নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুবায়ের সুহান

সুহান সুহান

দ্বিধান্বিত

সুহান সুহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শূণ্যতার প্রলাপ

০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:৪১

উপলব্ধি আর অনুভূতিরা বেশীক্ষণ আমার কাছে থাকে না। দূরে দূরে উড়ে বেড়ায়। চেয়েও আমি তাঁদের ধরতে পারি না। কেমন যেন ফাঁকা হয়ে থাকি। মাঝে মাঝে দূরে উড়তে থাকা উপলব্ধি আর অনুভূতিদের দিকে তাকাই। ধোঁয়া ধোঁয়া হয়ে ওরা নিরাপদ দুরত্ব রেখে যায়। আমি ধোঁয়া দিয়েও সব সময় ওঁদের কাছে রাখতে পারি না। মাঝে মাঝে ভেজা ভেজা করে ধোঁয়া খাই। কিছুক্ষনের জন্য ওরা নেমে আসে আমার কাছে। তখন আমি লিখি।



পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশনীর মালিকেরা; এরা কেউ বোঝে না যে উড়ে উড়ে দূরে থাকা উপলব্ধি আর অনুভূতিরা সব সময় আমার কাছে থাকে না। আমি চাইলেই তাঁদের কাছে পাই না। ওরা একই সাথে মুখে হাসি আর শ্লেষ ফুটিয়ে তোলে। ভাবে আমি ওঁদের ঘুরাচ্ছি। আমি নিজেই যে চরকির মত ঘুরছি তা যদি ওরা জানত!!



ভাসা ভাসা করে মনে পড়ে ইয়াকুবের কথা। ওঁর সাথে দেখা হওয়ার পর থেকেই অনুভূতি আর উপলব্ধিদের উড়াউড়ি শুরু। নইলে তো ওরা কাছেই থাকত। যখন ইচ্ছা লিখতে পারতাম আমি। ধোঁয়া আর ভেজা ভেজা ধোঁয়া কি ছিনিমিনি খেলে আমাকে নিয়ে!!



আজকে অনুপমা এসেছিল। ও যখন মাথায় হাত রাখে, কিছুক্ষনের জন্য আমি আর ওঁদের পিছে ঘুরি না। কি এক শান্তি চলে আসে আমার মাঝে। যেন আমার কিছু চাওয়ার নেই, পাওয়ার নেই। ইঁদুর দৌড়ে যেতে হবে না আমাকে। ভিতরের দলা পাকিয়ে ওঠা লোভগুলো কিরকম হাওয়া হয়ে যায়। যেন যাদু জানে অনুপমা। ওঁর স্পর্শে আমি কাম পাই না। সেবা পাই। শান্তি পাই। নিমিষে নিজেকে সাধারণের মধ্যেও অসাধারণ ভেবে নিতে পারি। সবার দিকে করুণা ভরে তাকাতে পারি। প্রকৃত সুখের স্বরূপ খুঁজে নিতে পারি অসুখে ভরা নগরী থেকে। কিন্তু ও থাকে না। চলে যায়। আমি কত করে বলি যেও না, অনুপমা যেও না। তুমি চলে গেলে আবার আমাকে ওঁদের খুঁজতে হবে। ওরা যে দূরে দূরে থাকে। কিন্তু অনুপমা চলে যায়। আবার যাই ধোঁয়া আর ভেজা ভেজা ধোঁয়ার কাছে। টুকরো টুকরো করে খুঁজে নিতে হাতড়াই ওঁদের।



আমার দিকে কিভাবে সবাই যেন তাকায়!! একই সাথে কৌতূহল আর একই সাথে করুণা। আবার কারো মাঝে অবহেলাও থাকে। কিন্তু অবহেলাগুলোই যেন আমাকে বেশী তাড়না দেয়। আমি কৌতুকময় দৃষ্টিতে ওঁদের দেখি। ওঁদের ভিতরের না পাওয়াগুলো যেন ঠিকরে বের হয়ে আসে। ওরা ভিতরে ভিতরে ভাবে আমি সব পাওয়াদের দলে। হায় রে!! ওঁদের আমি কি করে বুঝাই যে আমার জীবন ভেসে যাচ্ছে অনুভূতি আর উপলব্ধিদের পিছু ছুটতে ছুটতে। আমি যে ওদেরই দলে ওরা কেউ জানে না। আমিও জানাই না। কে যেচে হারতে চায়। প্রতিদিন নিজের কাছে কত করে হারতে হয়। বাকিদের কাছে আর হারতে ইচ্ছা করে না।



সমুদ্রে গেলাম। ধোঁয়ায় আর কাজ হচ্ছে না। তীরে আছড়ে পড়া ঢেউ যদি পারে শেষ রক্ষা করতে। টানা ৩ দিন আমি শুধু সমুদ্র দেখলাম। এক নাগাড়ে। মনকে ছুটি দিয়ে দিলাম। ওঁদের সাথে মনও গিয়ে যোগ দিল। বিশাল ছাতার নিচে ঘণ্টা হিসেবে টাকা দিয়ে আমি বসে থাকি। শোঁ শোঁ শব্দ। কেমন লাগে আমার!! বুঝি না। আমার এক বুড়ো নানা মৃত্যুর আগে খাবারের স্বাদ পেতেন না। বলতেন সব নাকি মাটি মাটি লাগে। আমারো মনে হয় তাই লাগছে। আজকাল কেমন আছেন এর উত্তর দিতেও দেরী হয়। যদিও জানি কেউ আসল উত্তর জানতে চায় না। থাকি যেখানে সেখানের নিয়ম তো মানতেই হবে। মনে না চাইলেও হাসিমুখে কথা বলতে হবে আর গুমড়ে গুমড়ে গালি দিতে হবে। এই তো সমাজ। ভনিতার আরেক নাম। নিজেরাও শিখি। অন্যদেরও শিখাই যে এই শিখাটাই ঠিক শেখা।



সমুদ্র কিন্তু আমাকে হতাশ করেনি। অনুপমার স্পর্শের শান্তি এনে দিল আমার কাছে। সেই অনুপমা হয়তো অন্য কাউকে সেই স্পর্শ কাম হিসেবে দিচ্ছে। অনুপমা কখনো জানবে না আমার পাওয়া সেই শান্তির কথা। পৃথিবীর কোথাও আর কেউ জানবে না এই কথা। কারণ আমি জানি শান্তিতে শুধু আমিই আছি। এখানে আমি জয়ী। সব হেরে শুধু এখানেই আমি জয়ী। পৃথিবীর সব হীরা জহরত তুচ্ছ এই জয়ের কাছে।



লোকে বলে নেশাখোর মানুষের লেখা আর পাগলের প্রলাপ একই। আমাকেই ইঙ্গিত করে বলে। মজার কথা হল, আবার এই লোকেই আমাকে পুরস্কার দেয়। আমি শুনি আর হাসি। তবে পাগল কাকে বলে!!



প্রতিদিন আমার কাছে কিছু চিঠি আসে। পাঠকের। আমি পড়ি না। একবারেই যে পড়িনি তা কিন্তু না। এতটা নিরহংকারও আমার নেই। প্রথম প্রথম সব পড়তাম। ভালো লাগত। খুবই ভালো লাগত। আস্তে আস্তে ভালো লাগার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেল। খালি মনে হতে লাগল। এরপর কী!!! এই-ই যদি হয় আমার সাফল্য। তবে কি এখানেই ইতি!! সমাপ্তি!! আবারো হাতড়ে বেড়ানো। কি হাতড়ে বেড়ানো তাও যদি বোঝা যেত!! তাতেও যেন অনুপমার স্পর্শ পেতাম।



এত দূর এসেও আমি এখনো কারো স্বরূপই বুঝতে পারলাম না। না মানুষের। না মানুষের বানানো মঞ্চের। না মঞ্চের বাইরে থাকা মাঠের। এখনো আমি ওঁদের নাগাল পেলাম না। তবে হ্যাঁ,শূন্যতারও যে উপলব্ধি থাকে, শূন্যতারও যে অনুভূতি থাকে তা আমি বুঝেছি; তা বুঝতে আমার অনেক দূর চলতে হয়েছে। কিন্তু শূন্যতার সব সময় ভাষা থাকে না। তাহলে আমি কী লিখি!!! আমি আসলে অনেক বড় করে একটা গোল দাগ দিই। অংকের ভাষায় একে কী বলে!!



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:৩২

কাহাফ বলেছেন:
উপলব্ধি আর অনুভূবেরা ধরা পরুক সবার জীবনে-এই শুভ কামনা......

২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো ।

শুভেচ্ছা :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.