু বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
আহারে নীল। আমার কাছেও নীল প্রিয়। B-)

ধন্যবাদ।

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৯

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭

আমি মাধবীলতা বলেছেন: সুন্দর !

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১০

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৯

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: পড়তে ভালোলাগছিলো। হালকা বিষন্নতা আর ভালোলাগার গল্প। ++

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৮

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

৯| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


শিরোনামটা ভীষণ মনে ধরেছে ভাই। +++

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৫৭

শেখ আশিক রোশানরাজ সরকার জুনিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.