নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুবায়ের সুহান

সুহান সুহান

দ্বিধান্বিত

সুহান সুহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগত প্রজন্ম

১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪

আমার ছোট মেয়ে যে কিনা ক্লাস থ্রীতে পড়ে সে আমাকে স্কুল থেকে বাসায় এসে বলছে, ‘বাবা!! আমি না আমার ক্লাসের একটা ছেলেকে love করি।’ আমি একজন শিক্ষক মানুষ। পরেরদিন ছেলে মেয়েদের কি পড়াবো তাতে একটু চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলাম। মেয়ের কথা শুনে কিছুক্ষণ বুঝতে পারলাম না আমার অনুভুতি কি হওয়া উচিৎ! অনুভূতির চেয়েও বড় সমস্যা হল যে প্রত্যুত্তরে আমার কি বলা উচিৎ এটাও আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমি মেয়ের দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালাম। মজার কথা হল মেয়ের বয়স কত মনে করতে পারছি না। সে বড় বড় চোখ মেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তাঁর চোখে কিছুটা দুঃখ ভাব আছে। আমি পুরো ঘটনা শোনার জন্য তাঁকে উৎসাহ দিলাম ‘তাই নাকি!!’ বলে। মেয়ে বলে, ‘হ্যাঁ, but বাবা, I don’t think he loves me’। আমি চুপ। এখনো বুঝতে পারছি না আমার কেমন অনুভূতি হওয়া উচিৎ। মেয়ের মাকে ডাকব নাকি!! দুটো ঘটনা ঘটতে পারে তাতে। মেয়ের মা খুব রেগে যেতে পারে। অথবা ফ্যাক ফ্যাক করে হাসতে পারে। দুইটার কোনটাই আমি চাচ্ছি না। আমি আমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ছেলের নাম কী?’ নাম শুনে ভিমড়ি খাওয়ার অবস্থা। ছেলের নাম নাকি ‘রাস্কেল’। মেয়ে আমার হতভম্ব ভাব দেখে বলল, ‘আরে বাবা! ওর নাম আসলে রাসেল। ও yo হওয়ার জন্য এরকম নাম নিয়েছে।’ অতঃপর মেয়ে তাঁর হাত মুঠি করে শুধু তর্জনী আর কনিষ্ঠা অঙ্গুলি বের করে বলল, ‘YO রাস্কেল yo yo’। আমি অবাক হওয়ার স্তর পাড় করে ফেলছি। মেয়ের কথা শুনে যাচ্ছি। শুনে যা বুঝলাম তা হল- YO রাস্কেলের অনেক নারী অনুরাগী। এদের সবাইকেই সে LOVE করে। এত LOVE এর মধ্যে আমার মেয়ে তাঁর love খুঁজে পাচ্ছে না।

কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী ড্রইং রুমে এসে আমাদের নিম্নলিখিত কথোপকথন শুনতে পেল এবং অবাক বিস্ময়ে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমরা এসব কি বলছ!!’

আমিঃ জীবনে সত্যিকারের love পাওয়া খুবই মুশকিল একটা ব্যাপার। বাবা মা ভাই বোন ছাড়া আর কারো কাছ থেকে সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া যায় না। গেলেও তা হয় খুব rare।

আমার মেয়েঃ ঠিক বলেছ বাবা!! আমি রাস্কেলকে যে পরিমাণ love করি এটা সত্যিকারের love। এটা ও আর কারো কাছ থেকে পাবে না।

আমিঃ হুম!!

আমার মেয়েঃ আমি ওঁকে চুমু পর্যন্ত খেতে দিয়েছি। Not on the lips ofcourse!!

আমি আবারো বজ্রাহত। খুব মন খারাপ হল। আমি কি তাহলে খুব খারাপ বাবা। মেয়েকে ঠিকভাবে সময় দেই না!! নইলে কি ভয়ানক কথা কি অবলীলায় বলে যাচ্ছে এইটুকু বাচ্চা একটা মেয়ে। একে কিভাবে কি বোঝাব আমি!!

আমার মেয়েঃ বাবা!!! কথাটা আমি বানিয়ে বলেছি বাবা। তোমাকে অবাক করার জন্য। তুমি রাগ করেছ বাবা? তোমাকে না বলে আমি কাউকে love u ও বলব না বাবা। রাস্কেলকেও বলিনি।

মেয়ের হঠাৎ এরকম কথা শুনে মনটা নরম হয়ে গেল। আমার বাচ্চাটা কত বড় হয়ে যাচ্ছে। বয়সে না হোক। মনে। এদের মনের বেড় পাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। যে রকম সমাজ আমরা এদের দিচ্ছি তাঁর পরিণাম তো আমাদেরই মেনে নিতে হবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:১৮

আজমান আন্দালিব বলেছেন: দ্বিধান্বিত!

২| ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:০২

বর্ষণ মাহি বলেছেন: ভয়ই পাইছিলাম!

৩| ২৩ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১:২৩

তানি তানিশা বলেছেন: কি বলা উচিৎ বোঝার চেষ্টা করছি। লেখাটা চমৎকার। সমাজের যে অবস্থা এই দিন আর বেশি দূরে নেই। কিন্তু আমরা সচেতন হলে হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.