নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অফিসে পুলকের জার্মানি যাওয়া নিয়ে কথা হচ্ছে। এখনো কিছুই ফাইনাল হয়নি। পুলকের মা পুলকের বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। ছেলে বাইরে চলে যাবে। বাইরে যাওয়ার আগেই বিয়ে দিয়ে দিতে হবে। পরে দেখা যাবে ক্যাথরিন ম্যাথ্রিন বিয়ে করে নিয়ে আসছে। তাঁর চেয়ে বিয়ে করায়ে রাখলে শান্তি। রীতা নামের মেয়েটার সাথে ছেলেটার ভালো সম্পর্ক ছিল। বিয়েটা হলে ভালোই হত। একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। বিয়ে হয়ে অশান্তি হওয়ার চেয়ে বিয়ের আগেই অশান্তি হয়ে গেছে। এটাকে আফরোজা শাপে বর হিসেবেই দেখেন।
পুলক বাইরে যেতে চাইছে না। না, রীতা কোন কারণ নয়।
খুব বেশীদিন চাইলেও মানুষ কষ্ট আঁকড়ে ধরে থাকতে পারে না। কষ্টগুলোকে মনের এক কোণে ফেলে রাখতে হয়। এগিয়ে যেতে হয় জীবনে। কষ্টগুলো মনের কোণে পড়ে থাকে। জীবনের ব্যস্ততার মাঝে মাঝে মানুষ খেয়াল করে দেখে যে কষ্টগুলো ঠিকঠাকমত আছে কিনা!! কারণ এই কষ্টগুলোই তো তাঁর সঙ্গী। অনেক প্রিয় সঙ্গী।
পুলক বাইরে যেতে চাইছে না তাঁর মায়ের জন্য। তাঁর মায়ের বয়স হয়েছে। এই সময় মাকে ফেলে যাওয়াটা ঠিক মনে হচ্ছে না তাঁর। আর তাছাড়া তাঁর মায়ের সাথে যদি কোন সঙ্গী সাথী থাকত তাহলে একটা কথা ছিল। একা মাকে ফেলে কিভাবে যায়!! আর যেতেও যে খুব ইচ্ছা করছে তাও না। এখন আর ওইভাবে কেন জানি জীবনে কোন কিছু নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করে না। জীবন কেটে যাচ্ছে। চলে যাচ্ছে। যাক!! আর কী!!! বয়ে চলাই তো। অথচ ছাত্রজীবনে দুনিয়াটাকে কত রঙ্গীন মনে হত। আসলে তখন চোখে ছিল রঙ্গীন চশমা। এখন মনে হয় বাকি জীবনটা ঝামেলা ছাড়া কেটে গেলেই হয়। ব্যস!! যেমন চলছে চলতে থাকুক।
প্রিয়াঙ্কা কল দিচ্ছে। পুলক রিসিভ করলো না। মেয়েটা ইদানীং বেশ জ্বালাচ্ছে। আসলে মেয়েটার দোষ নেই। পুলকের আজকাল একই মানুষের সঙ্গ বেশীদিন ভাল লাগে না। আসলে অবচেতনভাবে এক ধরনের ভয় কাজ করে। আবার নতুন করে একজনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হওয়ার মত বোকামি পুলকের অবচেতন মন পুলককে করতে দিতে চায় না। এই জন্যই পুলক খুব বেশীদিন কোনকিছু নিয়ে পড়ে থাকে না। সিগারেট খাওয়া আপাতত বাদ।
আরেকটা কারনেও জার্মানি যেতে চাচ্ছে না পুলক। আজকাল কোনকিছুতেই সেভাবে মনোযোগ দিতে পারছে না সে। মাঝে মাঝে মনে হয় চাকরীটা ছেড়ে দিতে। কিন্তু তা তো আর করা যায় না। এখনো এত অস্থির সে হয়নি।
প্রিয়াঙ্কার এসএমএস। ‘পুল!!! তুমি আমার ফোন ধরছ না কেন?’। পুলকের ভুরু কুঁচকে গেল। সে রিপ্লাই দিল না। এসএমএস এর লিস্টে এখনো রীতার এসএমএস টা আছে। “কেমন আছ পুলক?”। কিছুক্ষণ মোবাইলের স্ক্রীনটায় হাত বুলাল সে। ভালোই আছে রীতা। নিশ্চয়ই ভালো আছে।
আবার প্রিয়াঙ্কার কল।
-সরি প্রিয়াঙ্কা!! একটু ব্যস্ত ছিলাম। বল!!!
-তুমি কি আজকাল আমাকে এভয়েড করছ পুল?
-এটা কী ধরনের কোয়েসচেন!! Why should I avoid you?
- I don’t know but I am having this feeling that you are avoiding me.
-দেখ প্রিয়াঙ্কা!! এই ধরনের কথাবার্তায় আমি খুব বিরক্ত হই। আমার মনে হয় তুমি কিছু নিয়ে ডিসটারবড। আমরা বরং পরে কথা বলি।
-Sorry to disturb you.
প্রিয়াঙ্কা ফোন কেটে দিল।
নাঃ। এই জন্যই একটা মেয়ের সাথে বেশীদিন কথা বলা ঠিক না। এরা পেয়ে বসে। দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ সৃষ্টি না করা পর্যন্ত শান্তি নেই। খুব রাগ হচ্ছে পুলকের। রাগ হলেই পুলকের রীতার কথা মনে পড়ে। একমাত্র রীতা পারত তাঁর রাগ ঠাণ্ডা করতে। শুধু রাগ না। খুব অপমান হলেও রীতার কথা তাঁর খুব মনে পড়ে।
অফিস থেকে বের হওয়ার সময় মা ফোন দিল।
-পুলক জলদি বাসায় আয়।
-কেন?
-আমার এক জায়গায় যেতে হবে। পাইকপাড়া। আমি চিনি না। তুই নিয়ে যাবি।
-ওখানে কে থাকে? কার বাসা?
-আছে। তুই চিনবি না। জলদি আয়।
-আচ্ছা।
আফরোজা আক্তার ছেলের জন্য মেয়ে দেখে রাখছে। একটা মেয়ে তাঁর বেশ পছন্দ হয়েছে। মেয়েটা মাত্র অনার্স পড়া শুরু করেছে। ওই মেয়ের বাসায়ই যাবে। পুলককে আগে থেকে বললে পুলক জীবনেও যাবে না। ছোট মেয়ে বলেও খুব চিল্লা পাল্লা করবে। কিন্তু আফরোজা বউ হিসেবে কেন যেন ছোট মেয়েই খুঁজছেন। ছোট মেয়ে হলে তাঁর সাথে একটু থাকবে। চাকরিজীবী মেয়ে তো অনেক ব্যস্ত হয়। তাঁর সাথে কথা বলার সময়ই পাবে না। জীবনের এই শেষদিকে এসে মাঝে মাঝেই আফরোজা আক্তার এর খুব একা লাগে। মাঝে মাঝে খুব বিষণ্ণতা পেয়ে বসে। এতবড় জীবনটা কিভাবে শেষ হয়ে গেল। প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসাব করে ফেলেন মাঝে মাঝে মনে মনে। জীবন সায়াহ্নে এসে অপ্রাপ্তির ঝোলাটাকেই কেন যেন ভারী মনে হয়।
কলিং বেল বাজল। পুলক এসেছে। ছেলে বাসায় ফিরলেই তাঁর মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। প্রাপ্তির ঝোলার প্রায় অনেকটা অংশ জুড়ে তো শুধু ছেলেই।
মা ছেলে বের হয়ে গেল তড়িঘড়ি করে।
পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পরব-২১ Click This Link
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৯
সুহান সুহান বলেছেন: আমিও আপনার দলে। আমারও এ ধরনের লেখা পছন্দ না।
২| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:৫৩
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: ওলে ওলে ... ... আমিও যাবো... আমারও বিয়া করতে মন চায়...... গল্পে আমারে ঢুকায়ে আমারে বিয়া দিয়া দেন...... :!> :!> :!>
২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২০
সুহান সুহান বলেছেন:
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৮
স্বপনচারিণী বলেছেন: সবাই সবার সুবিধা বোঝে। দেখা যাক কার জিত হয় পুলকের না মায়ের।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫১
নিঃসঙ্গ অভিযাত্রিক বলেছেন: এই ধরণের গল্প আমার ভালো লাগে না যার জন্য প্রতীক্ষা করে থাকতে হয়...
Keep your good writings up....