নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জাবের তুহিন

আছি । আমি আছি ।

জাবের তুহিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কি কথা আমার সনে ? [ গল্প ]

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৪

নতুন সেমিস্টার শুরুর দিকের কথা - ছুটিতে অনেকেই বাড়িতে যায় বিধায় অনেকদিন ধরে দেখা সাক্ষাত হয় না বন্ধুবান্ধবদের । প্রথম দিন সবার সাথে হাই - হ্যালো করতে করতেই অনেকটা সময় যায় । আর পরিচিত মুখের সন্ধানেই বেশিরভাগ চোখ বিভিন্ন দিকে বারে বারে ফিরে ।
এর মদ্ধ্যে এক যুবকের আবির্ভাব ঘটলো পুরো মুখ গজ কাপড় দিয়ে পেঁচানো । শুধু ঠোঁট , কান ,নাক আর চোখের অংশে হালকা ফাঁকা আছে । যেই একবার দেখছে তার সাথের মানুষের দৃষ্টিও তার দিকে ফেলতে বলছে ।
যুবকটি আমিই ছিলাম । এতোগুলো কৌতূহলী চোখ কখনো আমার দিকে আগে এভাবে তাকিয়ে থাকে নি । নতুন অভিজ্ঞতা হলো । খারাপ না । পরিচিত কাউকে খুঁজছিলাম যেন অন্তত এই পরিস্থিতি নিজের দেখা না লাগে । পেয়েও গেলাম নিজের ভার্সিটি লাইফের প্রথম ক্লাসের প্রথম পরিচিত মানুষটির দেখা , সে-ও এতক্ষণ আমাকে দেখছিল । কন্ঠ শুনেই চিনে ফেললো ।
"কিরে কি হইছে তোর ? আরেকটু পেঁচাইতি মমি ভাইবা সব দৌড় লাগাইতো । "
মৃদ্যু হাসলাম তবে গজ কাপড়ের ফাঁক দিয়ে তা কারো বুঝতে পারার কথা না ।
- চল চা খাইতে খাইতে কাহিনী বলবি , আর বাকিগুলারেও ডাক দেই । তোরে কিন্তু খারাপ লাগতেছে না । পুলাপাইন মাঞ্জা মাইরা আইলেও সবাই তাকায় না তুই তো পুরাই হিরো হইয়া গেলি ।
এরপরে আমাদের আরো কয়েকজন বন্ধুদের ডাক দেয় - নিশী , রাহাত , জতি । সবাই ভার্সিটির এরিয়াতেই ছিল । রুমেলের রহস্যে মোড়া ডাক শুনে সবাই দৌড়ে এসেছে । আমার সাথে পরিচিত হয়েই সব নীরব ।
ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দিয়েই শুরু করে দিলাম কাহিনী -
তোদের তো আগেই বলছিলাম স্কুলে ক্লাস নাইনে কোচিং-এর এক মেয়েকে খুব পছন্দ করতাম । ঐ মেয়ের সাথে কোনদিনও কথা বলা হয়ে ওঠে নি । আমি পাগল ছিলাম এখনও আছি ঐটা ব্যাপার না । কিন্তু ওর প্রতি যে আকর্ষণ অনুভব করেছিলাম তা দিয়ে কলেজ পার করেছি । কাউকে সহজে ভুলতে পারি না । গেলো এই কাহিনী । যখন আমি পুরো স্মৃতিকাতরতা থেকে মুক্ত হলাম । তখন এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে ওর ভার্সিটি গিয়ে ওর এক মেয়ে ফ্রেন্ডকে খুব পছন্দ হলো । একসাথে আড্ডা দেয়ার ফাঁকে মোবাইল বের করে ফেসবুকে ফ্রেন্ডও হয়ে গেলাম । ওর নাম কমু না তোদেরও পরিচিত হতে পারে ।
শুধু ওর সাথে একটু আড্ডা দেয়ার জন্য ততদিনে কিছু উন্নয়ন হইছে আমার মেয়েদের সাথে কথা বলার । ঐ মেয়ে সবাইকে তুই করে ডাকলেও আমাকে তুমি করেই ডাকে । আবার একদিন মোবাইলে ফ্লেক্সি করে দেয়ার কথা বলে আমার হাতে ওর মোবাইল নাম্বার গুঁজে দিলো । এই ব্যাপারগুলো কিভাবে হ্যান্ডেল করবো জানা ছিল না । কার সাথে শেয়ারও করতে চাচ্ছিলাম না । আস্তে আস্তে সেই স্কুলের সময়কার আকর্ষণের মতো কিছু অনুভব করতে আরম্ভ করলাম আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী । এইবার আর ওকে হারাতে চাচ্ছিলাম না তো এক কাজ করলাম ।
ওর হোস্টেলের নিচে গিয়ে ফোন করে আসতে বললাম ।
- আমি যদি তোমার জন্য গোলাপ নিয়ে আসি তবে অবাক হবে ?
- অবাক হওয়ার কি আছে ? গোলাপের মতো সুন্দর ফুল একজন আরেকজনকে দিবে সেটাই স্বাভাবিক ।
- তাহলে কয়টা চাও ?
- কয়টা চাই মানে ?
- যে কয়টা বলবে এনে দিবো ।
- এক ট্রাক এনে দাও তাহলে ।
একটু বিব্রতবোধ করলাম । সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে এক ভ্যান গোলাপ ম্যানেজ করে রেখেছিলাম । তাই ডাক দিয়া আনালাম আর পকেট থেকে চিঠিটা বের করে বাড়িয়ে দিলাম । এরপর আমাকে একটা কথা শুনতে হয়েছিল ।
- এই ভাবছো তুমি ? দুই তিনটা কথা রসিয়ে কি বললাম উনি একেবারে বাদশাহ শাহজাহান সাজতে এসেছেন । নিজের চেহারা দেখো গিয়ে দশ জোড়া জুতা কালি করার যোগ্যতা রাখে তোমার চামড়া ।
তোদের সাথে নিজেকে কালো বলে কতো মজাই তো করি কিন্তু সেদিনের ঐ কথাটা বড্ড বেশি লেগেছিল । বাসায় গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম । আসলে আমি শুধু কালো না বিশ্রী একটা আকৃতি আমার মুখের । সৌন্দর্য্যের ছিটে ফোটাও নেই । একটা চিন্তা মাথায় খেলে গেলো । এখন নিজেকে খারাপ লাগছে কালকে হয়তো লাগবে না । পরে আবার প্রেমে পড়তে ইচ্ছা করবে । তখন ? তার চেয়ে এমন ব্যবস্থা করি কাউকে পছন্দ হলে আয়নার সামনে দাঁড়ালে যেন নিজেই ভরকে যাই ।
ব্লেড দিয়ে পুরো মুখের চামড়া আলগা করে ফেলার ইচ্ছা ছিল কিন্তু ঐটা কঠিন হয়ে যাবে ভাবলাম । তো কি করা যায় ? বাসায় যেহেতু একলা ছিলাম , চুলোয় তেল গরম করতে দিলাম । অতঃপর মাঝারি সাইজের একটা চামচে তেল নিয়ে চোখ বন্ধ করে মুখে ছিটকে দিলাম । অনেক জ্বলেছে রে কিন্তু একটা শান্তিও ছিল পেরেছি । নিজেকে দূরের থেকেও দূরে নিয়ে যেতে পেরেছি । না এখন আমাকে কারো পছন্দ হওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে না আমি কাউকে পছন্দ করতে যাবো এই মুখ নিয়ে ।
কিরে ঠিক করেছি না ?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:১৭

আরজু পনি বলেছেন:
মাইনাস বাটন থাকলে তাই দিতাম, না পেয়ে প্লাস দিলাম।
কিন্তু এ ধরনের ধ্বংসাত্মক ভাবনা অন্যায় ।
মানুষের উচিত নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা ।

ব্লগে আরো নিয়মিত দেখতে চাই, তুহিন ।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৯

জাবের তুহিন বলেছেন: ভাবনার উপর আমার কন্ট্রোল নাই । সুতরাং ভাবনার ন্যায় , অন্যায় নাই । কাজের আছে ।
অনেকদিন পর আপনার মন্তব্য দেখে ভালো লাগলো । ধন্যবাদ

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হার্ডকোর ব্যাপার স্যাপার| কেউ খারাপ কইল আর ওমনি আমি ঝাকানাকা শুরু করে দেব এটা বোকামি|
যাই হোক, ভাল থাকুন| শুভেচ্ছা নতুন বছরের

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৬

জাবের তুহিন বলেছেন: ব্যাপরটা কিন্তু কারো বলার জন্য করা নয় ।
আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সেই পথ যেন আর মাড়াতে না হয় সেটার একটা আজব পন্থা মাত্র ।

৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৪

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: উপস। আনেক্সপেক্টেড ফিনিশিং। এমনটা ভাবি নাই। চালায় যান। ভারসাম্য বজায় রাখতে মাঝে মাঝে ধ্বংসাত্মক লেখার প্রয়োজন আছে। :P

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৭

জাবের তুহিন বলেছেন: ধ্বংস্বাত্মক থেকে যদি ভালো কিছু হয় তবে ধ্বংসাত্মকই ভালো ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.