নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জুবায়ের সুহান

সুহান সুহান

দ্বিধান্বিত

সুহান সুহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদ্ভুত প্রেমের গল্প- (শেষ পর্ব)

৩১ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ২:১২

মানুষের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা ঠিক কিসে!!! কিসের কারণে মানুষের বেঁচে থাকার এত সাধ!! মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, টাকাপয়সা, গাড়ি-বাড়ি। এগুলো?? যেখানে মানুষ জানে যে তাঁদের জীবনের একমাত্র অনিবার্য পরিণতি মৃত্যু। তাহলে ঠিক কেন মানুষ স্পর্শনীয় থেকে অস্পর্শনীয় সকল কিছুর প্রতি দৌড়ে যায়। কিসের সততা আর কিসেরই বা শঠতা!! মৃত্যুর কাছে কি সবই মূল্যহীন না!!! মৃত্যুই কি একমাত্র সত্যি না!!! সবহারা মানুষ ছাড়া বোধহয় আর কেউ এই সত্যি অনুধাবন করতে পারে না। নিষ্ঠুর সত্যি।

আপাতদৃষ্টিতে এখন সবহারাদের একজন পুলক আহমেদ। সবহারা মানুষরা একটা সহজ পথ বেছে নেয়। সেটা হচ্ছে আত্মহত্যা। এটা যে তাঁরা খুব পরিকল্পনা করে তারপর এগোয় তা কিন্তু না। একটা ঘোর কাজ করে। পুলকও এখন সেই ঘোরে আছে। আবার সেই ছাদ আর ছাদের রেলিং। ইচ্ছা করলেই একটা লাফ দেয়া যায়। কিসে যেন আটকাচ্ছে। আর কি বাকি থাকতে পারে আটকানোর!! জীবন নামক এই বেড়াজালে আটকে থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রিয়জনকে বিদায় বলতে না পারা। কিন্তু তাঁর তো কাউকে বিদায় বলার নেই। কেউ নেই। নিজের সাথে নিজে কথা বলতে বলতে ছাদ থেকে নেমে বাসায় ঢোকে পুলক। এই যে বাসা। খালি। একটা ভূতও বোধহয় নেই। এত দুঃখেও হাসি পেল পুলকের। একটা ভূত কিংবা একটা পরী। যাকে শুধু পুলক দেখবে। আর কেউ না। এভাবে সে এই বিশ্রী জীবন থেকে দূরে সরে থাকবে। সে সারা বাড়িতে তন্ন তন্ন করে অনেক খুঁজেও একটা পরী পেল না। মায়ের ঘরে এসে অন্ধকারের মধ্যেই পরী না পাওয়ার দুঃখে নাকি মাকে না পাওয়ার দুঃখে অঝোরে কেঁদে যেতে লাগল পুলক। হঠাৎ মোবাইলে মেসেজ আসার টোন শুনল সে। কিসের আশায় সে দৌড়ে গেল মোবাইলের কাছে। মেসেজটার দিকে অনেকক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল সে। সেখানে লেখা।

" তোমার জায়গা কখনো কেউ নিতে পারবে না।।"

বেশ আরো অনেকক্ষণ কেটে গেল। তারপর হঠাৎ হো হো করে জোরে জোরে হাসতে লাগল পুলক। প্রথমে হো হো। তারপর হা হা। এভাবে অনেকক্ষণ উলটে পাল্টে হাসল সে। তারপর হঠাৎ হাসি থামিয়ে জোরে মোবাইল ফোনটা আছড়ে মারল মেঝেতে।

- কি পাইস আমাকে তোমরাআআআআ!!! কি পাইসওওও!!!

দাঁত কিড়মিড় করে বলতে থাকল পুলক। প্রবল আক্রোশে তাঁর চেহারা বিকৃত হয়ে গেল। আশেপাশে কেউ থাকলে রীতিমত ভয় পেয়ে যেত। কিন্তু যার কেউ নেই তাঁর দুঃখ দেখারও কেউ নেই সুখ দেখারও কেউ নেই। আক্রোশ কে দেখবে!!! সে আরো কিছুক্ষণ রাগে হাত পা ছোঁড়াছুড়ি করল আর বলতে থাকল।

- যখন তোমাদের খুশি। যখন খুশি। আমি!!! আমি!!! আমি একটা মানুষ তো!!! নাকি নাকি নাকিইইইইইই!!!

‘নাকি’ বলে এরকম হিস্টিরিয়াগ্রস্ত রোগীর মত অনেকক্ষণ চেঁচাল। তারপর আবার অনেকক্ষণ হাসল। হাসতে হাসতেই মনে মনে ভাবতে লাগল একবার যদি রীতাকে পেত সামনে। তাড়াতাড়ি আছাড় দেয়া মোবাইল ফোনটায় আবার ছিটকে পড়া সিমটা লাগায়। অন করে ফোন। মেসেজটা পড়ে।

- কেউ নিতে পারবে না জায়গা। হাহহাহাহাহা। কেউ নিতে পারবে না। কেউ না। কেউ পারবে না নিতে।

আবার রাগ ওঠে পুলকের। কি বলতে চায় রীতা। কি বোঝাতে চায় সে। কি!!! কি!!! ফোন দেয় সে রীতার নাম্বারে। ফোন অফ। ছেলেখেলা!!! কে অধিকার দিয়েছে। তাঁকে নিয়ে ছেলেখেলা করার!!! কে!!! কে!!! পুলক তো ওঁকে মন থেকে দূর করে দিয়েছে। তাহলে কেন আবার!!! মানুষ কেন এত স্বার্থপর হয়!!! কাউকে একটা টোকা না দিয়েও যে মোক্ষমভাবে আঘাত করা যায় তা পুলক জীবনের এই অবস্থানে না আসলে কখনো জানত না।

প্রবল অস্থিরতার সময় মানুষ বোধহয় এইরকম পাগলামি করেই বেঁচে যায়। পুলক আহমেদও বোধহয় বেঁচে গেল। কিন্তু এই বেঁচে থাকাটা কেমন হয়!!! পৃথিবীর সকল সততা আর সরলতা থেকে বিশ্বাস উঠে যাওয়ার পর বেঁচে থাকাটা কেমন হয়!!! আত্মা বলে কি কিছু থাকে!!! একটা আত্মাহীন দেহর মতই কি মানুষ ঘুরে বেড়ায়!!!

কলিং বেল বাজল!!! এই সময়ে!!! কে!!!

এই মুহূর্ত থেকে আমি গল্পের নিয়ন্ত্রণ পাঠকের হাতে তুলে দিলাম।

হতে পারে দরজা খুলে দেখা গেল রিমকি দাঁড়িয়ে। সেই গোল লাল টিপ আর চোখে কাজল মেখে জগতের সব আকর্ষণ নিয়ে। কিছু বলল না। শুধু গভীর চোখে তাকিয়ে রইল। তাঁর না বলাতেই যেন সব বলা হয়ে গেল। সে আর পুলক আবার নতুন করে শুরু করল। সবকিছু। সংসার। ঘর। খুনসুটি। ঘর আলো করে আসা একগাদা সন্তান।

নইলে দেখা গেল দাঁড়িয়ে আছে রায়হানুল ইসলাম। পুলকের বস। পুলকের অবস্থা দেখে জোর করে ধরে নিজের বাসায় নিয়ে গেলেন। অসহায় অবস্থায়ই হয়তো আমরা অনাত্মীয়ের মাঝে আত্মীয় খুঁজে পাই। রায়হানুল ইসলামের বাসায় থেকে কিছুটা সুস্থির হল পুলক। অফিসে জয়েন করল। বিবেক রয় আবার তাঁকে জার্মানি যাওয়ার প্রস্তাব দিল। এবার আর দেরী নয়। গেলে সামনের সপ্তাহেই। দেখা গেল এতবার হোঁচট খাওয়া পুলক কোন এক বিদেশিনীর ভালোবাসায় ধরা পড়ল। পূর্ণতা পেল। যে পূর্ণতার খোঁজে মৃত্যু অবধারিত জেনেও মানুষ বেঁচে থাকতে চায়।

জীবনের গল্প তো চলতেই থাকে। কোন বাঁধাই এ গল্প থামিয়ে রাখতে পারে না।

পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link পর্ব-২৩ Click This Link পর্ব-২৪ Click This Link পর্ব-২৫ Click This Link পর্ব-২৬ Click This Link পর্ব-২৭ Click This Link পর্ব-২৮ Click This Link পর্ব-২৯ Click This Link পর্ব-৩০ Click This Link পর্ব-৩১ Click This Link পর্ব-৩২ Click This Link পর্ব-৩৩ Click This Link পর্ব-৩৪ Click This Link পর্ব-৩৫ Click This Link পর্ব-৩৬ Click This Link পর্ব-৩৭ Click This Link পর্ব-৩৮ Click This Link পর্ব-৩৯ Click This Link পর্ব-৪০ Click This Link পর্ব-৪১ Click This Link পর্ব-৪২ Click This Link শেষ পর্ব Click This Link

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৫৪

অনিকেত পাল বলেছেন: গল্পটি কি জোর করে শেষ করলেন?

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৪৭

সুহান সুহান বলেছেন: বোধহয়!!! কারণ পুরো লেখাটা তিন বছর পর পড়ে মনে হল। এটা শেষ হওয়া প্রয়োজন। দুই পর্বে শেষ করে দেওয়াতেই কি বোঝা গেল নাকি লেখাতেও দুর্বলতা ছিল?

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। অনেকদিন পর এটা শেষ করলাম। একটা মন্তব্য প্রয়োজন ছিল।

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৫

অনিকেত পাল বলেছেন: আপনার গল্পে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ জিনিসটি ভালোভাবে বর্নিত থাকে। কিন্তু এই দুই পর্বে না আছে কার্য-কারন সম্পর্কিত তেমন কোণ ঘটনা না আছে তার কোন গ্রহণযোগ্য বিশ্লেষণ। এই দুই পর্ব অনেকটা সকালে-উঠলাম-দুপুরে-আর-রাতে-খেলাম-তারপর-ঘুমোলাম ধরনের লাগল। অনান্য পর্ব কিংবা বাকি গল্পগুলো কিন্ত ওরকম না।

বিঃদ্রঃ - কলিংবেল এর আওয়াজ টা খুব সম্ভবত প্রতিবেশী কারুর। ওইরকম আওয়াজ করলে কেউ না কেউ এসে ঝাড় দেবেই। :-B :P

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

রুমি৯৯ বলেছেন: ভালো লাগলো৷ আপনার লেখা এর আগে আমি সেভাবে পড়িনি৷ আপনার বিশ্লেষণগুলো আমার বেশ ভালো লাগে৷ ইচ্ছে করলে আপনি লেখক হিসাবে নিজেকে নিতে পারবেন ৷ চ্যালেঞ্জ৷

০৭ ই মে, ২০১৭ রাত ১:৪৩

সুহান সুহান বলেছেন: ধন্যবাদ। অনুপ্রানিত হলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.