নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাগলা গারদ

ব্যাঙাচী

ভয় লাগে নাকি ভয় করে

ব্যাঙাচী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্যরকম বাংলাদেশ: খাগড়াছড়ি

১০ ই জুন, ২০১৩ সকাল ৮:১৯

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন, নানা বৈচিত্র্য, পাহাড়ী ঝর্ণাধারা আর সবুজের সমাহারপূর্ণ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। সৃষ্টিকর্তা অকৃপণভাবে সাজিয়েছে খাগড়াছড়িকে। স্বতন্ত্র করেছে বিভিন্ন অনন্য বৈশিষ্ট্যে। এখানে রয়েছে আকাশ-পাহাড়ের মিতালী, চেঙ্গী ও মাইনী উপত্যকার বিস্তীর্ণ সমতল ভূ-ভাগ ও উপজাতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যতা। যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আর রহস্যময়তায় ঘেরা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রকৃতিপ্রেমী, অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় বা ভ্রমণবিলাসীদের জন্য আদর্শ স্থান।প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এ জেলার আনাচে-কানাচে। এ জেলার বৈচিত্র্যময় জীবনধারা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে।

নিম্নে খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন স্পটগুলার একটা তালিকা দিলাম। আশা করি কাজে লাগবে।

I. আলুটিলা

II. রিছাং ঝর্ণা

III. নুনছড়ি দেবতা পুকুর

IV. দীঘিনালায় মানিক্যাদীঘি

V. মাটিরাঙ্গায় বটতলী

VI. পানছড়ি অরণ্য কুটির

VII. ভাইবাছড়া ঝরনা

VIII. দীঘিনালা শিবছড়ি পাহাড়

IX. জেলা সদরে পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র

X. মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি

XI. কর্নেলের বাগান

XII. লোগাং ধুদুকছড়া

XIII. মারিস্যা ভ্যালী

XIV. শুকনাছড়ি রহস্যে ঘেরা মন্দির (মহালছড়ির শুকনাছড়ি পাহাড়ে রয়েছে রহস্যে ঘেরা পুরানো মন্দির)।

XV. মহালছড়িতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীরউত্তম ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদেরের শাহাদাত বরণের স্থান ও রামগড়ে সমাধিস্থল

XVI. ঝর্ণা টিলায় মনোরম পাহাড়ী ঝর্ণা (পানছড়িতে রয়েছে তবলছড়ি সড়কে ঝর্ণাটিলা)।

XVII. ভগবান টিলা

XVIII. বিডিআর’র এর জন্মস্থান এবং প্রথম সদর দফতর (জেলার রামগড়ে রয়েছে ১৭৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলস এর জন্মস্থান ও প্রথম সদর দফতর)।

XIX. কৃত্তিম পর্যটন লেক

XX. ঝুলন্ত সেতু

XXI. বনবীথি মৎস্য লেক ও বাগান

XXII. চা বাগান



যেভাবে যেতে হবে

ঢাকাঃ রাজধানী ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আরামদায়ক বাস ছাড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০-১৫টি। সায়দাবাদ, কমলাপুর, গাবতলী, ফকিরাপুল, কলাবাগান ও টিটি পাড়া থেকে টিকেট সংগ্রহ করে এস আলম, স্টার লাইন, শ্যামলী, সৌদিয়া, শানিত্ম স্পেশাল ও খাগড়াছড়ি এক্সপ্রেসযোগে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে ট্রেনে ফেনী এসেও হিলকিং অথবা হিল বার্ড বাসে চড়ে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়।



চট্টগ্রামঃ অক্সিজেন থেকেও শানিত্ম স্পেশাল ও লোকাল বাসে উঠে যাওয়া যায় খাগড়াছড়িতে।



কোথায় থাকবেন: পর্যটকদের জন্য খাগড়াছড়িতে রয়েছে অনেক আবাসিক হোটেল। পর্যটন মোটেলে থাকতে পারেন, এছাড়া আছে জিরান হোটেল, হোটেল শৌল্য সুবর্ণ, থ্রী স্টার হোটেল, হোটেল লবিয়ত। কিছু হোটেল এর ফোন নাম্বার দেওয়া হলোঃ

• পর্যটন মোটেলঃ ৬২০৮৪ ও ৬২০৮৫

• হোটেল শৌল্য সুবর্ণঃ ৬১৪৩৬

• জিরান হোটেলঃ ৬১০৭১

• হোটেল লিবয়তঃ ৬১২২০

• চৌধুরী বাডিং: ৬১১৭৬

• থ্রি ষ্টার: ৬২০৫৭

• ফোর ষ্টারঃ ৬২২৪০

• উপহারঃ ৬১৯৮০

• হোটেল নিলয়ঃ ০১৫৫৬-৭৭২২০৬



অনুমিত খরচ

পরিবহন: বাস ভাড়া ঢাকা থেকে খাগড়াছড়িঃ ৩৫০/৪০০ টাকা

হোটেল: খাগড়াছড়ি হোটেল ভাড়াঃ ৮০০/১৫০০ টাকা



আলুটিলা

আলুটিলা পাহাড় থেকে খাগড়াছড়ির সৌন্দর্য দেখে এক জেলা প্রশাসক লিখেছিলেন, ‘ক্লান্ত পথিক ক্ষণেক বসিও আলুটিলার বটমূলে, নয়ন ভরিয়া দেখিও মোরে চেঙ্গী নদীর কোলে।’ আলুটিলা থেকে পুরো খাগড়াছড়ি শহর দেখা যায়। চেঙ্গী নদী কীভাবে সর্পিল গতিতে চলে গেছে, তা আলুটিলা পাহাড় থেকেই দেখা যায়। আর আলুটিলার পাহাড়ের চূড়া থেকে কয়েক শ ফুট নিচে রয়েছে ২৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেই রহস্যময় সুড়ঙ্গ। সুড়ঙ্গের ভেতর গাঢ় অন্ধকার। তাই ভয় নেই। আলুটিলায় পাওয়া যায় মশাল। সেটি কিনে নিয়ে ঢুকতে হবে। এ ছাড়া পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে বৌদ্ধদের একটি মন্দির। এ মন্দিরের নির্মাণশৈলী এক কথায় অনন্য।



খাগড়াছড়ি শহর হতে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে মাটিরাঙ্গা উপজেলার আলুটিলা পযর্টন কেন্দ্রে রয়েছে একটি রহস্যময় গুহা। স্থানীয়রা একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। তবে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে অবস্থিত বলে আমরা একে আলুটিলা গুহা বলেই চিনি। এটি খাগড়াছড়ির একটি নামকরা পর্যটন কেন্দ্র। খাগড়াছড়ি বেড়াতে এলে সবাই অন্তত এক বার হলেও এখানে ঘুরে যায়। এটি একটি চমৎকার পিকনিক স্পট। তাই সারা বছরই এখানে ভীড় লেগে থাকে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অতুলনীয়, হৃদয় ছুয়ে যায়। দেখলেই মুহুর্তের মাঝে মন ভাল হয়ে যাবে। আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার সব চাইতে উচু পর্বত। নামে এটি টিলা হলেও মূলত এটি একটি পর্বতশ্রেনী। আলুটিলার পূর্বের নাম ছিল আরবারী পর্বত। এর সর্বোচ্চ উচ্চতা সমুদ্র সমতল হতে ৩০০০ ফুট। এখান হতে খাগড়াছড়ি শহরের বেশ কিছুটা অংশ দেখা যায়। শুধু তাই নয় পাহাড়ের সবুজ আপনার চোখ কেড়ে নেবে। আকাশ পাহাড় আর মেঘের মিতালী এখানে মায়াবী আবহ তৈরি করে।



আলুটিলা রহস্যময় সুগঙ্গে যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট কেঁটে ভীতরে প্রবেশ করতে হবে। ফটকের দুই পাশে দুটি শতবর্ষী বটবৃক্ষ আপনাকে স্বাগত জানাবে। ফটক দিয়ে পর্যটন কেন্দ্র প্রবেশের সময় আপনাকে মশাল সংগ্রহ করতে হবে। কারন রহস্যময় গুহাটিতে একেবারেই সূর্যের আলো প্রবেশ করে না। পর্যটন কেন্দ্রের ফটক দিয়ে প্রবেশ করে ডান পাশের রাস্তা দিয়ে মিনিট খানে হাঁটলেই চোখে পড়বে একটি সরু পাহাড়ীপথ। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নীচে নেমে গেছে এই পথটি। এই পথটি বেয়ে নিচে নামলেই আপনার জন্য অপেক্ষা করছে প্রথম চমকটি। হঠাৎ চোখে পড়বে একটি ছোট ঝর্না। ঝর্নার পানি নেমে যাচ্ছে নিচের দিকে ঝিরি বরাবর। তবে এখানে পাহাড়ী লোকজন ঝর্নার পানি আটকে রাখার জন্য একটি বাঁধ দিয়েছে। তারা এই পানি খাবার ও অন্যান কাজে ব্যবহার করে।

আর ফটক হতে বাম দিকের রাস্তা বরাবর হাঁটলে পরে পাবেন রহস্যময় সেই গুহা। গুহাতে যাবার আগে আপনি পাবেন একটি বিশ্রামাগার ও ওয়াচ টাওয়ার। এর সামনে দিয়ে রাস্তা চলে গেছে আলুটিলা গুহা মুখে। আগে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নামতে হতো গুহামুখে। কিন্তু এখন পর্যটন কর্পোরেশন একটি পাকা রাস্তা করে দিয়েছে। ফলে খুব সহজেই হেঁটে যাওয়া যায় গুহামুখে।

পাকা রাস্তা শেষ হলে আপনাকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে হবে। প্রায় ৩৫০টি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলে পরে পাওয়া যাবে কাঙ্খিত সেই গুহা। আলুটিলা গুহা। গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল। কোন প্রকার সূর্যের আলো প্রবেশ করে না তাই মশাল নিয়ে ভীতরে প্রবেশ করতে হয়। একেবারেই পাথুরে গুহা এটি। গাঁ ছম ছম করা পরিবেশ। খুব সাবধানে পা ফেলে সামনে এগুতে হয়। কারন সুরঙ্গের ভীতরে কোন আলো নেই। সুরঙ্গের তলদেশ পিচ্ছিল এবং পাথুরে। এর তলদেশে একটি ঝর্না প্রবাহমান। তাই খুব সাবধানে মশাল বা আলো নিয়ে গুহা পাড়ি দিতে হবে। পা ফসকে গেলেই আহত হতে হবে। তবে অন্য কোন ভয় নেই। গুহাটি একেবারেই নিরাপদ। আলুটিলার এই মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা সত্যিই প্রকৃতির একটি আশ্চর্য খেয়াল। দেখতে অনেকটা ভূগর্ভস্থ টানেলের মত যার দৈর্ঘ প্রায় ৩৫০ ফুট। গুহার ভীতরে জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে, রয়েছে বড় বড় পাথর। রিতিমত রূপকথার সেই গুহার মতই। গুহাটির এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হতে সময় লাগবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। গুহাটি উচ্চতা মাঝে মাঝে এতটাই কম যে আপনাকে নতজানু হয়ে হাটতে হবে। সব কিছূ মিলিয়ে মনে হবে যেন সিনেমার সেই গুপ্তধন খোঁজার পালা চলছে। বিশ্বে যতগুলো প্রাকৃতিক রহস্যময় গুহা আছে আলুটিলা সুরঙ্গ তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু খুব একটা প্রচার না থাকাতে আমরা এই সুন্দর ও রহস্যময় গুহাটি দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।



ইতিহাস: দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় খাগড়াছড়িতে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে এলাকার জনগত এই পর্বত হতে বুনো আলু সংগ্রহ করে তা খেয়ে বেঁচে থাকে। তার পর থের্ক এই পর্বতটি আলুটিলা নামেই পরিিচতি লাভ করে। এখনো এখানে প্রচুর পরিমান বুনো আলু পাওয়া যায়।



যেভাবে যেতে হবে: খাগড়াছড়ি হতে চান্দের গাড়ী কিংবা অন্য কোন বাহনে করে পৌছতে হবে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে। তার পর পায়ে হেঁটে গুহা দর্শন।



কোথায় থাকবেন: থাকতে হবে খাগড়াছড়ির কোন হোটেলে। এখানে থাকার জন্য ভাল মানে অনেকগুলো হোটেল রয়েছে। যে কোনটিতেই থাকতে পারেন।



পরামর্শ

• গুহাতে ঢোকার আগে মশাল নিতে হবে।

• সাবধানে দেখে শুনে হাটবেন। গুহার ভীতর রাস্তা সমতল নয়।

• সিগেরেট, চিপস, মশাল গুহাতে ফেলবেন না। পরিবেশ সুন্দর রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।



আজকে আর ভাল লাগতেছে না, দুঃখিত। প্রথম লিখলাম তাই মনে হয়। ধীরে ধীরে প্রতিটা জায়গা সম্পর্কে কিছু কিছু ইনফো দিব। আশা করি সবশেষ পোষ্ট দেয়ার পর খাগড়াছড়িতে ঘোরার জায়গা নিয়ে জানতে কারো আর কোথাও যাওয়া লাগবে না।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০১৩ ভোর ৪:৫৯

খেয়া ঘাট বলেছেন: চমৎকার একটা পোস্ট। কাজে লাগবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.